![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পশুত্ববাদী রাজনীতির অবসানে দরকার গণজাগরণ
কাউসার ইকবাল
নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে শুরু হওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কটে ১৯৯৪ সাল থেকে অদ্যাবধি কতজন প্রাণ হারিয়েছেন এবং কতজনের অঙ্গহানিসহ আগুনে শরীর পুড়েছে, তার হিসেব বের করা কঠিন। তবে সহজে যে কথাটি বলা যায়, এ দেশের জনগণের দোষেই রাজনীতিবিদদের পশুত্ববাদী রাজনীতি দেশে টিকে আছে।
১৯৭০ সালে পাকিস্তানি স্বৈরশাসকের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জয়ী হয়েছিল। সেই আওয়ামী লীগই এদেশে খালেদা জিয়ার সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণে সম্মত ছিল না। যে কারণে তারা বিএনপির ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ আমলে ১৭৩ দিন হরতাল-অবরোধ-অসহযোগ আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিতে বিএনপি সরকারকে বাধ্য করেছিল। ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার বহু রক্তপাতের বিনিময়ে আদায় করা নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার প্রেক্ষিতে এ ইস্যুতে ফের রক্তপাতের ধারা বয়ে চলেছে এদেশে। তবে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে যে, ‘‘ডাকাত চোরকে বিদ্রুপ করে বলে ‘তুইতো ব্যাটা চোর’; নিজের দোষ ডাকাত দেখে না”Ñ এমন দোষারোপের রাজনীতিই এদেশে চলমান বহুদিন ধরে। আর দেশের মানুষ ১৯৭১ সালে নিজেদের অধিকার রক্ষায় তথা আত্মরক্ষায় যেমন ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে নেমে পড়েছিল, তেমন করে নিজেদের প্রকৃত শত্র“ চিহ্নিত করে আজো এদেশের রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে মাঠে বা রাস্তায় নামতে পারেনি। যে কারণে পালাবদল করে জনগণ একেক সময়ে একেক নেত্রীর আহ্বানে নিজেদের দুর্ভাগ্য ক্রয় করে দুষ্ট রাজনীতিবিদদের ভাগ্য গড়তে ভূমিকা রেখে চলেছে। বিএনপি-আওয়ামী লীগের নেতারা ক্ষমতালাভের স্বার্থেই জনগণকে বোকা বানাতে একে অপরের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে চলেছে। আর জনগণও বোকা হয়ে থাকার কারণে এটা বুঝতে অক্ষম যে, উভয় দলের রাজনীতিবিদেরাই মূলত তাদের শান্তিময় জীবনযাপনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় শত্র“। কারণ, সাধারণ মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য যারা দায়ী, তারা কোনভাবেই জনগণের প্রকৃত বন্ধু হতে পারে না। আর সাধারণ মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করার দায়ে বিএনপি-আওয়ামী লীগ উভয় দলের রাজনীতিবিদেরাই সমভাবে দায়ী।
একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, চলমান সংকট নিরসনে বিএনপি কিংবা আওয়ামী লীগের নেতারা কাউকে কোনপ্রকার ছাড় দেবে। উভয় দলের নেতারাই তাদের সা¤প্রতিক বক্তব্যেও এ বিষয়ে ইঙ্গিত রেখেছেন যে, প্রতিপক্ষকে কোন ছাড় নয়। কিন্তু এতে লাভ-ক্ষতি কার কতোটা, একথা জনগণকেই বুঝতে হবে। কারণ, উভয়ের বিরোধের মাশুল বরাবরই জনগণকেই দিতে হচ্ছে এবং জনগণকেই দিতে হবে এ অবস্থা যতদিন জনগণ চলতে দেবে ততদিন পর্যন্ত। প্রশ্ন হচ্ছে, জনগণ কি এভাবেই নিরন্তর মাশুল গুনতে প্রস্তুত? নাকি রাজনীতিবিদদের থেকে মাশুল আদায়ে তৎপর হবে এবার। সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার জনগণেরই।
জনগণ অতীতে যেমন দুষ্টদের দমনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, তেমন ঐক্যই কেবল পারে জনগণের আত্মরক্ষার ঢাল হতে। নাহলে জনগণ কেবল মাশুলই দিয়ে যাবেÑ আগুনে পুড়ে, বোমায় মরে, পঙ্গুত্বের কষ্ট ভোগ করে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:১৫
নিলু বলেছেন: লিখে যান