![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রবীন্দ্রনাথের জন্ম বা মৃত্যুদিবস আসলেই তিনি ঢাবি প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলেন কিনা আর নজরুলের লেখা চুরি করেছিলেন কিনা-এদুটো বিষয়ে বেশ চর্চিত হয়।
তবে যে বিষয়টা উঠে আসে না-সেটা হলো রবীন্দ্রনাথ কি বাংলা ভাষার পক্ষে ছিলেন নাকি না কারণ অবিধারিতভাবে ধরেই নিই যে কবি বাংলাকে আশ্রয় করে ব্যক্তি আর সাহিত্য জীবন অতিবাহিত করে গেলেন-তার বাংলা প্রীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা কি যায়?
/
১৯১৮ সালে গান্ধীর হিন্দির ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে প্রশ্নের উত্তরে কবি লিখেছিলেনঃ “Hindi is the only possible national language for inter-provincial intercourse in India.”
যদিও তখনকার পলিটীক্যাল কনটেক্সটে কথাটা বলা কিন্তু এইরকম সুরেই কিন্তু জিন্নাহ বলেছিলেনঃ Urdu only and Urdu shall be the state language of Pakistan.
জিন্নাহ কথাটা বাংলা বিদ্বেষ আর উর্দু প্রীতি থেকে বল্লেও রবীন্দ্রনাথের বাস্তবতা একটু বহুমাত্রিক। তার বড় প্রমাণ ১৯৪০ সালে রবীন্দ্রনাথকে ডি.লিট উপাধি দেবার জন্য ভারতের ফেডারেল কোর্টের প্রধান বিচারপতি শান্তিনিকেতনে যান, তখন রবীন্দ্রনাথ ভাষণ দেন সংস্কৃত ভাষায় যদিও তিনি সেটা বাংলাতেও দিতে পারতেন।
/
এখন যদি মনে করা হয় যে তিনি ধর্মীয় দিককে প্রাধান্য দিয়েছেন-তবে তা অনেকাংশেই ভুল হবে কারণ তিনি ব্রাহ্ম ভাব ধারার মানুষ ছিলেন।ব্রাহ্মধর্ম হিন্দুধর্ম থেকে যে একেবারেই পৃথক-তা নয় কিন্তু সে গল্প আলাদা। তবে উপনিষদের প্রতি রবীন্দ্রনাথ অনুরাগ ছিল বরাবর ই। সংস্কৃতপ্রীতি মূলত সেখান থেকেই। কবি নিজেই বলেছেন, ‘আমার জীবনের মহামন্ত্র পেয়েছি উপনিষদ থেকে’। উপনিষদ কিভাবে কবিকে চালিত করেছে-সে এক অন্য মাত্রার ভিন্ন গল্প।
তর্কের খাতিরে ধরেই নেয়া যাক রবীন্দ্রনাথ বাংলা বিদ্বেষী। তাহলে তার সমমনা অন্যান্যদের কি অবস্থা?
/
বাংলা ভাষার এক বিদগ্ধ গবেষক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়। ব্যাকরণে তার অবদান সর্বজনবিদিত।যার প্রমাণ The Origin and Development of Bengali Language.
শান্তিনিকেতনে হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য রবীন্দ্রনাথের আন্দোলনে সাহায্য করেন এই ভাষাবিজ্ঞানী। বাংলা ভাষার মহারথী সাহিত্যিক - সুকুমার, বিভূতিভূষণ, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা জীবনানন্দ- কেউই ভারতের রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে হিন্দির বাইরে বাংলাকে নিয়ে ভাবেননি। তাহলে ইনাদের কি বাংলাবিদ্বেষী বলা যায়?
আসলে বাংলা যে রাষ্ট্রভাষা হতেও পারে-এটা তখনকার সময়ে প্রত্যেকের কল্পনার ও বাইরে ছিল।
গুজরাটিভাষী হয়েও গান্ধী চেয়েছিলেন হিন্দিকে।
অউর্দুভাষী জিন্নাহ চেয়েছিলেন উর্দুকে। বাংলাভাষী শেরে বাংলা চেয়েছিলেন উর্দুকে।
©somewhere in net ltd.