![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আগামী শনিবার, ৯ই নভেম্বর ২০১৩ আমারা কেনো এই মহামিলনে যোগ দেবো | আসা করি প্রতিটি স্কুল কলেজের গণজাগরণের সমর্থক ছাত্র ছাত্রীরা মন দিয়ে আমার লেখাটা পড়বে আর সবার মাঝে এটার একটা কপি ছড়িয়ে দেবে |
আজ যদি আমার শুধু মাত্র একটা টিকেট কাটার সামর্থ্য থাকতো, আমি ছুটে চলে আসতাম এই মহা মিলনে | আমার অনেক অনেক বন্ধুরা শনিবার, ৯ই নভেম্বর ২০১৩, সাহাবাগে অবস্থান নেবে শুধু আমি নাই, আমার এই বিমর্ষ কান্না কেউ দেখতে পাবে না | প্রবাসের বিষণ্ণতার জীবন পার করছি, বাংলাদেশটাকে নিজের অন্তরের গহিনে লালন করছি বলেই আজ আমি বাংলাদেশের সকল স্কুল কলেজের ছাত্রী ছাত্রীদের আকুল আবেদন জানাই তাদের এই আন্দোলনকে যে কোন ভাবেই হোক এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে | অনেক দেখেছি, আজ রাজনীতিবিদরা বাংলার মানুষের আসা আকাঙ্ক্ষা কে জলাঞ্জলি দিয়ে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত, এ মুহূর্তে রাজনীতিবিদরা সংলাপের ধাপ্পাবাজিতে আমাদের রেখেছে গভীর অন্ধকারে | আমাদের সামান্য ভুলের কারণে আজ যদি রাজাকারদের বিচার ও রায় সুসম্পন্ন না হয়, বাংলাদেশ ২০০ বছর পিছিয়ে যাবে , কলঙ্কের বোঝা বয়ে বেড়াতে হবে চিরটা কাল , তরুণ সমাজকে এখনি জেগে উঠতে হবে, এখনি সময় যুদ্ধে যাবার |
শনিবার, ৯ই নভেম্বর ২০১৩, এমন একটা দিন আসুক যে খানে থাকব না কোন বিদ্বেষ, কোন মনোমালিন্য, মান অভিমান, শুধু সবার অন্তরে একটাই ধ্বনি উচ্ছারিত হোক, আমার বাঙ্গালী বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচার এর রায়ের জন্যে আন্দোলিত সাড়া বাংলার মানুষ, আবারও আশায় বুক বেধে আছি , এই বাংলার মাটিতেই রাজাকারদের বিচার হবে| যে কোন শক্তির বিনিময়ে হোক বাংলাদেশ কে কলঙ্ক মুক্ত করতেই হবে|
১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর যে স্বাধীন বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ ঘটে তার চেতনা নিহিত ছিল মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসের ঘটনা প্রবাহে। ৩০ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছেন এবং ২ লক্ষ নারী সম্ভ্রম হারিয়েছেন এই চেতনার জন্য এবং স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি সত্যিকারের বৈষম্যহীন স্বাধীন বাংলাদেশের। মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে গিয়েছেন নতুন দেশ - সোনার বাংলাদেশ গড়বার আশায়। কিন্তু সেই স্বপ্ন আজও স্বপ্নই রয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধের ৪২ বছর পরেও স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে আমরা এগিয়ে যেতে পারিনি এতটুকু। এখনও আমাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখবার জন্য। নতুন প্রজন্ম যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, যারা কখনও মিছিলে বা সমাবেশে যায়নি তারা আজ রাস্তায় নেমে এসেছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী নিয়ে। ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণকারী রাজনৈতিক দল গুলো যুদ্ধাপরাধী-স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি কে সবসময়ই নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগিয়েছে। কোন পক্ষই মুক্তিযুদ্ধের স্পিরিট কে সম্মান দেখায়নি। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি জাতির পিতা মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে দালাল আইনের সাধারণ ক্ষমাকে ভুল ভাবে ব্যাখ্যা প্রদানের কারণেই এর সূত্রপাত। ভুল অনেক হয়েছে-আর নয়। এখন সময় সামনে এগুবার। ভুল নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। অনেক দোষারোপও হয়েছে। এগুলো করতে করতে আমরা আজ বাংলাদেশকে ধংসের দ্বারপ্রান্তে এনে দাড় করিয়েছি। সামনে এগুবার জন্যই আমাদের ইতিহাস মনে রাখতে হবে-মনে রাখতে হবে ঘটনাপ্রবাহ। আর এই ঘটনাপ্রবাহ ধরে এগিয়ে গিয়ে আমাদের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং দিতে হবে একটি সুন্দর রূপরেখা। আমরা এখানে বাংলাদেশের ৪২ বছরের ঘটনাপ্রবাহ বা টাইমলাইন দিয়ে যাব এর পর আমাদের মতামত দেবার চেষ্টা করব কিভাবে ইতিহাসের ভুলগুলো থেকে আমরা বের হয়ে আসতে পারি।
১| বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমাকে পূঁজি করে জিয়াউর ১১,০০০ হাজার চিহ্নিত -কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দিয়ে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ দিয়েছে। এখনও যুদ্ধাপরাধীরা এই সাধারণ ক্ষমাকে ব্যবহার করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
[সাধারণ ক্ষমা কি.. ১৯৭৩ সালের ৩০ নভেম্বর দালাল আইনে আটক যেসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধীদের সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই তাদের জন্য ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। এ ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক ৩৭ হাজারের অধিক ব্যক্তির ভেতর থেকে প্রায় ২৬ হাজার ছাড়া পায়। সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার ৫ নং ধারায় বলা হয়, ‘যারা বর্ণিত আদেশের নিচের বর্ণিত ধারাসমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব ক’টি অভিযোগ থাকবে। ধারাগুলো হলো: ১২১ (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো অথবা চালানোর চেষ্টা), ১২১ ক (বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র), ১২৮ ক (রাষ্ট্রদ্রোহিতা), ৩০২ (হত্যা), ৩০৪ (হত্যার চেষ্টা), ৩৬৩ (অপহরণ),৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ) ৩৬৫ (আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ),৩৬৮ (অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা), ৩৭৬ (ধর্ষণ), ৩৯২ (দস্যুবৃত্তি), ৩৯৪ (দস্যুবৃত্তিকালে আঘাত), ৩৯৫ (ডাকাতি), ৩৯৬ (খুনসহ ডাকাতি),৩৯৭ (হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি), ৪৩৫ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন),৪৩৬ (বাড়িঘর ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার), ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪৩৬ (আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায্যে কোন জলযানের ক্ষতিসাধন) অথবা এসব কাজে উৎসাহ দান। এসব অপরাধী কোনোভাবেই ক্ষমার যোগ্য নন।’]
২| জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে আন্দোলন এবং গণ আদালত। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতশ্রুতিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আশ্বাস, কিন্তু ৯৬ তে সরকার গঠন করেও বিচার প্রক্রিয়া শুরু না করা। অন্যদিকে ঐ সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে জামাতকে সহযোগী হিসেবে আওয়ামী লীগের স্বীকৃতি।
[১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের আমীর ঘোষণা করলে বাংলাদেশে জন বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। বিক্ষোভের অংশ হিসাবে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ১০১ সদস্যবিশিষ্ট-একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হয় জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে। তিনি হন এর আহ্বায়ক। এর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-বিরোধী প্রতিরোধ মঞ্চ, ১৪টি ছাত্র সংগঠন, প্রধান প্রধান রাজনৈতিক জোট, শ্রমিক-কৃষক-নারী এবং সাংস্কৃতিক জোটসহ ৭০টি সংগঠনের সমন্বয়ে পরবর্তীতে ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২ ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি’ গঠিত হয়। সর্বসম্মতিক্রমে এর আহ্বায়ক নির্বাচিত হন জাহানারা ইমাম। এই কমিটি ১৯৯২ সালে ২৬ মার্চ ’গণআদালত’ এর মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একাত্তরের নরঘাতক গোলাম আযমের ঐতিহাসিক বিচার অনুষ্ঠান করে। গণআদালতে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে দশটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপিত হয়। ১২ জন বিচারক সমন্বয়ে গঠিত গণআদালতের চেয়ারম্যান জাহানারা ইমাম গোলাম আযমের ১০টি অপরাধ মৃত্যুদন্ডযোগ্য বলে ঘোষণা করেন।]
৩। ২০০০ সালে বিএনপি জামাতকে নিয়ে চার দলীয় জোট গঠন এবং ২০০১ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করে জামাতকে মন্ত্রীত্ব প্রদান।
৪। ২০০৮ এর নির্বাচনে আবারো যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রতিশ্রুতি এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের জয়লাভ ও ২০১২ সালে বিচার প্রক্রিয়া শুরু।
৫। ২০১৩ কসাই কাদেরের বিচারের রায়ে সমঝোতার আভাস। আপসের বিচার নয়, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবীতে ব্লগারদের মানব বন্ধন থেকে গণজাগরণ মঞ্চ- প্রজন্ম চত্বরের আত্মপ্রকাশ।
৬| প্রথম দিকে গণজাগরণ মঞ্চে কোন রাজনৈতিক দলকে সম্পৃক্ত হতে না দেয়ার ফলে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের অকুণ্ঠ ভালবাসা এবং সমর্থন পায়। বিএনপি প্রথম দিকে এটাকে আওয়ামী লীগের সৃষ্টি বললেও পরবর্তীতে নতুন প্রজন্মের নিরপেক্ষ আন্দোলন হিসেবে স্বীকার করে নেয়।
৭| ময়দানে আবির্ভূত হল হেফাজতে ইসলাম। ১৩ দফা আর লং মার্চ, মতিঝিলে হাজারো ইসলাম পছন্দ লোকের সমাবেশ।
তাই বলতেই হচ্ছে সময় হয়ছে ঘুরে দাড়াবার। আমি যা মনে করি মনে করি তা হলঃ
১| বাংলাদেশের সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী এদেশের জনগন।
২। ১১,০০০ (এগারো হাজার) ক্ষমার অযোগ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা। এবং যুদ্ধাপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট সংগঠন/দল সমূহ নিষিদ্ধ ঘোষনা করা।
৩| বংগবন্ধু কোন দলের নয় তিনি জাতির পিতা হিসেবেই থাকবেন এবং কোন রাজনৈতিক দল বা সংগঠন বংবন্ধুকে তাদের রাজনৈতিক শ্লোগান বা দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে পারবেন না। কেউ কোন ধর্মকে আঘাত করতে পারবে না।
৪| ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। সব ধর্মের লোকেদের জন্য সমান অধিকার। ধর্মের বিকৃত ব্যবহার ও ধর্মকে নিজ স্বার্থে ব্যবহার বন্ধ করা।
৫| বাংলাদেশকে একটি সামাজিক কল্যানমূখী রাষ্ট্রে হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।
ভাল থেকো বন্ধুরা , অনেক অনেক দুরে থাকি, প্রবাসে বসে অনেক ভরসা নিয়ে বসে আছি, জয় হোক এই আন্দোলন জয় হোক বাংলাদেশের , জয় হোক বাংলার মেহেনতি মানুষের , জয় বাংলা |
--কিন্তু--
©somewhere in net ltd.