নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রভাবপ্রতিপত্তি আজীবন থাকে না। প্রতারকরাও প্রতিরিত হয়। ক্ষমতাচ্যুত হলে ক্ষমতাসীনের কী হবে? কবর অথবা শ্মশানে প্রতিদিন মৃতসৎকার হয়। ©_Mohammed Abdulhaque [www.mohammedabdulhaque.com]

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক

অন্তত একবার সত্যকে তার সম্বন্ধে কিছু বলতে দাও। আমরা কে কী, অন্যরা তা জানতে এবং দেখতে পারবে।

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সত্য প্রেম (উপন্যাস) পৃষ্টা ৯১-৯৪

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৪৪




‘নীলা, তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে?’ বলে আনীল পিছু হাঁটলে গম্ভীরকণ্ঠে নীলা বলল, ‘মৃত্যুর পর আমি মাটি হতে চাই। অন্যদের জন্য হীরা অনর্ঘ হলেও মুসলমানের জন্য কাঁচের টুকরা।’
‘নীলা, তুমি যদি আমাকে বিয়ে করো, আমি তোমাকে শণ দিয়ে একচালা ঘর বানিয়ে দেব। আমাকে বিয়ে করবে?’
‘আজ তোমাকে ক্ষমা করতেই হবে, কেন ক্ষমা করতে চাই জানতে চাও?’
‘কারণ বললে সত্যি উপকৃত হব।’
‘আল্লাহর আইনানুযায়ী নারীরা পুরুষকে বিয়ে করে এবং সমর্থনযোগ্য কারণে বিবাববিচ্ছেদ করতে পারে যা আইনসম্মত।’
‘বাতাস এবং পাপের সাগর আমরা চোখে দেখি না। পাপে তাপে জীবন। পাপের সাগরে হাবুডুবু খেয়েও আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলার আপ্রাণ চেষ্টা করি।’
‘কী হয়েছিল?’ বলে নীলা কাঁধ ঝুলালে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আনীল বলল, ‘একে অন্যকে ভুল বুঝেছিলাম।’
‘নীলকান্তমণি আমার হাতে। এক কেজি হীরা কোথায়?’ বলে নীলা মাথা দিয়ে ইশারা করলে শরীর কাঁপিয়ে হেসে আনীল বলল, ‘হীরার বস্তা দেখে বেনিয়ার বেনিয়ান খুলেছিল।’
‘হীরা এবং স্ফটিকমণি দেখলে প্রায় সকলের দৃষ্টিভ্রম হয়। যাক, কয়টা খেয়েছ?’
‘সাগরে ফেলতে চাইলে মন বলেছিল, মালা বানালে নীলার গলায় ঝুলমল করবে।’
‘কালো তাগায় শিম ফুল গেঁথে মালা বানিয়ে দাও, আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। ধাউড়ামি বাদ দিয়ে ধাওড়া বানালে মেঘে ভিজতে হবে না।’ বলে নীলা মুখ বিকৃত করলে হাসতে হাসতে আনীল‍ বলল, ‘কুস্তি অথবা ধস্তাধস্তিতে আমারে সাথে পারবে না জেনেও আমাকে বিয়ে করতে চাও কেন?’
‘আমার শক্তিমত্তা দেখতে চাও নাকি?’
‘আমি জানি আমার কোনো কুটুম্বী নেই।’
‘তোমার সাথে কুটুম্বিতা করতে হবে নাকি?’
‘বিয়ের পর কুটুম্বিতা করার জন্য তোমার বাড়ি যাব।’
‘তাই নাকি?’
‘হ্যাঁ, অপেক্ষার প্রিয় নাম প্রিয়তমা পাষাণী।’
‘কবিতা শুনাতে চাও নাকি?’ বলে নীলা বিদ্রুপ হাসলে আনীল বললল, ‘নীলে নীলে নীল হয়ে নীলাকাশে নীল হারাল, নীলার খুঁজে আনীল হারিয়ে লোকের ভিড়ে নীলাকে খুঁজে পেল। আকাশের নীলে নীল হতে চেয়ে সাগর নীলে মন লুকাল, বাতাসে ভাসতে চেয়ে বিমনা মন দুঃখের সাগরে ডুবেছিল। সজনীর স্পর্শে বেরঙা মন নবরঙে রঙিন হল, দুঃখের নগর ঘুরে সুখ অবশেষে সুখবাসরে ফিরল।’
নীলা… ‘সুখিত হতে চাও নাকি?’
আনীল… ‘তোমাকে বিয়ে করতে চাই। কপালে সুখ থাকলে নিশ্চয় সুখিত হব।’
‘মোহর কত দেবে?’ বলে নীলা অপলকদৃষ্টে তাকালে আনীল বলল, ‘শূন্যের আগে এক বিন্দু শূন্যের পরে এক দেব।’
‘মাত্র দশ টাকা এক পয়সা?’ বলে নীলা অবাকদৃষ্টে তাকালে মাথা নেড়ে আনীল বলল, ‘লাখ কোটি নিখর্ব হতে পারে।’
নীলা… ‘ওরে সর্বনাশ, এত টাকা কোথায় পাবে?’
আনীল… ‘নীলা, ভুলের কারণ যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করতে পারব না। দয়া করে আমাকে ক্ষমা করো।’
নীলা… ‘আপন মানলেই পর আপন হয়, আপন করতে হয় না। আপন আপন জপলেও আপন আপন হয় না।’
আনীল… ‘মমর্ব্যথায় মরমীয়া কবু হয় না কাতর, মুখে আগুন থাকলেও অন্তরে থকে পরশ পাথর।’
নীলা… ‘আমাকে কিছু বলছ নাকি?’
আনীল… ‘রসের হাঁড়ি হাতে বাজারে যেয়ে দেখি, কাগজের টাকা গাছে ধরে, ঝাড়া দিলে ঝরঝর করে পড়ে।’
নীলা… ‘সংসারী হতে চাই। বনবন ঘুরে বুঝেছি, পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য আমরা পৃথিবীতে এসেছি। বেশি হলেও মাত্র একশো বছর আমরা বাঁচি। রোগে আক্রান্ত হই। কামে ক্রোধে আক্রামক হই। পাপে পূণ্যে কর্মফলের খাতা ভরে। মৃত্যুর পর দেহ নিথর হয়। কেউ জ্বালায় কেউ মাটি চাপা দেয়। আত্মা ইথার অতিক্রম করে। আত্মীয়া অথবা পরমাত্মীয়া হলেও মৃত্যুকে বরণ করতে হবে।’
আনীলা… ‘হে সাধিকা, তোমার সাধনার প্রতিফলনে পরমানন্দিত, ভক্তবিটেল আমি সাধনা করতে চেয়ে বারংবার হয়েছি পরাজিত।’
নীলা… ‘আমার ঘরে আলো নাই রে বন্ধু তোমার ঘরে বাতি জ্বালি, চাঁদের আলোয় দুনিয়া আলোকিত হয় জানি রাত হলে আমি কামানলে জ্বলি।’
আনীল… ‘টুকনি হলে ভিক্ষা করতে হবে ভেবে কবি মানসীকে মনে রাখে, ঝুলি হলে ফুলে ভরে যাবে ভেবে কবি মানসীকে কবিতায় রাখে।’
নীলা… ‘কিছু কবিতা পড়ে কবির মনের কষ্ট অনুভব করা যায়, কিছু কবিতা বার বার পড়েও কবিতার অর্থ না বুঝা যায়।’
আনীল… ‘অক্ষরে শব্দ, শব্দে ছন্দ খুঁজি আমি অসুন্দরে দেখতে পাই সুন্দর, সুন্দরে অসুন্দর আছে জানি আমাদের বিশ্বাস সত্যি অনিন্দ্যসুন্দর।’
নীলা… ‘সবাই সুখে থাকতে চাই, শান্তিতে থাকতে চাই, নন্দিত হতে চাই। নিজেকে হত্যা করে আত্মত্যাগি হতে চাই না।’
আনীল… ‘ভবে কত ভাবুক আছে মন তুমি না জানো, ভাবিনীর ভাবে মজলে মন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে, ভুল মানুষের সাথে ভাবে মজলে অকূলপাথারে ভাসবে।’
নীলা… ‘আমার সাথে প্রেম করে ধরেছিলে অন্যের হাত, কলজে জ্বলে অলাতরে বন্ধু কলজে জ্বলে অলাত, তোমার কথা ভেবে এখন কাটে দিন রাত। জ্বলে জ্বলে বুকের ভিতর তুষেরাগুন জ্বলে, অন্তর জ্বলে অলাত রে বন্ধু খবর না নিলে।’
আনীল… ‘সূর্য ডুবে সন্ধ্যা হলে প্রতিনিয়তের মত সন্ধ্যাবাতি জ্বেলেছিলাম, তোমাকে পথ দেখাবার জন্য, সজনী আসো ফিরে সুখের বাসরে।’
নীলা… ‘ঝরাপাতার মর্মব্যথা জানতে চেয়ে মনে পেলাম ব্যথা, আহারে মনামার তুই কাঁদিস না, সত্বর আমরা চলে যাব আপন বাসরে।’
আনীল… ‘তাল গাছে বসে কানাবগি কখনো ধ্যান করতে পারে না, হাঁটুজলে এক পায়ে দাঁড়িয়ে ধ্যান করে এবং তা তাকে মানায়। আমি হলাম কানা বগি।’
নীলা… ‘আকাশ ঝামরিয়েছিল তা দেখতে পাইনি, আমার ভুল হয়েছে, মন বিমনা হয়েছে, হয়তো মনে অসুখ হয়েছে।’
আনীল… ‘মনে অভিমান আমার নয়নে জল, প্রেমে বিচ্ছেদ, জীবনে পরাজয়, ব্যথা এবং ব্যর্থতা চারপাশে। শান্তি স্বস্তি কোথাও নেই।’
নীলা… ‘কেন আমাকে গৃহহারা করলে, আমি তোমার কী অপকার করেছিলাম? হাত ধরো, চাইলে আমি তোমার উপকার করতে পারি।’
আনীল… ‘মন আজো কাঁদে তোমার লাগি আমি বিবাগী, উরে আসো তোমাকে লোকাব হৃদয়ের কন্দরে, আশায় বসে থাকি তোমার বাড়ির অনতিদূরে।’
নীলা… ‘ভালোবাসা একটা অনুভূতি, আবেগপ্রবণ হই ভালোবাসার জনকে বাহুতে পাওয়ার জন্য। অবশেষে জেনেছি ভালোবাসা থাকে অন্তরে।’
আনীল… ‘আখিজলে সাগর ডুবালাম আমি তোমার দেখা পেলাম না, উদাস আমি ভুলিনি তোমাকে আজো ভালোবাসি, বৃষ্টি ঝরছিল সেই প্রাতে তোমাকে দেখে হয়েছিলাম বিমনা।’
নীলা… ‘তুমি কোথায় হারালে বন্ধু যৌবন বিগত হয় তোমার আশায়, মনেরাশা মনে রইলো বাগের কলি ঝরে, নগরে নগরে ঘুরি সুখেরাশায়। জীবনে ভাটি ধরলে জোয়ার না আসে, মটকির জল শোকালে ভরা যায়, বন্ধু তোমার বিরহে কামার্তা আমি হয়েছি নিরুপায়, আকাশে তারার খেলা নিশা রাতে চাঁদিনি জ্বলে মর্মজ্বালায়। সাধক হতে চাইলে কামিনীর ক্ষেতে চাষ করতে হয় জানে সবে বুঝে না হাবায়, দিনে দিনে দিন ফুরিয়ে নব্বইয়ে জোয়ার আসে সাধনায়।’
আনীল… ‘সুন্দর জানে সুন্দরের কদর, অপলকদৃষ্টে তাকিয়ে থাকি আর বলি তুমি কত সুন্দর, লাল কুমকমু লাগলে গোলাবি হবে তোমার অধর।’
নীলা… ‘আহা অধরমধুর, লালাতে এত মধু জানলে আমি কি রোগে ভোগতাম? জানতাম না বিধায় এখন আমি আনাজি হব।’
আনীল… ‘সফল হতে চেয়ে ব্যর্থ হলাম, আনন্দ চেয়ে আমি নিরানন্দ হলাম, কেন এমন হল জানতে চেয়েও ব্যর্থ হলাম।’
নীলা… ‘যখন কেঁদেছিলে তখন আমার কথা স্মরণ হয়েছিল তো? যদি হয়ে থাকে, যদি সেই ক্ষণে ক্ষমা চেয়ে থাকো, তবে বলি, ধন্য আমি কৃতজ্ঞ এবং ক্ষমার যোগ্য।’
আনীল… ‘যে কবিতায় ভাব এবং আবেগের লীলা খেলা, যে কবিতায় টান থাকে এবং আবেগপ্রবণ করে, যে ভাবে লিখে সেই অভিক এবং তারাই করে অবলীলা।’
নীলা… ‘চোখের জল ছলনা জানে না, চোখের জল সুর এবং ছন্দে পড়ে, টপ টপ শব্দ হয়, তাল লয় জানে না।’


প্রথম প্রকাশ ২০/১২/২০১৭
Copyright © 2017 by Mohammed abdulhaque
ISBN-13: 978-1982087326

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: সত্য প্রেম উপন্যাসে নিজের সমস্ত জ্ঞান ঢেলে দিয়েছেন।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫২

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: বুঝেছি আপনি আর আমার লেখা পড়বেন না :(

২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:২৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সুন্দর ও সাবলীল লেখনী।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫২

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

৩| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪৪

নীল আকাশ বলেছেন: ১।
‘নীলে নীলে নীল হয়ে নীলাকাশে নীল হারাল,
নীলার খুঁজে আনীল হারিয়ে লোকের ভিড়ে নীলাকে খুঁজে পেল।
আকাশের নীলে নীল হতে চেয়ে সাগর নীলে মন লুকাল,
বাতাসে ভাসতে চেয়ে বিমনা মন দুঃখের সাগরে ডুবেছিল।
সজনীর স্পর্শে বেরঙা মন নবরঙে রঙিন হল,
দুঃখের নগর ঘুরে সুখ অবশেষে সুখবাসরে ফিরল।’
আস্ত কবিতা যা ভেবেছিলাম।

২। সেরা পছন্দের লাইনগুলি-
নীলা… ‘সংসারী হতে চাই। বনবন ঘুরে বুঝেছি, পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য আমরা পৃথিবীতে এসেছি। বেশি হলেও মাত্র একশো বছর আমরা বাঁচি। রোগে আক্রান্ত হই। কামে ক্রোধে আক্রামক হই। পাপে পূণ্যে কর্মফলের খাতা ভরে। মৃত্যুর পর দেহ নিথর হয়। কেউ জ্বালায় কেউ মাটি চাপা দেয়। আত্মা ইথার অতিক্রম করে। আত্মীয়া অথবা পরমাত্মীয়া হলেও মৃত্যুকে বরণ করতে হবে।
আনীলা… ‘হে সাধিকা, তোমার সাধনার প্রতিফলনে পরমানন্দিত, ভক্তবিটেল আমি সাধনা করতে চেয়ে বারংবার হয়েছি পরাজিত।’
নীলা… ‘আমার ঘরে আলো নাই রে বন্ধু তোমার ঘরে বাতি জ্বালি, চাঁদের আলোয় দুনিয়া আলোকিত হয় জানি রাত হলে আমি কামানলে জ্বলি।’
আনীল… ‘টুকনি হলে ভিক্ষা করতে হবে ভেবে কবি মানসীকে মনে রাখে, ঝুলি হলে ফুলে ভরে যাবে ভেবে কবি মানসীকে কবিতায় রাখে।’

আপনি কী জানেন? আমি আর আপনি দুইজনই নামের ব্যাপারে একই ধারা মেনে চলি। নায়ক এবং নায়িকা কাছাকাছি বা আদ্যক্ষর একই হতে হবে। শবনম-শুভ / নাবিলা- নাহিদ / ...অদ্ভুত তাই না?
সাথেই আছি এই লেখা চলুক।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৫৬

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আমার কাছে নামের বই আছে, কিনেছিলাম।
গল্পের নায়িকা হলো লেখকের মানসী। নায়ক সে নিজে অথবা তার প্রিয় ব্যক্তি, হয়তো তার বাবা, দাদা।

৪| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:২২

নীল আকাশ বলেছেন: আপনাকে আমার একটা গল্প পড়ার আমন্ত্রণ দিলাম।
গল্পঃ নাবিলা কাহিনী ১ - পরিণয়!
এটা পড়ার পর কেমন লেগেছে জানাবেন?

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৩১

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: গল্পে মন্তব্য করেছি জলদি উত্তর দিলে লাভ হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.