![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“আমি ধর্মকে মেনে চলে অসাম্প্রদায়িক ধার্মিকতাকে বুকে লালন করি কিন্তু আমি ধর্মান্ধ মোটেও নই!” ❤
বই পর্যালোচনা (রিভিউ) – ০৮
বইয়ের নাম – দ্য রেইপ অব বাংলাদেশ
মূল লেখক – অ্যান্থনী ম্যাসকারেনহাস
অনুবাদক – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী
ভাষা – বাংলা
ঘরনা – মুক্তিযুদ্ধ
বইয়ের পৃষ্ঠা – ১৬৪
বিনিময় মূল্য – ১৭৬ টাকা
প্রকাশন - হাক্কানী পাবলিশার্স
ব্যক্তিগত অনুযোগ – ৪.৬/৫
অ্যান্থনী ম্যাসকারেনহাস এই বইতে খুব নিপুণাকারে ’৬৯ এর ২৬ মার্চে ইয়াহিয়া খানের গদিতে বসা থেকে শুরু করে ’৭১ এর এপ্রিল পর্যন্ত.... পুরো সময়কালকে তুলে ধরেছেন, দেখিয়েছেন পাকবাহিনীর নৃশংসতাকে। লিখেছিলেন স্বাধীনতা আর দুর্বিপাকের গল্পগুচ্ছ নিয়ে।
পুরো বইটিকে তিনি বেশ কিছু অধ্যায় অথবা পর্ব বিভক্ত করেছেন, উল্লেখযোগ্য অধ্যায়গুলোর মধ্যেঃ
(ক) পাকিস্তানের দুর্বিপাকের পূর্ববঙ্গ,
(খ) পাকিস্তান পতনের কারণগুলোর যৌক্তিকতা,
(গ) পাকিস্তানে সংঘর্ষের মূল কারণগুলো,
(ঘ) অর্থনৈতিক বৈষম্য,
(ঙ) পাকিস্তানি শাসকচক্রের বিশ্বাসঘাতকতা,
(চ) এক নতুন সূচনা পর্ব,
(ছ) ১৯৭০: নির্বাচন-পূর্ব টালবাহানা,
(জ) ১৯৭১ : নির্বাচনোত্তর প্রহসন,
(ঝ) পাক-সামরিক বাহিনীর অভিযান,
(ঞ) অবিস্মরণীয় পঁচিশ দিন,
(ট) গণহত্যা,
(ঠ) গোয়েবলসের পুনরাগমন,
(দ) আশি লাখ লোক কেন মারা যাবে?
(ধ) কেন বাংলাদেশ? সহ বেশকিছু।
‘দ্য রেইপ অব বাংলাদেশ’ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের তথ্যভিত্তিক একটি বই, যা দেশের জন্য, দেশের আগামী প্রজন্মের জন্য কষ্টিপাথর স্বরূপ।
বইটির শুরু থেকে তিনি ২৫ মার্চের কালরাত্রির প্রেক্ষাপট, হানাদারদের প্রস্তুতি এবং পাকিস্তানিদের বৈষম্যমূলক নীতিও তুলে ধরেছেন। একইসাথে তিনি, ‘পাকিস্তান পতনের কারণগুলোর যৌক্তিকতা,’ ‘পাকিস্তানে সংঘর্ষের মূল কারণগুলো,’ অধ্যায়ে পাকিস্তানের পতন এবং এর কারণগুলো খুঁজতে চেষ্টা করেছেন।
‘এক নতুন সূচনা পর্ব,’ এবং ‘১৯৭০: নির্বাচন-পূর্ব টালবাহানা,’ অধ্যায়ে লেখক নির্বাচনোত্তর বিভিন্ন প্রতারণা, টাল বাহানার বিশদ বিবরণ বর্ণিত করেছেন। নির্বাচনে ১৬৭ আসন পাওয়া আওয়ামীলীগকে ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি, জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করা, জনরোষের উর্ধ্বগতি প্রভৃতি বিষয় বর্ণনা করেছেন।
‘পাক-সামরিক বাহিনীর অভিযান’ অধ্যায়ে বর্বর হানাদারদের ঢাকায় সৈন্যসমাবেশ, প্রস্তুতি ও অভিযান... ইত্যাদি বর্ণনা করেছেন, ‘অবিস্মরণীয় পঁচিশ দিন’ অধ্যায়ে ১৯৭১ সালের মার্চের ১ থেকে ২৫ তারিখ এই স্মরণীয় ২৫ দিনের ঘটনা প্রবাহের বর্ণনা রয়েছে।
পরবর্তী অংশে রয়েছে গণহত্যা ও পাকিস্তানিদের নিষ্ঠুরতার বিবরণ। ‘গোয়েবলসের পুনরাবির্ভাব’ অধ্যায়ে পাকিস্তানি তথ্যমন্ত্রণালয়ের নির্লজ্জ অপপ্রচার ও পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণের নিষ্ক্রিয় দর্শক ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছেন লেখক।
‘আশি লাখ লোক কেন মারা যাবে’ শিরোনামের অধ্যায়ে, লেখক ’৭০ এর নভেম্বর হতে ’৭১ এর ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দুটি বিরাট বিপর্যয়- ঘূর্ণিঝড়-জ্বলোচ্ছ্বাস এবং পাকবাহিনীর গণহত্যায় নিহতের প্রকৃত সংখ্যার প্রাচুর্য ও ব্যাপক প্রাণহানিতে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হওয়া পূর্ব পাকিস্তানের দুর্দশার চিত্র ফুটে উঠেছে।
নিজের পাঠ প্রতিক্রিয়ায় বলতে গেলে বেশ বড় হয়ে যাবে লেখাটি, একইসাথে নিজের ভিতরের আক্রোশগুলো ফেটে উঠবে।
বাংলাদেশের জন্ম, সৃষ্টি, বেঁচে উঠা আর সাত লক্ষ প্রাণের দেশ নিয়ে গড়ে উঠে বইটি। পূর্ববাংলায় পাকিস্তানিদের বর্বরতাকে তিনি হিটলার ও নাৎসীবাদের অমানুষিক বর্বরতার চেয়েও ভয়াবহ বলে বইটির ভূমিকায় লিখেছেন।
বাংলাদেশ সৃষ্টির সংগ্রাম,ত্যাগ,তাৎপর্য উপলব্ধিতে অতুলনীয় একটি বই। তিনি এ অমানবিক নৃশংসতার চিত্র বিশ্ববাসীকে জানানোর সংকল্প নিয়ে ১৯৭১ এর মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে লন্ডনে পাড়ি জমান। সেখানে তিনি সবকিছু তুলে ধরেন ‘সানডে টাইমস’এ; ১৯৭১ এর ১৩ জুন 'সানডে টাইমস' পাকিস্তানের গণহত্যার সম্পূর্ণ কাহিনী ফাঁস করে দেয়।
ঐ সকল খবরের যুক্তিসংগত অনুসিদ্ধান্ত হলো ‘দ্য রেইপ অব বাংলাদেশ’ গ্রন্থটি, যার বঙ্গানুবাদও হয়েছে ‘বাংলাদেশ লাঞ্ছিতা’ নামে।
খুব টানটান উত্তেজনা পাবেন বইটি পড়তে গিয়ে, পাঠকদের, বইপ্রেমীদের এবং স্বাধীনতা প্রিয় প্রত্যেক পাঠককে এই বইটি পড়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি....
২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:২৪
মোহাম্মদ খালিদ সাইফুল্লাহ ফয়সল বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদ এর লেখা এখনো পড়া হয়নি, বলতে পারছি না।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদ তার দেয়াল ও জোছনা ও জননীর গল্প উপন্যাসে এই বইয়ের রেফারেন্স দিয়েছেন?