![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার ভেতরে প্রবেশ করার জন্য ধন্যবাদ যদিও দেখার মত কিছু নেই
খোরশেদ মাহমুদ
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। যার সাথে একটি সম্পর্ক আছে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের। দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির সংগ্রামের প্রথম সোপান হিসেবে চিহ্নিত। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সমগ্র বাংলার নারীরা যেমন এগিয়ে এসেছিলেন তেমনি অগ্নিগর্ভা বীর চট্টলার নারীরা কোন অংশে পিছিয়ে ছিলেন না। তারা অংশগ্রহণ করেছেন প্রত্য ও পরোভাবে। তাঁদেরই একজন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার।
আজ ২৩ সেপ্টেম্বর প্রীতিলতার আত্মহুতি দিবস। আজ থেকে ৮৩ বছর আগে ২৩ শে সেপ্টেম্বর ১৯৩২ সালের এই দিনে বীর কন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার তার জীবন দিয়ে দেখিয়েছিলেন বাঙালী মরতে পারে কিন্তু পরাজয় মেনে নিতে পারে না।
কে এই প্রীতিলতাঃ বাবা জগদ্বন্ধু ওয়েদ্দেদার (মিউনিসিপাল অফিসের হেড কেরাণী)ও মা প্রতিভা দেবীর ৬ ছেলে মেয়ের মধ্যে প্রীতিলতা ছিল দ্বিতীয়। ১৯১১ সালের ৫ মে চট্রগ্রামের পাহাড়বেস্টিত ভূখন্ড কর্ণফুলী নদীর উত্তাল ¯্রােত এসে যেখানে বঙ্গোপসাগরে মিশে গেছে সেই পটিয়ার ধলাঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন অগ্নিযুগের অগ্নি কন্যা প্রীতিলতা। সে সময়ে মধ্যবিত্ত পরিবারে মেয়ে সন্তান জন্মানো ছিল অপরাধ, তার ওপর কালো, সে তো কথাই নেই। ফলে বাবা জগদ্বন্ধু ওয়েদ্দেদারও খুশি হতে পারেনি। তার উপর প্রীতিলতার গায়ের রং ছিল কালো। ছোটবেলা থেকে অন্তর্মুখী, লাজুক ও মুখচোরা ছিলেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি ন¤্রতা, বদান্যতা, রণশীলতা লালন করেছিলেন। প্রীতিলতা ডাকনাম ছিল রাণী।
লেখা পড়াঃ তখনকার সময় মেয়েদের লেখাপড়ার বিশেষ প্রচলন ছিল না। তারপরও শত বাঁধা পেড়িয়ে বড় ভাইয়ের গৃহশিকের কাছে চুপিসারে গোপনে প্রীতি পড়ালেখা করার চেষ্টা করতেন। লেখাপড়ার
প্রতি উৎসাহ এবং মায়ের ঐকান্তিক আকাপ্সা ও প্রচেষ্টায় সাত বছর বয়সে প্রীতিলতাকে চট্টগ্রামের
ডা. খাস্তগীর গার্লস হাইস্কুলে ভর্তি করানো হয়। এ স্কুলে তৃতীয় শ্রেণী থেকে সে প্রতি শ্রেণীতেই প্রথম
তিন স্খানের একটিতে নিজের স্খান করে নিয়ে বিদ্যালয়ের সবার প্রিয়পাত্রে পরিণত হয়। ১৯২৭ সালে প্রীতিলতা ডা. অস্টম শ্রেণিতে তিনি বৃত্তি পান। এবং ১৯১৭ সালে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। তারপর ইডেন কলেজে ভর্তি হন। ১৯৩০ সালে সবার মধ্যে ৫ম এবং মেয়েদের মধ্যে ১ম স্থান অধিকার করেন।
যেভাবে যুক্ত হলেন রাজনীতিতেঃ তৎকালিন সময়ে চট্টগ্রামে যেন এক অগ্নিযুগ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের জোয়ারে চট্টগ্রামের জনগণ যেন উত্তাল হয়ে উঠেছে। চারদিকে বিপ্লবীদের নানা ধরনের তৎপরতা । এরই মাঝে ১৯২৪
খ্রিস্টাব্দে বেঙ্গল অর্ডিন্যান্সের অধীনে বিভিন্ন নেতৃস্খানীয় বিপ্লবীদের ধরপাকড় শুরু হয়। কয়েকজন
বিপ্লবী ধরা পড়ে।
প্রীতিলতা তখন অস্টম শ্রেণির ছাত্রী। বড়দার কাছে প্রীতিলতা এক দুর্র্ধষ ডাকাতির কথা শুনলো। রেল শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন দেয়ার জন্য বিপুল অংকের টাকা ঘোড়ার গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গাড়িতে দুজন পুলিশও ছিল। কিন্তু হঠাৎ চারজন লোক পিস্তল হাতে তাদের সামনে দাঁড়ালো। তারা সবাইকে গাড়ি থেকে নেমে দিয়ে টাকা ও গাড়িসহ নিয়ে র্ফুরত। পরে জানা গেলো ঐ লোকগুলো ডাকাত নয় স্বদেশী আন্দোলনের লোক। স্বদেশীরা মৃত্যুকে ভয় করে না। তাদের মধ্যে ছিলেন মাস্টার দা সূর্য সেন।
প্রীতিলতা তখন দশম শ্রেণির ছাত্রী,দাদা পুণেন্দু দস্তিদারের লুকিয়ে রাখা বই পড়ে বাঘা যতীন,ুদিরাম, কানাইলালের বিপ্লবী জীবনের কথা জানতে পারেন।এসবই তাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে। তিনি দাদা পুণেন্দু দস্তিদারের কাছে তার বিপ্লবী আন্দোলনে যোগ দেবার ভীষণ আগ্রহের কথা বলেন,কিন্তু সে সময় সশস্ত্র সংগ্রামে নারীদের অংশগ্রহন একরকম নিষিদ্ধ ছিল।নারীদেরকে তখনো এই কাজের জন্য উপযুক্ত মনে করা হতো না। সাহসী যুবক ও স্কুল-কলেজের ছাত্রদেরই নেয়া হতো দলে।
প্রীতিলতা ইডেন কলেজে আই,এ পড়ার সময় দিপালী সঙ্ঘের সাথে যোগ দেন,এ সময় তিনি বিপ্লবী আন্দোলনে অংশগ্রহনের জন্য মাষ্টারদার সাথে দেখা করার অনেক চেষ্ঠা করেও বিফল হন।
বিপ্লবী প্রীতিলতাঃ
১৮ এপ্রিল ১৯৩০ সালে বিপ্লবী নেতা মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে অস্ত্র লুট, রেললাইন উপড়ে ফেলা, টেলিগ্রাফ-টেলিফোন বিকল করে দেয়াসহ ব্যাপক আক্রমণ হয়। এ আক্রমন চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ নামে পরিচিতি পায়। এ আন্দোলন সারাদেশের ছাত্রসমাজকে উদ্দীপ্ত করে। চাঁদপুরে হামলার ঘটনায় বিপ্লবী রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের ফাঁসির আদেশ হয়। এবং তিনি আলীপুর জেলে বন্দি হন। প্রীতিলতা রামকৃষ্ণের বোন পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতেন। রামকৃষ্ণের প্রেরণায় প্রীতিলতা বিপ্লবী কাজে আরো বেশি সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। ১৯৩১ সালে ৪ আগস্ট রামকৃষ্ণের ফাঁসি হওয়ার পর প্রীতিলতা আরো বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন। ওই সময়ের আরেক বিপ্লবী কন্যা কল্পনা দত্তের সঙ্গে পরিচয় হয় প্রীতিলতার। বিপ্লবী কল্পনা দত্তের মাধ্যমে মাস্টারদার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন প্রীতিলতা।
মাস্টারদার সাথে সাাতঃ
১৯৩২ সালের মে মাসে প্রীতিলতার দেখা হয় মাস্টারদা ও বিপ্লবী নির্মল সেনের সঙ্গে। তার কাছ থেকে অস্ত্র প্রশিণ লাভ করেন। মাষ্টারদা এবং প্রীতিলতার প্রথম সাাতের বর্ণনাতে মাষ্টারদা লিখেছেন তার চোখেমুখে একটা আনন্দের আভাস দেখলাম। এতদূর পথ হেঁটে এসেছে, তার জন্য তার চেহারায় কান্তির কোন চিহ্নই ল্য করলাম না। যে আনন্দের আভা তার চোখে মুখে দেখলাম, তার মধ্যে আতিশয্য নেই, ঋরপশষবহবং নেই, ঝরহপবৎরঃু শ্রদ্ধার ভাব তার মধ্যে ফুটে উঠেছে। একজন উচ্চশিতি পঁষঃঁৎবফ ষধফু একটি পর্ণকুটিরের মধ্যে আমার সামনে এসে আমাকে প্রণাম করে উঠে বিনীতভাবে আমার দিকে দাঁড়িয়ে রইল, মাথায় হাত দিয়ে নীরবে তাকে আশীর্ব্বাদ করলামৃ”। রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সাথে তার দেখা হওয়ার ইতিবৃত্ত, রামকৃষ্ণের প্রতি তার শ্রদ্ধা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে প্রীতিলতা প্রায় দুই ঘন্টার মতো মাষ্টারদার সাথে কথা বলেন। মাষ্টারদা আরো লিখেছেন তার ধপঃরড়হ করার আগ্রহ সে পরিষ্কার ভাবেই জানাল। বসে বসে যে মেয়েদের ড়ৎমধহরংব করা, ড়ৎমধহরংধঃরড়হরহফবী চালান প্রভৃতি কাজের দিকে তার প্রবৃত্তি নেই, ইচ্ছাও নেই বলে”।
ভারতীয় এবং কুকুররে প্রবশে নষিধে এমনই লেখা ছিল ইংরেজদের আস্তানার ফটকে। তাদের আস্তানায় ইংরেজ ও কর্মচারী ছাড়া কোন ভারতীয় বা কুকুর প্রবেশ নিষেধ ছিল। এটা ছিল ভারতীয়দের লজ্জার ব্যাপার। আর তাছাড়া এখানে চলত ইংরেজদের মদ পান, গান বাজনা, নাচ সহ বিভিন্ন খারাপ কর্মকান্ড।
ইংরেজদের কাব আক্রমনঃ
১৯৩২ সালে আবার কাব আক্রমণের পরিকল্পনা করা হয়। ওই বছর ১০ আগস্ট আক্রমণের দিন ধার্য করা হয়। সেপ্টেম্বর মাসে নারী বিপ্লবীদের নেতৃত্বে আক্রমণ হওয়ার কথা হয়। নেতৃত্বে থাকে কল্পনা দত্ত। কিন্তু আক্রমণের আগেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে কল্পনা দত্ত। তাই নেতৃত্বে দেয়া হয় প্রীতিলতাকে। ২৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ইংরেজরা যখন ইউরোপীয়ান কাবে নাচ, গানে মত্ত তখন পাঞ্জাবী যূবকের বেশে বীরকন্যা প্রীতিলতার নেতৃত্বে সাতজন বিপ্লবী প্রাণের বাজী রেখে কাব আক্রমণ করে। জয়ী হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন প্রীতিলতা। এ অবস্থায় ধরা পড়ার আগেই সঙ্গে থাকা সায়ানাইড খেয়ে আত্মহুতি দেন তিনি।
তিনি কি শুধু ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিপ্লবীঃ
বপ্লিবী আন্দোলনরে পাশাপাশি নারীদরে প্রতি বষৈম্যরে বরিুদ্ধওে সোচ্চার ছলিনে প্রীতলিতা, শষে মুর্হূতওে তিিন বলছেলিনে ‘নারীরা আজ কঠোর সংকল্প নয়িেেছ যে আমার দশেরে ভাগনিীরা আজ নজিেেক র্দুবল মনে করবিনে না। সশস্ত্র ভারতীয় নারী সহস্র বপিদ ও বাধাকে র্চূণ করয়িা এই বদ্েিরাহ ও সশস্ত্র মুক্তি আন্দোলনে যোগদান করবিনে এবং তাহার জন্য নজিেেক তয়ৈার করবিনে এই আশা লইয়াই আমি আজ আত্মদানে অগ্রসর হইলাম।’
আমরা কি তাকে ভুলে যাই নিঃ
আজ বাঙালার মানুষ কি তাকে মনে রেখেছে না ভুলে গেছে চোখে প্রশ্ন বোদক হয়ে ভাসে। আর যদি মনে রেখেও থাকে তবে তা কত টুকু? তার আদর্শে বলিয়ান হয়ে কি আত্মমর্যাদা সম্পূর্ণ হতে পেয়েছি। আজ নারীরা তাকে আদর্শ হিসাবে নিয়েছে কি? প্রীতিলতার অমর জীবন হতে এই দেশের মেয়েরা তার অবিচল আদর্শ নিষ্ঠার শিা গ্রহণ করতে পারে। ভাইদের পাশে দাঁড়াতে বোনদের সমানে সংগ্রাম করার যে দাবি তিনি উথাপন করেছিলেন, সংগ্রাম ও ইতিহাসের পরিবর্তিত রূপে এবং বিশ্বের বহু বৈজ্ঞানিক ও রাজনৈতিক অগ্রগতির পরও আমাদের দেশে প্রীতিলতার সেই দাবি আজওবাস্তবেরূপায়িতহয়নি।প্রীতিলতার এ সংািপ্ত সুন্দর ও সুখী সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এ দেশের নারী সমাজকে উদ্বুদ্ধ করবে বলে আমি আশা করি। প্রীতিলতার শৌর্য ও সাহস ও অ¤ান আদর্শ নিষ্ঠা এ দেশের মেয়েদের কাছে এক অমূল্য উত্তরাধিকার হয়ে রইল যা তাদের জন্য আলোকবর্তিকা বলে আমি মনে করি।তৎকালীন বিপ্লব যুগের প্রথম নারী শহীদ প্রীতিলতা। সে সময়কার চট্টগ্রামের একটি তরুণী নিজের মাতৃভূমিকে সাম্রাজ্যবাদের কবলমুক্ত করার জন্য যে মরণ স্বপ্ন দেখেছিল তার কর্মপন্থা যুগের সঙ্গে সঙ্গে পরিত্যক্ত হয়েছে। কিন্তু তার দেশপ্রেম প্রশ্নাতীত। তার অটুট আদর্শ নিষ্ঠা আজও প্রেরণা সঞ্চারী। প্রীতিলতার আদর্শের ল মহিলা এ জাতিতে জন্ম নিয়েছে যা আমরা প্রত্য করেছি আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে। এভাবে আজ আমাদের মধ্যে প্রয়োজন লাখো কোটি প্রীতিলতার। যারা হাজার বছরব্যাপী আমাদের প্রেরণাদায়িনী হয়ে আলোর পথ দেখাবে।
খোরশেদ মাহমুদ
[email protected]
www.kalerrakhal.com
২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৩
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: মাস্টারদার সাথে সাাতঃ<সাত হবে, এই প্যারায় অনেকগুলো ইংরেজি শব্দ বাংলা ফ্রন্ট হয়ে গেছে যেমন : তার মধ্যে আতিশয্য নেই, ঋরপশষবহবং নেই, ঝরহপবৎরঃু শ্,
বসে বসে যে মেয়েদের ড়ৎমধহরংব করা, ড়ৎমধহরংধঃরড়হরহফবী চালান প্রভৃতি কাজের দিকে তার প্রবৃত্তি নেই, ইচ্ছাও নেই বলে”।
ইংরেজদের কাব আক্রমনঃ<ক্লাব হবে। আরও ভুল আছে ভুল গুলো ঠিক করে দিন।
প্রীতিলতাকে নিয়ে আমার একটা কবিতা আছে একদিন ব্লগে পোস্ট দিব। প্রীতিলতাকে নিয়ে যেকোন লেখা পড়তে ভাল লাগে ।
৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৪১
চাঁদগাজী বলেছেন:
জাগ্রত চট্টগ্রাম
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:২৬
মলাসইলমুইনা বলেছেন: খুব সম্ভবত পূর্ণেন্দু দস্তিদারেরই বই "স্বাধীনতাসংগ্রামে চট্টগ্রাম" পড়েছিলাম স্কুলে থাকতে |ওই বই থেকেই আমি জেনেছিলাম প্রীতিলতা, মাস্টার দা সূর্যসেন আর অন্যদের সম্পর্কে | বিশেষ কর চিটাগাং অফিসার্স ক্লাব আক্রমণ, অস্রাগার লুটের কাহিনীগুলো | অনেকদিন আগে পড়া অনেক কিছুই ভুলে যাওয়া ইতিহাস মনে হলো আপনার লেখা পড়ে | ধন্যবাদ |