নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞানিরা বলেন মানুষ জন্মমাত্রই মানুষ নয়,তাকে যোগ্যতা অর্জন করে তবেই মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে হয়।যোগ্যতা আছে কি না জানি না,হয়তো নিতান্তই মূর্খ এক বাঙ্গাল বলেই নিজেকে নির্দ্বিধায় মানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়ে ফেলি।

কল্পদ্রুম

আমি আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়

কল্পদ্রুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবিতা: জাদুর প্রদীপ

০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:৫৭

প্রদীপটি অনেক দিন থেকেই মতির কাছে ছিলো।
আশ্চর্য মায়াবী এক প্রদীপ!
সোনা রূপায় নকশা করা,
দৃষ্টি নন্দন ও মনোরম —
যেমনটি কেউ কোনোদিন দেখেনি আগে।
সংসারে হঠাৎ করে যেভাবে পিঠার সাজের খোঁজ পড়ে,
কাপড়ের ভাঁজে রাখার জন্য ন্যাপথলিন,
কয়েল রাখার জন্য স্ট্যান্ড,
অথবা বোতাম সেলাইয়ের জন্য সুঁই সূতোর —
তেমন করেই অদ্ভুত সব মুহূর্তে প্রদীপটির কথা মনে পড়ে তার।

যখন চতুষ্পদি জন্তুর মতো মরণ ক্ষুধা নিয়ে
বারবার ডেকেও ওয়েটারের সাড়া পাওয়া যায় না,
অথচ ব্যাটা দিব্যি অন্য টেবিলে ঝুঁকে থাকে
ওদিকে মালদার কাস্টোমার আছে বলে।
পাবলিক বাসে বাঁদুড় ঝোলা হয়ে বাড়ি ফেরার পথে
একমাত্র সম্বল ছেঁড়া নোটটি নিয়ে
হেল্পারের ত্যাঁড়া কথা শুনতে হয়;
গলির মুখে অল্প বয়সী ছেলেগুলো যখন
অশালীন ভাষায় উঁচু গলায় আড্ডা দেয়,
সুন্দরী সংবাদ পাঠিকা যখন
নিরুত্তাপ গলায় পড়তে থাকে
দেশি-বিদেশি নাসকতার ফিরিস্তি,
নায়িকার সংসার বৃত্তান্ত,
নায়কের পরকীয়া,
ফাঁস হওয়া কোন রগরগে সংবাদ —
তখন অতি প্রিয় প্রদীপের কথা স্মরণ হয় তার।

টকশোতে আলোচ্য যত অতিকায় সমস্যা,
রাতের গভীরতার সমানুপাতে আরো অতিকায় হয়ে ওঠে —
বক্তারা যার কোন সমাধানই খুঁজে পান না,
প্রদীপের কাছে তা তুচ্ছ, সামান্য।
মতি জানে —
এ সবকিছুই সে ঠিক করে দিতে পারে এক লহমায়।

লোক ঠকানো দোকানদার,
সেলিব্রেটিদের ভাঙ্গা সংসার,
বেয়াড়া কিশোরের আচার,
রাজনীতির অনাচার,
দু'চোখে দুধসাদা চাঁদ নিয়ে
আইল্যান্ডের উপর উবু হয়ে বসে থাকা
নিঃসঙ্গ অশীতিপর বৃদ্ধার হাহাকার,
সব কিছু সে ঠিক করে দিতে পারে — সব।
কিন্তু —

কিছুই বলে না সে কাউকে।

মুখ বুঁজে ছেঁড়া নোটটা পকেটে ঢুকিয়ে রাখে।
ওয়েটারকে দ্বিতীয়বার না ডেকেই টেবিল থেকে উঠে পড়ে,
গলির পথটা এড়িয়ে চলে — যদি পারে।
খবরের কাগজ হাতে পৃষ্ঠা উলটে চলে যায় বিনোদন পাতায়,
নয়তো রিমোট টিপে চলে যায় সুন্দর কোনো সমুদ্র সৈকতে।

আর মাঝরাতে যদি কখনো ঘুম ভেঙ্গে যায়,
বুকের উপর থেকে সঙ্গীনীর হাত সরিয়ে
পা টিপে টিপে বেরিয়ে আসে নিশুতির কোলে,
নিশাকরের আলোয় বের করে তার জাদুর প্রদীপখানি,
সোনা রূপায় নকশা করা,
কি সুন্দর দৃষ্টি নন্দন ও মনোরম!
যেমনটি কেউ কোনোদিন দেখেনি আগে।
অতি সন্তর্পণে প্রদীপটিতে হাত বুলায় সে —
অতি সাবধানে।
পাছে দৈত্যটা জেগে ওঠে!

মন্তব্য ২৩ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (২৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৪১

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। ধন্যবাদ। শুভ সকাল।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:১২

কল্পদ্রুম বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনারও সকালটা শুভ হোক।

২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:০০

মায়াস্পর্শ বলেছেন: অসাধারণ লিখেছেন। শুভেচ্ছা আপনাকে।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:১২

কল্পদ্রুম বলেছেন: পড়ার জন্য আপনাকেও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

৩| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আশ্চর্য জাদুর প্রদীপ, সত্যিই অসাধারণ লিখেছেন। যদিও রূপকের আড়ালে কী বোঝাতে চেয়েছেন তা ধরতে পারি নি।

গল্পের মতো কবিতায়ও আপনি সমান দক্ষ, এ কবিতা তার প্রমাণ। খামোখাই 'অকবিতা' শব্দটা জুড়ে দিয়েছেন কেন?

শুভেচ্ছা রইল।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৩৫

কল্পদ্রুম বলেছেন: জীবনানন্দের মৃত্যুর পরে ট্রাঙ্ক ভর্তি অপ্রকাশিত কবিতা পাওয়া গিয়েছিলো। উনি হয়তো সন্দিহান ছিলেন সেগুলো ছাপানোর যোগ্য কী না। কাফকা তো নিজের লেখা উপন্যাস পুড়িয়েই ফেলতে গিয়েছিলেন। অনেকদিন আগে ব্লগেই (সম্ভবত ঠাট্টাচ্ছলেই) লেখা একটা মন্তব্যে পড়েছিলাম যে ব্লগে লেখা সব কবিতাই 'কোবতে'। বোকা মানুষের সাহস বেশি হয়। আবার এতো সা্হসও নেই একে কবিতা বলবো। তবে লাপনার মন্তব্য পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত হয়েছি।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৪৭

কল্পদ্রুম বলেছেন: টাইপো: আপনার

৪| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮

বিজন রয় বলেছেন: যদি সেই রকম একটি জাদুর একটি প্রদীপ পেতাম যা দিয়ে সমাজের সব অন্ধকার দূর করা যেত!
আপনার কবিতায় যেমন বলেছেন।

ভালো কবিতা।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৩৮

কল্পদ্রুম বলেছেন: ধন্যবাদ। এরকম কিছু পেলে ভালোই হতো। ভালো থাকবেন।

৫| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর কবিতা লিখেছেন।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৪০

কল্পদ্রুম বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই। আপনি নিশ্চয়ই আপনার কন্যাকে নিয়ে ভালো আছেন।

৬| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:১৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: কল্পদ্রুম,




সব অসহায় মতিদের কল্পনাতেই একটি আশ্চর্য্য প্রদীপ থাকে। সে প্রদীপ ঘসে "হুকুম করুন হুজুর" বলা দৈত্যটিকে সে জাগাতে পারেনা কখনও!

সুন্দর হয়েছে কবিতার বক্তব্য, সব অনিয়ম-অনাচার বন্ধ করে দেয়ার যাদুকরী প্রদীপটি নিয়েও মতিরা অসহায়...............

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৪৫

কল্পদ্রুম বলেছেন: একলাইনে লেখা চমৎকার বিশ্লেষণটা পড়ে আমি মুগ্ধ হয়েছি। আমরা সবাই কোন না কোনকভাবেই অসহায়। ভালো থাকবেন শ্রদ্ধেয়।

৭| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৫০

করুণাধারা বলেছেন: অনেক দিন পর ফিরলেন, সুন্দর একটা কবিতা নিয়ে!

১১ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

কল্পদ্রুম বলেছেন: হ্যাঁ, সেটাই। আপনার মন্তব্যও অনেকদিন পরে পেলাম। সেজন্য ধন্যবাদ এবং শুভ সকাল।

৮| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:০৭

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: যাপিত জীবনের সহজ সরল প্রকাশ।

জাদুর প্রদীপ হয়ত মতির জীবনের খুঁটিনাটি সমস্যাগুলোর সমাধান এনে দিতে পারবে না। তবু স্বপ্ন দেখতে দোষ কী!

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:২২

কল্পদ্রুম বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৯| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৫৪

শেরজা তপন বলেছেন: ডুব দিয়েছিলেন বেশ অনেকদিন ...
কবিতায় ভাল লাগা।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:১২

কল্পদ্রুম বলেছেন: ধন্যবাদ শেরজা তপন ভাই। আপনার জন্য অনেক শুভ কামনা রইলো।

১০| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:১৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




শিরোনাম হতে অকবিতা শব্দটি বাদ দেয়ার জন্য আমর দাবী রইল ।
এর থেকে ভাল কবিতা খুব কমই চোখে পড়ে ।
ব্যক্তি জীবনে ঘটে যাওয়া আনেক কিছুই কাব্যিকভাবে হয়েছে চিত্রিত
অতি নিখুত ভাবে , পাঠে মুগ্ধ ।

শুভেচ্ছা রইল

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮

কল্পদ্রুম বলেছেন: পাঠ ও সুন্দর মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আশা করি এখন শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। দেরীতে উত্তর দেওয়া হয়ে গেলো, তার জন্যে আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমি শিরোনামটি সংশোধন করে দিচ্ছি।

১১| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৪

মিরোরডডল বলেছেন:




দৈত্যটা জেগে ওঠা দরকার।
কল্পের কবিতায় ভালোলাগা।


১২| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:১০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



খুশি হলাম , সাময়িক সরে গিয়ে যতার্থ নাম নিয়ে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে সামুর বুকে ।

খুব সুন্দর করে কাব্যাকারে বলেছেন
প্রদীপটি অনেক দিন থেকেই মতির কাছে ছিলো।আশ্চর্য মায়াবী এক প্রদীপ!
সোনা রূপায় নকশা করা, দৃষ্টি নন্দন ও মনোরম — অদ্ভুত সব মুহূর্তে প্রদীপটির
কথা মনে পড়ে মতির, একেই বলে যাদুর প্রদীপ , নামকরণ স্বার্থক হয়েছে ।

পাবলিক বাসে বাঁদুড় ঝোলা হয়ে বাড়ি ফেরার পথে একমাত্র সম্বল ছেঁড়া নোট
সুন্দরী সংবাদ পাঠিকা যখন নিরুত্তাপ গলায় পড়তে থাকে দেশি-বিদেশি নাসকতার ফিরিস্তি,
নায়িকার সংসার বৃত্তান্ত, নায়কের পরকীয়া, ফাঁস হওয়া কোন রগরগে সংবাদ —
তখন অতি প্রিয় প্রদীপের কথা স্মরণ হয় তার।বাহ তার আর কি যাদু চাই ।

টকশোতে আলোচ্য যত অতিকায় সমস্যা,মতি জানে
সবকিছুই সে ঠিক করে দিতে পারে এক লহমায় কারণ তার কাছে আছে
যে যাদুর প্রদীপ ।

লোক ঠকানো দোকানদার,সসেলিব্রেটিদের ভাঙ্গা সংসার,বেয়াড়া কিশোরের আচার,
রাজনীতির অনাচার, আইল্যান্ডের উপর উবু হয়ে বসে থাকা নিঃসঙ্গ অশীতিপর
বৃদ্ধার হাহাকার, সব জায়গায় হবে প্রয়োগ যাদুর চেরাগ !!!!

তার পর মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে সঙ্গীর হাত সরিয়ে নিশাকরের আলোয় বের করে জাদুর প্রদীপখানি,
অতি সন্তর্পণে প্রদীপটিতে হাত বুলায় সে অতি সাবধানে পাছে দৈত্যটা জেগে ওঠে!
এখানে এসে যাদুর চেরাগ কি তেলেসমাতি দেখিয়েছে তা জানতে চাইতেই পারি পরের কবিতায় ।

শুভেচ্ছা রইল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.