নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাঁধ ভাংগার আওয়াজ পাবেন অবশ্যই তবে সেটি আমার।\nআমার উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ,\nআনন্দানুভুতি আর \nঅবসাদের বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ।

কৌশিক পুনশিক

কৌশিক পুনশিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

শ্রীমদভগবদ্গীতায় পৌরাণিক দেবতা প্রসংগ।

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:১৯

দেবতা কন্সেপ্ট হিন্দুধর্মে একটা বিশাল জটিল বিষয় বটে। সাধারন হিন্দুরা অসংখ্য দেবতার পুজা করে। কিছু দেবতা অনেক পৌরাণিক রেফারেন্স আছে তো কিছু দেবতা সরাসরি মঙ্গল্কাব্য থেকে উঠে এসেছে। কিছু দেবতা লোকাচারে পরিবর্তিত। বিবর্তিত।
৩৩ কোটি দেবতা-এই শব্দবন্ধ খুব মুখরোচক হিসেবেই শুনা যায়। যাই হোক-দেবতা বলতে আমরা যা বুঝি-বেদ বা উপনিষদ কিন্তু সেটা বুঝায় না। বেদ এবং উপনিষদে ৩৩ কোটি নয়-৩৩ প্রকারের দেবতার কথা বলা হয়েছে। সেই ৩৩ প্রকার তথাকথিত পৌরানীক দেবতা অবশ্যই নয়।. বরং কিছুটা ভিন্ন।
যজুর্বেদ ১৪।৩১.
প্রকৃতির শাসক, প্রজার পালক সর্ব্বব্যাপক,সর্ব্বাধিপতি পরমাত্মার তেত্রিশ ভৌতিক দেব শক্তির অনুশীল কর।"
ঋগবেদের ১০/১২৫ দেবী সুক্তের প্রথম মন্ত্র-
" আমি বাক্-আমব্রীনী, অসীম জ্ঞানের কন্ঠস্বর, মহাবিশ্বের বাক্, (আমি) ১১ রুদ্র, ৮ বসু, ১২ আদিত্য এবং সকল বিশ্বদেবগনের সহিত সকল কিছু বহনকারী ও একইসঙ্গে বিদ্যমান ৷ আমি মিত্র ও বরুন (দিবস ও রাত্রি) উভয়ের সাথে ব্যাপ্ত ও ইহাদের ধারন করি ৷ আমি ইন্দ্র ও অগ্নি (বাতাস ও আগুন) উভয়ের সহিত ব্যাপ্ত ও ইহাদের ধারন করি৷ আমি অশ্বিনীদ্বয়কে বহন করি ও ধারন করি৷"

শতপথ ব্রাহ্মণ ১৪।৪-৬ এ ও বৃহদারণ্যক উপনিষদ ৩/৯/২-১১ নং শ্লোকেও ঐ দেবতার কথা বলা আছে।
দেবতা ৩৩টি, ইহারা পরমেশ্বরের মহিমাকে প্রকাশ করিতেছে।
ব্যাখ্যা-"৮ বসু, ১১ রুদ্র, ১২ আদিত্য, ইন্দ্র ও প্রজাপতি এই ৩৩ দেবতা।
পৃথিবী, অগ্নি, বায়ু, আকাশ, চন্দ্রমা, সূর্য, দ্যৌঃ এবং নক্ষত্র সকল সৃষ্টির নিবাস স্থান বলিয়া এ সকলকে অষ্ট_বসু বলে।
প্রাণ,অপান, ব্যান,উদান, সমান,নাগ,কূর্ম, কৃকল,দেবদত্ত,ধনঞ্জয় ও জীবাত্মা এই ১১টি দেহান্তকালে রোদন করে বলে এদের রুদ্র বলে। সংবৎসরের ১২ মাস সকলের আয়ু হরণ করে বলে এই সকলকে আদিত্য বলে। পরম ঐশ্বর্য্য হেতু বলে বিদ্যুতের নাম ইন্দ্র।
প্রজাপতি অর্থাৎ যজ্ঞ, ইহা দ্বারা বায়ু ও বৃষ্টির জলের শুদ্ধি হয়ে থাকে, এর দ্বারা উত্তম অন্নাদি উৎপন্ন হয়।"

এই গেলো মোটামুটি শাস্ত্রস্বীকৃত দেবতাদের আসল পরিচয়। এবার একটু গীতা দিয়েও এই ৩৩ দেবতাকে এক্টূ যাচাই করি।
বিশ্বরুপ দেখানোর সময় গীতার ১১.৬ এ দ্বাদশ আদিত্য, অষ্ট বসু, একাদশ রুদ্র, অশ্বিনিকুমারদয়, উনপঞ্চাশ মরুত এবং ১১.২২ এ রুদ্রগন, আদিত্যগন, সাধ্য নামক দেবতারা,বসুগন,বিশ্বদেবতাগন, অশ্বিনিকুমারদ্বয়, মরুতগন, পিত্রীগন, যক্ষ্যগন, অসুরগন এবং সিদ্ধগন এর কথা বলা হয়েছে। এখানে যেমন বেদ বা উপনিষদে বলা দেবতাদের কথাও বলা হয়েছে সাথে অন্য অনেক কিছুর কথাও বলা হয়েছে। সেটা ভিন্ন টপিক। মূল কথা এখানেও আমরা ৩৩ দেবকেই পাচ্ছি। পপুলার দেবদেবীদের পাচ্ছি না।
কিন্তু এখানে যাদের নাম দেয়া হয়েছে তাদের বিশেষ কোন পরিচয় গীতায় পাওয়া যায় না।না আধ্যাত্মিকভাবে আর না কল্যাণদায়ী হিসেবে। কিন্তু গীতার ই কিছু জায়গায় দেবতাদের প্রসংগ যেভাবে এসেছে তাতে এই দেবতার সাথে পৌরাণিক দেবতার বেশ মিল চোখে পড়ে।


গীতা ৩.১১
তোমাদের যজ্ঞ অনুষ্ঠানে প্রীত হয়ে দেবতারা তোমাদের প্রীতি সাধন করবেন। এইভাবে পরস্পরের প্রীতি সম্পাদন করার মাধ্যমে তোমরা পরম মঙ্গল লাভ করবে।
////////***এখানে কোন দেবতার কথা বলা হচ্ছে
গীতা ৩.১২
যজ্ঞের ফলে সন্তুষ্ট হয়ে দেবতারা তোমাদের প্রতি বাঞ্চিত ভোগ্যবস্তু প্রদান করবেন। সুতরাং দেবতাদের দেওয়া বস্তু তাদের নিবেদন না করে যিনি ভোগ করেন তিনি নিশ্চয় চোর।
///////***দেবতা বলতে কোন জড় বস্তু বুঝাচ্ছে না বলেই মনে হচ্ছে।
গীতা ৩.১৩
ভগবান ভক্তরা সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হন কারন তারা ভগবানকে নিবেদন করে অন্নাদি গ্রহন করেন। যারা কেবল সার্থপর হয়ে নিজেদের ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য অন্নপাক করে তারা কেবল পাপ ভোজন করে।
///////*** এ নিবেদনের সাথে কি মন্দিরে ভোগ দেয়া সামঞ্জস্যপুর্ন নয়?
গীতা ৭.২০-২১
জড় কামনা-বাসনার দ্বারা যাদের জ্ঞান অপহৃত হয়েছে, তারা অন্য দেব-দেবীর শরণাগত হয় এবং তাদের স্বীয় স্বভাব অনুসারে বিশেষ নিয়ম পালন করে দেবতাদের উপাসনা করে।পরমাত্মারূপে আমি সকলের হৃদয়ে বিরাজ করি। যখনই কেউ দেবতাদের পূজা করতে ইচ্ছা করে, তখনই আমি সেই সেই ভক্তের তাতেই অচলা শ্রদ্ধা বিধান করি।
///////***এখানে মানুষ যে দেবদেবী র শরণাগত হয়/উপাসনা করে-এ বিষয়টাকে ভগবান নিজে স্বীকার করে নিচ্ছেন এবং ব্যাপারটাকে স্বীকৃতিও দিচ্ছেন এই বলে যে-যে যে দেবতাকে যেভাবে পুজা করে-সেই অনুসারেই ফল দান করেন।
তাতে কি পৌরানীক দেবদেবী পুজার বৈধতা দেয়া হচ্ছে না??

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.