![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জগদ্বিখ্যাত হযরত খাদিজাতুল কোবরা রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহা।প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী, উম্মুল মুমিনিন খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা আলা আনহার জন্ম হয়েছিল এমন ই এক পরিবারে যখন সমগ্র আরব পাপ পঙ্কিলতায় নিমজ্জিত। তখন সেই ঘোর অন্ধকার যুগেও খাদিজার দাদা আসাদ এবং তাঁর পরিবারবর্গ ছিল অত্যন্ত উন্নত চরিত্রের অধিকারী। সীমাহীন পাপের সমাজও তাঁদেরকে নিজেদের অবস্থান থেকে বিন্দুমাত্র বিপথগামী করতে পারেনি। পুত্র খুয়ালিদ বাল্যকাল থেকেই পিতার মত উন্নত চরিত্রের অধিকারী ছিলেন।। আরবের অধিকাংশ লোক যখন মূর্তিপুজায় লিপ্ত ছিল তখন খাদিজার দাদা আসাদের পরিবার ছিল এসবের ঘোর বিরোধী ।সততা ন্যায়পরায়ণতা এবং শিক্ষা দীক্ষায় পুত্র খুয়ালিদ সমগ্র মক্কায় সুখ্যাতি অর্জন করেন।কুরাইশ বংশেরই এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের কন্যা ফাতিমার সাথে খুয়ালিদ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।পারিবারিক ভাবেই খুয়ালিদ ব্যবসায়ী ছিলেন। ব্যাবসায়িক সুখ্যাতির সাথে সাথে বিপুল সম্পদের অধিকারী হলেন তিনি।। কিন্তু এই দম্পতির মনে সুখ ছিল না। দীর্ঘকাল অতিবাহিত হবার পরও তাঁদের কোন সন্তান ছিল না। একটি সন্তানের আকুল বাসনায় প্রভুকে ডেকে ডেকে অবশেষে এক সময় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁদের আশা পূর্ণ করলেন খাদিজার জন্মের মাধ্যমে।
ভূমিষ্ঠ হবার পর থেকেই অন্যান্যদের সাথে খাদিজার বিশেষ পার্থক্য পরিলক্ষিত হতে থাকে।তিনি ছিলেন বাল্যকাল থেকেই নির্মল চরিত্রের অধিকারী।
তৎকালীন আরবে লেখাপড়ার জন্য তেমন কোন ধারাবাহিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকলেও খাদিজার পিতা মাতা ছিলেন পারিবারিক ভাবেই উচ্চ জ্ঞানের অধিকারী। কন্যাকে সেভাবেই তাঁরা শিক্ষা দীক্ষায় আচার আচরণে গড়ে তুলেছিলেন।পরবর্তীতে নানা ঘটনা প্রবাহের পর আল্লাহর নির্দেশে প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীর মর্যাদা লাভ করেন। মহানবী (সা) এর জীবনে যাঁর অবদান ছিল অতুলনীয়। মহানবী (সা) এর নবুয়তের সময় জ্ঞানে বুদ্ধিতে পরিপূর্ণ মহীয়সী হযরত খাদিজা (রাঃ) গুরুত্তপূর্ণ অবদান রাখেন। ইসলামের ইতিহাসে উম্মুল মুমিনিন (মুমিনদের মা) খেতাব লাভ করেন তিনি। তাঁরই গর্ভজাত কন্যা হযরত ফাতিমা (রাঃ) ইসলামের ইতিহাসে আর এক দীপ্ত সমুজ্জ্বল নাম। ইসলামের ইতিহাসে যিনি খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতিমা (রাঃ) নামে অভিহিত।
ফাতেমা ছিলেন নবিজীর অত্যন্ত আদরের কন্যা। নবী করিম (সা) প্রিয় সাহাবী বীর যোদ্ধা হযরত আলীর সাথে নিজ কন্যার বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু হযরত আলীর আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। অত্যন্ত দারিদ্রতার মধ্য দিয়ে ফাতিমা (রা ) সংসার জীবন কাটাতেন। নবিজী কন্যাকে সস্নেহে আল্লাহর উপর ভরসা রাখার জন্য বলতেন। একটি জামায় শত তালি দিয়ে সেলাই করে ফাতিমা (রা) পরিধান করতেন তবুও কখনও আল্লাহর এবাদত থেকে সরে আসেননি বা কোনরকম দুঃখ বেদনার ছায়াও পড়তোনা অন্তরে। গৃহ পরিচারিকা রাখার সামর্থ্য ছিল না ,প্রতিদিন যাঁতা কলে আটা পিষে রুটি তৈরি করে হাতে ফোসকা পরে যেত। কখনও কখনও এক বেলা খেয়ে অন্য বেলা উপোষ করেও কাটিয়েছেন । এরপর ও নবিজী কন্যাকে পরম স্নেহে আল্লাহর উপর নির্ভর করার শিক্ষা দিয়ে গেছেন যা পরবর্তীতে সমস্ত জগতের নারীদের জন্য এক জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে রইলো। হযরত ফাতিমা (রা) পিতার ওফাতের ছয়মাস পরে তাঁর দুই পুত্র ইমাম হাসান এবং ইমাম হোসেন কে রেখে মাত্র উন্ত্রিশ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। আর রেখে যান জগতের তাবত নারীদের জন্য ধৈর্য ও সবরের এক জ্বলন্ত সাক্ষর।
উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রাঃ) ছিলেন নবিজীর প্রিয় সাহাবী হযরত আবু বকর সিদ্দিকীর কন্যা এবং রাসুলাল্লাহ (সা) এর সহধর্মিণী। বাল্যকাল থেকেই স্বভাবগত ভাবেই আয়েশার চরিত্রে বুদ্ধিমত্তা,ইতিহাস-ঐতিহ্যের জ্ঞান এবং সুতীক্ষ্ণ মেধার পরিচয় পাওয়া যায়। যার ফলে তিনি পরবর্তীতে ইসলামের ইতিহাসে বিশেষ অবদান রাখতে সক্ষম হন। তিনি বিভিন্ন সময়ে রাসুলাল্লাহ (সা) এর যুদ্ধযাত্রার সফর সঙ্গীও ছিলেন।অদম্য সাহসী এবং উন্নত মানসিকতার অধিকারী এই রমনী রাসুলাল্লাহর (সা) ওফাতের পর আরও ত্রিশ বছর বেঁচে ছিলেন এবং অসংখ্য হাদিস বর্ণনা করেছেন ।যা সাহাবীগণ অত্যন্ত যত্নসহকারে সংগ্রহ করেছেন দূর দুরান্ত থেকে মোহাদ্দেস গণ আসতেন হযরত আয়েশা (রাঃ) র কাছ থেকে হাদিস সংগ্রহ করার জন্য। উল্লেখ্য রাসুল (সা) এর জীবন যাপন থেকে এবং তিনি যখন যা কিছু করে গেছেন উম্মতের শিক্ষা গ্রহনের জন্য তখনি তা আয়েশা (রাঃ) অনুকরণ করতেন এবং কণ্ঠস্থ করতেন। যার ফলে বিভিন্ন হাদিসের মধ্যে সর্বাধিক হাদিস এসেছে হযরত আয়েশা(রাঃ) থেকে।
নারী সম্পর্কে প্রাচীন ও আধুনিক কালে মানুষের ধারনার সচ্ছতা ছিল না বললেই চলে। তাই কোন কালেই নারীর সঠিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয় নি। একমাত্র ইসলাম নারীকে সঠিক মর্যাদা দিয়েছে। ইসলাম নারীর সর্বোত্তম যে পরিচয় তুলে ধরেছে ,তা হচ্ছে,এ দন্ধ সংঘাতময় বিশ্বে নারী হচ্ছে পুরুষের প্রশান্তি ও সান্ত্বনার উৎস।
পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, -- "আর এক নিদর্শন এটাই যে তিনি তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন,যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি লাভ করতে পার এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক প্রেম প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।" সুরা আর রুম - আয়াত ২১।
আল্লাহর এই ঘোষণার বাস্তব চিত্র হযরত রাসুলাল্লাহ (সা) এর ও হযরত আয়েশা (রাঃ) এর দাম্পত্য জীবনের মধ্যেই একমাত্র লক্ষ্য করা যায়।
যুগে যুগে মহীয়সী নারীরা আলোর দ্যুতি ছড়িয়েছেন, তার তালিকা অনেক বড়। এই ক্ষুদ্র পরিসরে তা লিখে শেষ করা যাবে না। আমরা অপেক্ষায় আছি সে আলো ছড়িয়ে থাকুক সবার মাঝে যার ছটায় আলোকিত হবে গোটা পৃথিবীর নারী সমাজ।
আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সে সকল মহীয়সী নারীদের স্মরণ করি।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অবারিত রহমতের ধারা বর্ষিত হোক তাঁদের উপর।
২| ০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:১৪
হান্টার পোলা বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন!
৩| ২০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:০০
কাওসার পারভীন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ।
৪| ০৫ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ২:৪৯
চাটগাইয়া জাবেদ বলেছেন: ভাবী অসাধারণ পোস্ট। ধন্যবাদ এ পোস্টের মারফতে অজানা অনেক কিছুই জানলাম
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২১
মুহাম্মাদ আরিফ হুসাঈন বলেছেন: নারী দিবসের প্রচলিত পোেষ্টের মাঝে এমন পোষ্ট সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে দেয়