নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রভাবপ্রতিপত্তি আজীবন থাকে না। প্রতারকরাও প্রতিরিত হয়। ক্ষমতাচ্যুত হলে ক্ষমতাসীনের কী হবে? কবর অথবা শ্মশানে প্রতিদিন মৃতসৎকার হয়। ©_Mohammed Abdulhaque [www.mohammedabdulhaque.com]

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক

অন্তত একবার সত্যকে তার সম্বন্ধে কিছু বলতে দাও। আমরা কে কী, অন্যরা তা জানতে এবং দেখতে পারবে।

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সত্য প্রেম (উপন্যাস) পৃষ্টা ৫১-৫৪

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১:৪৪




দাদা… ‘ডাক্তর বলেছিল, সত্বর না শুকালে মরে যাবে। জানের ডরে নাওয়া খাওয়া ছেড়ে শুকিয়েছিলাম। এখন খালি মাথা ঘোরে। বসলে উঠা যায় না। উঠলে বসা যায় না। এসব আগে শুনলে গড়াগড়ি দিয়ে হাসতাম। এখন সত্যি বসলে উঠতে কষ্ট হয়। হঠাৎ বসলে ও মা গো বলতে হয়।’
আনীল… ‘এমন চিন্তা করলে সর্বনাশ হবে।’
দাদা… ‘শিকল চাই, অশান্ত মনকে বেঁধে শান্ত করার জন্য।’
আনীল… ‘বাবার টাকায় বাবুগিরি আর নিজের টাকায় ফুটানি করার মজাই আলাদা। ছড়ার ছন্দ শিখতে চাই। না শিখালে দিকদারি দেব।’
দাদা… ‘গারদে না পাগলা যেতে চাও?’
আনীল… ‘পাগলাঘণ্টা আজ বাজাব।’
‘হায়রে মোর ভাঙা গলা, তোর যন্ত্রণায় গান গাইতে পারলাম না, দুঃখ বলে কেঁদে জড়িয়ে ধরার জন্য গলা পেলাম না।’ বলে দাদা মাথা নাড়লে আনীল সালাম করে দৌড়ে যেয়ে হেঁকে ডেকে বলল, ‘অনিল, নুরিকে নিয়ে আয়। নীলাকে খুঁজে বার করতে হবে।’
অনিল মাথা নেড়ে বলল, ‘আমি এখন আমার বান্ধবী নীলার সাথে দেখা করতে চাই। টরেটক্কা ভাষায় নিমন্ত্রণ করেছিল।’
‘ঠিকাছে।’ বলে আনীল বিদ্রুপ হেসে মোবাইল বার করে নম্বর ঘুরালে অনিল জবাব দিয়ে বলল, ‘হ্যাঁ নীলা, আমরা এখন ডাকবাংলায় আছি।’
‘আমাকে কিছু বলছিস নাকি?’ বলে আনীল শরীর কাঁপিয়ে হাসলে মোবাইল ফেলে অনিল চিৎকার করে বলল, ‘দাদিজান, সর্বনাশ হয়েছে।’
‘অনিল ফিরে আয়, শুধু তোকে বিশ্বাস করতে পেরেছি। আমাকে সাহায্য করলে সবাই তোর জন্য দোয়া করবে। তোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমি নিশাচর হয়েছিলাম। নীলা এখনো জীবিত, ওকে খুঁজে বার করতে হবে। দয়া করে সদয় হ, আমাকে হতাশ করলে তুই হন্ত্যা হবে।’ বলে আনীল কাঁধ ঝুলালে, অনিল থমকে দাঁড়িয়ে বলল, ‘এসব কী বলছেন?’
আনীল… ‘বিশেষকার্যোদ্ধারের জন্য দুঃসাহসিক অভিযানের এসেছি।’
অনিল… ‘মারধর করলেও একলা আপনার দোকলা হব না।’
আনীল… ‘নুরিকে সাথে নেব।’
অনিল… ‘সর্বনাশ, টিকটিকিকে ডাকে কুমির। জোঁককে ডাকে জানুয়ার। ডাইনোসর চোখে দেখবে না। বলবে ওটা নিশ্চয় হিমালয় পর্বতে, হেঁটে হেঁটে এতদূর এসে ক্লান্ত হয়েছে।’
আনীল… ‘তবুও ওকে সাথে নিতে হবে।’
অনিল… ‘ভালোবাসার নাক কান চোখ নেই। বুকের ভিতর মন এবং কলিজা থাকে। গরু ছাগলের কলিজা কিনে অনেকে খায়। আমার ডর লাগে। ভালোবাসার অর্থ আমি আর জানতে চাই না। কলিজায় নাকি নাম লিখতে হয়, সর্বনাশ।’
আনীল… ‘তুই নিশ্চয় জানিস ফাঁসিতে ঝুলার পর মৃতরা মিথ্যা বলতে পারে না।’
অনিল… ‘বিশ্বাস করুন, গোসল করার জন্য পুকুরে গিয়েছিলাম, জলে ডুবে মনে হয়েছিল, গেঞ্জি লুঙি পাকঘরে রেখে এসেছি এখন কামরায় যাব কেমনে?’
‘পথ হারিয়ে বান্দরবন গিয়েছিলাম, ভল্লুকরা দৌড়িয়ে মধুর সাগরে ফেলেছিল।’ বলে আনীল হাসার চেষ্টা করলে দুহাতে মাথা চেপে ধরে অনিল বলল, ‘ভল্লুক দেখলে আমার পেটের ভিতর ভুড়ভুড়ি করে।’
‘কথা না বলে হাঁটতে থাক অনেক দূর যেতে হবে।’ বলে আনীল মাথা দিয়ে ইশারা করলে অনিল হাঁটতে শুরু করে বলল, ‘কোথায় যাবেন?’
‘হাঁটতে থাক।’ বলে আনীল হাঁটতে থাকে এবং বনে প্রবেশ করে অনিল বলল, ‘আর কত দূর যাবেন?’
আনীল… ‘আমি বিশ্বস করি নীলার সাথে তোর দেখা হয়েছে?’
চারপাশে তাকিয়ে অনিল বলল, ‘এই পরিবেশে একবার এসেছিলাম। উনি নিশ্চয় আশেপাশে আছেন। আপনি এত চিন্তিত হচ্ছেন কেন?’
‘নীল পানি পান করে নীলার ভক্ত হয়েছিলাম।’ বলে আনীল দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মাথা দিয়ে ইশারা করলে অনিল বলল, ‘ভাব ভাবনা ক্লান্তি এবং গ্লানি পছন্দ করি না।’
আনীল… ‘তুই বলেছিলে, এই পরিবেশে একবার এসেছিলে। উপদেশ করল উপকৃত হব।’
অনিল… ‘এমন কাটা কেটেছিল পানি লাগলেও জ্বলে। আপনি তো ভেজালি লবন ছিটাচ্ছেন।’
আনীল… ‘আশেপাশে ভয়ঙ্কর কিছু নেই। নির্ভয়ে বল।’
অনিল… ‘একটা সংলাপ বলতে পারব?’
আনীল… ‘নির্ভয়ে বল।’
অনিল… ‘নিজ থেকে শুরু করলে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছবেন। নিজের ভুল থেকে শিখলে সত্বর শিক্ষিত হবেন।’
‘পারলে নুরির সাথে ভাব জমা যেয়ে আমি ওকে খোঁজে বার করব।’ বলে আনীল দৌড়ে হেলিকাপ্টারে উঠে উড়াল দেয়। নুরিকে ডেকে অনিল বলল, ‘এই নুরি, তোর ছাগল কিনতে চাই, চাইলে লাখ টাকা দেব?’
নুরি কপাল কুঁচকে বলল, ‘এত টাকা দিতে চাস কেন?’
অনিল… ‘তোর ছাগলের মগজ ভোনা খাওয়ালে এই লোকের মাথা ঠিকঠাক হবে। আজেবাজে খাবার খেয়ে মগজ বিকল হয়েছে, মানে মস্তিষ্কবিকৃতি।’
নুরি… ‘সম্পূর্ণ সুস্থ করতে পারলে একটা টাকাও দিতে হবে না।’
‘কেন?’ বলে অনিল অবাকদৃষ্টে তাকালে মাথা নেড়ে নুরি বলল, ‘বাড়ি যেতে হলে পাগলের বগলে বসে বাতাসে ভাসতে হবে। নিশ্চয় বিশদভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে না?’
অনিল… ‘এখন থেকে সকল চিন্তা আমি একলা করব। তুই শুধু আমার জন্য দোয়া কর। অকালমৃত্যুর জন্য এই লোকটা স্থিরনিশ্চয় সংকল্প করেছে।’
নুরি… ‘এখনো সময় আছে আমার মুখোমুখি হয়ে চোখের দিকে তাকিয়ে বল, নুরি আমি তোকে ভালোবাসি। মন খুলে আমাকে ভালোবাস। আমি তোকে ভালোবাসার সাগরে ভাসাব।’
অনিল… ‘আসলে কী হয়েছে, তোর চোখের দিকে তাকালে আমার হাতে পায়ে কাতুকুতু হয়।’
‘বাতাস বন্ধু, আমার দিকে তাকিয়ে দেখ, বিরহনলে জ্বলে পুড়ে অলাত হচ্ছি। আর জ্বালালে সত্যি কয়লা হবো।’ বলে নুরি বেজার হলে অনিল সামনে যেয়ে হাসার চেষ্টা করে বলল, ‘চাইলে তুই আমাকে বিয়ে করতে পারবে। তোর বর হলে বাড়ির বুড়িরা আমার সাথে বাড়াবাড়ি করবে না।’
নুরি… ‘সত্যি বলছিস?’
অনিল… ‘বিশ্বাস না হলে আমার সাথে সংসার করবে কেমনে?’
নুরি… ‘আসলে কী হয়েছে, আমি আমার কানকে বিশ্বাস করতে পারছি না।’
অনিল… ‘তুই হয়তো জানিস না, তোকে হাসাবার জন্য হাস্যণব হতে চেয়েছিলাম। তোর সাথে ভাঁড়ামি করার জন্য ভাঁড় হতে চেয়েছিলাম।’
নুরি… ‘তোর ভালোবাসা পাওয়ার জন্য উদাসিনী হতে চেয়েছিলাম। তোর হাত ধরার জন্য আমি সাধনা করতে চেয়েছিলাম। দয়া করে একটিবার আমার হাত ধর আমি সাধিকা হতে চাই।’
অনিল… ‘অভিনয় করছিস না তো, তোকে একানার বিশ্বাস করি না।’
নুরি… ‘তুই আমার জীবনীশক্তি। বিশ্বাস না হলে গলায় ফাঁস লাগাতে পারবে।’
অনিল… ‘কার গলায়, আমার না তোর?’
নুরি… ‘এক গলায় লাগলে হবে।’
অনিল… ‘তোর গলায় লাগিয়ে দেখি?’
‘আমার সাথে আয়, পাটের ফেঁসোয় দড়া বানিয়ে দেব।’ বলে নুরি হাত প্রসারিত করলে অনিল ওর হাত ধরে বলল, ‘এখন সব বিশ্লেষিত হয়েছে। শায়ার ছায়ায় পেতনীর কঙ্কাল দেখে চমকে উঠেছিলাম।’
নুরি… ‘আর কাউকে বিয়ে করতে চাইলে, তোকে চঞ্চাপুরুষ বানিয়ে আমি শঙ্খিনী হওয়ার পণ করেছিলাম।’
অনিল… ‘ওরে সর্বনাশ।’
নুরি… ‘বাতাস বন্ধু, তুই আমার চোখের মণি। তোকে হারালে আমি কানি হব। আমার হাত ধর, তোর চোখের দিকে তাকিয়ে স্বর্গ দেখতে চাই। স্বেচ্ছায় স্ত্রীর অধিকার দিলে, তিন সত্য করে বলছি আজীবন তোকে স্বর্গসুখ দেব।’
‘নুরি, তুই আমার কল্পনার অলোকসুন্দরী। তোকে পাব না ভেবে আমি বিবাগী হয়েছিলাম।’ বলে অনিল বিচলিত হয়ে মাথা নত করলে তার দু হাত ধরে মাথা নত করে মুখের দিকে হাসার চেষ্টা করে নুরি বলল, ‘বাতাস বন্ধু, আমার বাগিচায় তোর ছায়া না পড়লে বসন্তের বাতাস পাশ কেটে চলে যায়। অলী মৌটুসি ফুলের সাথে দূরত্ব বজায় রাখে।’
অনিল… ‘নুরি, এখন আমার ভয় হচ্ছে।’
নুরি… ‘কেন, কী হয়েছে?’
অনিল… ‘এত ভালোবাসাবাসি ভালো নয়। মঙ্গলবারে অমঙ্গল হলে যমের জাঙ্গালে যেতে হবে।’
নুরি… ‘সত্যাসত্য জেনেছি, এখন মৃত্যু হলে পরিতৃপ্ত হব।’
অনিল… ‘চল, তমালতলে যেয়ে কামবশায়িতা এবং কামরূপীর কামকলা দেখে আমরাও কামদ হব।’
মৃদুহেসে নুরি হাত বাড়ালে ওর হাত ধরে অনিল যখন হাঁটে আনীল তখন তমালতলে দাঁড়িয়ে থাকা নারীকে ডেকে বলল, ‘নীলা, তোমার পিছে পড়ে পাগল হয়েছি। লেখাপড়া না করে ছাগলরাখাল হয়েছি। তোমার সাথে সংসার করার জন্য কানাবগি মানত করেছি। তোমার লাগি পাগল আমি সকলকে বলেছি।’
নীলা… ‘নিদাগে দাগ লাগলে বাদ বিবাদে নির্বিবাদ হয়। নির্বিবেকরা কবি হতে পারে না, কবিরা নির্বিরোধ কবিতা পছন্দ করে।’
আনীল… ‘অর্ধ প্রহর প্রহার করে গায়ের জ্বালা মিটিয়েছে।’

প্রথম প্রকাশ ২০/১২/২০১৭
Copyright © 2017 by Mohammed abdulhaque
ISBN-13: 978-1982087326

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১:৫৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনার লেখা পড়লে মনে হয়, কোন এক আদি যুগের লেখা

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ২:০৪

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আসলে আপনি ঠিক ধরেছেন, আমি সেই ৪০ বছর আগের চিত্র চিরত্রে এখনো বিভোর।

( অভিধান আমাকে ব্যস্ত রাখে, আমি সব ভুলে শব্দের সাথে খেলি।)

একটা কবিতা পড়বেন?

২| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: আর কত পর্ব বাকি আছে?

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৫৮

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: রাজীবভাই বিরক্ত হচ্ছেন নাকি?

এখনও বেশ অর্ধেক বাকি। এটাতো ছোট গল্প।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.