নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অচেনা আমি

আমি : মো কেফায়েতুর রহমান বি বি এস চতুর্থ বর্ষে পড়ি।

কেফায়েতুর রহমান

আমি ব্লগে নতুন।

কেফায়েতুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি মাদ্রসার ছাত্রের জীবনী....

১০ ই মে, ২০১৪ সকাল ১১:০১

লেখাঃ একাকী একটি ছেলে ।।

আমার নাম রাজু কতই বা হবে আমার বয়স ১০-১২ আমাকে আমার বাবা মা মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিয়েছে । শুধু তাই না সাথে হোস্টেলেও উঠিয়ে দিয়েছে ।। প্রথমে আমার বিশ্বাস হয় নি যে আমার বাবা-মা আমাকে রেখে চলে যাবে ।। অবশ্য মা চলে যাওয়ার সময় কেঁদেছে একটু কিন্তু বাবা একটুও কাঁদেনি আমিও কান্না করি নি পড়ে অবশ্য কেঁদেছি কিন্তু কেউ জানে না ।। কিন্তু এইটা সত্যি আমাকে রেখে তারা চলে গেছে ।। আমার খুব রাগ লাগছে সাথে খুব অভিমান লাগছে । পাশের বাসার রাতুল কে তো তাড় বাবা মা মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেয় নাই ।। সে কি সুন্দর পোশাক পড়ে স্কুলে যায় । আমার ও খুব শখ ছিল স্কুলে যাওয়ার । তা আর হল না । আমি এখন থেকে মাদ্রাসায়ই থাকব আর কোন দিন যাব না বসাতে কোন দিন না কোন দিন না ।।

এই জায়গার নিয়মটা একটু বলি । সকালে ফজরের নামাজের আজানের আগে আমাদের জাগিয়ে দেওয়া হয় ।। তাড় পড়ে নামাজ পড়ে পরতে বসতে হয় ঘুমান যাবে না তাহলে হুজুরে মারে ।। হুজুরের হাতে একটা লাঠি আছে সেটা দিয়ে সে অপরাধ অনুযায়ী মারে । সকাল ৭ টা পর্যন্ত পরতে হয় তাড় পড়ে নাস্তা ও অন্য কাজের জন্য ১ ঘণ্টা সময় নাস্তা তারাই দেয় শুধু ডাল আর ভাল বা ভাত আর ভাজি । ৮ টা থেকে ১২.৩০ পর্যন্ত ক্লাস চলে । ১.১৫ তে নামাজ তাড় পড়ে খাওয়া দুপুরে থাকে মাছ না হয় মাংস আর ডাল।

তাড় পড়ে সবাই কে ঘুমাতে হয় না ঘুমালেও মারে হুজুরে আমি বিছানায় শোয়া মাত্রই ঘুমিয়ে পারি ।। আছেরে আগে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেয় আছর নামাজের পড়ে খেলতে মাঠে যাওয়া যায় ।।

আমি মাঠে যাই কিন্তু খেলি না । আমার শুধু বাসার কথা মনে পড়ে আমার ছোট একটা ভাই আছে তাড় কথা মনে পড়ে আগে কত দুষ্টামি করেছি ওর সাথে । আমার খুব কান্না পায় । শুধু আমি না আরও অনেকে এই আছে আমার মত তারা কান্না করে কিন্তু কেউ দেখার নাই আমি কান্না করি কিন্তু একাএকা কেউ দেখেনা তাহলে আমি লজ্জা পাব আমার খুব লজ্জা ।

আমার কিছু ভাল লাগে না শুধু বাসায় যেতে ইচ্ছা করে । কিন্তু আমি যাব না কোন দিন না আমি আব্বু-আম্মুর উপর অভিমান করেছি অনেক অভিমান । রাতে পরতে বসে আমার চোখে বাসার কথা ভেসে উঠে । এখন হয়ত বাসায় থাকলে কাটুন দেখতে পারতাম । এখানে একটা টিভি ও নাই । আমি এখানে কি ভাবে থাকব ।। রাত ৯.৩০ মিনিটে খাবার দেয় ভাত , ডাল আর ভাজি ওয়াক মুখে দেওয়া যায় না তাড় পর খেতে হয় কারণ এখানে চাইলেই দোকানে যাওয়া যায় না । হোস্টেলের গেট তালা মারা থেকে যদিও আমার কাছে ১০০ টাকা আছে কিন্তু কোন লাভ নেই । এত টাকা আগে কখন আমার কাছে ছিল না এইবার যাওয়ার সময় আব্বু দিয়ে গেছে । এখন অবশ্য ৮০ টাকা আছে আমি ২০ টাকা খেয়ে ফেলেছি ।।

কাল বৃহস্পতি বার ঐ দিন যারা হোস্টেলে থাকে তাদের ছুটি দেয় ক্লাস শেষে । কালকে আবার হাপ ক্লাস যারা বাসায় যায় তাদের কে শুক্র বার রাতে অথবা শনিবার সকালে চলে আসতে হয় । কাল বৃহস্পতি বার হলে আমার কি আমি তো আর বাসায় যাব না ।

আমি মাত্র ক্লাস শেষ করে বের হলাম আমার ভিতরে এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করছে আচ্ছা আব্বু কি আমার জন্য বসে আছে আমাকে বাসায় নিতে আসছে । কিন্তু আমি যাব না আমি অনেক অভিমান করেছি অনেক ।। হ্যাঁ ঐ তো আব্বুকে দেখা যায় সে বসে আছে , তাতে আমার কি আমি তাঁকে দেখি নাই এমন ভাব করব আমার খুব কান্না পাচ্ছে অভিমানে কান্না আমি অনেক কষ্টে ঠোঁট চেপে কান্না আটকিয়ে রেখেছি। কিন্তু আব্বু আমাকে দেখে এগিয়ে এলেন আমার কাঁধে হাত রাখলেন আমি আর থাকতে পারলাম না আব্বুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললাম ।। একি আব্বু কান্না করেছে তাড় চোখে পানি সে চোখের পানি মুছল । আমি এখন বাসায় যাব আমার অনেক খুশি লাগছে ।। একটা ব্যপার আমার মাথায় আসে না আব্বু-আম্মু ও আমি এই ৩ জনেই কান্না করি তাহলে আমাকে কেন এই খানে ভর্তি করল ? আমি এখন ছোট হয়ত তাই বুঝি না পড়ে বুঝব কোন একদিন...................... চলবে ( যদি পাঠকের ভাল লাগে )

লেখকঃ এইটা আমার জীবনে বাস্তব ঘটনা । পরবর্তীতে হোস্টেল জীবনে আরও নানা মজার ঘটনা এবং অনেক করুন ঘটনা ঘটেছে । যদি আপনাদের ভাল লাগে তাহলে শেয়ার করব । লেখাটা লেখার সময় চোখ দিয়ে আমার পানি পড়ছিল ।। এই লেখাটা শুধু তারাই অনুভব করতে পারেবন যারা হোস্টেলে থেকেছেন ।। দেখবেন কি ভাবে একটা মাদাসার ছাত্রকে অবহেলা করে চুচিল সমাজ ।। আবার সেই চুচিলদের বাবার মৃত্যু বার্ষিকী পালন হয় না এই মাদ্রাসা ছাত্রদের ছাড়া ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মে, ২০১৪ সকাল ১১:২৪

লুজার ম্যান বলেছেন: আহ মাদ্রাসায় থাকলে খামু ডাইল! আর স্কুলে পড়লে খাইয়া পারতাম ফেন্সিডাইল! ভাল লাগার কথা না!

২| ১০ ই মে, ২০১৪ সকাল ১১:৫১

এন ইউ এমিল বলেছেন: কষ্ট লাগলো

৩| ১০ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১:৫৮

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: আপনাদের বাসায় টিভি আছে ?

আমি জানতাম যে সব বাসায় টিভি থাকে সে সব বাসায় ছেলেরা মাদ্রাসায় টিকে না, আর টিকলেও ভাল আলেম হয় না !

আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেবের একটা প্রাইভেট মাদ্রসা ছিল, সেখানে দেখতাম টিভি যডি বাসায় থাকে তবে ছাত্র ভর্তি করতে চাইতেন না ! টিভির বিভিন্ন অনুষ্ঠানের গল্প অন্য ছেলেডের সাথে করাও একটা কারণ ।

আমি বাসায় আই পি এস - এসি লাগানোর বিপক্ষে । আমার যুক্তি বাসায় এগুলো থাকলে আমার ছেলে মাদ্রাসায় গিয়ে টিকতে কষ্ট হবে ।

মাদ্রাসার খাওয়ার মান বিভিন্ণ রকম হয় । সাধারণ মাণের হয় আবার ধনীদের মতও হয়, তবে সেসব মাদ্রাসায় পয়সা খরচ হয় বেশী। অভিভাবকের উচিত যেমন খাওয়া দাওয়া আপনি সন্তানকে মদ্রাসায় খেতে দিবেন, ঘরের খাওয়াটাও তেমন -ই রাখবেন ।

ছেলে মাদ্রাসায় ডালের পানি খাবে আপনি বাসায় মুরগীর ঠ্যাং চিবাবেন সেটা ঠিক না । আবার অনেক গরীব পরিবারের সন্তানেরা ঘরে খাবার -ই ঠিক মত পায় না । এরা মাদ্রাসায় ডাল ভাতেই খুশী ।

মোটকথা সব বিষয়েই মিল থাকতে হবে । ঘরের পরিবেশ আর মাদ্রাসার পরিবেশে মিল না হলে বাচ্চা মাদ্রাসায় টিকবে কি করে ?

৪| ১০ ই মে, ২০১৪ দুপুর ২:৩৬

নতুন বলেছেন: বত`মান বিশ্বের আধুনিক শিক্ষা যখন আমেরিকা/চায়না/জাপানের ছাত্ররা science/commerce এ শিক্ষিত হইতেছে সেই সময়ে মাদ্রসা শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আমাদের সমাজের ছেলেরা ভবিশ্যতের পৃথিবির অন্য ছেলেদের সাথে প্রতিযগিতা করবে???

৫| ১০ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৫০

rasel246 বলেছেন: এত কষ্ট করার পর যখন আপনি আলেম হবেন... তখন আপনার মত সৌভাগ্যবান পৃথিবীতে আর কেও হবে না।

৬| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫০

উড়াল পঙ্খী সজল বলেছেন: দুনিয়ার শিক্ষার চেয়ে আখিরাতের শিক্ষা অনেক বড়

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.