নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রবন্ধ ও ফিচার লেখতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। পাশাপাশি গল্প, অনুবাদ, কবিতা ও রম্য লেখি। আমি আশাবাদী মানুষ।
রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। আমাদের দেশে নীতি ও আদর্শহীন রাজনৈতিক দল ও নেতাদের ডিগবাজি বোঝাতে কথাটি বেশ প্রচলিত। তবে রাজনীতি শব্দটির মাঝে আভিজাত্যের ছোয়া আছে। কেমন যেন রাজকীয় একটি আবহ পাওয়া যায়। তবে 'পলিটিক্স' শব্দটি আমাদের সমাজে নেতিবাচক অর্থে বেশী ব্যবহৃত হয়। ব্যক্তি ও সমাজে নীতি এবং আদর্শের বিচ্যুতির ক্ষেত্রে অনেক সময় পলিটিক্স শব্দটির প্রয়োগ ঘটে। যেমন, কেউ কোথাও ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা করলে আমরা বলি এখানে পলিটিক্স চলবে না। কেউ দু'টি পক্ষের মধ্যে উসকানি দিলে, চালবাজি করলে সেক্ষেত্রেও বলি এক্কেবারে পলিটিক্স শিখিয়ে দেব ইত্যাদি। আর জোটবদ্ধ পলিটিক্স হলে বুঝি অনেকগুলো লোক/পক্ষ কোন খারাপ উদ্দেশ্যে মিলিত হয়ে সমাজের কোন ক্ষতি করছে বা করার প্লানে আছে। তবে পলিটিক্স বাদ দিয়ে 'রাজনৈতিক জোট/মহাজোট' নাম দিলে শুনতে তেমন খারাপ লাগে না।
ঐক্যজোট, মহাজোট, ঐক্যফ্রন্ট সবই হলো ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি। এখানে নীতি-আদর্শ আর গণতন্ত্রের সবক হলো ভন্ডামী আর কোটিপতি হওয়ার হাতিয়ার মাত্র। 'ঐক্যফ্রন্ট' নামধারীরা 'মহাজোট' নামধারীদের ল্যাং মেরে ক্ষমতায় যেতে চায়; আর 'মহাজোট' নামধারীরা পারলে বিনা ভোটে ঐক্যফ্রন্টকে ধোঁকা দিয়ে আবার ক্ষমতার মঞ্চে দাদাগিরি করতে চায়। এজন্য ভোটের আগে চলে একজোট অন্যজোটকে ঠকানোের কুটনামি। এরা কৌশলে, প্রয়োজনে ভোট চুরি করে, খুন খারাপি করে একে অন্যকে হারিয়ে 'মানণীয় সংসদ সদস্য' হতে চায়। আবার দুই পক্ষই সাধারন ভোটারদের ঠকাতে চায় সুকৌশলে। ভোটের দিন এরা ঠিকই ভোটারদের ঠকিয়ে ক্ষমতায় বসে। আর গণতন্ত্র নামক আমাদের "আলাদীনের চেরাগ তন্ত্র" পাঁচ বছরের জন্য তাদের রক্ষাকবচ হয়।
কয়েক বছর আগে লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপলে এক বাংলাদেশী ভদ্রলোকের সাথে পরিচয়। কথা প্রসঙ্গে জানতে পারলাম তিনি বাংলাদেশের একজন নামকরা রাজনীতিবিদ। ১৪ দলীয় জোটের শরীক একটি দলের প্রধান। কিছুদিন হল লন্ডনে বেড়াতে এসেছেন। তাঁকে চিনতে না পারার অজ্ঞতার জন্য লজ্জিত হলাম। অনেক চেষ্টা করেও উনার নামটি কোনদিন শুনেছি বলে মনে করতে পারলাম না। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, ভদ্রলোক যে দলের প্রধান সেই দলটির নামও তো কোনদিন শুনিনি! এত বড় একটি রাজনৈতিক জোটের একটি গুরুত্বপূর্ণ দল ও দলের চেয়ারম্যানকে চিনতে পারলাম না? এজন্য লজ্জা লাগছিল। তবে আমি অধম এ অজ্ঞতা উনাকে তেমন বুঝতে দেইনি। বাংলাদেশের পলিটিক্সটা আমার মগজে ঠিক ঢু্ঁকে না বলে কোন রাজনৈতিক দলের প্রতি আমার আগ্রহ নেই, তারপরও রাজনীতিবিদরা যেহেতু দেশটা চালান সেহেতু দেশের রাজনীতির খবরা খবর সব সময় রাখার চেষ্টা করি।
যদি প্রশ্ন করা হয় 'মুসলিম লীগ' দলটির নাম কি কোনদিন শুনেছেন? যারা উপমহাদেশের রাজনীতির খবরাখবর রাখেন তারা বলবেন, এটা কোন প্রশ্ন হল? পাকিস্তানের নামকরা একটি রাজনৈতিক দলের নাম এটি। কিন্তু যদি বলা হয় খোদ বাংলাদেশে এমন একটি রাজনৈতি দল আছে। যারা ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক। নির্ঘাত মাথায় হাত দেবেন, জিহ্বায় কামড় দিয়ে মনে করার চেষ্টা করবেন। শরীরে চিমটি কেটে বুঝার চেষ্টা করবেন স্বপ্ন দেখছেন না তো?
বাংলাদেশ পিপলস লীগ, ডেমোক্রেটিক লীগ, বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী পার্টি, ন্যাপ (ভাষানী), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি ইত্যাদি রাজনৈতিক দলের নাম বাংলাদেশের শতকরা নিরান্নব্বই জন মানুষ শুনেনি বা এদের রাজনৈতিক কোন কার্যক্রম কোনদিন দেখেনি। এরা সবাই বিশ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক। এছাড়া এ জোটের বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, লিভারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ইত্যাদি দলগুলোর পরিচিতি ও কার্যক্রম চোখে না পড়লেও দলীয় প্রধানরা সমাজে পরিচিত মুখ। তবে অনেকটা নাম সর্বস্ব একক মালিকানায় পরিচালিত দল বলতে পারেন। এখানে ব্যক্তির পরিচিতি ও প্রতিষ্ঠা পাওয়াটাই মুখ্য।
চৌদ্দ দলীয় জোটের বাংলাদেশ গণআজাদী লীগ, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, ন্যাপ (মোজাফফর), গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল, গণতন্ত্রী পার্টি ইত্যাদি নাম ও প্যাড সর্বস্ব দলগুলোও দেশের মানুষ চিনে না। দলগুলোর অস্থিত্ব আদৌ আছে কিনা কেউ বলতে পারবে না। এছাড়া এ জোটে বাসদ নামে নেতা সর্বস্ব দু'টি দলও আছে। জোটের জাসদ, গণফোরাম ও ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যক্রম ব্যক্তি কেন্দ্রিক ও বিবৃতি/প্যাড নির্ভর।
এই দুই জোটের বাইরেও এরশাদের জাতীয় পার্টি সহ অসংখ্য ছোট বড় দল আছে। জোটের প্রধান দুই নেত্রীকে তাদের জোটের শরীক এসব দলের নাম ও দলগুলোর নেতাদের ব্যাপারে জানতে চাইলে খুব সম্ভবত কিছুই বলতে পারবেন না, কোন তথ্য দিতে পারবেন না। এসব নাম সর্বস্ব দলের বেশিরভাগের নির্বাচন কমিশনে কোন নিবন্ধন নেই। নেই কোন রাজনৈতিক কার্যক্রম, এমনকি নেই রাজনৈতিক কার্যালয়। কোন কোন দলের চেয়ারম্যান ছাড়া অন্যকোন সমর্থক নেই, এজন্য প্রয়োজনে সেক্রেটারি ধার করে আনতে হয়। তারপরও বহাল তবিয়তে দলগুলো বেঁচে আছে, জোট করছে, এমপি/মন্ত্রী হচ্ছে। ভবিষ্যতে যদি অটো এমপি/মন্ত্রী হওয়ার চান্স থাকে তাহলে এসব দল ও জোটের পরিধি নির্ঘাত বাড়বে এটা বলা যায়।
প্রশ্ন হল বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল কেন এসব নাম সর্বস্ব দলগুলোকে প্রশ্রয় দেয়, জোটবদ্ধ করে? তাদের এক একটি দলের তো কোটির উপরে সক্রিয় কর্মী আছে। এ বিষয়ে অনেকের ভিন্ন মতামত থাকতে পারে। তবে আমার মতে এজন্য প্রধানত দু'টি কারণ হতে পারে। প্রথমত, দলের সংখ্যা যত বাড়বে সাধারণ মানুষ ধরে নেবে জোটটি বিশাল আকাররের। আর দ্বিতীয় কারণটি হল অবিশ্বাস। বড় দলগুলোর কোটির উপরে সমর্থক থাকলেও কেন যেন নির্বাচন আসলে কর্মীদের উপর বিশ্বাস রাখতে পারে না। হয়ত হেরে যওয়ার আশংকা থেকে ভিন্ন মত ও আদর্শের দলের সাথে জোটবদ্ধ হয় তারা।
সারা পৃথিবীব্যাপী যত রাজনৈতিক দল আছে তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব কিছু নীতি ও আদর্শ থাকে। এসব ভিত্তির উপর নির্ভর করে দলগুলো পরিচালিত হয়, জোটবদ্ধ হয়। ক্ষমতায় গেলে এসব চেতনার উপর নির্ভর করে রাষ্ট্র পরিচালনা করে তারা। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক জোটগুলো অদ্ভূত। এখানে ধর্মীয় দল, বামপন্থি ও ডানপন্থী সবাই এক ঘাটে জল খায়। ধর্মীয় দলগুলোর নীতি ও আদর্শ বামপন্থি/কমিউনিস্ট দলগুলোর সম্পূর্ণ বিপরীত হওয়ার কথা। তাহলে এদের মধ্যে রাজনৈতিক জোট হয় কেমনে? এটা কী দলগুলোর মৌলিক নীতি ও আদর্শের পরিপন্থী নয়? এটা অনেকটা জল, তেল ও দুধে মিশ্রণের মত কিছু একটা দেখায়। যার নেই কোন স্বাদ, নেই কোন রং, নেই কোন গন্ধ। বলতে পারেন বর্ণচোরা।
কিছুদিন আগে একটি পত্রিকায় পড়েছিলাম ফিদেল ক্যাস্ট্রো বিমানে ভারতে যাত্রা বিরতি করে কোথাও যাচ্ছিলেন। এ সময় দিল্লি এয়ারপোর্টে ভারতের কয়েকজন কমিউনিস্ট নেতা তাঁর সাথে দেখা করেন। ক্যাস্ট্রো জিজ্ঞেস করেছিলেন ভারতে কমিউনিস্টদের অবস্থান কেমন? শুনেছি ভারতে কমিউনিস্ট পন্থী অনেকগুলো রাজনৈতিক দল আছে, আসলে প্রকৃত সংখ্যা কয়টি জানতে পারি? জবাবে নেতারা জানালেন কমি বেশি সতেরো-আঠারোটি হবে। সতেরো-আঠারোটি? বিস্বয়ে ক্যাস্ট্রো চোখ কপালে তুলেছিলেন সেদিন। তারপর একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলেছিলেন তাহলে ভারতেও কমিউনিজমের ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছি!
বাংলাদেশের প্রায় সব কমিউনিস্ট দলগুলো উপরিউক্ত দুই রাজনৈতিক জোটে আছে। দলগুলোর বেশিরভাগ রাশিয়ান ভ্লাদিমির লেলিন ও জার্মান কার্ল মার্কসপন্থী (লেলিন-মার্কস)। তাদের দেওয়া রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার নির্দিষ্ট কিছু নীতি ও আদর্শ আছে। তবে বাংলাদেশী নাম সর্বস্ব এসব কমিউনিস্ট দল কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করে বলে মনে হয় না। যেমন, চায়নিজ কমিউনিস্ট পার্টির অনেকগুলো নীতির মধ্যে অন্যতম হলো তাদের দলের কোন সদস্য কোন ধর্ম বিশ্বাস রাখতে পারবে না। যদি প্রমাণিত হয় কেউ ধর্ম চর্চা করছেন বা বিশ্বাস পোষণ করেন তবে তার দলের সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাবে।
জোটের এ তেলেসমাতি পলিটিক্সকে বিখ্যাত ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ টমাস ম্যালথাসের জনসংখ্যা বৃদ্ধির জ্যামিতিক হারের সাথে তুলনা করা যায়। যেমন- একটি জোটে ১৪টি নাম সর্বস্ব দলের অস্তিত্ব থাকলে, অন্যদল করবে একলাফে ২৮ দলের জোট। এখন ১৪ দল ওয়ালারা ২৮ দলকে টেক্কা দিতে করবে ৫৬ দলীয় জোট। এভাবেই চলতে থাকবে জোটের ইঁদুর-বিড়াল খেলা। আর নিজেদের সমর্থকরা সংখ্যার রাজনীতি নিয়ে মেতে উঠবে। ভাবখানা এমন, জোটে যত বেশি দল থাকবে ভোটের রাজনীতিটাও পোক্ত হবে!
পড়াশুনার তাগিদে বেশ কয়েক বছর লন্ডনে থাকায় সে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম কাছে থেকে দেখেছি। পর্যবেক্ষণ করেছি। কয়েকবার পার্লামেন্ট ইলেকশনে ভোট দিয়েছি। সেখানে ছাত্র রাজনীতি নামক কোন বস্তুর অস্তিত্ব নেই। নেই রাজনৈতিক দলগুলোর শাখা, প্রশাখা, উপশাখা। তরুণরা ভুলেও রাজনীতি নিয়ে ভাবে না, সরাসরি রাজনীতি করা তো অনেক পরের কথা। যারা রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আগ্রহী, ভবিষ্যতে পলিটিশিয়ান হতে চায় তারা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি সম্পৃক্ত বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করে, লেখালেখি করে, গবেষণা করে। গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার নতুন নতুন আইডিয়া উদ্ভাবন করে। ছাত্রাবস্তায় এদের কোন পরিচিতি থাকে না। এমনকি এমপিদেরও অনেকে চেনে না। দলগুলো নমিনেশন দেওয়ার আগে প্রার্থীর অতীত ইতিহাস যাচাই করে। কোন ক্রিমিনাল অফেন্স আছে কিনা নিশ্চিত হয়। ছাত্র জীবনের অর্জনগুলোকে মূল্যায়ন করে। সবশেষে যদি মনোনয়ন বোর্ড তাকে যোগ্য মনে করে তাহলে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে। এখানে নেই কোন স্বজনপ্রীতি, নেই কোন পারিবারিক দাপট, নেই টাকার খেলা। এজন্য দলের মনোনীত পার্থীকে ভোটাররা বিশ্বাস করে। প্রার্থীকে চেনার কোন প্রয়োজন মনে করে না।
কিছুদিন থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক জোট নিয়ে একটি আইডিয়া মাথায় এসেছে। ধারণাটি হলো বড় রাজনৈতিক দলগুলো এসব ব্যক্তি ও নাম সর্বস্ব দলগুলো নিয়ে জোট না করে বরং তাদের নামে বেনামে যে সমস্ত সহযোগী/উপসহযোগী দল আছে তাদেরকে নিয়ে একটি জোট করতে পারে। এছাড়া জেলা, উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে যে সকল গ্রুপ সক্রিয় আছে তাদের নিয়েও জোট গঠন করা যায়। এতে দলীয় নেতা কর্মীদের মনোবল চাঙা হবে। জোটের নীতি ও আদর্শ একই থাকবে। ধরা যাক প্রতিটি জেলায় বড় দুই দলের গড়ে দশটি করে উপদল, শাখা দল ও গ্রুপ থাকলে সারা দেশে হবে মোঠ ৬৪০ টি। এ জোটটি নিশ্চয় নাম সর্বস্ব দলগুলোর চেয়ে আকারে অনেক বড় ও সক্রিয় হবে। আর সবচেয়ে বড় কথা, সংখ্যার রাজনীতিটাও বহুগুণ বেড়ে যাবে। বাড়তি পাওনা হিসাবে গিনেজ বুক অফ ওয়ার্ল্ডে ৬৪০ দলের বিশাল জোটের জন্য বিশ্ব রেকর্ড হয়ে যাওয়ার একটা চান্সও থাকবে।
একজন সাংসদ/এমপি হতে হলে ন্যুনতম কি কি যোগ্যতা থাকা বাঞ্ছনীয়? টাকা, পেশি নাকি বাচালতা? বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই তিনটিই হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা। এখানে পার্লামেন্ট ইলেকশন করতে হলে রাজনৈতিক দলকে/বড় নেতাকে কোটি টাকা ডোনেশন দিতে হয়, এলাকায় নিজের ধাপট ধরে রাখতে গুন্ডা-লাঠিয়াল-পিকেটার-চাটুকার পালতে হয়, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে হলে মামলা-হামলা করতে হয়, জনগনকে উন্নয়ন মূলা দেখাতে হলে গলাবাজি করতে হয়, পায়জামা-পাঞ্জাবি পরে মিলাদ-চল্লিশা-উরুসে যেতে হয়। এক'শো টাকার মুড়ি মুড়কি বিতরণ করলেও পত্রিকায়/ফেইসবুকে ফলাও করে নিউজ দিতে হয়।
এখন পার্লামেন্ট ইলেকশন হলো এদেশের ধনীদের "জ্যাকপট লটারির" মত। কোনমতে জিততে পারলেই পাঁচ বছরে কমপক্ষে শতকোটি টাকা কামানোর বৈধ লাইসেন্সধারী হওয়া। এজন্য বাংলাদেশ মহান জাতীয় সংসদ এখন দেশের শীর্ষ ধনী আর ব্যবসায়ীদের ক্লাবে পরিণত হয়েছে। এখানে টাকাহীন, পেশীহীন, গলাহীন নীতিবানদের প্রবেশাধিকার একপ্রকার নিষিদ্ধ। এদেশে 'গণতন্ত্র' শব্দটা বানান করতে না পারলেও 'মাননীয় সংসদ সদস্য' হতে কোন বাঁধা নেই।
ফটো ক্রেডিট,
গুগল।
১৪ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:০৪
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: একটা করাপ্ট সিন্ডিকেট। এখানে রাজনীতি বলে কিছু নেই।
২| ১৪ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: বাংলাদেশের রাজনীতি নোংরা রাজনীতি।
১৯৪৭ সালে একটাই রাজনৈতিক দল ছিল- মুসলিম লীগ।
আর বর্তমানে ---
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহ
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি
জাতীয় পার্টি – জেপি
বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল)
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ
বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল – বি.এন.পি
গণতন্ত্রী পার্টি
বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি
বিকল্পধারা বাংলাদেশ
জাতীয় পার্টি
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক রিট পিটিশন নং ৬৩০/২০০৯ এর উপর ০১ আগস্ট ২০১৩ তারিখে প্রদত্ত রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী-এর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষিত হয়েছে)
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি
জাকের পার্টি
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি
বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন
বাংলাদেশ মুসলিম লীগ
ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি (এনপপি)
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ
গণফোরাম
গণফ্রন্ট
প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি)
বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি
ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি
ইসলামী ঐক্যজোট
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট
জাতীয় গণতান্ত্রিক পাটি (জাগপা)
১৪ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:৫৬
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: এক কথায় সংখ্যার রাজনীতি। এরা জনগনকে আবাল ভাবে। এজন্য নাম সর্বস্ব এসব দল দিয়ে জোটের সংখ্যা বাড়ায়। আর আবুল মার্কা কর্মী/জনগন ২০ দল, ৪০ দল, ৮০ দল ইত্যাদি নিয়ে অন্যজোটকে টেক্কা দিতে চায়।
এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির ইদুর-বিড়াল খেলা। জোটের 'জুট' পলিটিক্স।
৩| ১৪ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:১১
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: আমি ১০-১২টার বেশী জানি না।
@"কোন কোন দলের চেয়ারম্যান ছাড়া অন্যকোন সমর্থক নেই, এজন্য প্রয়োজনে সেক্রেটারি ধার করে আনতে হয়।"
---
১৪ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:১৪
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: শুভ সকাল, নিজাম ভাই।
@"কোন কোন দলের চেয়ারম্যান ছাড়া অন্যকোন সমর্থক নেই, এজন্য প্রয়োজনে সেক্রেটারি ধার করে আনতে হয়।"
---
এটাই বাস্তবতা।
৪| ১৪ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:৫৩
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: কিছুদিন আগে পল্টনে একটা পোষ্টার দেখলাম বাংলাদেশ রিপালকান পার্টি যাদের প্রতিক হাতি, আরো কত কত দলের পোষ্টার রাস্তায় চোখে পড়ে, মাঝেমধ্যে বিভিন্ন অলি গলিতে এসব পার্টির প্রধান কার্যালয়ও চোখে পড়ে। ঠিকই বলেছেন একটা সাইনবোর্ড লাগিয়ে নিজেদের পরিচিত করাই এসব দলের প্রধানদের লক্ষ্য।
১৪ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৮
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: একদম ঠিক কথা বলেছেন, তারেক ভাই।
৫| ১৪ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:২১
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: এক কথায় সংখ্যার রাজনীতি। এরা জনগনকে আবাল ভাবে। এজন্য নাম সর্বস্ব এসব দল দিয়ে জোটের সংখ্যা বাড়ায়। আর আবুল মার্কা কর্মী/জনগন ২০ দল, ৪০ দল, ৮০ দল ইত্যাদি নিয়ে অন্যজোটকে টেক্কা দিতে চায়।
এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির ইদুর-বিড়াল খেলা। জোটের 'জুট' পলিটিক্স।
অনেক ধন্যবাদ।
১৪ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:৩০
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: রাজীব ভাই, ধন্যবাদ।
৬| ১৪ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:৩৪
শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: রাজনীতি রাজার নীতি। আমরা কাজ করব ভাত খাব। সময় হলে ভোট দিব।
১৪ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:৪১
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: হ্যা, ঠিক বলেছেন। তবে আমরা যেহেতু ভোটার সেহেতু বিষয়টি আমাদেরও জানা ভাল। আমি পার্লামেন্ট ইলেকশনে ভোট দেই না। এই ভোটের গণতন্ত্র আমি বিশ্বাস করি না বলে।
৭| ১৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:১৮
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সুপ্রভাত কাওসার ভাই। আশকরি ভাল আছেন। গতকাল পঞ্চায়েত নির্বাচন করে বাড়ি ফিরতে প্রায় রাত আড়াইটা হয়ে গেছিল। একই সঙ্গে প্রচন্ড চাপে ছিলাম । আজ আমার সম্পূর্ণ ছুটি। তবে একটু ঘুম ঘুম পাচ্ছে ।
ভালো থাকুন। শুভ কামনা রইল।
১৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৮
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ওয়েলকাম ব্যাক, প্রিয় পদাতিক চৌধুরী ভাই। কালকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে অনেক খুনাখুনি হয়েছে জেনে মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। যাক আপনি নিরাপদ আছেন এটাই আমাকে শঙ্কামুক্ত করলো।
৮| ১৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সঙ্গত কারনেই পোষ্ট সংক্রান্ত মন্তব্যটি আলাদা করলাম। আপনার সুন্দর বিশ্লেষণ অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী। আজকের ফিচারটিতে অবক্ষয়ের পাশাপাশি লেখনির গুনে বেশ রম্যও হয়ে উঠলো। বাংলাদেশের নামকরা চাঁদাতোলা দলের প্রতিষ্ঠাতার নামটি না জানার কারনে আপনার দৈন্যদশা।
২ রাজনীতিতে জোট মানে এখন সেটা ঘোটই কালচার হয়ে গেছে। ফিদোল কাস্ত্রোর ভারত সফরটা বেশ লাগলো। আমাদের রাজ্যে বামেদের চৌত্রিশ বছরের সরকারে ছোটবড় মিলিয়ে চৌদ্দটি রাজনৈতিক দল ছিল। সে সময় একটি জনপ্রিয় দৈনিক মজা করে বলতো, মৌমাছি যদি একটি ফুলে বেশি মধু পায় তাহলে তার পালক মধুতে ডেবে যায়। পরে উড়তে চাইলেও আর উড়তে পারেনা। যেটা তার মৃত্যুকে ডেকে আনে। উল্লেখ্য বামেরা ক্ষমতা থেকে বিচ্যুত হওয়ার পর বর্তমানে বেশ কয়েকটি সঙ্গী তাদের ছেড়ে চলে গেছে। এখব সেই পাল্লা আবার রাজ্যের বর্তমান শাসকদলের দিকে গেছেে।
৩ আপনার ৬৪০ দলের যে হিসাব দিলেন, সেটি দেখে মনে হচ্ছে, দেশ কাল অনেক এগিয়ে গেছে। একান্নবর্তী পরিবারগুলি ভেঙে আধুনিক নিউক্লিয়ার পরিবার হলে এহেন দল ভেঙে নিউক্লিয়ার দল হলে সেটা আর মন্দকী!!!!
অনেক অনেক ভালো লাগা আপনাকে ।
১৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:০১
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: "মৌমাছি যদি একটি ফুলে বেশি মধু পায় তাহলে তার পালক মধুতে ডেবে যায়। পরে উড়তে চাইলেও আর উড়তে পারেনা। যেটা তার মৃত্যুকে ডেকে আনে। উল্লেখ্য বামেরা ক্ষমতা থেকে বিচ্যুত হওয়ার পর বর্তমানে বেশ কয়েকটি সঙ্গী তাদের ছেড়ে চলে গেছে। এখব সেই পাল্লা আবার রাজ্যের বর্তমান শাসকদলের দিকে গেছেে।"............ চমৎকার বলেছেন।
"আপনার ৬৪০ দলের যে হিসাব দিলেন, সেটি দেখে মনে হচ্ছে, দেশ কাল অনেক এগিয়ে গেছে। একান্নবর্তী পরিবারগুলি ভেঙে আধুনিক নিউক্লিয়ার পরিবার হলে এহেন দল ভেঙে নিউক্লিয়ার দল হলে সেটা আর মন্দকী!!"...........
ফর্মুলাটি দলগুলো ট্রাই করতে পারে।
৯| ১৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:৪৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: মন্তব্যসূত্রে বলছি, তাহলে পোষ্টটিকে রাজনৈতিক দলগুলির সামনে য়ে একটু তুলে ধরা দরকার । হা হা হা।
১৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ২:০৫
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: প্রথম সারির দৈনিকগুলো তো পাত্তা দেয় না। লেখাটি ছাপালে বড় নেতাদের চোখে পড়তো।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:০৩
অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: বাংলাদেশের রাজনীতি আমার ভিষণ অপছন্দ।