![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সমাজে দুষ্ট নেতৃত্ব সৃষ্টি হওয়ার
জন্য ইমাম-আল্লামারাই দায়ী
কাউসার ইকবাল
হযরত মোহাম্মদ (সা.) তার সমাজে সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দিতে পেরেছিলেন এ কারণেই যে, তিনি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে চেষ্টা করেছিলেন এবং নামাজ পড়ানোর বিনিময়ে অর্থ রোজগারের কোন চিন্তা করেননি। তার অনুসরণকারী ইমামরাও যদি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে চেষ্টা করতেন ব্যবসা বা অন্য কোন পেশা বেছে নিয়ে, তাহলে তারা সমাজের সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতেন। কিন্তু তারা সে বিষয়ে সচেষ্ট না হওয়ায় সমাজের নেতৃত্ব স্রষ্টার অনুগামীদের মধ্যে না থেকে শয়তানের অনুগামীদের মধ্যে চলে গেছে। আর সেই সুযোগে সমাজের ভণ্ডরাই এখন ক্ষমতাধর ব্যক্তিত্ব যার যার সমাজে।
এ বিষয়টাও লক্ষণীয় যে, ইমাম পদবীধারীরা সমাজের নেতৃত্ব দিতে অপারগ হলেও মোহাম্মদ (স.) এর প্রতি তাদের রয়েছে অগাধ প্রেম। তাঁর ওফাত দিবসে বিশাল বিশাল জসনে জুলুস বের করে নবীপ্রেম দেখাতে তাদের সেকি প্রাণান্ত চেষ্টা! নবীর বিষয়ে তাদের ধর্মীয় অনুভূতিও প্রবল। নবীর বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তার কল্লা কেটে নিতেও তারা একমুহূর্ত ভাবার অবকাশ নেয় না। কিন্তু ‘মোহাম্মদ’ নাম আজকাল চোর-ডাকাত-ব্যভিচারী-খুনি-দুর্নীতিবাজ-ভণ্ড-প্রতারক অনেকেই ব্যবহার করছেন। এতে করে চোর-ডাকাত-ব্যভিচারী-খুনি-দুর্নীতিবাজ-ভণ্ড-প্রতারকসহ নানা অপরাধে অপরাধীরা যে ‘মোহাম্মদ’ নামের বলাৎকার করছেন, এ বিষয়ে তাদের কোন ধর্মীয় অনুভূতি জাগে না। ‘মোহাম্মদ’ নাম ব্যবহার করলে তার যে পাপ করার কোন অধিকারই নেই, এ বিষয়ে কাউকে কোনপ্রকার জ্ঞান দিতে পর্যন্ত দেখা যায় না। যে কারণে থানায় অপরাধীর নাম রেকর্ডে কিংবা পত্রিকার পাতায় ছাপানোর সময় বিভিন্ন অপরাধে অপরাধীর নামের সঙ্গে ‘মোহাম্মদ’ নাম ছাপা হচ্ছে। এতে যে কার্যত মোহাম্মদকে ভীষণভাবে অপমানিত করা হচ্ছে, তা বোঝার জ্ঞান ‘আল্লামা’ খেতাবধারীদেরও কেন যে হলো না, তা সত্যিই বিস্ময়কর। আল্লামাদের নবীপ্রেম নিয়ে তাই সন্দেহ পোষণ করা যায়। আল্লামারা ঢাকার বায়তুল মোকাররমের সামনে অনেক সময়ই বিক্ষোভ মিছিল বা সমাবেশ করেছে। কিন্তু বায়তুল মোকাররমের এক মাইলের মধ্যেই চারপাশে শত রকমের অপরাধ ঘটলেও সেসব অপরাধ বন্ধে বা অপরাধীদের শাস্তি দিতে কোনপ্রকার ভূমিকা দেখা যায়নি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে যে শঠতা-ভণ্ডামি, তা প্রতিরোধেও তাদের কার্যকর ভূমিকা দেখা যায়নি। আর ‘মোহাম্মদ’ নাম ধারণকারী অনেক রাজনীতিবিদের মুখ দিয়ে সমাজে অশান্তি ছড়ানোর সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টা চলছে। কিন্তু এ ধরনের ব্যক্তিদেরও যে ‘মোহাম্মদ’ নাম ব্যবহারের অধিকার নেই, সে বিষয়েও আল্লামাদের কিংবা নবীপ্রেমিক দাবিদারদের কখনো সোচ্চার হতে দেখা যায়নি। কাজেই সমাজে অশান্তি ও পাপ দিনের পর দিন বেড়েছে। সেইসঙ্গে কলুষিত হয়েছে ‘মোহাম্মদ’ নামটিও।
স্কুলের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে হাজির থেকে মূল পাঠ গ্রহণের জন্য যথাসময়ে পিটি ক্লাসে উপস্থিত হবার কড়াকড়ি আরোপ করেন প্রধান শিক্ষক বা পিটি’র শিক্ষক। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, পিটি ক্লাসে যে নিয়মিত হাজির থাকে, সে-ই বিদ্যালয়ের মূল পাঠে ভালো বা মেধাবী ছাত্র। ধর্মগুলোতেও ধর্মের মূল পাঠ শেখানোর জন্য ‘পিটি ক্লাস’র ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু ‘পিটি ক্লাস’ এ নিয়মিত হাজির থাকা ব্যক্তিই যে উত্তম ধার্মিক হবেন, তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না। উত্তম ধার্মিক সে-ই, যে ধর্মের মূল পাঠ গ্রহণ করে মনুষ্যত্ববাদী হয়েছে ও পাপমুক্ত থেকে জীবনযাপন করতে পারছে। এ কথাটা যেমন ‘ধর্মজ্ঞানী’ বলে দাবিদাররা অনেকেই ঠিকমতো বোঝেনি, তেমনি তারা ধর্মগ্রন্থের উপমাগত অনেক কথাও বুঝতে অক্ষম হয়েছে। আবার ‘আমল’ ও ‘ইবাদত’ শব্দের অর্থও ঘুলিয়ে ফেলেছে। ‘আমল’ শব্দের অর্থ হচ্ছে কাজ। ‘নেক আমল’ শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘ভালো কাজ’। স্রষ্টার প্রতি নির্ধারিত সময় ইবাদত বা প্রার্থনার পর নেক আমল বা ভালো কাজে নিজেদের নিয়োজিত করার কথাই বলা হয়েছে ধর্মে। কিন্তু ভিন্ন কথা বুঝিয়ে মুসলিমদের কর্মবিমুখ করে রেখেছে ইমাম বা ‘আল্লামা’রা, যাতে তাদের ধর্মবাণিজ্যে লাভ হয়। মসজিদের দানবাক্সে যেন বেশি করে অর্থ জমা পড়ে, আর তারা যাতে অধিক অর্থ আয় করতে পারে। এ কারণে সমাজব্যবস্থায় প্রকারান্তরে কর্মবিমুখ শ্রেণী সৃষ্টি হবার পাশাপাশি সমাজে অপরাধপ্রবণতাও বেড়েছে। কোরআন-বাইবেলে প্রথম মানব আদম (আ.) ও প্রথম মানবী ইভ বা হাওয়া (রা.)-র যে কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে, তাতে স্রষ্টা মূলত মানুষকে এটা বোঝানোর চেষ্টাই করেছেন যে, মানুষের জীবনব্যবস্থা তিনি এমনভাবে সাজিয়েছেন যাতে জন্মলাভের পর মানুষ একটা সময় পর্যন্ত নগ্নতা সম্বন্ধে জ্ঞান রাখবে না; সেই সময়টা পর্যন্ত তার জীবনটা স্বর্গীয়। এরপর যখন তার নগ্নতা সম্বন্ধে বোঝার জ্ঞান হবে, তখন তাকে কাজ শুরু করতে হবে। সে সেই সময়টায় কাজের মাধ্যমে নিজেকে যেভাবে গড়ে তুলবে তার ওপরই নির্ভর করবে তার পরবর্তী জীবনের সুখ-দুঃখ। সেইসঙ্গে এ কাহিনীতে মানুষের জন্য এ নির্দেশনাও রয়েছে যে, তোমরা যখন স্বামী-স্ত্রীতে সুখে-শান্তিতে জীবনযাপন করবে, তখন তৃতীয় কোন ব্যক্তি স্বর্পের ন্যায় বিষ নিয়ে কিংবা ইবলিসের ন্যায় তোমাদের প্রলুব্ধ করে তোমাদের সংসার ভাঙতে বা অন্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে সচেষ্ট হবে। তার ক্ষতি থেকে তোমরা সতর্ক থেকো এবং তোমাদের যে অবস্থায় রাখা হয়েছে, তাতেই সন্তুষ্ট থাকার চেষ্টা কোরো। তাহলে তোমরা দুষ্টদের বন্ধু সেজে ক্ষতি করা থেকে রক্ষা পাবে। অর্থাৎ, কোরআন-বাইবেলের কাহিনীতেও মানুষকে কাজের ওপর জোর দেয়ার শিক্ষা দেয়া হয়েছে। কিন্তু ধর্মের ভুল শিক্ষা দিয়ে নিজেরা লাভবান হওয়ার চেষ্টায় ইমাম বা আল্লামা শ্রেণী সমাজকে দুষ্ট নেতৃত্বের কাছে যেমন সঁপে দেয়ার জন্য দায়ী, তেমনি মানুষের স্বাভাবিক সুখ-শান্তিলাভেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী।
মোদ্দাকথায়, এখনকার ইমাম বা আল্লামা দাবিদার শ্রেণী তাদের ওপর অর্পিত ধর্মীয় দায়িত্ব অনুধাবনে ও পালনে ব্যর্থ। তাই তাদের উচিত, স্ব স্ব পেশাগত অবস্থান ত্যাগ করে নতুন পেশা গ্রহণে সচেষ্ট হওয়া। যাতে সমাজকে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল করার দায়িত্ব সৎ-স্বাবলম্বী ও নীতিপরায়ণ ব্যক্তিরা গ্রহণ করতে পারে।
২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৩
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুন বলেছেন।
ধন্যবাদ।
এই সত্যকে আড়াল করে রাখা হয়েছে বলেই তারা মৌখিক ভাবে ইমাম উপাধী নিয়েও মানুষের দান ব্যক্তিখাতে হাত পেতে নেয়!!!!
অথচ এলাকার চলতি নেতার কাচৈ সকলে যায় কিছূ পেতে.. অনুদান, সাহায্য..
গ্রহীতা থেকে দাতা হবার যোগ্যতা জ্ঞান এবং অনুভব তাদের মাঝে আসতে হবে। আর এর শূল বাঁধা কথিত সেকুলার গোষ্ঠির ধর্ম আর রাজনীতি পৃথক তন্ত্রে মন্ত্রে!!!
জীবনের মৌলিক কাঠামোতে চলার পথকে আচার উপসনা সর্বস্ব ধর্মীয় মোড়কে আবদ্ধ করে রেখে তারা দুনিয়া দাবড়ে বেড়াচ্ছে!!!!
+++
৩| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৬
নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: মোহাম্মাদ তৌহিদুল হক এবং বিদ্রোহী ভৃগু এর
উত্তর আশা করছি জনাব কাউসার ইকবাল।
৪| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২০
হুতুম বলেছেন: খুব ভাল বলেছেন ... আল্লাহ্ সব্বাইকে বোঝার টাঊফীক দান করুণ।-আমীন
৫| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৫৭
অবিবাহিত ছেলে বলেছেন: আপনার কথায় যুক্তি আছে ।
৬| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩৫
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আমি কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ ডিগ্রি ধারী এক আলেমকে বলতে শুনেছি , তিনি ক্ষোভের সহিত বলেছিলেন , আমাদের দেশের মসজিদের ইমাম দের যদি মসজিদের , আয় ব্যয় বা উন্নয়ন মুলক কোন কাজের সাথে না জড়িয়ে , শুধু মাসিক প্রাপ্য সন্মানি টুকু দেয়া হয় ,তাহলে ৯৫ ভাগ ইমাম ইমামতি ছেড়ে দিবে ।
উনি যথার্থই বলেছেন । এজন্যই দেখা যায় ,মসজিদের উন্নয়ন কাজ কেয়ামত পর্যন্ত শেষ হয় না ।
আপনার লিখাটা ভাল লাগলো ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৫
মোহাম্মাদ তৌহিদুল হক বলেছেন: আদম (আ.) ও হাওয়া (রা.) যে ফল খেয়ে ছিলেন তার জন্য স্বয়ং আল্লাহ তাদের শাস্তি দিয়েছিলেন, আবার তার যে ফল খাবেন তাও আল্লাহ জানতেন। নবী ও রাসূলদের কোনো গুনাহ নাই আর আল্লাহ অতি পবিএ।
আল্লাহ এখান এ শিক্ষা দিয়েছেন অনেক কিছু তার অন্যতম দিক অপরাধ করলে শাস্তি হবে ও যার গুনাহ তার ব্যক্তিগত।
চোর-ডাকাত-ব্যভিচারী-খুনি-দুর্নীতিবাজ-ভণ্ড-প্রতারকদের গুনাহ তার ব্যক্তিগত, আল্লাহ তাদের শাস্তি দিবেন এবং মানুষকে সে নীতি আইন যমীনেও এ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
"মোহাম্মদ" নামটি আল্লাহ শেষ নবীর উম্মতের জন্য নিদধারন করেছেন। চোর-ডাকাত যদি শেষ নবীর উম্মত হয়েও তার অপব্যবহার করে তার দায় তার ব্যক্তিগত।
আপনি আামি তাকে সত্যের পথে আহ্বান জানাতে পারি ও প্রয়োজন এ তাকে আল্লাহর নিধারিত নিয়ম অনুযায়ী শাস্তি দিতে পারি।
কিন্তু তার দায় আপনার আমার নয়।
সাংবাদিকতা আপনার পেশা কিন্তু তার মানে এই না আপনি কাউকে কিছু জানতে পারবেন না। তার মানে এই না আপনি পারিশ্রমিক নিতে পারবেন না। আর আপনি যদি তার অপব্যবহার করেন তার দায় আপনার।
ইমাম-আল্লামারা তাদের দায়িত্ব পালন করে আপনাকে আমাকে সত্যের পথে আহ্বান এর মাধ্যমে। ২-১ জন ব্যতিক্রম।
সুতরাং ইমাম-আল্লামারাদের উপর দায় না চাপয়ে আমাদের উচিত স্ব স্ব অবস্থান ভাল করা।