![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইবলিসের কূট-কৌশলে মানুষ আর কতকাল দুর্ভোগ সইবে?
কাউসার ইকবাল
স্রষ্টার নামে ইবলিস মানুষকে নির্বোধ বলে প্রমাণের বহু চেষ্টা করেছে এবং মানুষের নির্বুদ্ধিতার কারণে ইবলিস তার প্রচেষ্টাতে সফলও হয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানের এই চরম উৎকর্ষতার যুগে এসেও মানুষ যদি ইবলিসের কৌশলের কাছে পরাজিত হয়ে থাকে, তবে তাতে স্রষ্টাই সবচেয়ে বেশি অপমানিত হন; নির্বোধ স¤প্রদায় সৃষ্টির জন্য।
ধর্মের নামে মানুষ কতোটা নির্বোধ হয়ে আছে, তার সবচেয়ে বড় নজির এটাই যে, মানুষের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ বিশ্বাস করে প্রথম মানব আদমের পাঁজরের হাড় দিয়ে প্রথম মানবী ইভ বা হাওয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। একজন পুরুষের পাঁজরের হাড় দিয়ে একজন নারীর পাঁজরের একটি হাড়ই সৃষ্টি সম্ভব। কিন্তু মেরুদণ্ডসহ পাঁজরের অনেকগুলো হাড় সৃষ্টি কখনোই সম্ভব হতে পারে না। মানুষের সংখ্যাগরিষ্ঠই ‘ঈমান’ বা বিশ্বাস না হারানোর জন্য এমন এক কাহিনী বিশ্বাস করে চলেছে, যাতে মানুষ নামক প্রাণীটাকে স্রষ্টা যে বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে প্রমাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন, স্রষ্টার সেই উদ্দেশ্যই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। যদিও মানুষেরা বিশ্বাস করছে যে, স্রষ্টা প্রবর্তিত গ্রন্থেই যেহেতু এমন কাহিনী বর্ণিত হয়েছে, সেহেতু এমন কাহিনী বিশ্বাস করতেই হবে। কিন্তু এমন কাহিনী সত্যই কি স্রষ্টা কর্তৃক বর্ণিত, নাকি যে ফেরেশতা বা স্বর্গীয় দূত মানুষকে মূর্খ বলে প্রমাণে সচেষ্ট তার সৃষ্ট, এ বিষয়ে ভাববার যথেষ্ট অবকাশ আছে বৈকি। কারণ, ফেরেশতা বা স্বর্গীয় দূতের মাধ্যমে প্রচারিত ধর্মগ্রন্থেই এ কাহিনী রয়েছে। আর ফেরেশতা বা স্বর্গীয় দূত প্রচারিত ধর্ম যারা বিশ্বাস করে চলেছে, তারাই পৃথিবীতে জ্ঞানে-গুণে অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে আছে। এতে একটা কথা অন্তত স্পষ্ট। আর তা হচ্ছে, মানুষকে বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে সৃষ্টিই যদি স্রষ্টার উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, তবে সেই উদ্দেশ্য পূরণ করে চলেছে তারাই, যারা ধর্মগ্রন্থ দিয়ে প্রভাবিত নয়, বরং নিজের বিবেক-বুদ্ধি দিয়েই সৃষ্টিশীলতায় নিয়োজিত। যারা ধর্মকর্ম নিয়ে বেশি ব্যস্ত এবং মসজিদ-মন্দির-গীর্জা-প্যাগোডায় পড়ে আছে, তারাই মূলত মূর্খতার বৃত্তে বন্দি। যদিও তাদের কাছে পরকালীন চিন্তাটাই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় বলে বিবেচিত। কিন্তু স্রষ্টা যে প্রত্যেককে বিবেক দিয়েছেন, সৃষ্টিশীলতায় কিংবা মেধা খাটিয়ে মানুষের জন্য কল্যাণমূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে, স্রষ্টার সেই উদ্দেশ্যকে ব্যর্থ করে দিতে স্রষ্টা কেন মানুষকে মসজিদ-মন্দির-গীর্জায় পড়ে থাকতে বলবেন? মানুষের সৃষ্টিশীলতা কিংবা কর্মক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয়া স্রষ্টার কাজ হতে পারে না। মানুষের বন্ধুবেশী স্রষ্টার দূত বলে কথিত সেই দুষ্ট ফেরেশতার পক্ষেই কেবল এ কাজ করা সম্ভব। মানুষকে মূর্খ প্রমাণ করতে পারলে তার যে দুটো লাভ। এক. সে যে মানুষকে সিজদা না দিয়ে ভুল করেনি, তা স্রষ্টার কাছে প্রমাণ করা। দুই. মানুষকে উপাসনার নামে দুর্ভোগে রেখে তার শত্র“টা পূর্ণ করা। মানুষ সেই দুষ্ট ফেরেশতার কৌশল ধরতে না পেরে মূর্খ হয়ে নানাভাবে নিজেদের আনন্দময় জীবনের সম্ভাবনাকে নষ্ট করছে। সেইসঙ্গে নিজেদের মধ্যে ধর্মীয় বিভেদ টেনেই হানাহানিতে লিপ্ত থাকছে বেশি। এই নির্বুদ্ধিতা থেকে রেহাই পেতে স্রষ্টার দূত বা ফেরেশতা বর্ণিত সকল কাহিনীর প্রভাব থেকেই মানুষকে মুক্ত হতে হবে। কেননা, স্রষ্টা প্রতিটি মানুষের অন্তরে বসে প্রতিটি মানুষের সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম। অতএব, স্রষ্টাকে তার বাণী বা নির্দেশনা পৌঁছানোর জন্য কোন ফেরেশতারই দরকার নেই। আর স্রষ্টা মানুষের আনন্দময় জীবনযাপনের পক্ষেই অবস্থান নেন এবং স্রষ্টাকে মানুষের শ্রদ্ধা বোঝার জন্য নির্দিষ্ট ৫টি ওয়াক্ত নির্বাচনেরও কোন দরকার নেই। মানুষ যে সময়েই তাঁকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধা জানাবে, স্রষ্টা সে সময়েই তাঁর শ্রদ্ধা সম্বন্ধে বুঝতে সক্ষম। আর স্রষ্টা ছাগল নন যে, তাকে ছাগলের রূপ ধরে শ্রদ্ধা না জানালে তিনি মানুষের শ্রদ্ধা সম্বন্ধে বুঝবেন না। মানুষকে এ বিষয়গুলো সম্বন্ধে অনুধাবন করতে হবে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১৫
আজমান আন্দালিব বলেছেন: পছন্দ।