নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাউসার ইকবাল

সাংবাদিক ও লেখক

কাউসার ইকবাল

সাংবাদিক ও লেখক

কাউসার ইকবাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

হযরত মোহাম্মদ (সা.)-র সঙ্গে এক রাতে

২৭ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৩

হযরত মোহাম্মদ (সা.)-র সঙ্গে এক রাতে

কাউসার ইকবাল

মানবসমাজের সমস্যা নিয়ে ভাবার কারণেই বোধ করি বিখ্যাত ব্যক্তিদের অনেকে আমাকে স্বপ্নে দেখা দিয়েছেন। এর মধ্যে ইসলাম ধর্ম প্রবর্তক হযরত মোহাম্মদ (সা.)ও এক রাতে আমাকে স্বপ্নে দেখা দিলেন। সেই রাতের স্বপ্নের ঘটনা আজো স্পষ্ট মনে আছে। হযরত মোহাম্মদ (সা.) আমার তুলনায় বেশ লম্বা এবং তাকে দেখতে বেশ সুন্দর লাগছিল। তিনি আমাকে অবাক করে দিয়ে বললেন, ‘বর্তমান পৃথিবীর বেশিরভাগ মুসলিমই স্বার্থান্ধ ও নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। আর এদের হাত ও মুখ থেকে মানবজাতি নিরাপদ নয় বলে এরা কেউই আমার খাঁটি অনুসারী নয়। আপনি মানুষকে মনুষ্যত্বের শিক্ষা দিন।’

আমি হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর সামনেই দাঁড়িয়ে আছিÑ এমনটা বিশ্বাস করলেও তিনি বাংলায় কথা বলাতে কিছুটা সন্দিহান হয়ে পড়ি। হযরত মোহাম্মদের (সা.) ভাষা তো আরবি। তিনি বাংলা বলছেন কি করে?

আমার মনের কথা পড়ে নিয়ে হযরত মোহাম্মদ (সা.) বললেনÑ আমি এখন আলোকদেহে সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াতে পারি। যেকোন অঞ্চলে কিছুদিন ঘুরে বেড়ালে সেই অঞ্চলের ভাষা শিখে নিতে পারি। অতএব, বাংলায় আপনার সাথে কথা বলাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তাছাড়া, আমি যে ভাষাতে কথা বললে আপনি বুঝবেন, সেই ভাষাতেই তো আমাকে কথা বলতে হবে। আমি তো তাদের মতো মূর্খ নইÑ যারা আরবি না বুঝেও আরবিতে কোরআন তেলাওয়াত করে যায় এবং নামাজ পড়ে ও পড়ায়। আমি আমার আরব এলাকার উম্মতদেরকে কোরআন পাঠ করার জন্য বলে এসেছি। অন্য ভাষাভাষি উম্মতেরা সেই নির্দেশমতো কোরআন পাঠ করতে হলে তাদের বোধগম্য ভাষাতেই অনুদিত কোরআন পাঠ করতে হবে। কোরআন পাঠ করে কোরআনে স্রষ্টা মানুষের উদ্দেশে কি কি বলেছেন, তা অনুধাবন করতে না পারলে, কোরআন পাঠের মূল্য কি? বাংলাদেশ এবং এ রকম যেসব দেশের লোকেরা আরবি না বুঝেই আরবিতে কোরআন তেলাওয়াত করছে, তারা তো নিজেদের মূর্খ স¤প্রদায় বলে প্রমাণ করছে।

হযরত মোহাম্মদের (সা.) মুখ থেকে এমন কথা শুনে আমি একটু অবাক হয়ে বললামÑ এমন কথা কেন বলছেন?

হযরত মোহাম্মদ (সা.) জবাবে বললেনÑ একে তো না বুঝেই কোরআন তেলাওয়াত করছে মুসলমানরা, তার ওপর এখন দেখছি মুসলিমদের আশি শতাংশই নানাভাবে মানুষকে ঠকাচ্ছে, মানুষের ওপর জুলুম করছে, অন্যায় করছে, আবার নামাজও পড়ছে। অনেকে আবার আমার প্রতি বেশি প্রেম দেখাতে মোবাইলে রিং টোন বা ওয়েলকাম টিউন সেট করেছেÑ ‘ও মদিনার বুলবুলি, তোমার নামের ফুল তুলি’, আর কর্মক্ষেত্রে আমার শিক্ষার বিপরীত কাজ করছে। অধীনস্থ কর্মচারীদের নানাভাবে ভোগাচ্ছে। শ্রমিকদেরকে ন্যায্য পারিশ্রমিক দিচ্ছে না। যে পারিশ্রমিক দিচ্ছে, তা পরিশোধ করতেও আরেক মাসের ১৬/১৭ তারিখ পার করছে। কেউ কেউ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য-সামগ্রী এবং পরিবহন ভাড়া, ঘর ভাড়া এমন বেশি করে আদায় করছেÑ যাতে মানুষের ওপর জুলুম করা হচ্ছে বহুগুণে-বহুমাত্রায়। আবার শেয়ার ব্যবসা, বীমা ব্যবসা, মাল্টিলেভেল মার্কেটিংয়ের নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণামূলক কর্মকা- হামেশাই চালিয়ে যাচ্ছে অনেকে। আরব এলাকায় যারা অর্থশালী আছে, তারা আবার আফ্রিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের দরিদ্রদের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালন না করে একের পর এক বিবাহ করছে বা নারী সম্ভোগে ব্যস্ত আছে নানা কৌশলে। এরা সবাই আবার নামাজও আদায় করছেÑ অনেকে নিয়মিত না হলেও। এদের এসব নামাজে স্রষ্টা সন্তুষ্ট হচ্ছেন না। কারণ, মানুষকে যথার্থ মানুষ বানানোর শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যেই নামাজের বিধান চালু করা হয়েছিল। মানুষ যদি সব ধরনের পাপ কাজেই লিপ্ত থাকে, তবে নামাজ পড়ে ফায়দা কি? মানুষ স্রষ্টার নির্দেশ অমান্য করে অমানুষের মতো কাজ করবে, আর নামাজ পড়ার ক্ষেত্রেই কেবল স্রষ্টার নির্দেশ মানবে, এমন নামাজ দিয়ে তো সমাজের ক্ষতি ছাড়া মঙ্গল হচ্ছে না। অতএব, এমন নামাজের কোন মূল্যই নেই স্রষ্টার কাছে। ইদানীং আবার মসজিদে, মাজারে বোমা মেরে মানুষ হত্যাকাণ্ড চলছে। ধর্মের নামে বা ধর্ম রক্ষায় এভাবে মানুষ হত্যাকাণ্ড আমি কখনোই সমর্থন করতে পারি না। মানুষ হয়তো ভুলে গেছে, আমার চলার পথে কাঁটা বেছানো বুড়িকেও আমি আঘাত করিনি। ধর্ম জোর-জবরদস্তি করে যেমন প্রতিষ্ঠা করা যায় না, তেমনি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে ধর্ম রক্ষা করাও যায় না। ধর্মকে টিকিয়ে রাখতে হয় আদর্শ আর মনুষ্যত্ব প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে। কিন্তু বর্তমানে আমার অনুসারী বলে দাবিদাররা আদর্শ ও মনুষ্যত্ব দিয়ে ধর্ম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা না করে বরং ধর্ম নিয়ে বাণিজ্যিক ফায়দা লোটার চেষ্টায় নেমেছে বলেই বিতর্কিত ও নষ্ট হয়ে পড়েছে ইসলামের ভাবমর্যাদা। বাণিজ্যিক স্বার্থ হাসিলেই তারা আজ ইসলাম ধর্ম টিকিয়ে রাখতে চায় মানুষ হত্যা করে হলেও। কিন্তু ইসলাম এমন হত্যাকাণ্ড কখনোই সমর্থন করে না। ইসলামের নাম নিয়ে মানুষ হত্যাকাণ্ড আমার শান্তিনীতির পরিপন্থী। কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ এতো কমে গেছে যে, আমি রীতিমতো ক্রুদ্ধ ও ক্ষুব্ধ মুসলিমদের বেশির ভাগেরই ওপর। এক মণ দুধের মধ্যে ছাগলের ২ টুকরো মল পড়লে সব দুধ যেমন নষ্ট হয়ে যায়Ñ খাবার অনুপযোগী হয়ে পড়ে, তেমনি ইসলাম ধর্মকে নষ্ট করে ফেলেছে আমার মূর্খ অনুসারীরা। ইসলাম ধর্মকে তারা শান্তির বদলে অশান্তির ধর্ম বানিয়ে ফেলেছে। অতএব, মানুষের শান্তির জন্য আপনি যেভাবে মনুষ্যত্বের শিক্ষা প্রচার করতে চান, সেভাবেই করুন। মানুষের প্রতি, মানবজাতির প্রতি দায়িত্ব পালন শুরু করুন।

হযরত মোহাম্মদের (সা.) কথা শেষ হতেই আমার মধ্যে কেমন করে যেন একটা আত্মবিশ্বাস জেগে গেল যে, ইনিই হযরত মোহাম্মদ (সা.) এবং তিনি যা বলছেন, তার সবই সত্য। তার কথামতো মানুষকে মানুষ হবার শিক্ষা দিয়ে গড়ে তোলাই তো আমার প্রধান কাজ। এ দায়িত্ব আমাকে পালন করতেই হবে। মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ‘মানুষ হওয়াই মানুষের ধর্ম’Ñ এই শিক্ষাটা সকলের প্রজ্ঞায় প্রবেশ করাতে হবে। এই উপলদ্ধি আমার প্রজ্ঞায় জাগ্রত হতেই আমি হযরত মোহাম্মদের (সা.) সঙ্গে করমর্দন করলাম। তার হাতের পাতা আমার দুই হাতের পাতার মধ্যে ধরে প্রতিজ্ঞা করার ভঙ্গিতে বললামÑ ‘আপনাকে আমি কথা দিলাম, মনুষ্যত্বের শিক্ষা আমি পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেব।’

আমার কথা শেষ হতেই হযরত মোহাম্মদ (সা.) বিদায় নিলেন। সেইসঙ্গে আমার ঘুমও ভেঙে গেল। কিন্তু ঘুম ভাঙার পরও হাতে হযরত মোহাম্মদের (সা.) হস্তস্পর্শের অনুভূতি রয়েই গেল অনেকক্ষণ ধরে। আর ‘মানুষ হওয়াই মানুষের ধর্ম’Ñ এই শিক্ষাটা পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার প্রতিজ্ঞার কথা আমার ধ্যান-ধারণা, চিন্তা-চেতনায় আজো জাগ্রত রয়েছে সেই থেকে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৯

হোৎকা বলেছেন: রাম ছাগল

২| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:০৬

হোৎকা বলেছেন: হযরত মোহাম্মদের (সা.)কে নিয়ে ফাজলামি রিপোরট করা হলো

৩| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:০৭

মোয়ােজজম হোেসন বলেছেন: মানুষের শান্তির জন্য আপনি যেভাবে মনুষ্যত্বের শিক্ষা প্রচার করতে চান, সেভাবেই করুন। মানুষের প্রতি, মানবজাতির প্রতি দায়িত্ব পালন শুরু করুন।


পুরাই ঘাজা খোরি গলপ.........

৪| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:০৮

হোৎকা বলেছেন: হযরত মোহাম্মদের (সা.)কে নিয়ে ফাজলামি রিপোরট করা হলো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.