নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই দুঃসময়ে আশার একমুঠো পরিপ্রেক্ষণঃ

০৮ ই মে, ২০২০ রাত ১১:২৩

মনে করুন এই ধরিত্রিতে আপনার আবির্ভাব হয়েছিলো ১৯০০ সালে। ভূমির উপর আপনি অতিক্রম করলেন জীবন সজীবতার প্রথম চৌদ্দটি বছর। আর এই চৌদ্দ বছরের শুরুতেই জীবনের কিছু বুঝে ওঠতে না ওঠতেই আপনি অবাক চোখে দেখলেন দুনিয়া কাঁপানো এক যুদ্ধ। এই যুদ্ধের মাঝেই পার হলো আপনার ভয়াল চারটি বছর। বয়স হলো আঠারো। আপনি দেখলেন ২২ মিলিয়ন মানুষ মারা গেছে। যুদ্ধের রেশ তখনও শেষ হয়নি। রক্তস্নাত তখনো পৃথিবীর মাটি। এরি মাঝে আঘাত করলো রক্ত হিমশীতল করে দেয়া স্প্যানিশ ফ্লো। মাত্র দু বছরের মাথায় মারা গেলো- এক লক্ষ, দু লক্ষ না। প্রায় পণ্চাশ মিলিয়ন মানুষ। আর আপনার বয়স তখন মাত্র বিশ।

কয়েকটা বছর ভালোই গেলো আপনার। বৃষ্টিতে মুছে গেছে লাল রক্তের দাগ। বাতাসে লাশের গন্ধ নেই। জীবন যখন নিয়মে ফিরতে শুরু করেছে- তখন শুরু হলো- শতাব্দীর সবচেয়ে নিষ্ঠুর অর্থনৈতিক মন্দা। ইতিহাসে যেটাকে গ্রেট ডিপ্রশন বলে। মানুষের চাকুরি নাই। ২৭% জিডিপি ড্রপ করেছে। বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ ৩৭%।
চারদিকে হাহাকার। মন্দার প্লাবনে বিশ্ব অর্থনীতি ভেসে গেলো। আপনার বয়স তখন ৩৩।

সে সময় যে মন্দা বিশ্বব্যাপী শুরু হলো তা চললো আপনার বয়স ৩৯ পর্যন্ত। রুগ্ন অর্থনীতি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে সবেমাত্র তার স্বাস্থ্যের উন্নতির পথে। এবার শুরু হলো ২য় বিশ্বযুদ্ধ। ৪৫ তম জন্মদিন আপনি পালন করার আগেই দেখলেন পৃথিবী থেকে একসাথে বিদায় নিয়েছে আরো ৭৫ মিলিয়ন মানুষ। বয়স যখন ৬২ । তখন বিশ্বের অন্তরালেই প্রায় ৪৬ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হলো চায়নায়। এরপর শুরু হলো কোরিয়ান যুদ্ধ। ৬৪ বছর বয়সে ভিয়েতনাম, ৭১ বছর বয়সে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের যুদ্ধ। সব মিলে মারা গেলো প্রায় পণ্চাশ মিলিয়ন মানুষ। আপনার বয়স তখন ৭১।

মাঝখানে কিউবান মিশাইল ক্রাইসিসে পৃথিবীকে নিয়ে গেলো এক ঠান্ডা যুদ্ধের একেবার নিকটে। পারমানবিক বোমার চুল্লির ওপর গোটা পৃথিবী। রুটির মতো গরম হচ্ছে। যেকোনো মুহুর্তেই বিষ্ফোরণ ঘটতে পারে। মরতে মরতে বেঁচে গেলো পৃথিবী নামক এই গ্রহ।

ঠিক এই সময়ে আপনি যুবক থেকে পিতা হয়েছেন, পিতা থেকে পিতামহ হয়েছেন। আপনি অবাক বিস্ময়ে দেখলেন- পৃথিবীর বুকে মানুষের যাত্রা এতো সহজ নয়। যে মাটির ওপর আপনি দাঁড়িয়ে আছেন- সে মাটিও অনেক দূর্বিপাক অভিষঙ্গের সাক্ষী। চারপাশের বৃক্ষগুলোও দেখেছে নানা দূর্যোগ, প্রাকৃতিক ত্রাস, উপপ্লবের যন্ত্রণা। এতো যন্ত্রণার মাঝেও কোনো কিছুই জীবনের বাতায়নকে রুদ্ধ করে রাখতে পারেনি। মহার্ণবের উত্তাল উর্মিমালার মতো মানুষের জীবন। সমূদ্রের ভয়াল ঢেউ কেউ আটকে রাখতে পারেনা। কিন্তু মানুষ সার্ফিং শিখতে পারে। সব দূর্যোগও একসময় কেটে যায়। মানুষও জীবন সমূদ্রে বেঁচে থাকার কৌশল সার্ফিং শিখে যায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.