![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বপ্নের পরিবর্তে বাস্তবতার
সফটওয়ার প্রতিষ্ঠা জরুরি
কাউসার ইকবাল
পৃথিবী এখন চলছে স্বপ্নপ্রবর্তিত সফটওয়ারে। যে কারণে বাস্তবতার সঙ্গে বিস্তর ফারাকে জীবনযাপন করছেন স্বপ্নতাড়িত লোকজন।
স্রষ্টার তরফ থেকে মানুষের প্রত্যেকের জন্যই জীবনযাপনে দিক নির্দেশনা আসে স্বপ্নের মাধ্যমে। মানুষের সঙ্গে পরম সত্তার কথা বলার প্রধান মাধ্যম হচ্ছে এই স্বপ্ন। তবে স্বপ্নের দিক নির্দেশনা বোঝা খুব সহজও নয়। কারণ, স্রষ্টা দিক নির্দেশনা দেন উপমা দিয়ে। যে উপমা বোঝা দুষ্কর। যেমন- কোন একজন বিয়ের চিন্তাভাবনা করছে। এমন সময় সে স্বপ্নে দেখল, তার আপন বোনের সঙ্গেই সে দৈহিক মিলনে আবদ্ধ হয়েছে। এতে অনেকেই মনে করতে পারে, স্রষ্টা তার আপন বোনের সঙ্গে তাকে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হতে পরামর্শ দিচ্ছেন। আসলে কিন্তু ব্যাপারটা তা নয়। স্রষ্টা তাকে বোঝাতে চাইছেন, তার আপন বোনের মতো নম্র, শালীন কোন মেয়েকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে। আবার কোন কন্যাদায়গ্রস্ত পিতাকে স্রষ্টা স্বপ্নে দেখাতে পারেন যে, একটা বটগাছের সাথে তিনি তার মেয়েকে বিয়ে দিচ্ছেন। এ স্বপ্ন দেখে পিতা মনে করতে পারেন যে, তার বাড়ির পাশের বটগাছের সঙ্গেই মেয়েকে বিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন স্রষ্টা। প্রকৃতপক্ষে স্রষ্টা বোঝাতে চাচ্ছেন যে, অবস্থাসম্পন্ন তথা অর্থ ও বিত্তশালী কোন পুরুষের সঙ্গেই তার মেয়েকে বিয়ে দেয়া হোক। কিন্তু স্রষ্টার এমন রূপক নির্দেশনা না বুঝে বটগাছের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিলে তা হবে নির্বুদ্ধিতা। বস্তুত স্রষ্টা এ ধরনের রূপক নির্দেশনার মাধ্যমেই মানুষকে দিকনির্দেশনা দিয়ে আসছেন সেই আদিম যুগ থেকে। কিন্তু মানুষ স্রষ্টার এই দিক নির্দেশনা ঠিকমতো না বুঝে নির্বুদ্ধিতার সঙ্গে জীবনযাপন করে চলেছেন। যেমন, স্রষ্টা মানুষের জীবনযাপনের চক্র কি হবে, তা বোঝাতে কাউকে স্বপ্নে দেখিয়েছেন যে, স্বর্গে প্রথম মানব ও প্রথম মানবী ন্যাংটো হয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে যতদিন না তারা গন্ধম ফল খেয়েছে ততদিন পর্যন্ত। কিন্তু তারা যে নগ্ন হয়ে আছে, সে সম্বন্ধে তাদের কোন জ্ঞানই ছিল না। যেদিন তারা গন্ধম ফল খেল, সেদিনই তারা বুঝল যে তারা নগ্ন হয়ে আছে। তারপর তারা গাছের লতাপাতা খুঁজতে শুরু করল তাদের লজ্জাস্থান ঢাকার জন্য। স্রষ্টা তখন তাদেরকে স্বর্গ থেকে বের করে দিলেন এবং বললেন, তোমরা পৃথিবীতে পরিশ্রম করে তোমাদের জীবিকার ব্যবস্থা করবে। এরপর তোমাদের আবার জীবন দিয়ে তোমাদের কর্মের ফল প্রদান করা হবে। বস্তুত স্বপ্নের মাধ্যমে মানুষের জন্য স্রষ্টা যে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন, তা হচ্ছে এই যে, মানুষকে পৃথিবীতে আনা হবে নগ্নতা সম্বন্ধে কোন জ্ঞান না দিয়ে (৭/৮ বছর পর্যন্ত কোন শিশুর যেমন নগ্নতা বিষয়ে কোন বোধ থাকে না)। যে বয়সে শিশুর নগ্নতা সম্বন্ধে বোঝার উপলদ্ধি হবে, সেই বয়স থেকে মূলত শিশুটির জীবন গড়ার জন্য সংগ্রাম শুরু করতে হবে (লেখাপড়ার মাধ্যমে বা অন্য কোন কাজে সম্পৃক্ত হয়ে)। এরপর তরুণ বয়স থেকে তার জীবনসংগ্রামের ওপর ভিত্তি করেই একসময় সেই ব্যক্তি শেষ জীবনে এসে তার কর্মফল হিসেবে শান্তি লাভ করবে, অথবা অভাব-অনটনে যন্ত্রণাময় জীবন ভোগ করবে। মানুষের জীবনচক্র সম্বন্ধে বোঝাতে এ রূপক গল্পটি স্রষ্টা প্রথম যার স্বপ্নে উপস্থাপন করেছিলেন, তিনি তার সারমর্ম কি বুঝেছিলেন, তা বর্তমান ধর্মগ্রন্থসমূহ পাঠ করলেই অনুধাবন করা যাবে। মানুষেরা বংশ পরিক্রমায় স্রষ্টাপ্রদত্ত শিক্ষা না বুঝে নির্বোধের মতো জীবনযাপন করে চলেছেন। আবার আরেক মানুষকে স্বপ্নের মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে, তোমার আপন সন্তানও যদি পশু হয়ে যায়, তবে তাকে কতল করো বা ত্যাগ করো। তিনিও সেই স্বপ্নের দিক নির্দেশনা যা বুঝলেন, তাতে নিরীহ পশুরা উৎসবের মাধ্যমে প্রাণ হারিয়ে চলেছে; কিন্তু যে সমস্ত মানুষেরা পশু হয়ে যাচ্ছে, তাদের দমনের জন্য স্রষ্টাপ্রদত্ত শিক্ষাটি আজো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এভাবেই স্রষ্টার দিক নির্দেশনা না বোঝার কারণে মানুষেরা পৃথিবীতে নানাভাবে কষ্টকর জীবনযাপন করে চলেছে। যা নির্বুদ্ধিতার পরিচায়কও বটে।
জান্নাতের যে স্বপ্ন দেখে মানুষের অনেকে পার্থিব কাজকর্মকে গুরুত্ব না দিয়ে উপাসনালয়ে পড়ে থাকেন, সেই জান্নাতের প্রতিফলন পৃথিবীতেই। আজ থেকে দেড়-দু’ হাজার বছর আগেও মানুষেরা পৃথিবীতে যে কষ্টকর জীবনযাপন করতো, সেই তুলনায় অনেক সহজ ও উপভোগ্য মানুষের জীবন বর্তমানে। আরো একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, ধর্ম প্রচারকরা জান্নাতের যে স্বপ্ন মানুষকে দেখিয়েছেন, তাতে পুরুষদেরকে অনেক নারী, বাড়ি, জায়গা-সম্পত্তির লোভ দেখানো হয়েছে এবং নদীর পাদদেশে বসতি লাভের আশ্বাস দেয়া হয়েছে, যাতে সে পানির কষ্টে ভুগবে না মর্মে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কিন্তু মানুষ চলচ্চিত্র কিংবা টেলিভিশন নাটক উপভোগ করে কিংবা ফুটবল-ক্রিকেট খেলা দেখে আনন্দময় সময় কাটাবে, এমন কথা কিন্তু কেউ বলে যাননি। কারণ, টেকনোলজির যুগের বিষয়গুলো সেইসময় তাদের স্বপ্নে আসেনি। তাহলে লক্ষণীয় যে, স্রষ্টা মূলত মানুষকে পৃথিবীতে কর্মের ওপর ভিত্তি করেই চলার দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। আর বর্তমান পৃথিবীর প্রেক্ষাপটে এটাই বলা যায় যে, যারা যত বেশি টেকনোলজিসংক্রান্ত জ্ঞান রাখে, তারাই পৃথিবীতে তত বেশি আরামদায়ক ও উপভোগ্য জীবন লাভ করছে। স্রষ্টা মানুষকে মূলত এ আরামদায়ক জীবনের স্বপ্নই দেখিয়েছেন। কিন্তু এজন্য ধর্মের নামে বাড়াবাড়ি ও মারামারির শিক্ষা তিনি দিতে চাননি। অথচ, মানুষ নিজেদের নির্বুদ্ধিতায় স্রষ্টার উপমাগত ভাষা না বুঝে আজ স্বর্গের লোভে পৃথিবীতে রক্তপাতও ঘটিয়ে চলেছে স্রেফ ধর্মের ভুল শিক্ষা পেয়ে। কিন্তু স্রষ্টার কাছে সে-ই সবচেয়ে বেশি প্রিয়, যে নিজের কর্ম ও আত্মবিশ্বাসের ওপর ভর করে জীবনযাপন করে; আর কারো জন্য ক্ষতিকর কোন কাজে লিপ্ত না থাকে। এমন ব্যক্তিরাই লাভবান বলে স্রষ্টা বোঝাতে চেয়েছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই জুন, ২০১৪ রাত ২:৩৩
কামরুল ইসলাম রুবেল বলেছেন: ধুর, আমি ভাবলাম টেকি পোষ্ট