নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোহিন1975

আমি কোহিন১৯৭৫। জন্মসালটা নামের সঙ্গেই আছে। বাংলাদেশ, ইসলাম আমার প্রিয় বিষয়।

কোহিন1975 › বিস্তারিত পোস্টঃ

আল কোরআনের একটি ইংরেজি অনুবাদ

২৮ শে জুন, ২০০৯ বিকাল ৪:২০

ইসলামের প্রচার বিশ্বে যতো বেড়েছে, ঠিক তেমনই বেড়ে চলেছে পবিত্র কোরআন সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ। যে-সব ভাষায় কোরআন সম্পর্কে আগ্রহ খুব বেশি, তার মধ্যে ইংরেজি অন্যতম প্রধান। এই আগ্রহের আরো-একটি বড়ো কারণ এই যে বেশির ভাগ মুসলিম দেশগুলো, বিশেষ করে আরবী ভাষাভাষির দেশগুলো ব্রিটিশ কতৃক শাসিত হয়েছে।ইতিহাস ঘেঁটে যতোটুকু জানা যায় ইংরেজি ভাষায় প্রথম কোরআন অনুবাদ করেন আলেক্সান্ডার রস (Alexander Ross) নামে সাউদাম্পটনের একজন স্কুল শিক্ষক। তাঁর করা কোরআনের ইংরেজির এই অনুবাদ প্রকাশিত হয় ১৬৪৯ সালে।

এখানে উল্লেখ করতে হয় যে জনাব রস্ নিজে খুব-একটা আরবি জানতেন না। সেকারণে তিনি আরবি থেকে কোরআনের অনুবাদ করেননি। তিনি অনুবাদ করেছিলেন ফরাসি অনুবাদক আন্দ্রেঁ রাইয়র (Andre du ryer) করা অনুবাদ থেকে।

যে-ইংরেজি অনুবাদ নিয়ে আমরা এখানে কথা বলবো সেটি হচ্ছে জনাব আর্থার জে আরবেরির ( A. J. Arberry) করা ইংরেজি অনুবাদ নিয়ে। জনাব আরবেরি (১৯০৫--১৯৬৯) ছিলেন আরবি এবং ফারসি ভাষায় একজন সুপন্ডিত। তিনি সারাজীবন আরবি-ফারসির চর্চা করে গিয়েছেন। পেশায় ছিলেন একজন খ্যাতনামা অধ্যাপক। কোরআন ছাড়াও তিনি মওলানা জালালউদ্দিন রুমি, আল্লামা ইকবালের রচনা অনুবাদ করেছেন অতি নিষ্ঠার সাথে। এছাড়া ইসলামি সুফিবাদের প্রতি ছিলো তাঁর অতি আগ্রহ। সেই বিষয়ে কিতাবও লিখেছেন। এককথায় বলা যায়, ইসলামি সাহিত্য ও দর্শন ইংরেজি ভাষাভাষিদের জগতে পৌঁছে দিতে তিনি অত্যন্ত পরিশ্রম করেছেন।

আরবেরির করা কোরআনের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হয় ১৯৫৫ সালে। আমার নিজের কাছে যে-সংস্করণটি রয়েছে সেটি অবশ্য ১৯৬৪ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস কর্তক প্রকাশিত।

পূর্বেই বলেছি যে জনাব আরবেরি খুব ভালো আরবি জানতেন; এছাড়া ইসলাম ধর্মের প্রতি ছিলো তাঁর আন্তরিক অনুরাগ আর নিষ্ঠা। যে-কারণে তাঁর অনুবাদ ইংরেজি ভাষাভাষিদের কাছে তো বটেই, এমনকি মুসলিম জগতেও খুব আন্তরিকার সাথে গৃহীত হয়েছিলো। তাঁর অনুবাদ তিনি THE KORAN INTERPRETEDএই নামে প্রকাশ করেন। এই অনুবাদ যেমন মূলানুগ তেমনি মূল কোরআনের বিশেষ করে আরবি ভাষার গঠন, ধববনি-সুষমা --এইসব তিনি অবিকৃত রাখবার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।কয়েকটি উদাহরণ দিই :'' পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। অতএব, তোমরা যেদিকেই মুখ ফিরাও, সেইদিকেই আল্লাহ বিরাজমান। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ।'' (সুরা :; আল-বাক্বারা)। এই আয়াতটি জনাব আরবেরি তরজমা করেছেন এইভাবে অতি সুললিত করে ;; To God belong the East and the West/ whithersoever you turn, there is the Face of God;/ God is All-embracing, All-knowing. ( THE COW).

'' তোমরা মুশরিক নারীদের বিবাহ করো না। যতক্ষণ তারা ঈমান গ্রহণ করে'' --এই আয়াতটির অনুবাদ করা হয়েছে;;

'' Do not marry idolatress, until/

they believe; a believing slavegirl

is better than an idolatress, though

you may admire her. And do not marry

idolaters, until they believe. A believing

slave is better than an idoleter,

বলা যায় এইভাবে তিনি পবিত্র কোরআনের কাব্যিক-গুণাবলী যেমন অক্ষুণ্ণ রাখতে চেয়েছেন, তেমনি বক্তব্যের দিক থেকেও তিনি মূলের কোনো ক্ষতি করেননি বা মলের হানি ঘটাননি।

পবিত্র কোরআনের আরেকজন অনুবাদক মিসরিয় পণ্ডিত আবদেল হালিম (M. A. S. Abdel Haleem) বলেছিলেন, ''Arberry shows great respect towards the language of the Qur'an, particularly its musical effects.''

আর এইসব কারণেই কোরআনের এই অনুবাদটি সারাবিশ্বের কোরআন-পাঠকদের কাছে এখনো এতো প্রিয়। মুসলিমদের মধ্যেও এই অনুবাদ বেশ সম্মানের সাথে গৃহিত হয়েছে। এবং এখনো হচ্ছে।

এই অনুবাদের যে-ত্রুটরি কথা বলা প্রয়োজন, সেইটি হচ্ছে এখানে টীকা-টিপ্পনি একবারেই নেই। যে-কারণে অমুসলিমদের মধ্যে তো বটেই, এমন কি অনারব-ভাষি মুসলমানদের মধ্যেও ভুল বোঝাবুঝির একটা বিরাট অবকাশ থাকে। আরেকটা ব্যাপার সেইটা হচ্ছে জনাব আরবেরি সুরাগুলো ইংরেজি অনুবাদই শুধু দিয়েছেন, ব্রাকেটের বা প্রথম বন্ধনির মধ্যে তাদের মূল নাম দেন নাই। এইটাও তাঁর অনুবাদের একটা বেশ বড়ো রকমের গলদ। তারপরেও তিনি যেটুকু সাধ্য তা করেছেন। এবং সারাবিশ্বের কোট -কোটি মুসলমান এবং ইসলাম-প্রিয় মানুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন। আমরা এই অনুবাদকের প্রতি আমাদের বিশেষ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.