নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফরাসি আলোকময় যুগের অন্যতম সেরা প্রতিভা জগদ্বিখ্যাত ফরাসি দার্শনিক লেখক, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক ভলতেয়ার। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা উঠিলেই ফরাসি পণ্ডিত ভলতেয়ারের একটি মন্তব্য পুনরুচ্চারিত হয়, "আমি তোমার মত মানি না, কিন্তু তুমি যাহাতে তোমার মত অবাধে বলিতে পার, তাহার জন্য আমি নিজের প্রাণ অবধি বিসর্জন দিতে প্রস্তুত।" উদার গণতান্ত্রিক আদর্শ হিসাবে সত্যই এই বাক্যের তুলনা নাই। সাহিত্যের প্রায় সর্বত্র তার সদম্ভ বিচরণ ছিল ভলতেয়ারের। বাকচাতুর্য ও দার্শনিক ছলাকলার জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। ব্যঙ্গ কবিতা রচনার মাধ্যমেই ভলতেয়ার সাহিত্যজগতে আত্মপ্রকাশ করেন। খ্রিস্টান গির্জা ও তৎকালীন ফরাসি সামাজিক আচার ছিল তার ব্যঙ্গবিদ্রুপের লক্ষ্য। ভলতেয়ার তার সাহিত্যজীবনে সর্বোচ্চ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন একজন গদ্যলেখক হিসেবে। ভলতেয়ারের সাহিত্যকর্মের মধ্যে দু’ হাজার গ্রন্থ এবং ২০ হাজার চিঠি রয়েছে। তিনি আজ পর্যন্ত স্মরনীয় হয়ে আছেন বিশ্বের একজন শ্রেষ্ঠ পত্রলেখক পরিচয়েও। ১৬৯৪ সালের আজকের দিনে তিনি প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন। আজ তার ৩১৯তম জন্মদিনে আমাদের ফুলেল শুভেচ্ছা।
ভলতেয়ার ১৬৯৪ খ্রিস্টাব্দের ২১ নভেম্বর প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন। ভলতেয়ারের আসল নাম ফ্রাঙ্কো ম্যারিক এ্যারোয়েট। একসময় এ্যারোয়েট অজ্ঞাত কারনে ভলতেয়ার নাম গ্রহন করেন। ভলতেয়ারের বাবা ফ্রাঁসোয়া আরুরে ছিলেন নোটারি ও সরকারের ট্রেজারি দফতরের এক সাধারণ কর্মকর্তা। মা মার্গারেট দোমার। তাদের ৫ সন্তানের মধ্যে ভলতেয়ার ছিলেন সর্বকনিষ্ঠতম। ১৭০৪-১১ সাল পর্যন্ত ভলতেয়ার কলেজ লুই ল্য গ্রঁ নামক বিদ্যালয়ে জেস্যুট পাদ্রিদের কাছে পড়াশোনা করেন। এখানেই ল্যাতিন ও গ্রিক ভাষা শেখেন। পরবর্তী জীবনে ভলতেয়ার ইতালীয়, স্পেনীয় ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন।
নাগরিক স্বাধীনতা, বিশেষত ধর্মের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের পক্ষে তার অবস্থান ছিল অটল। সে সময় ফ্রান্সের কঠোর সেন্সর আইন উপেক্ষা করে সামাজিক সংস্কারের অন্যতম প্রবক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন ভলতেয়ার। স্বৈরাচার, গীর্জা তথা খৃষ্টধর্মকে তিনি ফ্রান্সের সার্বিক বিকাশে বাধা হিসাবে দেখতেন এবং সে কারনেই তার রচনাবলী স্বদেশে নির্মমভাবে সমালোচিত হয়েছিল। কিছু কিছু সমালোচনায় তিনি নিজেও মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়ে বিদ্রুপ করেছিলেন আপাদ-মস্তক। তবে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল গীর্জার ভন্ডামি, মুর্খতাকে জনসন্মুখে তুলে ধরা। তিনি ঘৃনা করতেন মানুষের অজ্ঞতা, মূর্খতা, বাটপারি, অন্যায়-অবিচার, উৎপীড়নকারী স্বভাবকে। সে কারনেই তিনি বলেছেন যেখানে "অজ্ঞতা যত বেশী" সেখানে "অসহিষ্ণুতা এবং নিষ্ঠুরতা তত বেশী"....এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চিন্তাশক্তি বিকশিত না হওয়ার কারনেই সমাজে এইসব অন্যায় ঘটে থাকে।
তিনি বলতেন শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞরাই অশুভ শক্তির পরিণতি সম্বন্ধে জানলে চলবে না, তাঁদের জানাতে হবে দেশের তরুনদের। তবেই তারা যথাযথ উদ্যোগ নিয়ে একে প্রতিহত করতে পারবে। ভলতেয়ার কারা অন্তরীন অবস্থায় মাত্র এগারো মাসে “হেনরিয়ের্ডে” নামে একটা মহাকাব্য রচনা করেন। কাব্যগ্রন্থটি পরর্বতীকালে তাঁকে প্রভূত খ্যাতি এনে দিয়েছিল। তাঁকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কবিদের মধ্যে অন্যতম বিবেচনা করা হয়। ১৭১৮ সালে ভলতেয়ার রচনা করেন ’ওয়েডিপে’ নামক এক ট্রাজিক নাটক। অষ্টাদশ শতাব্দীতে ফ্রান্সের বিদগ্ধ সমাজ এই অসাধারন কবিকে হোমার এবং ভার্জিলের সমকক্ষ বলে অভিনন্দিত করেছেন। তিনি সভ্যতার অগ্রগতির সহযোগী এবং মানবতাবাদী ছিলেন।
ধারণা করা হয় ১৭২০ সালের দিকে জীবিকা অন্বেষণের জন্য তিনি ফ্রান্স ছেড়ে ইংল্যান্ডে যান। ভলতেয়ার যখন ইংল্যান্ড যান তখন তিনি ছিলেন আত্মীয় পরিচনহীন একজন অখ্যাত ও অপরিচিত কবি। তবে একথাও সত্যি যে ভলতেয়ারের মতো লেখক দার্শনিক সে সময় ইংল্যান্ডে খুব একটা ছিল না। ব্রিটেনে অবস্থানকালে নানা কৌশলে তিনি অভিজাত মহলের সুনজরে আসার চেষ্টা করেন এবং এতে তিনে ভালোভাবই সক্ষম হয়েছেন। একসময় ব্রিটিশ রাজ্যের রাণী ক্যারোলিনকে উদ্দেশ্য করে একটি কবিতা উৎসর্গ করে এই লেখক ব্রিটিশ রাজ পরিবারের পক্ষথেকে ২শ পাউন্ড ভাতা পেতেন।
অষ্টাদশ শতকের কবি ও দার্শনিক ভলতেয়ার ১৭৭৮ সালের ৩০শে মে মৃত্যুবরন করেন। আজ তাঁর ৩১৯তম জন্মদিন, জন্মদিনে তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা।
২| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৯
শরৎ চৌধুরী বলেছেন: খুব ভালো পোস্ট। +।
৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪০
গোল্ডেন গ্লাইডার বলেছেন: শুভ জন্মদিন
৪| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:২৮
হালি্ বলেছেন: হেপি বাড্ডে ভলতেয়ার
৫| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৪
মধু নদীর জোলা বলেছেন: ভলতেয়ারের জন্মদিনে অনেক শুভেচ্ছা
৬| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:২২
শোয়াইব আহামাদ বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম।ব্লগারকে ধন্যবাদ।"আমি তোমার মত মানি না, কিন্তু তুমি যাহাতে তোমার মত অবাধে বলিতে পার, তাহার জন্য আমি নিজের প্রাণ অবধি বিসর্জন দিতে প্রস্তুত।"কথাটির বাস্তব প্রতিফলন খুব জরুরি।
৭| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:০৫
ম্যাভেরিক বলেছেন: "আমি তোমার মত মানি না, কিন্তু তুমি যাহাতে তোমার মত অবাধে বলিতে পার, তাহার জন্য আমি নিজের প্রাণ অবধি বিসর্জন দিতে প্রস্তুত।"
—এ কথা ভলতেয়ার বলেন নি।
ভলতেয়ার নিজে প্রায় সবকিছুর সমালোচনা করতেন, কিন্তু নিজের সমালোচনা সহ্য করতে পারতেন না।
ভলতেয়ার প্রচণ্ড সাম্প্রদায়িক ছিলেন, কৃষ্ণাঙ্গদের তিনি নিচু প্রজাতির ও জানোয়ার মনে করতেন।
তবে শিল্প সাহিত্য ও দর্শনে ভলতেয়ারের অবদান অনেক।
২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:০০
কোবিদ বলেছেন: জনাব ম্যাভেরিক, ভলতেয়ার মারা গেছেন ২৩৫ বছর আগে। তাই তার কাছে জিজ্ঞাসা করা সম্ভব হলোনা তিনি এই কথা বলেছিলেন কিনা। তবে আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে তার সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি সেটার উপর নির্ভর করেই উপরোক্ত বক্তব্যটি তার বলে জানি।
I do not agree with what you have to say, but I'll defend to the death your right to say it. Voltaire
আপনি এ সম্পর্কে জানতে চাইলে দেখতে পারেনঃ
Read more at
Voltaire quotes
৮| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০১
ম্যাভেরিক বলেছেন: আমিও ভলতেয়ারকে জিজ্ঞেস করতে পারি নি, কাজেই ইন্টারনেটই এ ব্যাপারে ভরসা। তবে দুম করে ইন্টারনেটকে আমি বিশ্বাস করে ফেলি না। এ উক্তিটি ইভেলিন বিয়েট্রিচ হল নামে একজন লেখিকা "The friends of Voltaire" নামক গ্রন্থে করেছেন একটি বিশেষ ঘটনায় ভলতেয়ারের মনোভাব (attitude) বুঝাতে। বাস্তবে ভলতেয়ার এ কথা বলেছেন বলে প্রমাণ নেই।
Click This Link
এখানে defend লিখে সার্চ দেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৪
জুন বলেছেন: আহ মঁশিয়ে ভলতেয়ার, ফরাসী বিপ্লবে আরো কয়েকজনের সাথে মুখ্য ভুমিকা রেখেছিলেন আপন্ সে কথা কি ভোলা যায়?
আপনার জন্মদিনে আমার শুভেচ্ছা ।