নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়
কে বেশি যুক্তিবাদী — একজন না কি একদল মানুষ? ক্ষোভ কিভাবে তৈরি হয়?একজনের ক্ষোভ কিভাবে হাজার জনে ছড়ায়? একদল মানুষ কি করে সহিংস দাঙ্গাবাজ হয়ে ওঠে? অন্যায়ের বিরুদ্ধে জেগে ওঠা আফ্রিকান আমেরিকান বিক্ষোভকারীরা কেন নিজেরাই অন্যায় করছে? তারা আসলে কি চায়, কেন চায়? যা চায় তা পেলে কি করবে? তাদের বিক্ষোভ কি কেবলই সাদা কালোর বৈষম্যের বিক্ষোভ? তাহলে একদল সাদা তাদের সাথে কি করে? প্রশাসন ও মিডিয়াই তাদের লুট করতে উৎসাহ দিয়েছে? আমাদের এসব নিয়ে ভাবা কি দরকার, কেন দরকার? বঞ্চিত বাঙ্গালি কি বঞ্চিত আমেরিকানদের চেয়ে বেশি সভ্য?
প্রশ্নের ফিরিস্তি লিখেছি নিজের জন্যে। যাতে পরে ভুলে না যাই। 'দাঙ্গাবাজ' শব্দটা 'বিক্ষোভকারী' শব্দের থেকে অনেক বেশি দাঙ্গা প্রিয়। কিন্তু এই লেখাতে বিক্ষোভকারী এবং দাঙ্গাবাজ সমার্থক হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
দাঙ্গাবাজ বা বিক্ষোভকারী (rioters)
কোন কথা নেই বার্তা নেই। হুট করে একদল লোক দোকানের মালপত্র লুট করে নিয়ে চলে গেল। বা মসজিদ ভেঙ্গে ফেলল। বা প্রতিমার মাথা ভেঙ্গে দিলো। এসব মানুষ হলো দাঙ্গাবাজ।
দাঙ্গাবাজ বা বিক্ষোভকারী হলো একদল মানুষ যারা একই ধরণের আবেগ দিয়ে পরিচালিত হয়, সহজে উত্তেজিত হয় এবং বেশিরভাগ সময়েই যারা সহিংস এবং আইন ভঙ্গকারি। [Chaplin(1985), Rosenthal(1994)]
যেমন ধর্মীয় দাঙ্গাকারী। রাজনৈতিক দাঙ্গাকারী। এরা নির্দিষ্ট ধর্মীয় বা রাজনৈতিক আদর্শের দ্বারা পরিচালিত হয়। এদের আদর্শের বিপরীতে কোন মত বা আদর্শ প্রকাশ পেলে তারা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এবং গায়ের শক্তি দিয়ে দমন করার চেষ্টা করে। দেশের আইন আদালত তার বিবেচ্য বিষয় নয়।
বিক্ষোভ বা বিক্ষোভকারী দল দুই রকম। [Staub & Rosenthal(1994)]
একটা অধিকার আদায় করার জন্য (conserving mob)। যেমন দেশে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বকেয়া বেতনের জন্য করা বিক্ষোভ। ত্রাণের জন্য বিক্ষোভ।
অন্যটি প্রচলিত ব্যবস্থার পরিবর্তন আনার বিক্ষোভ (reforming mob)। যেমন আমেরিকায় চলমান কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের বিক্ষোভ। আমাদের দেশে বিভিন্ন সময়ে সড়ক দুর্ঘটনার বিপক্ষে আয়োজিত বিক্ষোভ।
বিক্ষোভ বা দাঙ্গা কিভাবে তৈরি হয়
বিক্ষোভ কর্মসূচী কখনো রাতারাতি তৈরি হয় না। একদিনে শ খানেক মানুষ হাজার খানেক মানুষকে ধর্মের নামে মেরে ফেলে না। আমেরিকার চলমান বিক্ষোভ মিনিয়াপলিস থেকে শুরু হয়েছিলো। এরপর ৩৪ টা শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এখন তা আমেরিকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ছে।
এক দুই জন মানুষ থেকে একটি বিশাল বিক্ষুব্ধ জনতা তৈরি হওয়া অনেকটা চিনির পানিতে মিছরির দানা জমা হওয়ার মত ব্যাপার। শুরুটা হয় একটি দিক পরিবর্তনকারী ঘটনা দিয়ে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই মানুষ জমা হতে থাকে। তারা শুরুতে নিজেদের ভিতরে এটা নিয়ে আলোচনা করে। আলোচনা থেকে অনেক গুজব বা কনসপিরেসি থিওরি তৈরি হয়। এইগুলো মানুষ থেকে আরো নতুন মানুষে ছড়ায়। গুজব কিভাবে ছড়ায় এটা নিয়ে পূর্বের একটি লেখার লিংক দিলাম।
পুরো ঘটনা এবং সে সম্পর্কে কনস্পিরেসি থিওরি কিংবা গুজব নিয়ে মানুষ যত বেশি নিজেদের ভিতর কথা বলে তত উত্তেজিত হতে থাকে। আলোচনার বিষয়বস্তুগুলো অভ্যন্তরীণ উদ্দীপক (internal stimulation) হিসেবে কাজ করে। এর সাথে যুক্ত হয় বাইরের উদ্দীপনা (external stimulation)। যেমন ট্রাম্পের মত নেতাদের উস্কানি। মিডিয়ার উস্কানিমূলক প্রচারণা।
মানুষের উত্তেজনা একসময় ক্ষোভে পরিণত হয়। ক্ষুব্ধ মানুষেরা নিজের বুদ্ধি বিবেচনাকে বাদ দিয়ে একটা দল হিসেবে কাজ করা শুরু করে। Le Bon যেটাকে বলেছেন Crowd mind। এখন এই ব্যাপারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অল্প কথায় ব্যাখ্যা করা যাক।
মানুষ প্রাকৃতিকভাবে বিবেকবান এবং বুদ্ধিমান প্রাণী। সহ ব্লগার আপনার সাথে দূর্ব্যবহার করেছে। আপনার প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হলো। এর মানে এই নয় আপনি তাকে খুঁজে নিয়ে তার মাথায় একটা বাড়ি দিবেন। কিংবা তার ঘর বাড়িতে আগুন দেবেন। কি করেন তাহলে? তপ্ত বাক্য বিনিময়ে ঝগড়া করেন। ইন্সট্যান্ট সর্বোচ্চ একটা দুইটা গালি দেন। কিংবা তাকে পরবর্তীতে এড়িয়ে চলেন।
এসব হলো আপনার ক্ষোভের একটা প্রতিকী আচরণ। সুস্থ বিবেকবান এবং বুদ্ধিমান মানুষ এসব বিমূর্ত আইডিয়া ধারণ করতে পারে। কিন্তু যেহেতু বিক্ষোভ দলে (mob) মানুষ নিজের স্বত্তাকে হারিয়ে ফেলে। তখন আর সে এই টাইপের উচ্চ মার্গীয় চিন্তা করতে পারে না।
তার চিন্তা ভাবনা হয়ে যায় প্রিমিটিভ পর্যায়ের। বিক্ষোভকারীরা তখন এমন উপায়ে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে চায় যেটা হবে মূর্তিমান এবং প্রকাশ্য। যেমন রাস্তা অবরোধ করা। গাড়ি ভাঙচুর করা। আগুন লাগানো। দোকান লুট করা। ইত্যাদি। [Momboisse(1970)]
এখন ক্ষুব্ধ মানুষেরা যে একটি দল হিসেবে আচরণ করে। এর কারণ কি? এক জনের ক্ষোভ কিভাবে অন্য জনের ভিতর ছড়ায়? জর্জ ফ্লয়েডের জন্য ৩৫ হাজার মানুষ কেন রাস্তায় নেমে পড়লো? কেন এক দুজন ছাত্র প্লাকার্ড হাতে রাস্তায় নামলে হাজার ছাত্র একাত্ম হয়?
এসব নিয়ে আসলে গত এক শতাব্দি ধরে মানুষ চিন্তা করেছে। নানা মুনি নানা মত দিয়েছেন। কয়েকটা নিয়ে দুয়েক কথায় বলা যাক।
কন্টাজিওন থিওরি গুস্তাভ লে বন ১৮৯৫ সালে তার 'দা ক্রাউড' নামের লেখা প্রকাশ করেন। তার দেওয়া 'ক্রাউড মাইন্ড' টার্মের কথা আগেই লিখেছি। তিনি বললেন, দাঙ্গাবাজদের ভিতর কিছু সংখ্যক মানুষ থাকে নাটের গুরু। তারাই সহিংস আচরণ শুরু করে। পরে সেটা বাকীদের ভিতর ছড়িয়ে পড়ে। অনেকটা ছোঁয়াচে রোগের মত। যেমন, যে কোন দাঙ্গায় কিছু মানুষ নির্দিষ্ট থাকে। যাদের কাজই হলো ভাঙচুর করা। সেটা গাড়ি, বাড়ি, মসজিদ, মন্দির যেটাই হোক।
কনভার্জেন্স থিওরি [Forsyth(1983)] এটা কন্টাজিওন থিওরির উলটা কথা বলে। এখানে ব্যক্তি আচরণের প্রভাবে কেউ বিক্ষোভে যুক্ত হয় না। বিক্ষোভকারী মানুষদের ভিতর একটা সাধারণ চাহিদা থাকে। সেই চাহিদার কারণে তারা জড়ো হয়। যেমন, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির শ্রমিকেরা গত তিনমাস বেতন পায় নি। তাদের টাকার অভাব। এই অভাবের কারণে তারা সারা বাংলাদেশ থেকে এসে একই জায়গায় জড়ো হয়েছে। আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গদের একসাথে জড়ো হওয়ার পেছনে কেবল জর্জ ফ্লয়েড ইস্যু কাজ করেছে তা নয়। তাদের দারিদ্র্যতাও একটা বড় কারণ। এই কারণে মধ্যবিত্ত হোয়াইট আমেরিকানরাও তাদের সাথে রাস্তায় নেমেছে।
ইমার্জেন্ট নর্ম থিওরি (Turner, R.C. and killian(1972)] এটা আসলে কন্টাজিওন থিওরির সীমাবদ্ধতা দূর করে। কন্টাজিওন থিওরি অনুযায়ী একজনে আগুন দিলে। বাকিরাও তাকে অনুসরণ করার কথা। কিন্তু আসল ঘটনার সময় কিছু মানুষকে দেখা যায় রাস্তার পাশে দাঁড়ায়ে হাত তালি দিচ্ছে! তারা বিক্ষোভে সমর্থন দিলেও হাতে কলমে সহিংসতায় অংশ নেয় না। কারণ কি? ইমার্জেন্ট থিওরি বলে আসলে সহিংসতা ছোঁয়াচে রোগ হলেও করোনার মতই এর মাত্রা সবার জন্য সমান না।
লেখার শুরুর দিকে বলেছিলাম বিক্ষোভকারীরা ব্যক্তি স্বত্তা হারিয়ে ফেলে। এবার সেটা আর একটু অন্যভাবে বলি। বিক্ষোভকারী ব্যক্তির সচেতন মন কাজ করে না। সে সম্মোহিত মানুষের মত আচরণ করে। কিন্তু মানুষের আচরণের উপর অবচেতন মনের (subconscious mind) বড় প্রভাব থাকে। দলীয় পরিবেশে যেহেতু সচেতন মন কাজ করে না। ফলে অবচেতন মনটাই বেশি কার্যকর হয়। এই থিওরিটা গুরুত্বপূর্ণ।
ইমার্জেন্ট নর্ম থিওরি অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, বিক্ষোভে এসে সঙ্গ দোষে কেউ খারাপ হয় না। বরং এই পরিবেশে মনের গহীন থেকে এক অজানা স্বত্তা বের হয়ে আসে। এতদিন যাকে বিবেক বুদ্ধি দিয়ে দমিয়ে রাখা হয়েছিলো। সেই আলাদিনের দৈত্যের মত বের হয়েছে।
এই তত্ত্বটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর সাহায্যে রেসিস্ট ধারণার পক্ষে সাফাই গাওয়া যায়। আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গদের চলমান আন্দোলনে যারা দোকান লুট করেছে, অফিস ভাঙচুর করেছে, সাংবাদিক পিটিয়েছে। আমরা বলি আফ্রিকান আমেরিকানরা জাত চিনাচ্ছে। এরা যতই শিক্ষিত হোক। আসলে এদের জাতটাই অলস, ফাঁকিবাজ, উদ্ধত এবং অপরাধ প্রবণ।
একটা গড়পড়তা গতানুগতিক (stereotypes) ধারণা দিয়ে একটা বিশাল জনগোষ্ঠিকে আলাদা বিবেচনা করাটাই হলো রেসিজমের মূল কথা। যদিও রেসিজম অনেক বড় ধারণা। সে হিসেবে রেসিজমের বঙ্গানুবাদ বর্ণবাদ কেবল মাত্র একটা দিক বোঝায়।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আফ্রিকান আমেরিকানদের যে আচরণ সেটা তাদের পূর্বপুরুষ আফ্রিকা থেকে এসেছে এই কারণে নয়। তিনশো বছর আগের হাতে পায়ে শিকল পরা আফ্রিকানদের সাথে বর্তমানে জ্যাজ এবং র্যাপ শোনা আফ্রিকান আমেরিকানদের আকাশ পাতাল তফাৎ। তারা যে আচরণ করছে তা পুরোপুরি আমেরিকান আচরণ। গত একশো বছরে আমেরিকায় যে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক পরিবর্তন হয়েছে সেটাই আজকের বিশাল জনগোষ্ঠির আচরণকে নির্ধারিত করেছে। বিক্ষোভে যে ধরণের সহিংসতা হচ্ছে এর পিছনে সম্পূর্ণভাবে আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট দায়ী। এখানে জেনেটিক্যাল কোন ব্যাপার নেই,পুরোটাই পরিবেশগত।
আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপট কিভাবে বিক্ষোভ বা দাঙ্গা তৈরিতে উৎসাহ দেয়
তিন ধরণের প্ররোচনা(instigator) থাকে — নির্দিষ্ট, অনির্দিষ্ট এবং তাৎক্ষণিক।[staub(1993)]
অনির্দিষ্ট — পরিবেশের উচ্চ তাপমাত্রা, উচ্চ জনসংখ্যার ঘনত্ব। এই জন্য গ্রীষ্মকালীন দেশে দাঙ্গা বেশি হয়। গ্রামের থেকে শহরে দাঙ্গা বেশি হয়। মিল কারখানায় এবং জেলখানায় প্রায় বিক্ষোভ হয়। [United states riot Commission(1968)]
নির্দিষ্ট — সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট। সামাজিক এবং অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট।
এখানে একটা মজার ব্যাপার আছে। বলা হচ্ছে যে, কেবল টাকা পয়সার অভাবে কেউ বিক্ষোভ করে না। কিন্তু বিক্ষোভের পিছনে অর্থনীতির একটা ভূমিকা আছে। দেশের অর্থনীতি যখন খুবই খারাপ অবস্থায় আছে। তখন বিক্ষোভ হওয়ার সম্ভাবনা কম। বরং উলটো দেশ যখন উন্নতি করছে তখনই বিক্ষোভ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
মানুষ তার নিজের গরিবী মেনে নেয়। কিন্তু পাশের বাসার মানুষকে উন্নতি করতে দেখলে তখনই সে নিজের দারিদ্র্যতার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। অর্থাৎ অভাব (absolute deprivation)-এর চেয়ে তুলনামূলক অভাবই (relative deprivation) মানুষকে বিক্ষোভের দিকে ঠেলে দেয়।[A.P. Goldstein & Segall(1983)]
যেমন, কন্টাজিওন থিওরিতে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিক্ষোভের উদাহরণ দিয়েছিলাম। তারা তিনমাসের বেতন পায়নি। প্রথম মাসের বেতন বাকি থাকতেই কিন্তু বিক্ষোভে নামে নি। এক দুই মাস পর যখন দেখেছে অন্য ফ্যাক্টরিতে বকেয়া বেতন দেওয়া হয়েছে। তখনই তারা ঝাড়ু নিয়ে রাস্তায় নেমেছে।
একই ব্যাপার আমেরিকান বিক্ষোভেও ঘটেছে। দেশের অর্থনীতির অবস্থা খারাপ হয়েছে। কিন্তু তার চেয়ে বড় কথা অর্থনৈতিক বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। 'চার কোটি মানুষ বেকার হয়েছে।'(সূত্রঃ চাঁদগাজি) মানুষ দেখতে পেয়েছে কিছু মানুষ অভাবে পড়ছে। অন্য দিকে কিছু মানুষ স্বচ্ছল জীবন যাপন করছে। 'ল্যান্ড অব অপরচুনিটি' এখন আর সবাইকে সমান অপরচুনিটি দিচ্ছে না। সাদারা সেটা সম্প্রতি অনুভব করছে। কালোদের অভিজ্ঞতা আরো বহু বছরের।
এই কারণে জর্জ ফ্লয়েড ইস্যুতে কালোদের সাথে সাদারাও রাস্তায় নেমেছে। এর পিছনে বিক্ষোভের সংজ্ঞানুযায়ী এন্টি রেসিস্ট আবেগ কাজ করলেও। অর্থনীতির বৈষম্যের একটি প্রত্যক্ষ ভূমিকা আছে।
ঠিক এই কারণেই বলা যায়, এই বিক্ষোভ কেবল বর্ণবাদী আচরণের বিরুদ্ধে নয়। এইটা শুধু সাদার সাথে কালোর লড়াই নয়। গরীবের সাথে ধনীর লড়াই। সুবিধাভোগীদের সাথে সুবিধাবঞ্চিতদের লড়াই।
বর্তমান পৃথিবীতে ধনী গরীবের বৈষম্য কি জিনিস সেটা আমাদের থেকে অন্য কেউ ভালো বোঝার কথা না। সুবিধাভোগীরা দেশে কোন পর্যায়ের সুবিধা ভোগ করতে পারে তা আমরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
আমরা রেসিস্ট জাতি নই। রেসিজম নিয়ে মাথা ঘামানো সময় নষ্ট। সেটা যদি সত্যি হয়ও, অন্তত এই দিকটির জন্যে আমাদের এই বিক্ষোভ নিয়ে ভাবা উচিত। আমাদের উচিত এই বিক্ষোভ থেকে শিক্ষা নেওয়া।
এত ক্ষমতাবান দেশেও যদি মানুষ রাস্তায় নেমে পুলিশের সামনে দাঁড়াতে ভয় না পায়। তাহলে একদিন এই দেশের মানুষ রাস্তায় নামলে কি অবস্থা হবে ভেবে দেখা উচিত। বিক্ষোভের সমস্ত প্রেক্ষাপটই এ দেশে উপস্থিত। স্পার্ক হিসেবে কেবল দরকার জর্জ ফ্লয়েডের মতো তাৎক্ষণিক(immediate/triggering) কোন প্ররোচনা(instigator)। কোটা সংস্কার আন্দোলন কিংবা নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে তার কিছু নমুনা দেখা গেছে।
সবশেষে আমেরিকান সুবিধাহীনরা (সাদা,কালো, বাদামী,নেটিভ,ইমিগ্রেন্ট সবাই) মানুষদের থেকে বাংলাদেশের বঞ্চিত মানুষেরা বেশি সভ্য
টেলিস্কোপিক ভিউপয়েন্ট দিয়ে এই ব্যাপারে মতামত দেওয়া কঠিন। যারা রাস্তায় নেমেছে তারা যতই সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠী হোক। শিক্ষায় সম্পদে পিছিয়ে থাকুক। উন্নত দেশের উন্নত পরিবেশে তাদের অবচেতন মন নিশ্চয়ই আরো উন্নত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তাদের আচরণে তা দেখা যায় নি।
আমরা অভাবে পড়ে বিক্ষোভ করেছি। ত্রাণের জন্য রাস্তা অবরোধ করা হয়েছে। ত্রাণের ট্রাকও লুট হয়েছে। কিন্তু তাই বলে এরকম কোথাও শোনা যায়নি যে গ্রামের মানুষ বাজারের দোকান লুট করেছে। পোশাক শ্রমিকরা বেতন পায়নি বলে সপিং মল থেকে লুট করে বাড়ি নিয়ে গেছে।
হয়তো আমরা নিজেরা নিজেদের জাতকে যতটা অসভ্য বর্বর মনে করি ততটা আমরা নই।
সূত্র:
The Psychology of Group Aggression.(Book) Arnold P. Goldstein.
ছবিসূত্র: Guuguru
০৪ ঠা জুন, ২০২০ দুপুর ২:২২
কল্পদ্রুম বলেছেন: Provoking? কেন?
২| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ দুপুর ২:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: বিক্ষভ, দাঙ্গা, হাঙ্গামা, রক্ত খুন ইত্যাদির সাথে বাঙ্গালী দেশ ভাগের আগে থেকেই পরিচিত।
০৪ ঠা জুন, ২০২০ দুপুর ২:২৬
কল্পদ্রুম বলেছেন: সত্য। বাঙ্গালির ইতিহাস রক্তাক্ত ইতিহাস।
৩| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ দুপুর ২:৪০
নেওয়াজ আলি বলেছেন: বাংলাদেশে বাসা হতে তুলে নিয়ে ভারতে ছেড়ে দেওয়া নতুন আবিষ্কার । আমেরিকা শিখতে পারে।
০৪ ঠা জুন, ২০২০ দুপুর ২:৪৭
কল্পদ্রুম বলেছেন: আমেরিকা বাসা থেকে ধরে নিয়ে মেক্সিকো ছেড়ে দিয়ে আসে।তবে বাংলাদেশ আমেরিকার থেকে এই ব্যাপারে বেশি দক্ষ।
৪| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ দুপুর ২:৪২
আমি সাজিদ বলেছেন: বাঙ্গালি পরকীয়া আর মাছ-ভাত নিয়েই থাক।
০৪ ঠা জুন, ২০২০ দুপুর ২:৪৯
কল্পদ্রুম বলেছেন: পরকিয়ার ব্যাপারটা নিয়ে কিছু না বলি ভাই।তবে মাছ ভাত খারাপ কিছু না।
৫| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ বিকাল ৩:৫৩
মীর আবুল আল হাসিব বলেছেন:
আমি সাজিদ বলেছেন: বাঙ্গালি পরকীয়া আর মাছ-ভাত নিয়েই থাক।
===================================================
০৪ ঠা জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৭
কল্পদ্রুম বলেছেন: ধন্যবাদ।
৬| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ বিকাল ৫:০২
চাঁদগাজী বলেছেন:
বিক্ষোভ নিয়ে আপনার নিজের মৌলিক ধারণা এখনো গড়ে উঠেনি; অনলাইনে পড়ে লিখতে হলে, নিজের মৌলিক ধারণা থাকতে হয়, যাতে অনলাইন থেকে সঠিক বিষয়গুলোর সমন্ময় করে আপনি লেখাকে লেখা হিসেবে দাঁড়া করাতে পারেন।
০৪ ঠা জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৮
কল্পদ্রুম বলেছেন: সহমত।
৭| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫১
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: পৃথীবির সকল দেশের শোষিতের ভাষা এক এবং শোষকের ভাষাও এক।সকল শোষিতরা এক হও,শোষক নিপাত যাক।অত্যাচার থেকে মুক্তির এই এক সুজুক।করোনা এই সুজুক এনে দিয়েছে।অত্যাচারীরা সহজে ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে না।
০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ৮:০১
কল্পদ্রুম বলেছেন: অত্যাচারীতরাও ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে কি না সন্দেহ আছে!হলেও তারা গোলমাল করে ফেলে।
৮| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ১০:৫১
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: তারা আন্দোলন করবে ব্যর্থ হবে,আবার আন্দোলন করবে আবার ব্যর্থ হবে।আন্দোলন থেকে কিছু শিক্ষা লাভ করবে শফলতার আগ পর্যন্ত এটাই তাদের কাজ।সেটা একশ বছর লাগতে পারে দুশ বছর লাগতে পারে এমন কি হাজার বছর লাগতে পারে।
০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ১১:১৪
কল্পদ্রুম বলেছেন: দীর্ঘমেয়াদী ব্যাপার।আমরা আজ খেয়ে বাঁচি, কালকের চিন্তা কালকে করবো এই দর্শনে বিশ্বাসী।আমাদের অগ্রজরা একরোখা,অনুজরা উদাসীন।
৯| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ১০:৫৭
ঢাবিয়ান বলেছেন: ামেরিকা নিয়া এত এত পোস্ট আর থিউরি দেইখা মনে খালি একটাই প্রশ্ন আসে যে ''আজকে শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৪২৩ জন, মারা গেছেন ৩৫ জন'' এই খবরগুলি কোন দ্যাশের ????
০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ১১:২০
কল্পদ্রুম বলেছেন: বড় ভাই,আমেরিকার অজুহাতে নিজের দেশকে নিয়েই লেখা।করোনা এ জাতির জন্য একটা গভীর বিষাদের বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।বিষাদ এক সময় ক্ষোভে পরিণত হয়।তারপর কখন ঘর বাড়ি জ্বালাই দেই তার ঠিক নেই! যত কম লেখা যায় তত ভালো।
১০| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ১১:২৩
কাছের-মানুষ বলেছেন: অনেক তথ্যের সমন্বয় ঘটেছে পোষ্টে। পড়ে সমৃদ্ধ হবার মত পোষ্ট।
আমেরিকাতে এইরকম একটি প্রতিবাদের দরকার ছিল তবে এই সুযোগে অনেকে লুটপাটও করছে, এটা মেনে নেয়া কঠিন।
আমাদের বাঙালিদের ইতিহাতও রক্তাত্বের ইতিহাস। অনেক ক্ষোভ, বিক্ষোভ, দাঙ্গার সাথে পরিচিত আমাদের দেশের মানুষ।
০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ১১:৪৫
কল্পদ্রুম বলেছেন: বাঙ্গালিদের ভিতর ইন্টার্নাল স্টিমুলেশনের চেয়ে এক্সটার্নাল স্টিমুলেশনই বেশি।নানা বিদেশী জাতি আর তাদের স্বজাতিয় বন্ধুদের কাছে ছোট হতে হতে আমাদের ভিতর অনেক ক্ষোভ জমে আছে।মাঝে মাঝে নানা ইস্যুতে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
১১| ০৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: সত্য। বাঙ্গালির ইতিহাস রক্তাক্ত ইতিহাস। আবার বাঙ্গালীদের মধ্যে ভাগ আছে। হিন্দু বাঙ্গালী, মুসলমান বাঙ্গালী।
০৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:৫৮
কল্পদ্রুম বলেছেন: রাজীব ভাই।আমার মতে ইতিহাস বাঙ্গালিরই — হিন্দু হোক, মুসলমান হোক, বৌদ্ধ হোক।ইতিহাস পড়ার সময় হিন্দু শাসকদের শাসনামল,মুসলিম শাসকদের শাসনামল এই জাতীয় হেডলাইন থাকা উচিত না।বিশেষত স্কুল লেভেলের বইতে।
১২| ০৫ ই জুন, ২০২০ সকাল ৭:১১
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
এক নজর দেখে গেলাম ।
পরে সময় করে আসাব ।
০৫ ই জুন, ২০২০ সকাল ৮:২২
কল্পদ্রুম বলেছেন: আচ্ছা।
১৩| ০৫ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৫১
ভুয়া মফিজ বলেছেন: প্রথমেই বলি, পোষ্টের শিরোনামে বানান ভুল থাকলে দেখতে বড়ই বিসদৃশ লাগে। মানুসিকতা<মানসিকতা। তারপরে আপত্তি, দাঙ্গাবাজ আর বিক্ষোভকারীকে সমার্থক হিসাবে দেখানোতে। এভাবে কেন দেখতে চাইছেন, বুঝলাম না। দু'টাতে যোজন যোজন পার্থক্য। এভাবে না দেখিয়েও আপনি আপনার যুক্তি তুলে ধরতে পারতেন।
লেখাটা একাডেমিক টাইপের হয়ে গিয়েছে। এটাকে আরো রীডার ফ্রেন্ডলী এবং আকর্ষনীয় করার সুযোগ ছিল। আপনার অনেক বক্তব্যই বিতর্কের সূত্রপাত করতে পারে; তবে শেষ কথা হলো, চেষ্টাটা খুবই ভালো ছিল। গুড জব। পরের গুলো আরো ভালো হবে নিশ্চয়ই।
০৫ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:২০
কল্পদ্রুম বলেছেন: ভুয়া মফিজ ভাই,এভাবে গুছিয়ে সমালোচনা করার জন্য ধন্যবাদ।বানান ঠিক করে ফেলেছি।আপনি ঠিকই বলেছেন।লেখাটার পিছনে আমার আরো সময় দেয়া উচিত ছিলো।সবশেষে উৎসাহ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ২।
১৪| ০৫ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:১২
রাজীব নুর বলেছেন: আমি আটকা পড়ে গেছি।
ফান করে নুরু সাহেবকে নিয়ে পোষ্ট দুটা পোষ্ট দিয়েছিলাম। এখন আমাকে জেনারেল করা হয়েছে। আমার লেখা প্রথম পাতায় আসছে না। আমি প্রচন্ড দুঃখ পেয়েছি। আমি তো নির্বোধ মানুষ না। ফান করে একটা ছড়ার মতো লিখেছি। অথচ নুরু সাহেব বুঝলেন না। সামু বুঝলো না।
দীর্ঘদিন ধরে ব্লগে আছি- আমার মন মানসিকতা আপনাদের বুঝার কথা।
০৫ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:২৩
কল্পদ্রুম বলেছেন: আপনার ঐ বিধ্বংসী ফান পোস্ট আমি পড়েছিলাম।এরকম হবে সেটা ভাবি নাই।আশা করি ব্লগ কর্তৃপক্ষ আপনার অবস্থা পুনর্বিবেচনা করবেন।আপনার মানসিকতা অবশ্যই আমরা জানি।
১৫| ০৫ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৩:৩০
পদ্মপুকুর বলেছেন: রাজীব নুর বলেছেন: আমি আটকা পড়ে গেছি। ফান করে নুরু সাহেবকে নিয়ে পোষ্ট দুটা পোষ্ট দিয়েছিলাম। এখন আমাকে জেনারেল করা হয়েছে। আমার লেখা প্রথম পাতায় আসছে না। আমি প্রচন্ড দুঃখ পেয়েছি। আমি তো নির্বোধ মানুষ না। ফান করে একটা ছড়ার মতো লিখেছি। অথচ নুরু সাহেব বুঝলেন না। সামু বুঝলো না। দীর্ঘদিন ধরে ব্লগে আছি- আমার মন মানসিকতা আপনাদের বুঝার কথা।
এইটা রাজীব নুর এর প্রাপ্য না। প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
যেহেতু লম্বা এবং একাডেমিক লেখ, ব্লগার ভুয়া মফিজ ভাইয়ের সাথে একমত হয়ে বলতে চাই- আরেকটু রীডার ফ্রেন্ডলী ও আকর্ষণীয় হলে ভালো হতো। আজকের দিনে সবকিছুর পেছনে রাজনৈতিক প্রপঞ্চ এত বেশি কাজ করে যে যেকোনো কর্মকাণ্ডকেই থিয়োরিটিক্যালি সঙ্গায়িত করা মুস্কিল হয়ে পড়ে। সে হিসেবে কোনটা স্বপ্রণোদিত দাঙ্গা বা বিক্ষোভ আর কোনটা যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, আলাদা করা বিপদ হয়ে যায়। আবার একপক্ষের কাছে যেটা দাঙ্গা, অন্যপক্ষের কাছে সেটাই হয়তো বিক্ষোভের সঠিক প্রকাশ!
০৫ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:১৪
কল্পদ্রুম বলেছেন: হ্যাঁ।থিওরেটিক্যালি সংজ্ঞায়িত করা আসলেই কঠিন।মুদ্রার এপিঠের ওপিঠের বর্ণনার এতটাই ফারাক থাকে যে বিতর্ক অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে।ধন্যবাদ পদ্ম পুকুর ভাই।পরবর্তীতে এ জাতীয় লেখা লিখতে গেলে কিভাবে আরো রিডার ফ্রেন্ডলি করা যায় সেটা মাথায় রাখবো।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ দুপুর ২:০৫
পরিবেশবাদী ঈগলপাখি বলেছেন: A very well writeup, though provoking.