![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সেদিন বাসে উঠেছি, পাশের দুটি মেয়ের কথোপকথন কানে এলো, দুজনেই বুরকা পরিহিতা নিকাবি বোন।
১ম জন- “এই তুই কালকের কনসার্টে যাবি?”
২য় জন- “যাব না মানে!! অবশ্যই যাব”
১ম জন- “বাসায় বলসিশ? রাত হবে কিন্তু অনেক। কোন জামাটা পড়বি তুই?”
২য় জন- “আরে পাগল! বাসায় বললে যেতে দিবে নাকি?বলব পরীক্ষার কাজে যেতে দেরী হবে। আর কি পড়ব মানে? ঐ যে জিন্স আর টি শার্ট কিনলাম আমরা ওগুলোই পড়ব। ওপর দিয়ে বুরকা পড়ে নিব ওখানে যেয়েই খুলে ফেলব”
১ম জন-“দারুন মজা হবে রে! শোন ছবিগুলা কিন্তু ভুলেও আমার আগের অ্যাকাউন্ট টে দিবি না! ওখানে সব আত্নীয় আর পুরানো দিনের লোকজন! নতুন এফবি অ্যাকাউন্ট এ পোস্ট করবি, বুজছোস?”
২য়- “হ ভালা বলছিস। তুইও মনে রাখিস, আমারগুলাও ফেক অ্যাকাউন্টেই দিস দোস্ত, আগেরটা তে তো সবাই আমারে অন্য রকম মনে করে...হিহিহিহি”
বোন দুজনের কথাবার্তা শুনে ছোটবেলায় পড়া একটা শব্দই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল আর আর তা হল-“মুনাফিক”
সংজ্ঞাটা বেশ সহজ -যার ভিতরের অবস্থা প্রকাশ্যের বিপরীত তাকে নিফাক বলে আর যার মধ্যে নিফাক রয়েছে সে ব্যক্তিই মুনাফিক।
তবে এর ব্যাখ্যাখানা মোটেও সহজ নয়।
প্রথমেই মুনাফিকদের সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার জানা থাকা দরকার। এনারা দুই ধরণের হয় – ১) যারা নিজেরা জানে যে তারা মুসলিম নয় এবং তারা মুসলিম সেজে গুপ্তচরের কাজ করে, ২) যারা মুসলিম, কিন্তু তারা নিজেরা বোঝে না যে তারা আসলে মুনাফিক।
দ্বিতীয় ধরণের মুনাফিকদের ব্যাপারে আপনি-আমি কখনই বলতে পারবো না তারা মুনাফিক কিনা। ইসলাম কাউকে অধিকার দেয় না অন্য কাউকে মুনাফিক ঘোষণা দেওয়ার। শুধুমাত্র গুপ্তচর ধরণের মুনাফিকরা যদি কখনও ধরা পড়ে যায়, শুধু তাদেরকেই তখন মুনাফিক ঘোষণা দেওয়া যাবে। কিন্তু যারা মুসলিম, যারা এই ধরণের গুপ্তচর নয়, তাদেরকে কখনই মুনাফিক বলার অধিকার ইসলাম আমাদেরকে দেয় না। কারণ এই দ্বিতীয় প্রকারের মুনাফিক কারা, সেটা কেউ বলতে পারে না। আমিও এই দ্বিতীয় প্রকারের মুনাফিক হতে পারি, আপনিও হতে পারেন। আল্লাহর দৃষ্টিতে আমাদের মধ্যে কে এই দ্বিতীয় ধরণের মুনাফিক সেটা জানার ক্ষমতা আমাদের কারো নেই। শুধুমাত্র আমাদের আল্লাহ্ যিনি আমাদের মনের ভিতরে কি আছে তা ঠিকভাবে জানেন, শুধু তিনিই বলতে পারেন কারা এই দ্বিতীয় ধরণের মুনাফিক। তবে কিনা যারাই মনে করেন যে তাদের পক্ষে মুনাফিক হওয়া কোনোভাবেই সম্ভব না, তারা একজন পাক্কা মুসল্লি, তারাই আসলে এক ধরণের মুনাফিক।
এধরণের মানুষ নিজেদেরকে সবসময় বোঝায় যে – তারা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাজ করে যাচ্ছে – কিন্তু আসলে তাদের কাজের আসল উদ্দেশ্য থাকে অন্য কিছু। এধরণের মানুষরা প্রায়ই নিজেদের মনে মনে বলে, “আল্লাহ, আপনার জন্যই এটা করলাম কিন্তু। আমাকে আখিরাতে এর প্রতিদান দিয়েন।” শুধু তাই না, তারা মানুষকেও এধরণের কথা বলে বেড়ায়, “ভাই, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি, নামাজ পড়েছি, হজ্জে যাচ্ছি কিংবা আল্লাহর ওয়াস্তে মসজিদে টাকা দান করলাম, আমার জন্য বেশি বেশি করে দোয়া করবেন, যেন আপনাদের আরও উপকার করতে পারি।”
এদের সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেছেনঃ
“তাদের অন্তরে আছে এক অসুখ, তাই আল্লাহ তাদের অসুখকে বাড়তে দেন। এক অবিরাম কষ্টকর শাস্তি অপেক্ষা করছে তাদের জন্য, কারণ তারা এক নাগাড়ে মিথ্যা [অস্বীকার, প্রতারণা] বলতো”। [বাকারাহ-১০]
মুনাফেকি হচ্ছে এক কঠিন অন্তরের অসুখ। খুব সাবধানে লক্ষ করে দেখতে হবে আমার আপনার ভেতরেও এই অসুখের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কীনা।
মুনাফেকি একজন মানুষের মধ্যে তখনি আসে, যখন সে কোনো কাজের জন্য আল্লাহ্র পাশাপাশি অন্য কারো কাছ থেকে প্রশংসা, সন্মান, বাহবা পাওয়ার চেষ্টা করে তথাপি সে লুকিয়ে বা গোপনে কিংবা অন্য কোন স্থানে প্রকাশ্যে আল্লাহ বিরোধী কাজকর্ম করে। সে নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে, সে কাজটা করছে আসলে আল্লাহরই উদ্দেশ্যে । কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা শুধুই লোকদেখানো, আড়ালে সে অন্যকাজেই মশগুল।অথচ সে মনে মনে ভাবছে সে আদর্শ মুসলমান!
হায়রে! আপনি আমি একজন মুসলিম হওয়া তো অনেক দূরের ব্যাপার আগে একজন প্রতারক হওয়া থেকেই বিরত হই, একজন ভালো, সৎ মানুষ হয়েই দেখাইনা তারপর চিন্তা করি নাহয় আমরা মুসলিম কিনা!
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সকলকেই এই Self Delusion থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করুন। আমীন।
২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৪২
যাহরা আফরিন বলেছেন: সেটাতো বটেই। অনেকেই হয়ত মনে করবেন হিজাব/ নিকাব কে ছোট করেছি কিন্তু আমি নিজেও হিজাব পরি। তাই হয়ত দুঃখ লেগেছে আরো বেশি।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৫১
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এখানে কার দোষ দেব বুঝতে পারছি না। অভিভাবকরা নিশ্চয়ই সাধ্যমত চেষ্টা করেছে তাদের ঠিক পথে রাখতে। সবার ঘরের সদস্যরা কিন্তু হিজাব, বোরকা পরে না। তবুও যদি বিপথে যায় দুর্ভাগ্য আর কি!...