![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছু কিছু বিভ্রান্তি এমন যে আপনি বুঝতেই পারবেন না আপনি এর শিকার। প্রেম এমন ই একটা বিভ্রান্তি। আবার সমুদ্রের নীল ও একই। যখন বুঝবেন তখন আপনি ডুবে গেছেন।
সবাইকে আমার ব্লগে স্বাগতম। আজ আপনাদেরকে দেখাবো সপ্তর্ষিমণ্ডল। রাতের আকাশের আরেকটি সুন্দর তারামণ্ডলের নাম সপ্তর্ষিমণ্ডল বা URSA MAJOR. এটি একটি ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ বৃহৎ ভালুক। হায়রে। আমরা উপমহাদেশীয়রা যেখানে আকাশে ঋষি কল্পনা করি পশ্চিমারা সেখানে দেখে ভালুক।
এখনকার বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী সপ্তর্ষিমণ্ডল দেখতে হলে আপনাকে শেষ রাতের (রাত ৩ টা থেকে ৫ টা) দিকে উত্তর আকাশে চোখ রাখতে হবে। শীতের মেঘমুক্ত আকাশে এই তারামণ্ডল স্পষ্টই দেখতে পাবেন। তবে এপ্রিল মাসে এটি সবচেয়ে ভালো দেখা যায়।
এবার মনে মনে তারা গুলো সরল রেখা টেনে যোগ করে দিন এরকম করে।
একটি বিশাল প্রশ্নবোধক আপনার সামনে উদয় হয়েছে তাইনা?? কোথায় ভালুক আর কোথায় কি? আমি হাজার চেষ্টা করেও মনে মনে ভালুক আঁকতে পারিনি। তাইলে পশ্চিমা এবং আরবীয় জ্যোতির্বিদরা কিভাবে সপ্তর্ষিমণ্ডলকে ভালুকের আকৃতিতে কল্পনা করে? এটা নিয়ে পরে বলছি। এখন নিচের ছবিটি দেখুন।
এবার আসুন তারাগুলোর নাম জেনে নেই। ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনী মতে- সাতজন ঋষিকে (ক্রতু, পুলহ, পুলস্ত্য, অত্রি, অঙ্গিরা, বশিষ্ঠ ও মারীচ) বলা হয় সপ্তর্ষি। এই সাতজন ঋষির নামানুসারে সাতটি তারা সপ্তর্ষিমণ্ডল নামে পরিচিত। বলা বাহুল্য নামগুলো সংস্কৃত। তাই আমার কাছে একটু কঠিন কঠিন লাগে। এদের ইংরেজি নাম Dubhe, Merak, Phad, Megrez, Alioth, Mizar আরAlkaid।
এর মধ্যে NAVIGATIONAL STAR হচ্ছে Dubhe, Alioth, আর Alkaid।মূলত আশেপাশের অন্যান্য তারার চেয়ে উজ্জ্বলতা আর সহজ ভাবে খুঁজে পাওয়া যায় এমন সম্ভাবনার ভিত্তিতে মোট ৫৭ টি তারাকে NAVIGATIONAL STAR হিসেবে গণ্য করা হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে আপনি উত্তর গোলার্ধ থেকে একই সময়ে হাতে গোনা ২০ থেকে ২৫ টি তারাকে দেখতে পাবেন। আবার কিছু তারা আছে দক্ষিন গোলার্ধ থেকে দেখাই যাবে না। এজন্যই এতগুলো তারাকে চিহ্নিত করা হয়েছে যাতে যেকোনো অবস্থাতে পৃথিবীর যেকোনো গোলার্ধ থেকে বিপদগ্রস্থ (জাহাজের জন্য গভীর সমুদ্রে নিজেকে হারিয়ে ফেলাই সবচেয়ে বড় বিপদ) সমুদ্রচারী অন্তত একটি তারাকে চিহ্নিত করে তার অবস্থান নির্ণয় করতে পারেন। কিভাবে তা করা হয় সময় পেলে এই বিষয়ে পরে বিস্তারিত লিখবো। এখন আবার সপ্তর্ষিমণ্ডলে ফিরে আসি।
গ্রীক পৌরাণিক কাহিনী মতে দেবতাদের সম্রাট জিউস (ZEUS) সুন্দরী রমণী ক্যালিস্টোর (CALLISTO) প্রেমে পড়েন যে ছিল অরণ্যদেবী আর্টেমিসের (ARTEMIS) অধীনস্থ এক উপদেবী। এর ফলে জিউসের স্ত্রী হেরা (HERA) ঈর্ষান্বিত হয়ে ক্যালিস্টোকে একটি ভালুকে পরিনত করে। কিন্তু ক্যালিস্টোর গর্ভজাত জিউসের সন্তান আর্কাস (ARCAS) তা জানতো না। কোন একদিন শিকারে বের হয়ে আর্কাস ক্যালিস্টোকে মারতে উদ্যত হয়। ঠিক সেই মুহূর্তে জিউস তাকে আরেকটি ভালুকে পরিনত করে। ক্যালিস্টো বা URSA MAJOR বা সপ্তর্ষিমণ্ডলের কাছাকাছি এ ভালুকটিকে বা আর্কাসকে আকাশে URSA MINOR হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
কোরিয়ান উপকথাটা খুব মজার। সেখানে এই তারামণ্ডল “উত্তরের সাত তারা” নামে পরিচিত। কোন এক বিধবার সাত সন্তান ছিল। এই বিধবা প্রতিদিন বাড়ি ফিরতে অনেক কষ্ট করে একটি ছোট নদী পার হতে হত। তার সাত ছেলে মায়ের কষ্ট দূর করতে তার অলক্ষ্যে নদীতে পাথর ফেলে ফেলে একটি রাস্তা বানায়। তাদের মা মন ভরে দোয়া করে যে তার কষ্ট দূর করেছে স্রস্টা যেন তাকে কখনো আড়াল না করেন। তাই মৃত্যুর পর সেই সাত ছেলে আকাশের তারা হয়ে আবির্ভূত হয়।
প্রাচীন আমেরিকানরা সপ্তর্ষির তিনটি তারা Alioth, Mizare এবং Alkaid কে ভালুকের পিছনে তাড়া করা তিন শিকারি হিসেবে কল্পনা করেন। তাদের একটি উপকথা অনুযায়ী প্রথম শিকারি Alioth একটি তীর ও ধনুক নিয়ে তাড়া করছে। দ্বিতীয় শিকারি Mizar একটা ভালুকটিকে রান্না করার জন্য বড় একটা পাত্র বহন করছে (Mizar এর গা ঘেঁসে খুব খেয়াল করলে আরও একটি তারা পাবেন যার নাম Alcor. বলা হয় বড় পাত্রটিই এই Alcor)।
তৃতীয় শিকারি Alkaid একবোঝা লাকড়ি বহন করছে রান্নার জন্য। আর তাদের সামনে বাকি তারাদের সমন্বয়ে গঠিত বড় ভালুক। এজন্যই এই তিনটি তারা লেজের দিকে।
এবার একটা মজার তথ্য জেনে নিন। এতক্ষনে নিশ্চয়ই তারাগুলোকে বেশ ভালভাবে চিনে ফেলেছেন। এবার প্রশ্নবোধকের উপরের দুটি তারা Merak আর Dubhe কে যোগ করুন। যে সরল রেখাটি পাবেন তা আরেকটি উজ্জ্বল NAVIGATIONAL STAR Polarisকে নির্দেশ করবে।
এটি হচ্ছে URSA MINOR এর একটি তারা যাকে বাংলায় বলে ধ্রুবতারা। এটি এমন একটি তারা যা উত্তর গোলার্ধের নিচের দিক (LOWER LATITUDES বা EQUATOR এর কাছাকাছি) থেকে দেখলে সবসময় TRUE NORTH নির্দেশ করবে। আমরা সমুদ্রচারীরা যে কাজের জন্য GYRO COMPASS ব্যবহার করে থাকি। উত্তর গোলার্ধে কোন কারনে গভীর সমুদ্রে আমাদের GYRO ফেইল করলে?? ওই সৃষ্টিকর্তার তৈরি GYRO…
আশা করি লেখাটি আপনাদের তারাদের সম্পর্কে জানতে আরও কৌতূহলী করে তুলবে। সবাই ভালো থাকবেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট তারা পরিচিতি- কালপুরুষ, THE ORION
০২ রা জুলাই, ২০১৩ সকাল ৮:৪১
স্বপ্নসমুদ্র বলেছেন: স্বাগতম ভাই। ভালো লাগা মানেই পোস্ট সার্থক।
২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১১:০৩
সমুদ্রচারী বলেছেন: ভালো লাগ্লো.........
আমি এই Ursa major টাই সবচেয়ে ভাল চিনি.........
আপনি কি একাডেমির ?
০২ রা জুলাই, ২০১৩ সকাল ৮:৪৩
স্বপ্নসমুদ্র বলেছেন: URSA MAJOR অনেক বিখ্যাত তারামণ্ডল। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
৩| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ২:৫০
*কুনোব্যাঙ* বলেছেন: চমৎকার বর্ণনা। অনেক কিছু জানলাম।
প্লাস
০২ রা জুলাই, ২০১৩ সকাল ৮:৪৪
স্বপ্নসমুদ্র বলেছেন: ধন্যবাদ। কষ্ট করে পড়ার জন্য।
৪| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ৯:৪৭
চীড়া মুড়ী বলেছেন: ভালো লাগছে সবগুলাই.
০২ রা জুলাই, ২০১৩ সকাল ৮:৪৫
স্বপ্নসমুদ্র বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:২৫
হাসান মুহিব বলেছেন: ছুইট লাগসু.।.।.।
০২ রা জুলাই, ২০১৩ সকাল ৮:৪৬
স্বপ্নসমুদ্র বলেছেন: হাছা নি বাই? থেঙ্কু।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৪৫
অরূপ দা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই। আপনার পোস্টটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো।