নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট

ভাষাহীন বাবুই

খেয়া ঘাট › বিস্তারিত পোস্টঃ

বর্ণবাদ ও অন্যান্য

০৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:০৯

এক) অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম।
ছোট এক ক্ষুধার্ত শিশু কেকের ছোট একটা টুকরো কুড়িয়ে পেয়ে খুব খুশি। অর্ধেক সে খায় আর বাকি অর্ধেক আরেক শিশুকে খাওয়ায়।
আর দুতলায় অন্য আরেকটা শিশু ভরা পেটে কাঁদছে। কারণ- তার কেকের সাতটি টুকুরো থেকে একটা টুকরো খোয়া গেছে।

দুই) একজন লোক উচ্চ শিক্ষিত হয়েছেন। বড় চাকুরি করেন। সমাজে মর্যাদাবান ব্যক্তি। নামাজ পড়ার আগে ওযু করছেন। এমন সময়- ঘুষের প্যাকেট নিয়ে মক্কেল হাজির। শিক্ষিত অফিসার রেগে গিয়ে বলছেন-আপনার কি এতোটুকু বিবেকবোধ নেই। ওযু করার সময় কেউ কি ঘুষের টাকা স্পর্শ করে? যান, অফিসের ড্রয়ারে রেখে যান।

আরেক ছেলে- পথশিশু। নিরক্ষর। রেলে মানুষের কাছে পানি বিক্রি করে। সেই পানি বিক্রি করা টাকায় খাবার কিনে। অর্ধেক নিজে খায়। বাকি অর্ধেক পথের কুকুরকে খাওয়ায়।
এই দুজনের মাঝে আসলে শিক্ষিত কে ? মর্যাদা কার বেশি হওয়ার কথা ?

তিন) ইসলামে ধনী, গরীব এবং বর্ণবাদের কোনো স্থান নাই।
কথাটি ইসলামের জন্য শতভাগ সত্য। মুসলমানের জন্য সিংহভাগ মিথ্যা।

একটা বিশাল মসজিদ থাকার পরও দুই ভিআইপির পরষ্পর রেষারেষির কারণে অল্প দূরত্বে আরো নতুন দুটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে । দুই ইমামের ঠিক পেছনে এখন দুজন দুই মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। হযরত ওমর রাঃ এর পাশে দাঁড়িয়ে মেষ রাখাল নামাজ আদায় করতে পারলেও - এই দেশের অনেক মসজিদে ভিআইপির জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ থাকে।

সব পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার পরও কালো মেয়েটি পত্রিকার পাতায় যখন হন্য হয়ে চাকুরির বিজ্ঞাপন খুঁজে। শুধুমাত্র গায়ের রং ফর্সা হওয়ার কারণে ক্লাসের ডাম্ব সুন্দরী মেয়েটি স্বামীর সাথে সুইজারল্যান্ডে বসে চাপান করে।

"কনে দেখতে গেলে মুখ না দেখে ভালো করে পা দেখো। কারণ পা দেখলেই মেয়ের আসল রং বুঝা যায় "।

-যে সমাজে এইসব কথা এবং ঘটনার প্রচলন আছে সেই সমাজেতো বর্ণবাদ প্রতিটি রন্দ্রে রন্দ্রে আছে।


চার) আমি জিপিএ ফাইভ পেয়েছি- এটার ইংরেজি বলতে না পারা টা কি শিক্ষার্থীর দোষ। নাকি সিস্টেমের দোষ। শিক্ষার্থীর দোষ হলে- সে জিপিএ ফাইভ পায় কেমন করে? তাই, জনসম্মুখে লজ্জাটা কাকে দিবেন-শিক্ষার্থীকে নাকি সিস্টেমকে। দয়া করে ভাবেন।
মাটি দিয়ে মূর্তি বানিয়ে সে যদি মানুষের মতো কথা না বলে- তবে দোষ কার। মূর্তির নাকি মূর্তির কারিগরের?

পাঁচ) পীথাগোরাসের সূত্র জেনেই বা লাভ কি? দুনিয়ার সব নলেজ হজম করে যিনি বিসিএস ক্যাডার হবেন- উনাকেইতো আবার কনস্টিটিউশন আর পার্লামেন্ট বানান করতে গিয়ে যার ত্রাহিমধুসুদন অবস্থা - তারই প্রটৌকল দিবেন।

ছয়) জমজমের পানি সবচেয়ে পবিত্র এবং বিশুদ্ধ- এটা বলে এবং প্রচার করে আপনার লাভ টা কি? আপনি নিজে পবিত্রতো!
ঘুষ খেয়ে, দূর্নীতি করে, সবরকমের অসত কাজ করে হজ্বে গিয়ে জমজমের পবিত্র পানি পান করলেই কি মানুষও পবিত্র হয়ে যায়?
আপনার দাদা দরবেশ ছিলেন। এটা আপনি প্রচারও করেন আবার আপনি চুরিও করেন, ঘুষও খান। এতে কি দাদার মর্যাদা বাড়ে নাকি কমে ?

সাত) জর্জ ফ্লয়েডকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলাটাই শুধু ভায়োলেন্স না। প্রতিটি ঘুষ, প্রতিটি দূর্নীতি, প্রতিটি ভাঙ্গা রাস্তা, প্রতিটি মেয়ের রাতে নিরাপদে ঘরে ফিরতে না পারার ভয়, বেকারের কর্ম নিশ্চিত করতে না পারার ব্যর্থতা, মেছোবাঘ পিটিয়ে মেরে ফেলার উল্লাস, চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল ঘুরে ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাওয়া, কাউকে মালাউন বলে গালি দেয়া, কারো মাথায় সিঁদুর, কারো মুখে হিজাব পরা নিয়ে কটাক্ষ করা ইত্যাদির সবকিছুই একেকটা বায়োলেন্স।


মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:২৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

০৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:৪৩

খেয়া ঘাট বলেছেন: ধন্যবাদ রইলো

২| ০৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:২৩

প্রেক্ষা বলেছেন: আপনাকে একটা মজার কথা বলি.....আমার জন্মসনদে নামের বানান ভুল ছিলো,সেটা ঠিক করতে আমি আর মা গেছিলাম।সেই জায়গার জুনিয়র অফিসার টাকা ছাড়া ঠিক করে দিবে না। তিন হাজার টাকা চায় সে কিন্তু তার জোহরের নামাজে দেরি হয়ে যাবে তাই নামাজের পরে এসে টাকা নিবে। :|

০৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:৪৩

খেয়া ঘাট বলেছেন: দুঃখজনক।

৩| ০৬ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:৫৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সুন্দর

০৬ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৭

খেয়া ঘাট বলেছেন: ধন্যবাদ রইলো

৪| ০৬ ই জুন, ২০২০ রাত ১:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: সব মিলিয়ে সুন্দর পোষ্ট।

০৬ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৭

খেয়া ঘাট বলেছেন: ধন্যবাদ রইল

৫| ০৬ ই জুন, ২০২০ রাত ১:১২

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: সুর্নিদিষ্টভাবে বর্ণবাদকে নিয়ে যদি বলতে হয় তবে বলবো, এটা নিয়ে সংগ্রাম চলবে এবং চলা উচিত। তবে ফ্লয়েড এর বিষয়টাকে আমি শুধু এক নজর দিয়ে দেখতে ইচ্ছুক নই। তার সাথে যেটা হয়েছে সেটা মারাত্মক অন্যায় এবং এর অবসান হওয়া উচিত। বাস্তবিক অবস্থা অনুধাবনের জন্য চারপাশ এবং পরিসংখ্যানের দিকেও নজর দেয়া উচিত সবার।

এক যুগের অধিক সময় ধরে আমেরিকায় থেকে এখানকার সমাজ ব্যবস্থা দেখার পর অনেকগুলো বিষয় নজরে এসেছে আমার। যেগুলো বেশীর ভাগ সাধারন মানুষই এড়িয়ে যেতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করে। বর্ণবাদ আমেরিকায় অবশ্যই আছে, তবে সেটা বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায়ই কম। বাংলাদেশে বা ভারতের মত দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, জাত-পাত, নারী-পুরুষ, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নিয়ে এই সমস্যা আরো অনেক বেশী প্রকট। একটা ঘটনা ধরে এভাবে সমস্যার সব সমাধান সম্ভব নয়।

আমেরিকায়, সাদা-কালোর সমস্যা অনেক গভীরে প্রোথিত। শত বছরের শোষণ শেষে আমরা বাঙালীরা যেমন এখনো আর্ন্তজাতিক পরিধিতে স্বভাব, এমনকি স্বাভাবিক আচার আচরণগতভাবে ভদ্র হতে পারিনি, তেমনি আমেরিকার সংখ্যালঘুদের (সাদা বাদ দিয়ে সবাই) মাঝেও এমন অনেক সমস্যা দেখা যায় যা ভাববার মতো। সাদাদেরও এই সমস্যা আছে তবে তা আনুপাতিক হারে অনেক কম। একটা উধাহরন দিচ্ছি, এফ.বি.আই আর রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৮ সালে ৬ হাজার সাদা এবং ৭৪০০+ কালো (আফ্রিকান আমেরিকানও বলা হয়ে থাকে) ব্যক্তি খুন হয়েছেন, যদিও মোট জনসংখ্যার ৭২+% সাদা আর ১২+% কালো। আবার অন্যদিকে, একই সময়ে ৫১৪ জন কালো ব্যক্তি সাদা ব্যক্তিকে এবং ২৩৪ সাদা ব্যক্তি কালো ব্যক্তিকে হত্যা করেছেন। জনসংখ্যার হার চিন্তা করলে কালো ব্যক্তিগন সাদা-দের তুলনার আনুপাতিক হারে অনেক বেশী বিপরীত বর্ণের মানুষকে খুন করেছেন। তার চেয়েও উদ্বেগজনক ব্যাপার হলো, স্ব-বর্ণের মানুষের হাতে খুন হওয়ার আনুপাতিক হার দেখলেও কালো ব্যক্তিগন সাদাদের তুলনায় অনেক অনেক গুন বেশী, কিন্তু সেটা নিয়ে কালোরা কখনো উচ্চ-বাচ্য করেনা। সারমর্ম যেটা দাড় করানো যায় সেটা হলো শুধুমাত্র একটা অপরাধের হিসেবেই (খুন) কালোরা যে কোন বর্ণের মানুষের চেয়ে অনেক বেশী এগিয়ে। এই সমস্যাগুলো এক ফ্লয়েড-কে দিয়ে বিচার করা নিতান্তই বোকামি। সবকিছুকে বর্ণবাদের দিকে টেনে নেয়াটাও দুঃখজনক।

পাশাপাশি এটাও মনে রাখা জরুরী পুলিশ কর্তৃক নির্যাতন (বর্ণ নির্বিশেষে) আমেরিকার একটা বিরাট সমস্যা। এর সাথে অনেক বিষয় জড়িয়ে আছে (সামাজিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক, শিক্ষা, সচেতনতা ইত্যাদি)। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি অন্তত ফ্লয়েডের ঘটনা দিয়ে হলেও সময় এসেছে, এই পুলিশি নির্যাতনের ব্যাপারে সরকারকে আরো বেশী গুরুত্ব বা আইনের পরিমার্জন করার। এটা সময়ের দাবী। লিখার জন্য ধন্যবাদ।

সূত্র: এখানে

০৬ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৮

খেয়া ঘাট বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ রইলো। মূল্যবান ডাটাগুলো শেয়ার করার জন্য। কাজে লাগবে।

৬| ০৬ ই জুন, ২০২০ ভোর ৬:১৭

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: চরম অপ্রিয় সত্য ! আপনার ওযু করার পর টাকা না ধরার মতো একটি ঘটনার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছিল।

সুন্দর ও সময়োপযোগী পোস্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।

০৬ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৮

খেয়া ঘাট বলেছেন: ধন্যবাদ রইলো

৭| ০৬ ই জুন, ২০২০ সকাল ৭:৩৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: দারুন কিছু কথা বলেছেন। বিশেষ করে আমেরিকা যখন উত্তাল বর্ণবৈষম্যের প্রতিবাদে। আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান আবাস বর্ণ বৈষম্য এখানে গায়ের রং কেও হার মানায়। মানুষে মানুষে প্রভেদ গড়ে দিয়ে তারা উপাসনা করে। এখানে প্রতিবাদের উত্তাপ নেই কোন। আবার ধর্ম বৈষম্যেও এখন তারা নিষিদ্ধ বহির্বিশ্বে। তারা জ্ঞানের ভান্ডার মাথায় নিয়ে আদিম বর্বর যুগে পড়ে আছে। এখনো তারা নরবলি দেয়। আরে এখনতো তারা গরু হাতির মুখে বোমা ভরে বিভৎস হত্যাকাণ্ড ঘটায় । এমন সন্ত্রাসী রাষ্ট্র একটি ও নেই আর।

০৬ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫৮

খেয়া ঘাট বলেছেন: ধন্যবাদ রইল

৮| ০৭ ই জুন, ২০২০ রাত ৩:৪৬

ডি মুন বলেছেন: চমৎকার পোস্ট খেয়া ঘাট ভাই।
এই তথাকথিত আধুনিক সমাজে এসেও মানুষে মানুষে বৈষম্য আর হিংস্রতা দেখে হতবাক হয়ে যেতে হয়।
আমরা আসলেই কি একটুও এগিয়েছি?
শুধু টেকনোলজি আর বাহারি গ্যাজেট ব্যবহার করতে পারাটাই তো এগিয়ে যাওয়া হতে পারে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.