নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আবু সাইয়ীদ মাহমুদ সংক্ষেপে এ, এস, মাহমুদ। যিনি নিজের দেশকে ভালোবাসতেন এবং বাংলাদেশের শক্তি ও স্বাধীনতায় গভীরভাবে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন বিচ্ছিন্নতা, অসাম্য ও হতাশায় নিমজ্জিত দেশটিকে বদলে দেওয়ার, নতুন দিন আনার অমিত শক্তি ও সম্ভাবনা আছে এ দেশের মানুষের। সংস্কৃতি অঙ্গনের এমন কোন মাধ্যম নেই যে মাধ্যমে তাঁর পদচারনা ছিলো না। সব দিক থেকে এ এস মাহমুদ ছিলেন বিরল বিশ্বাসের অনন্যসাধারণ একজন মানুষ। সাহিত্য, শিল্পকলা ও সংস্কৃতি জগতের মানুষের কাছে তিনি ছিলেন ‘আমাদের আপন একজন’। তিনি বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারী টেরিস্ট্রেরিয়াল টেলিভিশন ‘একুশে টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারী টেরিস্ট্রেরিয়াল টেলিভিশন ‘একুশে টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা "ফাদার অব মিডিয়া" আবু সাইয়ীদ মাহমুদের জন্মদিনে শুভেচ্ছা।
আবু সাইয়ীদ মাহমুদ , ১৯৩৩ সালের ১০ই জুলাই সিলেটের এক অভিজাত পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। এ এস মাহমুদের বর্ণাঢ্যময় জীবনে তিনি বহু প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫৭ সালে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে, বহুজাতিক তেল কোম্পানি শেলে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে। পরে তিনি যোগ দেন ইস্ট পাকিস্তান অয়েল কোম্পানিতে। কোম্পানিটি পরিচালনা করত পশ্চিম পাকিস্তানিরা, তাদের জাত্যভিমান সহ্য করা এ এস মাহমুদের পক্ষে কঠিন হয়ে ওঠে। ১৯৭১ সালে অনেকের মতো তিনিও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে তেল সরবরাহের দায়িত্বরত কর্মকর্তা হিসেবে তিনি যখন লক্ষ করেন, সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ নির্দেশে হঠাৎ করে বিপুলসংখ্যক লোকবল মোতায়েন ও প্রচুর পরিমাণ লজিস্টিকস আনা হচ্ছে, তখন তিনি বুঝতে পারেন, তথাকথিত ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে মুজিব-ইয়াহিয়ার মধ্যে চলমান সংলাপের মধ্যে গুরুতর কোনো গলদ রয়ে গেছে। পরে বোঝা যায়, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সবকিছু করছিল ২৫ মার্চের রাতে নারকীয় সামরিক হামলা পরিচালনার প্রস্তুতি হিসেবে। তিনি ফতুল্লা তেল ডিপোকে নির্দেশ দেন সামরিক ট্যাংকারগুলোকে তেল না দিতে। ডিপো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং তিনি মার্চের শেষে সপরিবারে পালিয়ে লন্ডন চলে যান।
আবু সাইয়ীদ (এ এস মাহমুদ) মাহমুদ ‘ডেইলী স্টার’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, ‘ট্রান্সকম লিমিটেডের ডিরেক্টর, এবং ‘ঢাকা চেম্বারের প্রেসিডেন্ট ছিলেন দু’বার। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারী রেডিও ‘মেট্রো ওয়েভের’ প্রতিষ্ঠাতা। তাঁকে মনে করা হতো বাংলাদেশের ‘ফাদার অব মিডিয়া’। এস, এ মাহমুদ স্বপ্ন দেখার সাহস করেছিলেন এবং সেই স্বপ্ন সত্য করার সাহস ও অঙ্গীকার তাঁর ছিল। ‘একুশে টেলিভিশন’ ছিল তাঁর স্বপ্ন; সেই স্বপ্নকে তিনি বাস্তব রূপ দিয়েছিলেন। একুশে টেলিভিশন ছিলো তাঁর স্বপ্ন তৈরির কারখানা। সন্তানের মত আগলে রেখেছিলেন তিনি এ প্রতিষ্ঠানটিকে। চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস মাহমুদ একদম শুরু থেকেই একুশে টেলিভিশন গড়ে তোলার সব কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন: এর দর্শন, এর আধেয়, এর ভাবমূর্তি এবং দেশে একটা পরিবর্তন সূচিত করার কাজে সহযোগিতা করার অঙ্গীকার। ফরহাদ মাহমুদ যেমনটি স্মরণ করেন, ‘আমার বাবা সমতা, ন্যায়বিচার ও অসাম্প্রদায়িকতায় গভীরভাবে বিশ্বাসী ছিলেন; মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাগুলো তাই তাঁর মনে গভীরভাবে প্রোথিত ছিল। এই মূল্যবোধগুলোর ওপর ভিত্তি করেই তিনি গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন একুশে টেলিভিশনকে।
খবর, তথ্য, সাংস্কৃতিক ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানগুলো দিয়ে একুশে টেলিভিশন (ইটিভি) জয় করেছিল কোটি কোটি দর্শকের হূদয়; তাদের সামনে খুলে ধরেছিল পুরো পৃথিবী এবং বাংলাদেশের সব মানুষের মধ্যে তৈরি করেছিল যোগাযোগের সেতুবন্ধন। ইটিভির এই সাফল্যই শেষ পর্যন্ত ছিল তার পতনের কারণ। ইটিভির সম্প্রচার শুরু হওয়ার পর দুই বছরের কিছু বেশি সময় পেরোলে আবির্ভাব ঘটে তাঁদের, যাঁরা ইটিভি বন্ধ করে দেওয়ার সংকল্প করেন; ফলে এ এস মাহমুদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দেশ ত্যাগ করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প রইল না। হঠাৎ করে একুশে টেলিভিশনকে বন্ধ করে দিলে সৃষ্টিশীল এই মানুষটি দারুন মনোকষ্ট নিয়ে ইংল্যান্ডে চলে যান। ২০০৩ সালের ২২ জানুয়ারী আবু সাইয়ীদ মাহমুদ ইংল্যান্ডে মৃত্যুবরন করেন এবং তাঁর ইচ্ছানুযায়ী সেখানেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়।
আজ আবু সাইয়ীদ মাহমুদের জন্মদিন। জন্মদিনে একুশে পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে স্মরন করছি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।
২| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২২
কামাল উদ্দিন ফারুকী জুয়েল বলেছেন: "-----এবং তিনি মার্চের শেষে সপরিবারে পালিয়ে লন্ডন চলে যান।"
!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!??????????????????????
আদালতে মামলায় হারার ফলে একুশে টিভি বন্ধ হয়ে যায়।
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:১৮
খাটাস বলেছেন: আবু সাইয়ীদ মাহমুদের জন্মদিনে শুভেচ্ছা।