নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি ধর্মকে মেনে চলে অসাম্প্রদায়িক ধার্মিকতাকে বুকে লালন করি কিন্তু আমি ধর্মান্ধ মোটেও নই!” ❤

মোহাম্মদ খালিদ সাইফুল্লাহ ফয়সল

“আমি ধর্মকে মেনে চলে অসাম্প্রদায়িক ধার্মিকতাকে বুকে লালন করি কিন্তু আমি ধর্মান্ধ মোটেও নই!” ❤

মোহাম্মদ খালিদ সাইফুল্লাহ ফয়সল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্ব রাজনীতিঃ "উইঘুর, চীন ও মুসলমান"

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:২৩




চীনের এক শহর জিনজিয়াং , জিনজিয়াং শব্দের অর্থ ‘নতুন এলাকা’। এই অর্থে দখলের ইঙ্গিত মেলে। তবে উইঘুররা জিনজিয়াংকে ‘পূর্ব তুর্কিস্তান’ বলে। চীনের সবচেয়ে বড় বিভাগ এটা। বাংলাদেশের ১২ গুণ বড়। এখানে মূল বাসিন্দা মুসলমান উইঘুররা—ভাষায় তুর্কি। সংস্কৃতিতে মিল মধ্য এশিয়ার সঙ্গে। এই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে চীনা সরকারের বনিবনা হচ্ছে না বহুকাল। উইঘুরদের প্রতি নজরদারিতে বাড়ি বাড়ি প্রশাসনিক পরিদর্শন কায়েম করেছে চীন। এই কর্মসূচির দাপ্তরিক নাম অবশ্য ‘হানদের সঙ্গে উইঘুরদের পুনর্মিলন উদ্যোগ’!

জিনজিয়াংয়ে ২ কোটি ২০ লাখের মতো জনসংখ্যা। তার মধ্যে উইঘুররা অর্ধেক। প্রচারমাধ্যম বলছে, এদের প্রায় ১০ লাখই আছে ‘রাষ্ট্রের শত্রু’ হিসেবে ডিটেনশন সেন্টারে। অনেককে পাঠানো হচ্ছে ‘পুনঃ শিক্ষাকেন্দ্রে’—রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ সংশোধন করতে। বিশেষ করে ‘কমিউনিস্ট পার্টি’র প্রতি ভালোবাসা শেখাতে। জাতিসংঘের ‘বৈষম্যবিরোধী’ একটি কমিটির সহসভাপতি গে ম্যাকডোগাল জেনেভায় গত বছরের আগস্টে এসব তথ্য জানান তাঁদের ‘নির্ভরযোগ্য’ প্রতিবেদন সূত্রে। পীড়নের মুখে প্রচুর উইঘুর বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এখন প্রবাসী। স্বদেশে ফিরলে এঁদের অনেকে তাৎক্ষণিকভাবে আটক হচ্ছেন। এ রকম অভিযোগ শত শত। চীন অনেক বন্ধুদেশকে চাপে রেখেছে উইঘুরদের ফেরত পাঠাতে।

জিনজিয়াংয়ের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের হাতবদল হয়েছে বহুবার। ১৯৩৩ ও ১৯৪৪ সালে দুই দফায় অঞ্চলটি স্বাধীন ছিল। রুশ সমাজতন্ত্রী স্তালিন সে সময় উইঘুরদের সহায়তা দিতেন। তবে ১৯৪৯ সাল থেকে চীনের কঠোর নিয়ন্ত্রণের রয়েছে পূর্ব তুর্কিস্তান। এলাকায় হানদের সংখ্যা বাড়ছে তখন থেকে। উইঘুরদের দাবি, ১৯৪৯ সালের আগে জিনজিয়াংয়ে চীনের ‘হান’রা ছিল ৬ শতাংশ। বর্তমানে প্রায় ৪০ শতাংশ। এলাকাটি মধ্য এশিয়ায় চীনের প্রবেশদ্বার। ‘সিল্ক রুট’-এর একেবারে কেন্দ্রে অবস্থিত। চীনের কয়লার ৪০ ভাগ, তরল জ্বালানির ২২ ভাগ এবং গ্যাসের ২৮ ভাগ রয়েছে এখানকার মাটির নিচে।

খনিজ সম্পদে ন্যায্য হিস্যার ঘাটতিও অসন্তোষের এক উপাদান। তবে চীন উইঘুরদের অর্থনৈতিক বৈষম্য কিংবা ধর্মীয় ও জাতিগত বিচ্ছিন্নতাকে ‘জঙ্গিবাদ’ হিসেবে দেখাতেই আগ্রহী। অনেক ভূরাজনৈতিক ভাষ্যকার বলেন, পূর্ব তুর্কিস্তানের খনিজ সম্পদই তার জন্য অভিশাপ। হয়তো এ কারণেই তারা গণতন্ত্র উপভোগ করতে পারবে না—হানদের ‘উন্নয়ন’ কর্মসূচিই তাদের নিয়তি।

চীনের উইঘুরনীতি স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে পার্টি নেতা শেন কোয়াংওকে তিব্বত থেকে জিনজিয়াং বদলিতে। জিনজিয়াংয়ের বর্তমান পার্টি সেক্রেটারি শেন ২০১৬ সাল পর্যন্ত ছিলেন তিব্বতে একই পদে। তিব্বতে তাঁর সৃষ্ট ত্রিমাত্রিক এক নিরাপত্তাব্যবস্থায় স্থানীয় অসন্তোষ কমানো গেছে। চীনে বর্তমানে সবচেয়ে প্রভাবশালী ২৫ জন পার্টি কর্মকর্তার একজন শেন। ২০২৩ সালে পার্টির সর্বোচ্চ পরিষদ সাত সদস্যের ‘স্ট্যান্ডিং কমিটি’তে জায়গা করে নিতে পারবেন বলেও মনে করা হয়। তার আগে উইঘুরদের পুরোপুরি ‘শান্ত’ হতে হবে!

শান্ত জিনজিয়াং চীনের বিদেশনীতিরও এক চুম্বক লক্ষ্য। উইঘুরদের আশপাশের দেশের সহানুভূতি থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে সচেষ্ট চীন। তুরস্ক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, কাজাখস্তানসহ পার্শ্ববর্তী সব দেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ এক দিক উইঘুর প্রসঙ্গ। তালেবানদের সঙ্গে চীনের উদীয়মান বন্ধুত্বও এই কূটনীতির অংশ।

বৈশ্বিক রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে চীনের কাছে আছে উইঘুর, ভারতের কাছে আছে মায়ানমার, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আফগানিস্তান থাকলেও হাতের মুঠো থেকে তা বেরিয়ে যাচ্ছে।

আর, নব নিযুক্ত পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী দাবার চাল যে কোনদিকে পড়বে তা শুধু সময়ের অপেক্ষায়....



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.