নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাঁধ ভাংগার আওয়াজ পাবেন অবশ্যই তবে সেটি আমার।\nআমার উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ,\nআনন্দানুভুতি আর \nঅবসাদের বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ।

কৌশিক পুনশিক

কৌশিক পুনশিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ললনার ছত্রছায়ায় এক বৃষ্টিময় সন্ধ্যায়........

২৬ শে মে, ২০১৯ রাত ৩:০১

অপরিচিত কোন নারীর সাথে ছাতা শেয়ার করা এতদিন নাটক সিনেমা দেখে ভাবতাম এ ত কিছুই না। ছাতা শেয়ার করা থেকেই যে ক্লোজ আপ কাছে আসার গল্প ও যে তৈরির প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হতেই পারে-সেটাও নানাভাবে আমাদের বোঝানো হয়। কিন্তু বাস্তবে সেটা একটু বেশিই জটিল আর অল্প একটু অস্বস্তিকরও বটে। কাছে আসার গল্প ত দূরে থাক,মুখের উপর ঝামা ঘষে দেয়ার মত "না" শব্দটি না শুনা কিংবা রাস্তাঘাটে আশাপাশের অত্যুতসাহী লোকজন দ্বারা অপমানিত না হওয়াটাই অনেক বড় ব্যাপার!
বাসায় ফিরছি রাত ১০টা।কথা নাই,বার্তা নাই হটাত গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। বাসার দুরত্ব আর মাত্র ১০ মিনিটের মত।এতটুকুর জন্য রিকশা নেয়া আর ৩০ টাকা চাবায়ে খাওয়া একি কথা। ছায়ায় দাঁড়িয়ে কিছুক্ষন যে বৃষ্টির তথাকথিত সৌন্দর্য দেখব সে উপায় ও নাই যেহেতু বৃষ্টির ধাচ কুত্তা বিলাই টাইপ মানে cats and dogs আর কি! বাধ্য হয়ে নিজের মোবাইল,হেডফোন,টাকা আর কিছু কাগজ নিয়ে বৃষ্টির হাতে নিজেকে সমর্পন। ৩৬০ ডিগ্রীতে চোখের পিউপিল দিয়ে খুজে বেড়াচ্ছি একটু খানি কম ভিজার যে কোন বিকল্প! হটাত দেবদূতের মত ছাতাসহ একলা চলা এক মহীয়সী নারীর আবির্ভাব! মন মে লাড্ডু ফুটা!!

অবশ্য সিনেমার মত কোন নাটকীয়তা কিংবা রাত ১০ টায় কোন চোখ ফেরাতে না পারা টাইপ সুন্দরী মোটেই এক্সপেক্ট করছিলাম না! কিন্তু তারপরো এভাবে তার কাছে ছাতা শেয়ার করার কথা আদৌ বলা যায় কিনা সেটা নিয়ে ব্রেনের মধ্যে গোলমিটিং ই বসে গেলো!! এই ভাবনার অন্তরালে নারী মহীয়সী বেশ খানিক্টা এগিয়ে গিয়েছেন।একটু দৌড়ে গিয়ে নির্লজ্জের মত বলেই ফেললাম, "আপু,ছাতাটা কি শেয়ার করা যায়?"সম্ভবত তিনি হিন্দী সিরিয়াল দেখেন।তাই কয়েক সেকেন্ড যাবত এমনভাবে তাকিয়েই রইলেন যেন দুনিয়ার শেষ অদ্ভুত দাবিটাই করে বসেছি।নীরবতা ভেংগে অবশেষে অতিমাত্রায় নরমস্বরেই বল্লেন-"না ভাইয়া।" বুঝলাম দুই একটা কথাতেই মানিয়ে নেয়া যাবে।তাই ছাতার নিচে ঢুকে তাকে দু একটা ইশটিং বিশটিং বলাতে রাজি হলেন। সেই ইশটিং বিশটিং কল্পনা করতে চাইলে বাংলা সিনেমার হ্যাপি মোমেন্টের যেকোন ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ভেবে নিতে পারেন। খানিক্টা সহায়ক হবে বৈকি!
সাধারনত এই রাস্তা দিয়ে এই টাইমে তারাই হাটে যারা নিউমার্কেট বা গাউছিয়া থেকে কাজ শেষে বাসায় ফেরে।তাই সরলভাবেই জিজ্ঞেস করলাম,"কোথায় জব করেন?গাউছিয়া।" বিনা মেঘে বজ্রপাত ঘটিয়ে আমার জ্ঞানবুদ্ধি চুর্ন বিচুর্ন করে উত্তর দিলেন-"না,হাসপাতালে!" সিচুয়েশন কন্ট্রোল করার জন্য কি বলা উচিত অনেক খুজেও আর পেলাম না।তাই নীরবতাকে বাকি কাজটুকু করার ভার সপে দিলাম!

এর পর শুরু হল সম্ভবত সবথেকে কঠিন পর্ব। একি ছাতার নিচে হাঁটা কিন্তু তার থেকে লক্ষ্মণরেখা পরিমান দুরত্ব রেখে। একে ত অন্ধকার, তিনিও যথেষ্ট খাটো,রাস্তার সুন্দর সুন্দর গর্তভর্তি পানি ত আছেই। পাশাপাশিই হাটবো নাকি তিনি সামনে থাকবেন নাকি আমি-এটা নির্ধারন করতেই আমার অভিজ্ঞতা আর প্রত্যুতপন্নমতির ভান্ডারে রীতিমত টান পড়ে গেলো! কখনো দেখা যাচ্ছে আমি ভিজছি আবার আমাকে ধরতে গিয়ে বেচারি নিজের ছাতা থাক্তেও ভিজছেন। না পারি নিজে ছাতাটা ধরতে, না পারি তাকে ঠিকমত ধরতে বলতে! ঘাড় নিচু করে হাটতে হাটতে অবশ্য এ ফাকে তার চশমিশ মুখখানা দেখা হয়ে গেলো। যদিও ঘুম থেকে উঠার পর সে মুখ একেবারেই বিলীন হয়ে গিয়েছে।
অভয় বানী দিলাম যে আপনার কোন ক্ষতিই করবো না আর আমি সেরকম কেউ নই।নারী সলজ্জ হাসি হাস্লেন আর ইতস্তত সহকারে ভদ্রোচিত "না,না।এরকম কিছু না" বলতে লাগ্লেন। এ কথার পর সম্ভবত তিনি বেশ খানিক্টা সাহস সঞ্চয় করে নিয়েছেন।বললেন," এতখানি রাস্তা ত ভিজে ভিজেই এসেছেন।তবে এতটুক রাস্তা আর এভাবে যাবার কি দরকার?" রীতিমত কথার যুক্তি দিয়ে চপেটাঘাত ই করলেন।আমতা আমতা করে কিছু একটা বললাম।মনে হলো না সেটা খুব একটা সন্তোষজনক ছিল।যাই হোক।এত কথার ধার ধারে কে!!! রীতিমত ব্যাং লাফ দিতে দিতে খানিক পরিচয়পর্ব হলো, তার ভয়ও দূর করলাম আর আমার বাসাও এসে গেলো!!!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৩৬

এম ইসলাম বলেছেন: সুন্দর লেখা। ভালো লাগলো।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:১২

কৌশিক পুনশিক বলেছেন: ধন্যবাদ!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.