নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জন্মসূত্রে মানব গোত্রভূক্ত; এজন্য প্রতিনিয়ত \'মানুষ\' হওয়ার প্রচেষ্টা। \'কাকতাড়ুয়ার ভাস্কর্য\', \'বায়স্কোপ\', \'পুতুলনাচ\' এবং অনুবাদ গল্পের \'নেকলেস\' বইয়ের কারিগর।

কাওসার চৌধুরী

প্রবন্ধ ও ফিচার লেখতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। পাশাপাশি গল্প, অনুবাদ, কবিতা ও রম্য লেখি। আমি আশাবাদী মানুষ।

কাওসার চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঙাল-ঘটি ফাটাফাটি (প্রবন্ধ)

১৫ ই মে, ২০১৮ ভোর ৪:২৭


বাঙাল-বাঙালি বিতর্ক দুই বঙ্গের মানুষের বহুদিনের চর্চিত বিষয়। ইদানিং আবার শুরু হয়েছে বাঙালি-বাংলাদেশি বিতর্ক। বিতর্ক ভালো জিনিস, এতে মস্তিষ্কের ব্যায়াম হয়, মুক্ত বুদ্ধির চর্চা হয়। কিন্তু যৌক্তিক বিতর্ককে বিতর্কিত করার প্রয়াস থেকে যে বিতর্ক হয় তাতে হিংসা আর সামাজিক অসহিষ্ণুতা বাড়ে, ইতিবাচক কোন ফল আসে না। বাঙালি-বাংলাদেশি চর্চা থাক; বনেদি বাঙাল-ঘটি নিয়েই আপাতত কথা চলুক।

আপনি বাঙাল না ঘটি? বাঙালিদের কাছে প্রশ্নটি অতি পরিচিত, হয়তো অনুমিতও বটে! বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে বসবাসরত বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে। তবে বাংলাদেশের বর্তমান প্রজন্মের অধিকাংশ মানুষ বাঙাল-ঘটি (বাঙাল ও বাঙালি) বিতর্ক নিয়ে তেমন কিছু জানে না। এই ক'বছর আগেও পশ্চিমবঙ্গে বিয়েসাদী, খেলাধূলা, আত্মীয়তা, সামাজিক আচার-অনুষ্টান রান্নাবান্না ও খাবারের বেলায় ঘটি-বাঙাল চর্চা একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতো। এখন এ বিতর্ক কিছুটা কমলেও বলা যায় চ--ল--ছে-- বেশ জোর কদমে। নিকট ভবিষ্যতে চিরতরে এই বিতর্ক ঘুচবে সে সম্ভাবনা ক্ষীণ।

ঘটি-বাঙাল দ্বন্দ্ব বুঝাতে অনেকে 'বাঙ্গাল-ঘটি ফাটাফাটি' কথাটি বলে থাকেন।

সাতচল্লিশে দেশভাগের সময় পূর্ববঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসামের যেসব বাংলা ভাষাভাষী মানুষ পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে বসতি স্থাপন করে তারাই মূলতঃ বাঙাল হিসেবে পরিচিত। তখন পূর্ববঙ্গ তথা বর্তমান বাংলাদেশে বসবাসকারী লোকজন 'বাঙাল' নামে পরিচিত ছিল; তবে এই নাম কিংবা বিভাজন পূর্ববঙ্গের মানুষ নিজেরা করেনি। কলকাতার তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত, প্রগতিশীল এবং ধনীক শ্রেণীর মানুষ পূর্ববঙ্গের মানুষকে তাচ্ছিল্যের সূরে এই নাম ডাকতো। এই বিভাজনে এক রকম পৈশাচিক আনন্দ হতো। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এখনো বাংলাদেশীদের 'বাঙাল' বলে ডাকে, তবে তাচ্ছিল্যের মানসিকতা এখনো অবশিষ্ট নেই, কিংবা সেই সুযোগ সময়ের স্রোতে ফুরিয়ে গেছে।

যারা দীর্ঘদদিন থেকে পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করে তারা 'ঘটি' হিসাবে পরিচিত।। এছাড়া ভারতের ঊড়িষ্যা, ঝাড়খন্ড ও বিহার রাজ্যের মানুষদের মধ্যে যাদের মাতৃভাষা বাংলা তারাও ঘটি। কলকাতার বনেদী বাঙালিদের স্বভাবে প্রভাবিত হয়ে একটা সময় আমাদের ঢাকার স্থানীয় মানুষজন গ্রামে বসবাসরত লোকজনকে তাচ্ছিল্য করে 'বাঙাল' বলে ডাকতো। দেশের উচ্চবিত্ত-উচ্চশিক্ষিত লোকজনের একটা বড় অংশ এখনো গ্রামের শ্রমিক, জেলে ও কৃষকদের তুচ্ছার্থে 'বাঙাল' বলে ডাকেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর- বাঙাল না ঘটি? ঠাকুর পরিবারের বংশপরম্পরা ঘাটলে দেখা যায় তাদের আদি নিবাস ছিল বাংলাদেশের যশোরে। পলাশী যুদ্ধের পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্ব পুরুষেরা যশোর ছেড়ে কলকাতায় পাড়ি জমান। ঠাকুর পরিবারের আসল পদবি ছিল কুশারি। তাদের পরিবারিক জমিদারির বড় অংশই ছিল পূর্ববঙ্গের শিলাইদহে। জমিদারির কাজে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে প্রায়ই সেখানে যেতে হত; এজন্য তাঁর লেখা গল্প, উপন্যাস এবং প্রবন্ধে আমরা পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন স্থানের বর্ণনার ছড়াছড়ি দেখতে পাই। তবে কবিগুরিুর জন্ম কলকাতায়। মা সারদাসুন্দরী দেবী ছিলেন যশোরের মেয়ে। তাঁর স্ত্রী মৃণালিনী দেবীর বাপ-দাদাদের আদি নিবাস ছিল খুলনায়। বলা যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মসূত্রে 'খাঁটি কলকাত্তাইয়া' ঘটি হলেও ঐতিহাসিকভাবে তাঁর পূর্ব পূরুষরা বাঙাল ছিলেন।

একটা সময় কলকাতা ছিল বাঙালি উচ্চবিত্ত ও শিক্ষিত মানুষদের বসবাসের সবচেয়ে কাঙ্খিত নগরী। বিশেষ করে বনেদী জমিদার শ্রেণীর। স্কুল-কলেজ, হাট-বাজার, মার্কেট-রেস্তোরা, রাস্তা-ঘাট সর্বত্র পূর্ববঙ্গের বাঙলা ভাষাভাষীদের তারা তাচ্ছিল্যের চোখে দেখতো। আড়ালে আবডালে মূর্খ, চাষা ও বাঙাল বলে অপমান করতো। আবার কখনো রিফিউজি, কখনো উদ্বাস্তু, কখনো শরণার্থী বলে অপমান করতো। এগুলো তখন খুব কমন আচরণ ছিল। দেশভাগের পর প্রথম দিকের সময়গুলোতে পূর্ববঙ্গ থেকে পশ্চিমবঙ্গে যাওয়া বাঙালদের বাড়িভাড়া পেতেও অনেক সমস্যা হত। স্থানীয় ঘটিরা বাঙাল ভাড়াটিয়ে দেখলে মুখের উপর না করে দিত। যা ছিল দেশহীন, আশ্রয়হীন, বানভাসী মানুষগুলোর জন্য চরম অসম্মানের।


১৮৫৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হওয়ার পর শিক্ষা, সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিকভাবে কলকাতার মানুষের মাঝে অন্যান্য বাংলা ভাষাভাষী এলাকা থেকে বেশি উন্নতির ছোয়া লাগে। কলকাতা হয়ে উঠে শিক্ষিত ও সমাজের উচু শ্রেণীর বাঙালিদের আবাসভূমি। বাংলা ভাষার উচ্চারণেও কলকাতার সাথে ঢাকাসহ অন্যান্য এলাকার মোটাদাগে বেশ পার্থক্য পরিলক্ষিত হতো। কলকাতার মতো অন্যান্য অঞ্চলের বাংলা ভাষা মার্জিত ছিল না। মানুষজনের কথায় গ্রাম্য ও আঞ্চলিকতার টান ছিল স্পষ্ট। এখনো পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গের মানুষের ভাষাগত কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। মাতৃভাষা মায়ের ভাষায় উচ্চারিত হয়। এটাই নিজেদের ভাষা। এজন্য মায়ের ভাষার চেয়ে শুদ্ধ ভাষা পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। যদিও বইয়ে কিংবা রাষ্ট্রের দাপ্তরিক কাজে একটি নির্দিষ্ট ভাষা এবং উচ্চারণকে বেছে নিতে হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পশ্চিমবঙ্গে হওয়ায় এবং বাঙলা সাহিত্যের তখনকার সিংহভাগ লেখক পশ্চিমবঙ্গের প্রমিত ভাষায় সাহিত্য চর্চা করতেন বলে সেখানকার একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের ভাষাকে একাডেমিক ও দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল।

দেশভাগের আগে অবিভক্ত বাংলায় দু'টি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ঢাকা ও কলকাতায়। নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও বার্মা ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। তারপরও পশ্চিমবঙ্গের জনভিত্তিক পড়াশুনার মান খুব একটা ভাল ছিল না। পশ্চিমবঙ্গের জমিদাররা নিজেদের স্বার্থের জন্য সাধারন মানুষের শিক্ষা-দীক্ষার ব্যাপারে উদাসীন ছিলেন। এজন্য গ্রামে-গঞ্জে স্কুল কলেজ তেমন প্রতিষ্ঠা হয়নি। ঘটিদের খাওয়া-দাওয়া বলতে ছিল তেলে ভাজা মিষ্টি কুমড়ার ছক্কা আর রুটি। বাঙালিদের রসনা-বিলাস বলতে যা বুঝায় তার পুরোটা ছিল পূর্ববঙ্গে।

আমাদের এ অঞ্চল থেকে বাঙালরা পশ্চিমবঙ্গে যাওয়ার পর থেকেই মূলত সেখানে উচ্চশিক্ষার প্রসার ঘটতে শুরু করে। বর্তমানে অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে বাঙালরা পশ্চিমবঙ্গে ঘটিদের চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে। পশ্চিমবঙ্গের বাম রাজনীতির প্রসারে বাঙালদের ভূমিকা ব্যাপক। পূর্ববঙ্গ থেকে পশ্চিমবঙ্গে যাওয়া বাঙালরা যখন সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার হতো তখন বাম রাজনৈতিক দলগুলো বাঙালদের পক্ষে ব্যাপক ভূমিকা পালন করতো। তাদের এই উদার মানসিকতা বাঙালদের আশাবাদী করতো, রাজনীতিতে সক্রিয় হতে সাহস জোগাতো।

সাতচল্লিশের পর থেকে এখন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে দায়িত্ব পালন করা আটজন মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ছয় জন বাঙাল ছিলেন। দু'জন মাত্র ঘটি। বাঙাল মুখ্যমন্ত্রীরা হলেন কুমিল্লার ড: প্রফুল্ল ঘোষ, সাতক্ষীরার খ্যাতনামা চিকিৎসক বিধান রায়, খুলনার প্রফুল্ল সেন ও সিদ্বার্থ শঙ্কর রায় এবং ফরিদপুরের বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এছাড়া ঢাকার জ্যোতিবসু তো একটানা ২৪ বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ঘটি মুখ্যমন্ত্রীরা হলেন মেদিনীপুরের অজয় মুখার্জি এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রাজা রাম মোহন রায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিবেকানন্দ ও শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মত গুণীজনেরা। স্ব স্ব ক্ষেত্রে তারা দিকপাল হলেও গ্রামাঞ্চলে তাদের প্রভাব খুব একটা পড়েনি। একমাত্র রাজা রামমোহন রায়ের সতীদাহ প্রথা বিলোপ এবং বিদ্যাসাগরের বিধবা বিবাহ প্রবর্তন ভাল সাড়া ফেলেছিল। বাকিদের জীবন যাপন প্রণালী একটি চক্রের মধ্যে আবর্তীত হতো। অনেকটা শহরকেন্দ্রিক জীবন ছিল তাদের।


ঘটিদের অভিযোগ হলো বাঙালরা গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে ওস্তাদ; তা সে কথা বলা হোক অথবা ঝগড়া করা হোক। ঘটিরা স্বভাবত আস্তে আস্তে কথা বলে, ঝগড়া করতে খুব একটা দেখা যায় না তাদের। রাগ মেটাতে ঝোপ বুঝে কোপ মারতেই নাকি বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন ঘটিরা। মামলা-মোকদ্দমা ঘটিদের নিত্য সঙ্গী হলেও বাঙালদের মধ্যে এ প্রবণতা অনেকটা কম। মাঝে মাঝে ঘটি-বাঙাল ঝগড়া অশ্লীল, কুৎসিত ও হিংস্র হয়ে পড়ে ঠিকই তবে এ দুষ্টু-মিষ্টি ঝগড়া আমাদের বঙ্গীয় সংস্কৃতির অংশ হয়ে আছে বহু বছর থেকে। মজা হিসেবে নিলে এ ঝগড়া বেশ উপভোগ করা যায়।

বাঙালদের ব্যবসাপাতির প্রতি মনোযোগ বেশি হলেও ঘটিদের মাস মাইনের প্রতি আগ্রহটা বেশি। এখনো সারা পৃথিবীতে বসবাসরত বাঙালিদের মধ্যে এ বিভাজন স্পষ্ট। ইউরোপ-আমেরিকায় ঘটিরা চাকরি-বাকরি করতে বেশি উদ্যোগী হলেও বাঙালরা, বিশেষ করে বাংলাদেশি বাঙালিরা আনাজ-তরকারি বিক্রি করা থেকে শুরু করে মোদি দোকান, টেক্সি ড্রাইভিং, পেইন্টিং, বিল্ডারিং, রেস্টুরেন্ট পরিচালনা সহ এমন কোন কাজ নেই যা তারা পারে না অথবা করতে চায় না। সব কাজেই বাঙালরা সিদ্ধহস্ত। বাঙালরা ঘটিদের চেয়ে কায়িক পরিশ্রমে বেশি এগিয়ে। এজন্য মাঠে-ঘাটে, খেতে-খামারে বাঙালদের আধিপত্য স্পষ্ট। বাঙালরা প্রাণখোলা স্বভাবের ও বন্ধুভাবাপন্ন হলেও ঘটিরা নিরিবিলি, একটু অন্তর্মূখী স্বভাবের।

রান্নাঘরে সেরা কে- বাঙাল না ঘটি? এ দ্বন্দ্ব বাঙালির জীবনে চিরন্তন। প্রচলিত আছে কোন জিনিস মাত্রাতিরিক্ত করা ঘটিদের একদম না পছন্দ। খাওয়া-দাওয়া, কেনাকাটা করা, বিলাস-ভ্রমণ সে যাই হোক না কেন। তাই খরচাপাতি হোক বা রান্নাবান্না, সব কিছু বেশ মেপে মেপে করে ঘটিরা। এদিকে বাঙালরা আবার ঠিক উল্টো। বাঙালরা খুব অতিথি পরায়ন; ভুড়িভোজ ও মেহমানদারিতে তাদের জুড়ি নেই। হাতে টাকা পয়সা থাকলে এরা দেদারসে খরছ করে। এজন্য ঘটিদের অতি হিসেবি স্বভাবের জন্য বাঙালরা তাদেরকে কিপ্টে বলে অপবাদ দেয়। আবার বাঙালদের আলসেমি স্বভাবের জন্য ঘটিরা তাদের কুঁড়ে বলে খেপায়।

খাওয়া-দাওয়ায় ঘটিরা উত্তর মেরু হলে বাঙালরা দক্ষিণ মেরু। যেমন- ঘটিদের প্রিয় মাছ চিংড়ি মাছের মালাইকারি কিন্তু বাঙালদের পছন্দ ইলিশ মাছের রকমারি পদ। রান্নাঘরে আজ চিংড়ি নাকি ইলিশ? এবারের ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গল নাকি মোহনবাগান জিতবে কে এই নিয়ে বাঙালির আবেগ চিরকালীন। আর ঝগড়া? বাঙালদের দাবি ঘটিরা মিষ্টি ছাড়া খেতেই পারে না। আর ঘটিরা বলে বাঙালরা ওই মানকচু পোড়া থেকে আলুর খোসা বাটা এর বাইরে আর কিছুই খেতে শিখল না! ঘটি বউয়ের বাঙাল শ্বশুরবাড়ি হলে এখনও কম খোঁটা শুনতে হয় না। উল্টোটাও আছে।

ঘটিরা বলে বাঙালরা নাকি চারবেলাই ভাত খেতে পারে! এদিকে ঘটিরা ভাতের বদলে লুচি ও আলুরদম বেশি পছন্দ করে। আর পোস্তের প্রতি ঘটিদের একটি সফ্ট কর্ণার আছে। তাই আলু পোস্ত হোক বা পোস্ত বড়া, পোস্ত দিয়ে তৈরি কোন না কোন আইটেম তাদের প্রতিদিনের ম্যনুতে থাকা চাই। বাঙালদের রান্নায় সরিষা, জিরা, ধনিয়া, পেয়াজ, এলাচ ও মরিচ প্রাধান্য পায়। অপরদিকে সব রান্নায় ঘটিদের চিনি/মিষ্টি অবশ্যই চাই। ঝাঁল খাবার ঘটিদের একেবারে না পছন্দ।


খেলাধূলায়ও বাঙাল-ঘটি কম যায় না। পশ্চিমবঙ্গে ফুটবলে 'মোহনবাগান' ঘটিদের পছন্দের টিম। আর 'ইস্টবেঙ্গল' বাঙালদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ক্লাব। তাই বাঙালদের ইস্টবেঙ্গল ঘটিদের জাত শত্রুু। এমনও শোনা যায় ঘটিদের সমর্থক কোন নামকরা শিল্পী কখনো ইস্টবেঙ্গলের কোন অনুষ্টানে যায় না। মোহনবাগানের বেলায়ও ঠিক তাই। কলকাতা লীগে অথবা আই লীগের খেলায় ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের মুখোমুখি হলে দুই শিবিরে সাঁজ সাঁজ রব পড়ে। কেই কাউকে এক চুলও ছাড় দিতে নারাজ। অনেকটা বার্সেলনা-রিয়েল মাদ্রিদের দ্বৈরতের মতো।

একটা সময় পশ্চিমবঙ্গের বাঙালদের অর্থাৎ যাদের পূর্বপুরুষদের আদি নিবাস ছিল বাংলাদেশে তাদের এ দেশে বেড়াতে আসার অন্যতম কারণ ছিল নিজের শেকড়কে কাছে থেকে দেখে আসা। পর্যটন শিল্পের পরিভাষায় যাকে বলে "ডাউন মেমরি লেন ট্যুর"। অনেকটা রথ দেখা কলা বেঁচার মতো। তবে কিছুদিন আগে পত্রিকায় একটি পরিসংখ্যান দেখে অবাক হলাম। ইদানিং নাকি বাঙালদের চেয়ে ঘটিরাই বেশি বাংলাদেশে আসছে! ঘটিদের পছন্দের শীর্ষে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ, দিনাজপুরের কান্তজিউ মন্দির, রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এবং কুষ্টিয়ার লালন ফকিরের মাজার অন্যতম।

আশার কথা যত দিন যাচ্ছে বাঙাল-ঘটির দূরত্ব কমছে। এখন তো কোন বড় ঝামেলা ছাড়াই সচরাচর বাঙাল-ঘটি বিয়ে সাদী হচ্ছে। তবে খাবারের বেলায় এখনো দা-কুমড়ো সম্পর্ক। আমরা চাই ঘটি-বাঙাল বিতর্কের অবসান হোক। বাঙলা ভাষাভাষী সবাই বাঙালি। এটাই হোক বিশ্বব্যাপী আমাদের একমাত্র পরিচয়। এতে জাতি হিসাবে বিশ্বের দরবারে আমাদের মর্যাদা বাড়বে। আমাদের বসবাসের ব্যাপ্তিও অনেক বড় হবে। একে-অন্যে সহযোগিতা বাড়বে, আন্তরিকতা বাড়বে, সামাজিক ব্যবধান ঘুঁচবে। যত তাড়াতাড়ি এ দূরত্ব কমবে ততোই আমাদের মঙ্গল।।



তথ্যসূত্র-
আনন্দবাজার পত্রিকা,
সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত,
বাংলা ট্রিবিউন,
হ্যাংলা হেসেল ও
বেঙ্গল টাইমস্।

ফটো ক্রেডিট,
গুগল।

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মে, ২০১৮ ভোর ৫:৪৪

জাতির বোঝা বলেছেন: আলোচনা বিষয়টা ভালো। তবে বাংলাদেশের আমরা কি ঘটি না বাটি?

১৫ ই মে, ২০১৮ ভোর ৫:৫৭

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: শুভ সকাল, ভাই। আমরা বাটি অর্থাৎ বাঙাল। পশ্চিমবঙ্গের আদি বাঙালিরা ঘটি হিসাবে পরিচিত। যারা ৪৭-এ দেশভাগের সময়, ৭১-এ যুদ্ধের সময়ে পূর্ববঙ্গ (বাংলাদেশ) থেকে পশ্চিমবঙ্গে গেছেন এরাও বাটি। এছাড়া আসাম ও ত্রিপুরার বাঙালিরাও বাটি (বাঙাল)।

২| ১৫ ই মে, ২০১৮ ভোর ৬:০৭

সোহানী বলেছেন: ওরে বাপরে এতো কিছু.......... জানা ছিল না।

১৫ ই মে, ২০১৮ ভোর ৬:১৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: কেমন আছেন?
সত্যি, ঘটি-বাঙাল নিয়ে কিছুই জানেন না? বিষয়টি আমিও তেমন জানতাম না। বাঙালি সংস্কৃতি নিয়ে লেখতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারি। পরে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত লেখি।

আমারা যেহেতু সবাই বাঙাল তাই বাংলাদেশে বিষয়টি নিয়ে মাতামাতি নেই। এজন্য এ চিরায়ত দ্বন্দ্বটা এদেশের অনেকের অজানা। মূলত পশ্চিমবঙ্গে ঘটি-বাঙাল এখনো একটা ফ্যাক্টর।

৩| ১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৭:০১

তালাচাবি বলেছেন:

শুভ সকাল, স্যার। ঘটি-বাঙাল নিয়ে তেমন কিছুই জানতাম না। আপনার লেখা পড়ে বিষয়টি জানতে পারলাম। এতদিন জানতাম আমরা সবাই বাঙালি। এখন তো দেখি এখানেও দুইটি ভাগ আছে।

"রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর- বাঙাল না ঘটি? ঠাকুর পরিবারের বংশলতিকা ঘাটলে দেখা যায় তাদের আদি নিবাস ছিল বাংলাদেশের যশোরে। পলাশী যুদ্ধের পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্ব পূরুষরা যশোর ছেড়ে কলকাতায় পাড়ি জমান। ঠাকুর পরিবারের আসল পদবি কুশারি। তাদের পরিবারিক জমিদারি ছিল পূর্ববঙ্গের শিলাইদহে। জমিদারির কাজে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে প্রায়ই সেখানে যেতে হতো, এজন্য তাঁর লেখায় আমরা পূর্ববঙ্গের বর্ণনার ছড়াছড়ি দেখতে পাই। তবে রবী ঠাকুরের জন্ম কলকাতায়। মা সারদাসুন্দরী দেবী ছিলেন যশোরের মেয়ে। স্ত্রী মৃণালিনী দেবীর বাপ-দাদাদের আদি নিবাস ছিল খুলনা। অতএব বলা যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মসূত্রে "খাঁটি কলকাত্তাইয়া" ঘটি হলেও ঐতিহাসিকভাবে তাঁর পূর্ব পূরুষরা বাঙাল ছিলেন।"...........

বিশ্বকবির প্রসঙ্গটি আনায় ভালই হয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখা। আপনার জন্য আশীর্বাদ রইলো।

১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৭:০৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: "ঘটি-বাঙাল নিয়ে তেমন কিছুই জানতাম না। আপনার লেখা পড়ে বিষয়টি জানতে পারলাম। এতদিন জানতাম আমরা সবাই বাঙালি। এখন তো দেখি এখানেও দুইটি ভাগ আছে।"......

বিষয়টি নতুন প্রজন্মের অধিকাংশের জানা নেই। পড়েছেন জেনে ভাল লাগলো। শুভ কামনা আপনার জন্য।

৪| ১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৭:২৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: এ ই সব ঘ‌টি বা‌টি নি‌য়ে আমার কিছুই জানা ছিল না। ত‌বে অ‌নেক আ‌গে আমার এক চেনা লোক কোন এক কথা প্রস‌ঙ্গে ব‌লে‌ছিল , ও তো একটা মু‌র্শিদাবা‌দের ঘ‌টি। আজ আপনার লেখা প‌ড়ে বুঝ‌তে পারলাম কোনটা ঘ‌টি আর কোনটা বা‌টি। বড়ই আচানক ঘটনা!

১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৭:২৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: শুভ সকাল সাজ্জাদ ভাই।
বিষয়টি আমিও তেমন জানতাম না। বাঙালি সংস্কৃতি নিয়ে লেখতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারি। পরে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত লেখি।........................................

৫| ১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৮:২৮

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: শুভ সকাল কাওসার ভাই

সত্যি সকালে ঘুম থেকে উঠে দারুণ একটা বিষয় জানা হল। বিষয় আমার কাছে সম্পূর্ণ নতুন, এতদিন শুনেই এসেছি ঘটি বাঙাল দ্বন্দের কথা প্রথম বিষয়টি বিস্তারিত জানা হল। আপনার লেখা সত্যি ভাবনার উদ্রেক করে। সামুতে আপনার উপস্থিতি সামুকে আরো সমৃদ্ধ করেছে। অনেক ভালবাসা আপনার জন্য।

১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৮:৩৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: শুভ সকাল, তারেক ভাই। গত বছর কলকাতার একটি টিভি চ্যানেলের রিয়েলিটি শোতে ঘটি-বাঙাল রেষারেষির বিষয়টি জানতে পারি। এতোদিন আপনার মত আমারও "ঘটি-বাঙাল" শব্দটি জানা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। আর সেই ভাবনা থেকেই লেখার আগ্রহ।

আমাদের মতুন প্রজন্ম বিষয়টির কিছুই জানে না।

৬| ১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: সবার আগে আমরা মানুষ।
ঘটি বাটি অথবা হিন্দু মুসলিম পরে।

খুব সুন্দর করে রসকস দিয়ে লিখেছেন। তাই লেখাটা হয়েছে প্রানবন্ত।

১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:৩৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: রাজীব ভাই। আপনি গুণী মানুষ। আমার লেখা বরাবরের মতো পড়েছেন, আবার কমেন্টও করেছেন এজন্য কৃতজ্ঞ। অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।

৭| ১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:২৮

নাজিম সৌরভ বলেছেন: তথ্যপূর্ণ লেখাটির জন্য অনেক ধন্যবাদ । অনেক অজানা বিষয় জানতে পারলাম ।

১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:৪১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: নাজিম ভাই, প্রথম পরিচয়। শুভেচ্ছা নেবেন। লেখাটি পড়ে ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম। অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।

৮| ১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:৩৬

আকিব হাসান জাভেদ বলেছেন: ঘটি - বাঙ্গাল , আমরা সত্যিই বাঙ্গাল , তাই তো আমাদের ভিতরে এতো অতিথীপরাণয়তা । কিপ্টে ঘটেরা সব সময় ঘটি। এরা বাঙ্গালদের কখনো পছন্দ করে না । তার পরে বছর না যেতেই আবার ঘুরতে আসে আমাদের এই বাঙ্গালে। আমরা বাঙ্গালদের মন বড় বলেই ঘটিরা ভালো আছে। সুন্দর বিবৃতি । অজানা কিছু জানা হলো আবার ।

১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:৩৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: "আমরা সত্যিই বাঙ্গাল , তাই তো আমাদের ভিতরে এতো অতিথীপরাণয়তা । কিপ্টে ঘটেরা সব সময় ঘটি। এরা বাঙ্গালদের কখনো পছন্দ করে না । তার পরে বছর না যেতেই আবার ঘুরতে আসে আমাদের এই বাঙ্গালে।".......

জাভেদ ভাই, চমৎকার বলেছেন। আসলে মূলত এখানেই ঘটিদের সাথে আমাদের পার্থক্য। অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।

৯| ১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:২৭

কথার ফুলঝুরি! বলেছেন: ঘটি শব্দটির সাথে প্রথম পরিচিত হই এক কাজিন এর বিয়ের সময়ে যখন তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঘটি এরকম বলতে শুনি। পরিচিত হলেও বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞান একদম নেই বললেই চলে। ভালোই হল আপনার লেখা পড়ে এ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম সাথে আরও অনেক তথ্য।
আরও একবার পরতে হবে :)

১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:৪৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ছবিতে আপনাকে দেখে তো ঘটি মনে হয়!!
যাক একজন ঘটি (কিপ্টা) পাঠক পাওয়া গেল। ঘটি আপার জন্য অনেক শুভ কামনা রইলো।

"গত বছর কলকাতার একটি টিভি চ্যানেলের রিয়েলিটি শোতে ঘটি-বাঙাল রেষারেষির বিষয়টি জানতে পারি। এতোদিন আপনার মত আমারও "ঘটি-বাঙাল" শব্দটি জানা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। আর সেই ভাবনা থেকেই লেখার আগ্রহ।"...............

১০| ১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:৫২

এমজেডএফ বলেছেন: আপনার তথ্যসমৃদ্ধ এই লেখাটি পড়েই আমার আজকের দিনের শুরু। শুভ সকাল! ব্লগে কয়েকদিন ধরে স্যাটেলাইট নিয়ে বাঙালদের পক্ষে-বিপক্ষের লেখার বন্যায় যখন আমরা সাধারণ পাঠকরা দিশেহারা তখন পালতোলা জাহাজের মত আমাদেরকে তীরে ফিরে নেবার ভরসা হয়ে প্রকাশিত আপনার এই চমৎকার লেখাটির জন্য অজস্র ধন্যবাদ।
মোঘল, বৃটিশ, পাকিস্তান সব আমলেই বাঙালিকে নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হয়েছে। আমাদের একই কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ভাষার লোক হয়েও ঘটিরা পূর্ববঙ্গের মানুষকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে। ঘটিরা এখনো পরাধীন, ভারতের সবচেয়ে পিছিয়ে পরা রাজ্যের নাম পশ্চিম বাংলা। আমরা বাঙালরা একটি স্বাধীন ও মধ্যবিত্ত ক্যাটাগরির দেশের নাগরিক। বাইরের কথা কি বলবো, আমাদের বাংলাদেশের বাঙালি মুসলমানেরা যখন শিক্ষাদিক্ষা ও আর্থিক দিক দিয়ে একটু উন্নতি লাভ করে তখন উনারা বলেন তাদের আদিপুরুষেরা আরব থেকে এসেছেন। অর্থাৎ উনারা আমাদের মত বাঙাল নয়! আর বিদ্বান ও অর্থবান হিন্দুরা বলেন উনারা উচ্চবর্ণের হিন্দু, উনাদের শরীরে খাঁটি আর্য্যদের রক্ত। অর্থাৎ উনারাও বাঙাল নন! আমরা পূর্ববঙ্গের বাঙালিরা অনাদিকাল থেকে শোষণ, বঞ্চনা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের কারণে সবসময় হীনমন্যতায় ভুগী। সবাই সুযোগ খুঁজি কিভাবে নিজেকে 'অবাঙাল' প্রমাণ করা যায়। পূর্ববঙ্গের বাঙালিকে হীনমন্যতা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য থেকে মুক্ত করে স্বাধীন জাতি হিসাবে নিজস্ব পতাকা হাতে বিশ্বের দরবারে গৌরবের সাথে "আমি বাঙালি" বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যিনি তাঁর নাম হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

১৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:০৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ভাই, আপনার নামটা জানি না। জানলে খুশি হতাম। এতো চমৎকার কিছু কথা বলেছেন। এগুলো চরম সত্য। বিতর্ক হোক তা চাই না বলে আমার লেখায় এ বিষয়গুলো এড়িয়ে গেছি। সত্যি হলো, ঘটিরা মূলত কলকাতার উচ্চবর্ণ ও জমিদার শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করে। এজন্য পশ্চিমবাংলার খেটে খাওয়া বাঙালদের তারা ঘটি বলে এখনো স্বীকার করতে চায় না।

"এই বাঙালরাই সারা পৃথিবীতে বাঙালি জাতির প্রতিনিধিত্ব করছে, ঘটিরা নয়।
আমাদের বাংলাদেশের বাঙালি মুসলমানেরা যখন শিক্ষাদিক্ষা ও আর্থিক দিক দিয়ে একটু উন্নতি লাভ করে তখন উনারা বলেন তাদের আদিপুরুষেরা আরব থেকে এসেছেন। অর্থাৎ উনারা আমাদের মত বাঙাল নয়! আর বিদ্বান ও অর্থবান হিন্দুরা বলেন উনারা উচ্চবর্ণের হিন্দু, উনাদের শরীরে খাঁটি আর্য্যদের রক্ত। অর্থাৎ উনারাও বাঙাল নন! আমরা পূর্ববঙ্গের বাঙালিরা অনাদিকাল থেকে শোষণ, বঞ্চনা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের কারণে সবসময় হীনমন্যতায় ভুগী। সবাই সুযোগ খুঁজি কিভাবে নিজেকে 'অবাঙাল' প্রমাণ করা যায়।"........

কথাটি চরম দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি। একটা পক্ষ তো বাঙালি সংস্কৃতির ইতিহাস পারলে গলায় দড়ি লাগিয়ে খুণ করতো!! এ কেমন গোলাম জাতি আমরা? নিজের পূর্বপূরুষদের পরিচয় অস্বীকার করতে চাই!!!

১১| ১৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:৫৯

কথার ফুলঝুরি! বলেছেন: হাহা! যাক বাঁচা গেল পিকচার টা আমার নিজের না :P
ঘটি পাঠক না :( পুরোটাই পড়েছি তবে তথ্য গুলো মনে রাখার জন্য আরও একবার একটু বেশী সময় নিয়ে পরবো এই যা :P

১৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:০৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: পিকটা যেহতু প্রফাইলে আছে, সেহেতু কবিকে আমি এভাবেই কল্পনা করি!! যাক সে কথা, লেখাটি পড়ে ভাল লেগেছে এটাই আসল। অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।

১২| ১৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:২০

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
লেখাটা মনে হয় আগেও পড়েছিলাম।

১৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৫২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: মাইদুল ভাই, ঠিক বলেছেন। সেইফ হওয়ার আগে ব্লগে দিয়েছিলাম। লেখাটি যাতে সবাই পড়তে পারেন তাই আবার দিলাম।

১৩| ১৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:০৮

জুন বলেছেন: আপনার লেখার বিষয়বস্ত এবং লেখনী দুটোই চমৎকার লাগলো কাউসার চৌধুরী ।
কলকাতায় ইষ্ট বেঙ্গল আর মোহামেডান এর ফুটবল খেলায় এর প্রতিফলন দেখা যায় । মোহনবাগান জিতলে চিংড়ি মাছ কিনে বাড়ি ফিরে :)
+

১৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:২৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: কলকাতায় ইষ্ট বেঙ্গল আর মোহামেডান এর ফুটবল খেলায় এর প্রতিফলন দেখা যায় । মোহনবাগান জিতলে চিংড়ি মাছ কিনে বাড়ি ফিরে :)

হ্যা, ঠিক বলেছেন। ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের দ্বন্দ্বটা কেন তা আমিও আগে জানতাম না।

১৪| ১৫ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৩

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: লেখাটিতে পদাতিক চৌধুরী ভাই কি লিখেছেন দেখার জন্য এলাম তবে কমেন্ট পেলাম না।

১৫ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫২

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: পদাতিক ভাই, এখনো পঞ্চায়েত ইলেকশনের ডিউটিতে আছেন মনে হয়।

১৫| ১৭ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৬

যুক্তি না নিলে যুক্তি দাও বলেছেন: আমিও পদাতিক ভায়ের মন্তব্যর অপেক্ষায় আছি দেখি উনি কি বলেন। তার পর দুএক কথা লিখব।

১৭ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:০১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: পদাতিক ভাই মনে হয় লেখাটি খেয়াল করেননি।

১৬| ২১ শে মে, ২০১৮ সকাল ১০:৩৮

বিপরীত বাক বলেছেন:
ঘটি হল ৪৭ এর বিতাড়িত সম্প্রদায়।

এদের প্রধান জীবিকা হল ধর্ম –দায়া খাওয়া। আল্লাহ-নবী বেইচ্যা খায়। মূলত পৃথিবীর নীচতম ক্রিমিনাল জাত হল ভারতীয় মুসলমানগুলো।এক্সেপ্ট কাশ্মীর। অবশ্য নবীর ডিলারশীপ আর আল্লাহর এজেন্সি এদের হাতে। এদের ঘটিদের প্রধান অস্ত্র সেক্স।
মজার বিষয় হল সেক্স নিয়ে বেশী মাতামাতি হয় পশ্চিমা খ্রিস্টান দেশগুলিতে।
ওদের সাথে মুসলমানদের পার্থক্য হল পশ্চিমারা খ্রিস্টানরা সেক্সকে দাস বানিয়ে রেখেছে অর্থাৎ তারা সেক্সকে পায়ের নীচে রেখেছে আর মুসলমানরা হল সেক্সের দাস অর্থাৎ সেক্সের পায়ের নীচে ধর্ম পালন করে পরহেজগার হয়ে থাকে। জান্নাতি হয়। এদের জান্নাত-টান্নাতেও প্রধান পুরস্কার হল অবিরাম সেক্স। পৃথিবীতেও এদের সর্বোচ্চ অর্জন হল সেক্স।

২১ শে মে, ২০১৮ সকাল ১০:৫৯

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: "এদের জান্নাত-টান্নাতেও প্রধান পুরস্কার হল অবিরাম সেক্স। পৃথিবীতেও এদের সর্বোচ্চ অর্জন হল সেক্স।"............
হাসালেন ভাই। একটা বিনোদন হলো ............!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.