নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কল্পদেহী সুমন

খন্দকার মো: আকতার উজ জামান সুমন

কথা বেশি একটা বলিনা চুপচাপ থাকতে পছন্দ করি। সব সময় কল্পনা করি। কল্পনায় আমি সবসময় নিজের সাথে কথা বলি। আর সব সময় অন্যমনস্ক থাকি। আমার আশেপাশে কে কি করছে না করছে তার দিকে আমার তেমন খেয়াল থাকে না। অনেক সময় কাউকে খুজতে যেয়ে নিজেই হারিয়ে যাই। আর একটা কথা হলো আমার পথ মনে থাকে না তাই আমি একা হাটতে গেলে প্রায়শই পথ ভুল করি। পথে হাটাহাটি করার সময় কত জনের সাথে ধাক্কা খেয়েছি এ পর্যন্ত, তার হিসাব নেই। আমার সমস্ত জীবনটাকে কল্পনা মনে হয় কারণ সব কিছুই যাই ঘটে আমার সাথে তাই আমার কাছে কল্পনা মনে হয়। যদি কোন অঘটন ঘটে তাহলে ভাবি কল্পনা ভেঙ্গে গেলাই সব ঠিক হয়ে যাবে। আমার এই অসম্ভব রকম কল্পনাসক্ত দিনকে দিন বেড়েই চলছে।

খন্দকার মো: আকতার উজ জামান সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

এন্ড পয়েন্ট (২য় পর্ব)

২২ শে মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৬

যখন কিছু স্বার্থপর মানুষ নিঃস্বার্থভাবে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া মানুষটিকে আপন ভাবতে পারেনা তখন সে আর মানুষ থাকেনা , নীচু পর্যায়ের কোন প্রাণি হয়ে যায়। প্রতিটি মানুষই স্বার্থপর তবে তাদের মাঝে বেশিরভাগেরই একটা সীমানা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে। আর এই সীমানা যারা অতিক্রম করে তাদের বিবেক, চিন্তা, ভালোবাসা বলে কিছু থাকেনা।

মেঘার এমন ধরনের পাল্টে যাওয়া অর্ণব সহ্য করতে পারছিলো না। ইদানিং অর্ণব অনেক অগোছালো হয়ে থাকে। তার এই আকস্মিক পরিবর্তন পুতুলের নজরে আসছে। পুতুল অর্ণব থেকে দুইবছরের ছোট। ভাইয়া বলেই ডাকে। অর্ণব তেমন ভাবে কখনও খেয়াল করেনি পুতুলের দিকে। প্রায়ই পুতুল কোন না কোন ভাবে অর্ণবের সামনে আসে, কিছু বলতে যেয়েও থেমে যায়।

একদিন সাহস করেই পুতুল অর্ণবের সাথে কথা বলে ফেললো। তখন অর্ণব প্রতিদিনের রুটিন অনুযায়ী বিকালে হাঁটাহাঁটি করার জন্য বের হয়েছে মাত্র।

-হ্যালো ভাইয়া, কেমন আছেন?
-ভালো, তুমি?
-জী ভালো
-কি করছো এখন বাহিরে?
-হাঁটছি, আপনার সাথে কথা বলছি। আচ্ছা ভাইয়া আমার সাথে একটু হাঁটবেন?
-হুমম, চলো
-মানুষকে উপর থেকে দেখে কিছু বুঝা যায় না। প্রতিটি মানুষ আসলে ঠিক কেমন আছে তা তার সাথে না মিশলে বুঝতে পারা যায় না। সবারই কোন না কোন দুঃখ থাকে।
-ঠিক বলছো। তা তোমার কি কি দুঃখ আছে শুনি।
-আমার দুঃখ বলে শেষ করা যাবেনা
-আমি আছি তো, প্রতিদিন শুনবো তোমার কথা।
-আসলেই শুনবেন?
-হুমম, অবশ্যই
-তাহলে যে আমাকে কিছু অধিকার দিতে হবে আপনাকে।
-কি অধিকার?
-আপনাকে তুমি করে বলার অধিকার, যে সময় বলবো তখন দেখা করার অধিকার আর আরও কাছ থেকে কথা বলার অধিকার।
-আচ্ছা, ঠিক আছে।
-আজ নয় কাল থেকে। ও আরেকটি কথা আপনার সব কথাও আমার সাথে শেয়ার করতে হবে।
-ওকে ওকে
-ভাইয়া

পুতুল কিছুটা ইতস্ততঃ হয়ে কি যেন! বলতে যেয়েও বললো না।

-আচ্ছা তাহলে আজ যাই, কাল বিকালে কথা হবে
-আচ্ছা

পুতুলের কথায় অর্ণব অন্য কিছুর সন্ধান পাচ্ছে। ভাবলো পুতুল কি আবার মেঘার মতো কিনা! আবার ভাবলো পছন্দও তো করতে পারে। কিন্তু সেখানেও অর্ণবের সন্দেহ হচ্ছে। আসলে এক মেয়ের কাছ থেকে ধোকা খেয়ে এখন সব মেয়েকেই মেঘার মতো ভাবছে সে।

নারীজাতি কতটা ছলনাময়ী তা না মিশলে বুঝা যায় না। যতটা ছলনার স্বীকার হয়েছে সে মেঘার কাছ থেকে তা কেউ আর কখনও করেনি।

পরেরদিন বিকালে অর্ণব আর পুতুলের দেখা। পুতুল খুব সুন্দর করে সেজে এসেছে আজ। সবুজ জামা তার সাথে আকাশী রংয়ের একটা হিজাব পড়া। ছোট্ট একটা কালোটিপও পড়ছে কপালে। দেখতে ভারী সুন্দরী লাগছিলো।

-বাহ! আজ দেখি অনেক সেজে আসছো
-কেমন লাগছে?
-পরীদের মতো লাগছে
-সত্যি করে বলো।
-অনেক অনেক কিউট লাগছে।

অর্ণব ঠিক বুঝে উঠতে পারছেনা পুতুলের এসব কিছু। পুতুল অর্ণবের কথা শুনে হাসছে। পুতুলের হাসি এতোটাই মায়াবী যে অর্ণব আর চোখ ফেরাতে পারলোনা। যেন স্বর্গীয় সুষমা মিশে আছে পুতুলের হাসিতে। হাসলে পুতুলকে যে এতো সুন্দর লাগে তা অর্ণব কখনও দেখেনি।

-তোমার হাসি অনেক সুন্দর
-তাই
-হ্যাঁ
-ভাইয়া, একটা প্রশ্ন করি। মাইন্ড করবে না তো,তোমার কি কারও সাথে রিলেশন আছে, কাউকে কি তোমার পছন্দ হয়?
-হুম পছন্দ করি একজনকে কিন্তু রিলেশন হয়নি কারও সাথে।
-যাকে পছন্দ করো তাকে বললেই তো পারো
-সে অন্য কারও সাথে রিলেশন করে
-এ জন্য তোমার মন খারাপ থাকে তাইনা?
-কি জানি, জানি না। জানো ও অনেক স্বার্থপর। আচ্ছা সব মেয়েরাই কি এমন?
-হুমম মেয়েরা অনেক স্বার্থপর তবে যাকে মন থেকে ভালোবাসে তার জন্য অনেক কিছু করতে পারে।
-তাহলে তুমিও স্বার্থপর তাইনা?
-জানি না। তবে আমি কাউকে দুঃখ দেওয়া পছন্দ করিনা।
-তাই!
-জানো আমার একটা প্রেমিক আছে।
-তাই, থাকতেই পারে
-প্রতিদিন একটু করে ফোন দেয় শুধু
-কেন? দেখা হয়না?
-হয়, খুব অল্প। জানো আমি এক স্কুলে বেশিদিন পড়তে পারিনি।
-কেন?
-যেখানে যাই সেখানেই কোন না কোন বখাটে ছেলে আমার পিছু নেয়। আর আমার এক চাচাতো ভাই তো সুযোগ খুঁজে আমাকে বিয়ে করার জন্য।
-তাহলে তো অনেক সমস্যা
-আমি এ পর্যন্ত দশ/বারটা বোরকা চেঞ্জ করছি তবুও ও কি করে যেন বুঝে যায়, আর পিছু নেয়। ও আমার লাভারকে একবার মারছিলো আমার সাথে কথা বলাতে।
-আবার আমাকে মারতে আসবে না তো
-ও তো এখন বাড়িতে
-তোমারা থানায় জিডি করোনা কেন?
-জিডি করে কি লাভ? ওরা সন্ত্রাসের মতো।
-তাহলে কি করবে?
-কি আর করবো? ও ইদানিং আম্মু, আব্বুর কাছে ভালো সাজতে যায়। দেখাতে যায় ও এখন ভালো হয়ে গেছে।
-তোমার মা-বাবা কি তাহলে ওর সাথে বিয়ে দিতে রাজি হবে?
-না। আম্মু বলছে আমাকে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দিবে তাও ওর সাথে বিয়ে দিবেনা।
-তাহলে তো হলোই
-কিন্তু আমি যে রাস্তাঘাটে বের হতে পারিনা, ও আগলে ধরে উল্টাপাল্টা কথা বলে। আমার ছবি তুলে এডিট করে আজেবাজে ছবি বানিয়ে আমাকে হুমকি দেয় ও।
-তাহলে তো খুব খারাপ অবস্থা আমার তো ওকে একদম মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে।
-তাই, তোমার এ কথা শুনে আমার অনেক ভালো লাগছে।

তখনই হঠাৎ করে অর্ণবের বন্ধু মাসুমের ফোন আসলো। অর্ণবের সাথে দেখা করতে চাইছে।

-ভাইয়া কোন জরুরি ফোন আসছে নাকি?
-না, আমার বন্ধু দেখা করতে চাইছে। তাহলে যাই আমি এখন, কি বলো? কাল কথা হবে আবার।
-ওকে ভাইয়া।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.