নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্রসফায়ার

০৩ রা জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৪৯

ক্রসফায়ার শব্দটাই ভুল। এটা ডাইরেক্ট ফায়ার। যে মরার সে ডাইরেক্ট ফায়ারেই মরে।
তাই, এই তথাকথিত লিগালাইজড করা"ক্রসফায়ার' ঠিক না বেঠিক এটা ক্রসভাবে না বলে ডাইরেক্টই বলা উচিত। ক্রসফায়ার যদি অপরাধ কমাবে এটা কেউ মনে করে তবে এটা সম্পূর্ণরুপে ভুল। গত দু সপ্তাহ আগেইতো ইয়াবার বাদশাহ বলে খ্যাত একজন ক্রসফায়ারেই মারা গেলেন। তবে হাজার হাজারা ইয়াবা সহ আজকে একজন ধরা পড়লেন কেন? ক্রসফায়ারে অপরাধ কমিয়েছে কিংবা ক্রসফায়ারে অপরাধী নির্মুল হয়েছে- কোনো পরিসংখ্যানই এটাকে সমর্থন করেনা।

ক্রসফায়ারের পক্ষে যে যুক্তিটি সবচেয়ে জনপ্রিয় তা হলো- যে অপরাধীকে নিয়ে আজকে তোলপাড় হচ্ছে- সে অপরাধী ধরা পড়লো। মামলা হলো, জেলে গেলো।
ঘুষ, দুর্নীতির অতলে নিমজ্জিত এই কোর্ট-কাচারী ব্যবস্থায় আজ থেকে কয়েক বছর পর জেল খেটে সে নির্ঘাত বের হয়ে আসবে। অথবা ভাগ্য ভালো থাকলে ক্ষমা পেয়েও যেতে পারে। মানুষের হৈ চৈ ও তখন আর তেমন হবেনা-আজকে যেমন হচ্ছে। কাজেই- এই সব ভয়ঙ্কর ক্রিমিনালদের তাৎক্ষণিক মেরে ফেলাটাই উচিত।

চন্দ্রিল ভট্টাচার্য ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের একটা পরিসংখ্যান দেখাতে গিয়ে বলেন-১৯৯১ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত আমেরিকার যে সব রাজ্যে ডাইরেক্ট মৃত্যদণ্ড বলবৎ আছে সে সব রাজ্যেই বরং মার্ডার, খুনের পরিমাণ বেড়েছে বেশী। আর যে সব রাজ্য ডাইরেক্ট মৃত্যুদণ্ড এবলিশড সেখানে মার্ডার-খুন হয়েছে কম। ক্রসফায়ারের এই খুন- অপরাধ কোনোদিনই কমাবে না। খুনের খেলায় যদি একবার রাষ্ট্র ঢুকে পড়ে এই খেলা একটা -দুটো খুনেই কোনোদিনই থেমে থাকবেনা। নানা ঘটনা- অঘটনায় নাগরিকের হাতে নাগরিক খুন হতে পারে। এবং এর শাস্তির জন্য রয়েছে আইন, বিচার, শাসন বিভাগ। কিন্তু রাষ্ট্র কোনোদিনও তার একজন নাগরিককেও বিচারহীন ভাবে খুন করতে পারেনা। যদি করে তবে খুনি আর রাষ্ট্র দুটোই সমান হয়ে যায়।

যাদের আপনজন খুন হচ্ছে, মারা যাচ্ছে তাদের প্রতি রাষ্ট্রের সিম্প্যাথি থাকবে। গণমানুষের আবেগকে সম্মান করতে হবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে-তাদের হয়ে খুনের খেলায় রাষ্ট্র নিজেই নেমে পড়বে। গণ মানুষ যদি এক সাথে বলে- চোরকে মার, ডাকাতকে মার, খুনিকে মার, ইয়াবা ব্যবসায়ীকে মার -এই মার মার শুণেই রাষ্ট্র নিজেই মারামারির মাঠে নেমে যেতে পারেনা। রাষ্ট্রকে জনপ্রিয়তার পক্ষে না , রাষ্ট্রকে ন্যায়ের পক্ষেই দাঁড়াতে হয়।

আইনের হাতে যে ক্রিমিনাল বন্দী তারও রয়েছে বিচার পাবার অধিকার। রাষ্ট্র নাগরিকের অধিকারী হবে- শিকারী হবেনা। তাই রাষ্ট্র বিচারহীন ভাবে কোনো মানুষকে মেরে ফেলতে পারেনা। তখন কথা ওঠবে- কিন্তু যে প্রকাশ্যে মানুষ মেরে ফেললো-সেতো ভয়ঙ্কর অপরাধ করলো। কথা ঠিক। সেজন্যইতো সে অপরাধী। সেজন্যইতো সে ক্রিমিনাল। কিন্তু রাষ্ট্রও যদি সেই একই কাজ গোপনে করে-তবে একজন হলো প্রকাশ্য ক্রিমিনাল আরেকজন হলো গোপন ক্রিমিনাল।

দস্তয়ভস্কি বলেছেন- একটা মানুষ যখন একটা মানুষকে খুন করে- সেটা জঘন্য। কিন্তু রাষ্ট্র যখন একটা মানুষকে খুন করে- সেটা জঘন্যতর।
পৃথিবীতে হাজারো কিংবা লাখো খুনি মানুষ আছে । কিন্তু একটিও খুনি রাষ্ট্র নেই। রাষ্ট্রকে এই জিনিসটা মাথায় রাখা দরকার।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: ক্রসফায়ার করেও তো কোনো লাভ হচ্ছে না। অন্যায় তো কমছে না।

২| ০৩ রা জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:২৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সারা বাংলার আনাচে কানাচে যত ভন্ড নয়ন আছে আমি তাদের সবার ক্রসফায়ার দেখতে চাই।

৩| ০৩ রা জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:০৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন, জোরালো যুক্তি। + +

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.