![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদিও মনুষ্য শরীর, তবু সে চেয়েছিল পাখির জীবন।
যদি আত্মত্যাগই হয় একটি দেশের প্রসবকালীন বেদনা
তবে পৃথিবী দ্যাখো আমার মায়ের ছিন্নবসন শরীর;
দ্যাখো অনির্ণীত ক্ষত--
মেহেদীর রঙ লেগে থাকা যুবতীর শব্দহীন চিৎকার
ক্লান্ত নদীর মতো কিশোরের হাতে থ্রি নট থ্রি রাইফেল।
আমি বলতে এসেছি ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞের কথা;
আমি বলতে এসেছি ক্রল করে এগিয়ে আসা অন্ধকারের কথা;
আমি বলতে এসেছি কচুরিপানার মতো ভাসমান লাশের কথা;
আমি বলতে এসেছি শিশুর শরীরে ধারালো বেয়নেটের কথা;
আমি বলতে এসেছি
সোনা বউটির খোঁজে ক্যাম্পে ঢোকা এক তরুন
সিগারেট চেপে ধরা ফোস্কা ভুলে উচ্চারণ করছে 'রাহেলা'
আমি বলতে এসেছি
একদিন যমুনাতে ঝাঁপ দেয়া ডানপিটে ছেলেটা
বুকে মাইন বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ছে কি নির্বিকার।
মাথার ভেতর বোমারু বিমান নিয়ে মানুষ ছুটছে
ঘরহারা মানুষ;
আতঙ্কিত মানুষ;
মানুষের ভয়ে মানুষ;
রক্তের ক্যামোফ্লেজ নিয়ে ছুটছে
বউ কথা কও আর ধানশালিকের দেশ।
যদি ধর্মের নামে জবাই করে বলো
'উসকো ইন্ডিয়ান এজেন্ট, মালাউন হে'
তবে সে জানোয়ারের বয়ানকে আমি অস্বীকার করি।
দেশকে যদি বটবৃক্ষ বলি-মানুষ আমার নিশ্বাস
তবে মানুষের আঘাতে সূর্যের সমান উচ্চতা নিয়ে ঝুলে থাকে যে মানুষ
তার দিকে তাকিয়ে আমার অস্তিত্বকে আমি অস্বীকার করি।
আমি বলতে এসেছি ত্রিশ লাখ মৃতদেহের কথা
আমি বলতে এসেছি একজন বঙ্গবন্ধুর কথা
আমি বলতে এসেছি জর্জ হ্যারিসনের কথা
আমি বলতে এসেছি রুমি, বদি, জুয়েলের কথা
বলতে এসেছি--
বুটের লাথিতে ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে যাওয়া শরীর;
পুনরায় ব্যাথায় ককিয়ে ওঠে বেয়নেটের শৈল্পিকতায়।
পুরনো ফোস্কা থেকে গড়িয়ে পড়া হলুদাভ তরল
শুয়ে থাকে প্রেমিকার চিবুক ছুঁয়ে দেয়া বিচ্ছিন্ন আঙুলের ডগায়।
সারি সারি মানুষ--মানুষ নয়!
ইলেকট্রিক তারে একদল পাখির আশু মৃত্যুর অপেক্ষা
গোলাপের মতো রক্ত--কেবলই রক্ত?
য্যানো কালো দাগে হেঁটে গ্যাছে অন্য আকাশ
সেখানে ঈশ্বর নেই!
একজন শহীদুল্লাহ কায়সার, মুনীর চৌধুরী মরে গেলে
কিইবা আসে যায়--
একজন জহির রায়হান, আলতাফ মাহমুদের প্রস্থানে
কতটুকু ক্ষতি হয়?
কতটুকু গেলে তাকে 'দুঃখ' বলে মানুষ?
যারা লিখেছিল 'সত্য ইশকুল' গানে আর দেয়াল লিখনে
যারা লিখেছিল কবিতা--
অরণ্যে, মাঠে আর কথা বলা স্টেনগানে
মরে যাবার আগে তারাই বেঁচে থাকে!
তবু সব নদী ঘুরে এসে ফিরে দেখি পুরনো উঠান
নষ্ট শসার মতো গলিত লাশ
স্মৃতি নেই, দুঃখ নেই-- এইভেবে দুঃখ পাই আরও একবার।
নয় মাইল লম্বা রক্তের ট্রেইল ধরে ঘুমিয়ে পড়েছি
তবু লাশগুলো উঠে আসে মিছিলের মতো
উঠে আসে ডিসেম্বর, আমাদের পিতামহের শান্ত-ক্রুব্ধ চোখ
অন্ধকার! অন্ধকার!
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৫
কাজী মেহেদী হাসান। বলেছেন: আপনাকেও অশেষ ধন্যবাদ। যতিচিহ্নের ব্যাপারে আমি দক্ষ নই, ভুল হলে সে দায় নিতে আপত্তি নেই
২| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২১
জনম দাসী বলেছেন: বিনম্র শ্রদ্ধা, স্যালুট তোমাকে বাবা... এমন হৃদয় কাঁপিয়ে যাওয়া কবিতার জন্য। বেঁচে থাকুক এই কবি আর কবিতা জীবনবাবুর মত হাজার হাজার বছর কাল... টুকে নিলাম ডায়রির পাতায়। অশেষ দোয়ার সাথে আবারও বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে গেলাম...
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৪
কাজী মেহেদী হাসান। বলেছেন: এমন ভালোবাসার কাছে আমি চিরকাল নতমুখ। কৃতজ্ঞতা অশেষ
৩| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৯
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ভাল লাগলো +++
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৪
কাজী মেহেদী হাসান। বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ
৪| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:৪৭
রুদ্র জাহেদ বলেছেন: আমি বলতে এসেছি ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞের কথা;
আমি বলতে এসেছি ক্রল করে এগিয়ে আসা অন্ধকারের কথা;
আমি বলতে এসেছি কচুরিপানার মতো ভাসমান লাশের কথা;
আমি বলতে এসেছি শিশুর শরীরে ধারালো বেয়নেটের কথা;
এখানেও মুগ্ধতা রেখে গেলাম কবি
+++
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:০০
কাজী মেহেদী হাসান। বলেছেন: ভালো থাকুক প্রিয়মুখেরা
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:০৮
নির্বাসিত কবি বলেছেন: অসাধারণ! খুব ভাল লিখেছেন। তবে যথাযথ জায়গায় দাড়ি-কমার উপস্থিতিতে আরও চমকপ্রদ হতে পারতো।