নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি ধর্মকে মেনে চলে অসাম্প্রদায়িক ধার্মিকতাকে বুকে লালন করি কিন্তু আমি ধর্মান্ধ মোটেও নই!” ❤

মোহাম্মদ খালিদ সাইফুল্লাহ ফয়সল

“আমি ধর্মকে মেনে চলে অসাম্প্রদায়িক ধার্মিকতাকে বুকে লালন করি কিন্তু আমি ধর্মান্ধ মোটেও নই!” ❤

মোহাম্মদ খালিদ সাইফুল্লাহ ফয়সল › বিস্তারিত পোস্টঃ

থ্রিলার গল্প ১: "আপ্যায়ন"

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:৪৩


পশ্চিম আকাশে সূর্য ঢুল ঢুল চোখে গোধূলীর আভায় ঝিমুচ্ছে, আকাশের বুকে নিজেকে ছড়িয়ে দিয়েছে বিস্তৃতরূপে। সন্ধ্যের আযানের সাথে সাথে নিমিষের মাঝে হারিয়ে যায় তেজস্বী সূর্য, আকাশের বুকে টুক টুক করে জ্বলে উঠে সন্ধ্যা তারা।
৩০০ ফুট পেরিয়ে পূর্বাচলের খোলা রাস্তা, প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য খোলা দুয়ার। সন্ধ্যার পর এলাকাটি বেশ রম-রমাট হয়ে আসে, যদিও জনবসতি কম হওয়ায় আশেপাশে ঘুরঘুর করা মানুষগুলো দৃষ্টিসীমা সংকীর্ণ হয়ে থাকে।
বরাবরের মতো আজও খোলা মাঠের-ঘাসের শরণাপন্ন হয়েছে অভি, পূর্বাচলের এইদিকটা যেন শত শত স্মৃতির পাতায় জাপটে আছে। অতীতের স্মৃতিগুলো মনে আসা মাত্র খানিকটা বুক মোচড় দিয়ে উঠে অভির, বড় এক শ্বাস নিয়ে প্যান্টের পকেট সিগারেটের প্যাকেট বের করে এনে প্যাকেট খুলে সিগারেট ঠোঁটে লাগিয়ে অপর হাতে থাকা লাইটার চেপে নিয়ে আগুন জ্বালিয়ে সিগারেটে জীবন দেয় অভি।
বড় শ্বাস টান দিয়ে দম করে ফুঁ করে ছেড়ে দেয় অতীতের দিকে.....।
সন্ধ্যের পরে খালের একটু দূরে ‘মিয়া ভাইয়ের পিঠা’ নামের ছোট্ট একটা ভ্যানে পিঠা বিক্রি করে ময়নার মা, ভ্যানের নাম কেন ‘এরকম’ দিলো জিজ্ঞেস করলে প্রতিবার নিজের বড় ভাইয়ের আদর-ভালোবাসা’র গল্প শুনাতে থাকে লম্বা সময় নিয়ে, এর ফাঁকে ময়না দু-চারটে পিঠা অতিরিক্ত বিক্রি করে ফেলে সামনের গল্প শুনতে থাকা ক্রেতাদের কাছে!
এভাবে, প্রতিদিন গল্প শুনে নিজের অতীতকে ভুলিয়ে বর্তমানের সাথে অভি’র বাড়ি ফিরতে ফিরতে নয়টা-দশটা বেজে যায়।
প্রতিদিনের সময় সেদিনও ময়নার মা’র ‘ভাইয়ের প্রেমপ্রীতি’র গল্প যখন মিনিট দু’য়েক বিরতিতে পৌঁছায়, অভির সিগারেটের তৃষ্ণা তখন তুঙ্গে। নিজেকে সেখান থেকে আড়াল করে এনে খানিকটা দূরে গিয়ে সিগারেট জ্বালিয়ে যখন নিজের তৃষ্ণা মিটাতে ব্যস্ত ছিলো, তখন খানিক দূর থেকে আবছা অন্ধকারের মাঝে দু’জন যুবক-যুবতীর কর্কশ কন্ঠের আওয়াজে ভেসে আসছিলো।
নিজের কৌতূহলী স্বভাবের জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে গুটি পায়ে এগিয়ে গেলো সামনের দিকে, আবছা অন্ধকারের বুক চিরে যেন আলো বেরিয়ে আসবে এই..যেন কোনো সময়ে।
“রিফাত, তুমি কিন্তু এটা ঠিক করছো না?” মেয়েটি ভীত সন্ত্রস্ত কণ্ঠে বলে উঠলো।
“কি ঠিক করছি না, তনু? আমি তোমাকে ভালোবাসি, তুমিও আমাকে ভালোবাসো। সো, এইকথা ঠিক-বেঠিকের কথা কেন উঠছে?” রিফাত আক্রোশে জবাব দিলো।
“আশ্চর্য! ভালোবাসি বলে কি তোমার যা ইচ্ছে তা করবে নাকি? একদম না, আমি স্বাধীনতাচেতা মেয়ে। তোমার এসব বাজে স্বভাব আমি সহ্য করবো না...” শক্ত গলায় জবাব দিলো তনু।
“তনু, বেশি বাড়াবাড়ি করো না। চলো, লোকে দেখলে খারাপ ভাববে...” বলে তনুর হাত ধরে টান দিয়ে জোর করে হ্যাঁচড়ে নিয়ে যেতে লাগলো রিফাত।
তনু রিফাতের হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ডান হাত দিয়ে নিজের সর্বস্ব শক্তি দিয়ে চড় মারলো রিফাতের গালে, তবে কেন জানি তনুর দেওয়া চড়কে বিশেষভাবে আখ্যায়িত করা গেলো না!
“তনু, তুই জানিস তোর মতো কলমি শাকের মতো শুকনা মেয়েরা আজ পর্যন্ত একটা মশাও মারতে পারে না থাপ্পড় দিয়ে, আর তুই কি না আমি রিফাতের গালে চড় মেরেছিস....!” ঠাট্টায়, রাগে আগ্রাসী মনোভাব দিয়ে সামনের দিকে এগুতে লাগলো রিফাত।
“রিফাত, সামনে আসবে না বলছি। ওখানে দাঁড়াও, দাঁড়াও ওখানে....” বলে অনেকটা ধমকে উঠলো তনু। পরিস্থিতি যাতে হাতের নাগাদের বাইরে না চলে যায় সেজন্য সময় মেপে চারদিকে বুঝে দাঁড়িয়ে পড়লো রিফাত।
“আমি তোকে মন থেকে ভালোবেসে ছিলাম আর তুই কি না বাকি কুত্তাগুলোর মতো আমার শরীরকে ভালোবাসলি! আমাকে কি তোর রাস্তার বেশ্যা মনে হয়? আমি বেশ কয়েকদিন ধরে তোর ম্যাসেঞ্জার আর ফোনের দিকে নজর দিচ্ছিলাম, আর আজকে এর প্রমাণ পেলাম....” এক নাগাড়ে বলে যেতে লাগলো তনু।
“পাগলের মতো প্রলাপ বকছো তুমি, তনু। চলো, তোমাকে বাসায় পৌঁছে দেই।” ঠান্ডা গলায় বললো রিফাত।
“কার বাসায়? তোর ঐ নেশাখোর বন্ধু’র বাসায়? যার বাসায় নিয়ে গিয়ে তুই আমাকে......” বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে তনু।
নিজেকে সামলানোর মতো শক্তি যেন আজ ক্ষয়ে ফেলেছে সে, নিজের থেকেও বেশি যে ছেলেটা তনুর যত্ন নিয়ে এসেছে এতোদিন আজ শেষ বেলায় কি না ওর এতো জঘন্য রূপ দেখতে পেলো তনু!
রিফাত নিজের চরিতার্থকে রুপ দেওয়ার জন্য তখন খুব নরম কণ্ঠ নিয়ে এগিয়ে আসে তনুর দিকে, তনুর মাথায় হাত বুলিয়ে বলে – “তনু, আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি আমাকে অবিশ্বাস করলে কেনো?”
“কুত্তার বাচ্চা, হাত লাগাবি না আমাকে....” বলে হাত ছিটকে সরিয়ে দেয় তনু। আর, সে মুহূর্তে নিজের অন্ধকারে নিজের পকেট থেকে কিছু একটা বের করে এনে তনুকে দেওয়ার আগ মুহূর্তে চিৎকার করে উঠে অভি। দূর থেকে কান পেতে চোখ মেলে ঘটতে থাকা ঘটনা দেখতে থাকায় দৌঁড়ে এগিয়ে আসে অভি, হাতে থাকা মোবাইল ফোন পকেটে রেখে তনুর দিকে এসে থামে অভি। আর, তখন অভিকে দৌঁড়ে আসতে দেখে রিফাত রাগে-গোস্বায় ফেটে গিয়ে পালিয়ে যায়।
“এই যে, শুনছেন?” বলে পকেটে থাকা মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট বের করে এনে জ্বালিয়ে দেয় অভি। তনুর জবাব না পাওয়া আবারো নিজের গলার স্বর উঁচু করে বলে উঠলো – “এই যে, শুনতে পাচ্ছেন আ....” বলা শেষ করার আগে গালে ‘ঠাস’ করে একটা চড় পড়ে অভির।
অবাক চোখ নিয়ে ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালানো আলো দিয়ে এক মননে দেখতে লাগলো কিছুক্ষণ আগে কাঁদতে থাকা মেয়েটিকে, চোখের ভিজে যাওয়া কাজলগুলো এবোঁড়ো-থেঁবড়ো হয়ে যাওয়ায় মেয়েটিকে যেন আরো ঐশ্বরিক দেখাচ্ছে!
“এতো জোরে চেঁচাচ্ছেন কেন? আমি বয়রা না, আমি কানে শুনতে পাই....” নিজের চোখ মুছতে মুছতে জবাব দিলো তনু।
“আর, আপনি বকরা-কানা-ল্যাংড়া হলেও আমার কোনো আপত্তি ছিলো না...” মুখ ফসকে বলে উঠলো অভি।
“কিহহ? এইখানে একটা কুত্তা ছিলো না, ওটা কোথায়? দেখেছেন ওটাকে.....” এক রাশ বিরক্তি মুখে নিয়ে প্রশ্ন করলো তনু।
“মালিক এসে গিয়েছে দেখে প্রহরী কুত্তা ভেগে পালিয়েছে...” বলে পরিপাটি দাঁত বের করে হাসি দিলো অভি।
“ওহ আচ্ছা। দুঃখিত, আপনাকে ওভাবে চড় দেওয়ার জন্য। আসলে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলাম একটু আগে, নিজের উপর ধিক্কার দিচ্ছিলাম আমি...” গলা খাদে নামিয়ে বললো তনু।
“অতীত তো অতীত, আপনি ভুলে যান। আর, এতো রাতে এদিকে আপনার সাথে উচিত হয় নি।”
“আমি জানি, আসলে বেকুব ছিলাম তখন। এখন, বুঝতে পেরেছি ‘প্রেম কেনো অন্ধ হয়?’ কুত্তা...” বলে থু করে থুথু ফেললো তনু।
“এখানে কি সারা রাত দাঁড়িয়ে থাকবেন নাকি বাসায় যাবেন?”
“আমি আমার পথ চিনি, আপনি আপনার পথ চিনে নিন।”
“যদি সামনের রাস্তায় আপনার ঐ নেড়ি কুত্তা আপনার দিকে জিভ বের করে আসতে থাকে, তখন কি করবেন আপনি?”
“আপনি আমার জন্য এতো চিন্তা করছেন কেন? আলগা পিরিত দেখাচ্ছেন কেন?”
“আপনি এভাবে না ভেবে অন্যভাবে দেখুন।”
“আর, ওটা কিভাবে?”
“দেখুন, শহরের পরিস্থিতি খুব খারাপ। রাতের বেলা যে কাউকে এভাবে বাইরে চলাফেরা করতে দেখলে রাস্তায় কিছু কুকুরের জিভে আপনা আপনি পানি চলে আসে। এজন্য আপনাকে সর্তক হয়ে বলছি....” টান টান গলায় জবাব দিলো অভি।
“আপনি যে ভালো মানুষ, তা আমি কিভাবে বুঝবো? চেহারাও তো আপনার বেশি একটা ভালো দেখাচ্ছে না.....” বিদ্রূপের সুরে বললো তনু।
অভি নিজের প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে একটা কার্ড বের করে এনে তনুর দিকে এগিয়ে দেয়, তনু নিজের মোবাইল বের করে সেটার ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে কার্ডের উপর দেওয়া মাত্র চোখগুলো বড় হয়ে যায়। অভি দু’কদম সামনে এগিয়ে ছোট্ট করে বলে – “পুলিশ।”
“আপনি যে পুলিশ এটা বিশ্বাস করবো কিভাবে, হুম্মম? অন্য কোনো প্রমাণ দেখান.....” বাঁঝিয়ে দেখার চেষ্টায় বলে উঠলো তনু।
অভি তখনো বেশ অবাক চোখে তাকিয়ে আছে তনুর দিকে, এতো খুঁটি-নাটিঁ বাছ-বিচার করে মেয়ে কি না এরকম একটা ছেলের সাথে প্রেম করেছে, যে কিছুক্ষণ আগে ওর সাথে......ভাবতে ভাবতে তখনো আবার তনু প্রশ্ন করে – “কই? কি হলো? দেখান, প্রমাণ....”
অভি নিজের মোবাইল ঘেঁটে একটা ছবি বের করে তনুর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে – “আমার ট্রেনিং পিরিডয়ের ছবি, এবার বিশ্বাস হলো তো...” বলে মুচকি হাসি হাসলো অভি।
“ওয়াহহ....সত্যি তো। আমি একদম দুঃখিত, কিছু মনে করবেন না। আমি খুব লজ্জ্বিত আমার কথায়-ব্যবহারে...” লাল বর্ণের চেহারা নিয়ে বললো তনু।
“আরে নাহ, একদম না। আপনাদের ভুলের জন্য আমরা সদা আছি, ইটস ওকে।”
“আমি তনু...” বলে হাত বাড়িয়ে দিলো তনু।
“আমি অভি..” বলে রুপ রাজ্যের শুকনো রাজকন্যার হাত লুফে নিলো অভি।
“আমি কি আপনার এই ছবিটা নিতে পারি? প্লিজ..প্লিজ্জ...তাহলে সামনের বার আমাকে কেউ বিরক্ত করলে আপনার নাম আর ছবি দেখিয়ে নিজেকে উদ্ধার করতে পারবো। প্লিজ্জ..প্লিজ্জজ...” অনুনয় কণ্ঠে বলতে লাগলো তনু।
“অকে, ওকে। তবে, আমার পোস্টিং কিন্তু শেরপুর জেলায়। আমি ছুটিতে এসেছি ঢাকায়.....”
“এটা কোনো সমস্যা নয়। পুলিশ তো এক জাতের....” বলে মুচকি হেসে অভির পুলিশ পোশাকের ছবি তনু নিজের ফোনে নিতে থাকে।
“আমার গাড়ি আছে। নিজস্ব। তবে, চলুন....আপনাকে বাসায় পৌঁছে দেই।”
“জ্বি, চলুন....”বলে সামনে হাঁটতে লাগলো অভি আর তনু।

ড্রাইভার সিটে বসে অভি পলকে পলকে দেখে যাচ্ছে পাশে বসে থাকা তনুকে, গাড়ির আলোতে তনুর রূপের সৌন্দর্য যেন দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে। কিছুক্ষণ পরে তনু বলে উঠলো – “আমাকে এভাবে না দেখে রাস্তায় দেখুন, নাহলে বিপদে পড়ে যাবেন...” বলে ফিক করে হেসে দিল তনু।
মিনিট তিনকে পর তনুর মোবাইলে বেজে উঠলো, স্ক্রিনের নাম দেখে মুচকি হেসে জবাব দিলো – “হে মা, বলো।”
“আর কতক্ষণ?”
“দাঁড়াও...” বলে ফোনের স্পিকারে হাত দিয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে বললো, “আপনাকে কিন্তু আজকে রাতে আমার ঘরে খেতে হবে। একদম না করবেন না, কিন্তু....”
“ঠিক আছে।” বলে দাঁত খুলে হাসি দেয় অভি।
“মা, চলে আসছি। পাঁচ মিনিট...” বলে ফোন রেখে দেয় তনু।
“তা, আপনার ঘরে কে কে থাকে? না...মানে, এমনি জিজ্ঞেস....” শেষ করার আগে তনু বলে উঠলো – “কেনো? বিয়ের জন্য আমার হাত চাইবেন নাকি....” বলে ফিক করে দিলো তনু। পরমুহূর্তে আবার বলে উঠলো – “সামনে গিয়ে ডানের মোড়ের নিবেন....”
হড়বড়িয়ে গিয়ে অবাক চোখে তনুর দিকে চাইলো অভি, জিজ্ঞাসু চোখ যেন প্রশ্ন করছে – “মেয়েটা কি পাগল নাকি? কি আবোল-তাবোল....” ভাবতে ভাবতে তনু তখন আবার বলে উঠলো – “সামনে সোজা ঢুকিয়ে দিন....”
অভি তনুর সৌন্দর্যে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে রৌদ্রস্নান করছে ক্ষণে ক্ষণে, নিজেকে হারিয়ে ফেলে আবারো হুঁশ নিয়ে আসার সমীকরণে ছন্নছাড় হয়ে যাচ্ছে অভি। তখন শেষবারের মতো তনু বলে উঠে – “গাড়ি থেকে নাম, রাজন।”
যেন মুহূর্তের মধ্যে বাজ পড়ে যেন সর্বত্র, সামনে চোখ মেলে যা দেখলো তার জন্য এই অব্দি অপ্রস্তুত ছিলো অভি ওরফে রাজন। গাড়ি ব্রেক কষে থামার পর অভি ওরফে রাজন গাড়ির জানালা দিয়ে মাথা বের করে উপরের দিলে তাকায়, জ্বল জ্বল আলোয় দেখতে পায় – “বাংলাদেশ পুলিশ, ভাটারা থানা।”
“চোরের দশদিন, আর গিরোস্তের একদিন....” বলে মুচকি হাসি হাসলো তনু।
সামনে থাকা পুলিশ সদস্যের দিকে চেয়ে কড়া ভাষায় নির্দেশ হলো – “এই শুয়ারের বাচ্চারে গাড়ি থেইক্কা বের কর। ওরে মেহমানখানায় নিয়ে যা। আজকে তোর খাতির-যত্ন আমি করবো....”
“স্যার, চার্জশিট কি বানাবো?” থানা থেকে দৌঁড়ে এসে গেইটের সামনে ফাইল হাতে নিয়ে দাঁড়ালো থানার ও.সি. আফজাল শেখ ওরফে রিফাত।
“কিরে শেখ....কি এক্টিং করলি তুই বাপ? পুরা আগুন লাগায়া দিসোস এই শুয়ারের বাচ্চার কলিজায়....’ পিঠ চাপড়ে দিয়ে হাসতে হাসতে বলতে লাগলো এ.এস.পি. তনু।
“না স্যার, কি যে বলেন! আপনার অভিনয় তো শাবানা-কবরী-ববিতা’দের লেভেলের। আর স্যার, আপনার হাতের চড় যে খায় না, ওর জীবনের সব বৃথা...” বলে ফিক করে হাসি মারলো আফজাল শেখ।
কথা শুনে থানার বাকি সদস্যরাও হেসে উঠলো।
“আফজাল, চার্জশিট বানা....”
“জ্বি স্যার, বলেন...”
“চার্জশিটে লেখ...ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৪ ধারার এবং পিআরবির ২৪৪ বিধিতে থানায় এজাহার জারি করার পর পুলিশ নিজে বাদী হয়ে, মামলা বাছ-বিচার শুরু করে। মামলার অপর বাদী সদস্য যারা ‘রাজন’ ওরফে ‘অভি, শিমুল, ইকবাল’ ছদ্মবেশী নাম ও পুলিশের ছদ্ম পরিচয় নিয়ে নিরীহ মেয়েদের ধর্ষণ করে এবং পরবর্তীতে সেগুলোকে ভিডিও চিত্রে ধারণ করে বিভিন্ন সময় আর্থিক, দৈহিক, মানসিক হুমকি দিতে থাকে।
বাদী’দের এজহারের পর থানার সিনিয়র এ.এস.পি রুবায়েত ইসলাম তনু নিজে মামলা অনুসন্ধানে নামেন এবং দীর্ঘ আড়াই মাস পর ‘ধর্ষক রাজনকে’ ছদ্ম পরিচয়ে গ্রেফতার করে.....” বলে থামলো ভাটারা থানার সিনিয়র এ.এস.পি. তনু।
“জ্বি, স্যার। বুঝতে পেরেছি।”
“কি বুঝছোস?”
“বাঘে ছুঁইলে আঠারো ঘাঁ, মাগার পুলিশে ছুঁইলে ছতত্রিশ ঘাঁ, স্যার....”
“ওরে রেডি কর, আজকে রাতে ওর ‘কষা গোস্তের কাবাবের’ আপ্যায়ন আমি করমু....” বলে হাসতে হাসতে হাসতে থানায় ঢুকে গেলো সিনিয়র এ.এস.পি রুবায়েত ইসলাম তনু।

(সমাপ্ত)


@মোহাম্মদ খালিদ সাইফুল্লাহ ফয়সল

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: গল্পটা জমে নি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.