![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জানোয়ার হওয়া মানুষের শোভা পায় না
কাউসার ইকবাল
মানুষের মধ্যে ভিন্নমত থাকতেই পারে। তাই বলে ভিন্নমতের অধিকারীকে হত্যা করতে হবে, এটা যারা মনে করে তারা তো হযরত মোহাম্মদ (সা.), ঈসা (আ.), কিংবা দার্শনিক সক্রেটিসকে যারা হত্যার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল, তাদের মতোই একই অপরাধে অপরাধী।
ভিন্নমতের অধিকারীকে হত্যা করতে হবে, এমন চিন্তা কেবল অমানুষদের পক্ষেই করা সম্ভব। মানুষের পক্ষে এমন কাজ শোভনীয় নয়। আর ইতিহাসের আলোকে দেখা গেছে, ভিন্নমত পোষণকারীর অনেক মত পরবর্তীকালে সমাজে সুন্দর মত হিসেবে গ্রহণীয় হয়েছে। এভাবে অনেক কুসংস্কার ও মিথ্যে থেকে মানুষ মুক্ত হয়েছে। একইভাবে, ভিন্নমতের কারণে ভবিষ্যত মানুষেরাও অনেক মিথ্যে থেকে মুক্ত হয়ে সত্য সম্বন্ধে জানার সুযোগ পেতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে মানবসমাজের উন্নয়ন ঘটানোর জন্যই। মানুষ যদি বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা না করতো, তবে আধুনিক জীবনধারার জন্য প্রয়োজনীয় যেসব উপকরণ, যেমন- বৈদ্যুতিক বাতি, ফ্রিজ, টেলিভিশন, কম্পিউটার, ইন্টারনেট এসব সুবিধাভোগে বঞ্চিত হতো। তবে ধর্মীয় অন্ধবিশ্বাসের কারণে এখনো এমন অনেক লোক আছে, যারা এসব সুবিধা ভোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কারণ, তাদের অনেকের ধারণা, টেলিভিশন দেখা বা ইন্টারনেটে বিনোদনের যে সমস্ত ব্যবস্থা রয়েছে, তা উপভোগ করা পাপ; যদিও একাধিক সুন্দরী নারীকে পরবর্তী জীবনে সঙ্গী হিসেবে লাভের লোভেই তারা ধর্মকর্ম করছেন। যদি একাধিক সুন্দরী নারীর রূপ দর্শন পরবর্তী জীবনে জায়েজ হতে পারে, তবে এ জীবনে সেই সুযোগ টেলিভিশন বা ইন্টারনেটে থাকলে তা উপভোগে পাপ হবে কেন, এ চিন্তা তারা করে না। কিংবা ভিন্নমত হিসেবে যদি বলা হয়, স্রষ্টা সুন্দরী নারী দেখার যে সুযোগ দানের কথা হাজার বছর পূর্বের কিতাবে বলেছেন, সেই যুগ তো তিনি ইতিমধ্যেই চালু করে দিয়েছেন। প্রযুক্তির কারণে বর্তমানে আমেরিকান-ইউরোপিয়ান-চাইনিজ-জাপানিজ-এরাবিক-ইন্ডিয়ান সব এলাকার সুন্দরী নারীদের পৃথিবীর অপর প্রান্তের লোকেরাও দেখতে পাচ্ছে; যা হাজার বছর, এমনকি বিশ বছর পূর্বেও কঠিন ছিল। এখন যদি বলা হয় যে, প্রযুক্তির কারণে যেসব মেয়েদের রূপ দেখা সহজ হয়ে গেছে, তাদের রূপ দর্শন পাপময় কাজ, তবে তো এ প্রশ্নও তোলা যাবে যে, স্রষ্টা তাহলে পরবর্তী জীবনে সুন্দরী মেয়েদের রূপ দর্শানোর লোভ দেখিয়ে মানুষের শ্রদ্ধা আদায়ের চেষ্টা কেন করেছেন? মতের ভিন্নতা মানুষের থাকতেই পারে। ভিন্নমত পোষণ করে সুন্দরী মেয়েদের রূপ দর্শনে কোন পাপ নেই, এ কথাও অনেকেই বলতে পারে। তাই বলে তাকে হত্যা করা কি ধর্মীয় কাজ বা পুণ্যময় কাজ হবে?
মানুষ হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, তারা ধর্মীয় কারণেই করুক কিংবা ব্যক্তিগত স্বার্থে, সহজভাবে বললে এমন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্তরা অমানুষ গোত্রের লোক হিসেবেই নিজেদের প্রতিষ্ঠা করছে। কারণ, মানুষ হত্যা করা জানোয়ারের ন্যায় কাজ ছাড়া কিছু নয়। আত্মরক্ষার্থে অমানুষকে হত্যা করা উচিত হলেও যে অমানুষ, তাকে আইনের আওতায় সঁপে দেয়া সম্ভব থাকলে তা করাই উচিত সামাজিক শান্তির স্বার্থে। কিন্তু তা না করে নিজ উদ্যোগে মানুষ হত্যার চেষ্টা করলে তা জানোয়ারের কাজ বলেই বিবেচিত হবে। আর জানোয়ারের ন্যায় কাজ করা মানুষের জন্য শোভনীয় নয়।
২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:২৬
মানুষ ধর্ম বলেছেন: মুহাম্মদ নিজেই বহু হত্যা করে গেছেন সো তার উম্মত রা তাই অনুসরন করবে
আমি সন্ত্রাসের মাধ্যমে বিজয়ী হয়েছি।(বুখারি ৫২:২২০)
তরবারির ছায়ার নিচে বেহেশত।
(বুখারি ৫২:৭৩)
অবিশ্বাসীকে হত্যা করা আমাদের জন্য একেবারেই ছোট্ট একটি ব্যাপার।
(তাবারি ৯:৬৯)
এ ছাড়া, আল্যা-রসুলকে স্বীকার না করা পর্যন্ত অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার নির্দেশ দেয়া আছে বুখারী ৮:৩৮৭-এ ও মুসলিম ১:৩৩-এ।
ইবন ইসহাক/হিশাম ৯৯২-এ পাওয়া যাচ্ছে নবীজির নির্দেশনা:
যারা আল্লাহকে অবিশ্বাস করে, তাদেরকে হত্যা করো।
কয়েকটি ঘটনা:
১. নবী ও তার অনুসারীদের আগ্রাসী নৃশংস সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মৌখিক প্রতিবাদ ও সমালোচনা করেছিলেন বলে ১২০ বছর বয়সী অতি বৃদ্ধ ইহুদী কবি আবু আফাককে নবীর আদেশে হত্যা করে তার অনুসারীরা।
২. আবু আফাক-কে হত্যার পর আসমা-বিনতে মারওয়ান তাঁর বিদ্বেষ প্রকাশ করলে নবীর নির্দেশে রাতের অন্ধকারে ঘুমন্ত নিরস্ত্র এই জননীকে নৃশংসভাবে খুন করে নবীজির এক চ্যালা। ঘাতক যখন এই জননীকে খুন করে, তখন এই হতভাগা মা তাঁর এক সন্তানকে বুকের দুধ পান করাচ্ছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডের পর প্রত্যুষে খুনী তার প্রিয় নবী মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহর সাথে একত্রে সকালের নামাজ (ফজর) আদায় করে।
৩. কাব বিন আল-আশরাফ নামের এক ব্যক্তি আল্লাহর নবীর কাজের নিন্দা করা শুরু করেন ও বদর যুদ্ধে যাদেরকে খুন করার পর লাশগুলো গর্তে ফেলে দেওয়া হয়েছিল, তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন কবিতা আবৃতির মাধ্যমে। তাঁকেও নির্দয়ভাবে খুন করে নবীর উম্মতেরা।
আল খাদরি হতে বর্ণিত: কিছু যুদ্ধবন্দিনী আমাদের করায়ত্ত হলে আমরা তাদের সাথে আজল পদ্ধতিতে ছহবত করতে চাইলাম। আমরা এ প্রসঙ্গে মুহাম্মাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি আমাদের বললেন - নিশ্চয়ই তোমরা তা করতে পার, নিশ্চয়ই তোমরা তা করতে পার, নিশ্চয়ই তোমরা তা করতে পার।
(সহি মুসলিম ৮:৩৩৭৩)
আবু সাইদ আল খাদরিকে বলেন: হে আবু সাইদ, তুমি কি মুহাম্মাদকে আজল সম্পর্কে বলতে শুনেছ? তিনি বললেন- হ্যাঁ, শুনেছি। আমরা মুহাম্মাদের সাথে বানু মুস্তালিকের বিরুদ্ধে অভিযানে গিয়েছিলাম। সেই অভিযানে কিছু অপূর্ব আরব রমণী আমাদের হস্তগত হয়। বহুদিন যাবৎ স্ত্রীসঙ্গ হতে বঞ্চিত ছিলাম বিধায় আমরা গভীরভাবে তাদের কামনা করছিলাম, সেইসঙ্গে তাদের বিনিময়ে মুক্তিপণ পাওয়ার লোভও ছিল আমাদের। সুতরাং আমরা তাদের সাথে আজল পদ্ধতির মাধ্যমে ছহবত করার সিদ্ধান্ত নিই, কিন্তু আমাদের মনে হলো - আমরা একটি কাজ করতে যাচ্ছি; আল্লাহর রাসুল মুহাম্মাদ যখন আমাদের মাঝে আছেন, তখন তার কাছে জিজ্ঞেস করে নিই না কেন? সুতরাং আমরা আল্লাহর রাসুলকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন - তোমরা এরূপ কর আর না কর, কিছুই এসে যায় না। যে আত্মা জন্মানোর তা জন্মাবেই, পুনরুত্থানের দিন পর্য্যন্ত।
(সহি মুসলিম ৮:৩৩৭১)
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৭
রুপম হাছান বলেছেন: ভাই কাউসার ইকবাল আপনি যথেষ্ট সুন্দর লিখেছেন। আমি ও সহমত প্রকাশ করছি।
যাদের উদ্দেশ্যে আপনি লিখেছেন ঠিক তাদেরকে আমি ও বলছি, তারা কি হযরত উমর (রা.) এর জীবন কাহিনী সম্পর্কে জানে না!? যিনি ছিলেন ইসলামের প্রধান কিংবা দ্বিতীয় শত্রু। যে দু'জনের জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের হাবিব, জনাবে মুহম্মদ (স.) ইসলাম কবুলের জন্য দোয়া করেছিলেন। তার মধ্যে একজন হলেন সেই উমর (রা.)। অতপর সেই তিনিই হলেন ইসলাম এর দ্বিতীয় খলিফা। সুবহানাল্লাহ।
প্রতিটি আস্তিক কিংবা মুসলিম বলে দাবী করে এমন লোকদের জানা উচিত, ইসলাম কখনো বাড়াবাড়ি পছন্দ করে না। তবে আপনি যুক্তি দেখাতে পারেন সঠিক ও গ্রহণযোগ্য পন্থায়। ধন্যবাদ।