নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার জন্ম হয়েছিল বিবর্ণ হতে হতে মরে যাওয়ার জন্য। যেমন ইটের নিচে দুর্বাঘাস; ক্রমশ ফ্যাকাশে, হলুদ হতে হতে ম্রিয়মাণ হয়ে যায়। তেমন করে আমারও ফ্যাকাশে হতে হতে মরে যাওয়ার কথা ছিলো। অথচ প্রতিটি নতুন বছরে আমি জ্বলে উঠতে চেয়েছি। ইস্পাতের ফলার মতো আরও ঝকঝকে, আরও ধারালো হয়ে উঠতে চেয়েছি। একেকটি শীত কাটিয়েছি বসন্তের কথা মনে করে। সেই বসন্তে দূরদূরান্ত হতে নাবিকেরা আসবে। জাহাজ ভিড়বে। আর আমাদের উচ্ছ্বল তরুণীরা সেই সব নাবিকদের অর্বাচীন স্বভাবের জন্য বহুভঙ্গে ভেঙে পড়বে হাসিতে। আমি তাদের সেই হাসি দেখতে দেখতে পূর্ণপ্রাণ হয়ে উঠতে চেয়েছি। ছোটোবেলায় মা আমায় রূপকথার গল্প শোনাতেন। ঘুমপাড়ানি গান গেয়ে গেয়ে রাত ভোর করে দিতেন। মাঝে মাঝে আমার গালে মায়ের কান্নার তপ্ত জলের ফোঁটা ঝরে পড়ত। আমার ঘুম ভেঙে যেতো। তবু মাকে বুঝতে দেইনি। প্রতিদিন আমার রগচটা বাবা তাকে মারতেন। কিন্তু মা কখনও গল্প বলা থামাননি। পরে বুঝেছি, মা আমার বানিয়ে বানিয়ে জীবনকথা বলে যেতেন। যেন আমি শুনে শুনে তা মনে রাখতে পারি। যেন প্রজন্ম প্রজন্ম ধরে আমাদের বংশের সব নারীরা সে গল্প মুখস্ত রাখে এবং পরম্পরায় বলে যায়। মায়ের গল্প গুলো মনে রাখিনি আমি। আমি নতুন করে নতুন গল্প বলেছি আমার কন্যাদের কাছে। চেয়েছি, তারা যখন তাদের কন্যাদের গল্প শোনাবে তখন যেন একফোঁটা অশ্রুও গড়িয়ে না পড়ে । কেননা আমার কন্যারা ইস্পাতের মতো ঝকঝকে ও কঠিন।
উৰসর্গ :
প্রিয় শূকর সমীপেষু;
প্রতিদিনই তো ফেরেন
একদিন না হয় ভুলে গেলেন বাড়ি ফেরার পথ
প্রাতিষ্ঠানিক দরোজার বাইরে রোদের উৎসব,শৈশবের বাঁশি
কতোদিন বাড়ি ফিরি না আমি!
০১
তোমাকে ভালোবাসি বললেই তুমি কসাই হয়ে ওঠো। সব্জীবাজারের নিয়ম ভঙ্গ করে তুমি ছানবিন করো পবিত্র পরিখা। কোনো একদিন অনন্ত অন্ধকারের নিচে দাড়িয়ে একমুঠো খই ছড়িয়েছিলো আমার দাদীআম্মা। সেই থেকে অন্ধ নক্ষত্রগুলো জ্বলে যাচ্ছে আপন নিয়মে। দ্যাখো, আমাদের ডাইনিং টেবিলে হেসে উঠছে পার্সলে লীফ; কচি কচি প্রজাপতি
পরমাঙ্কের ভাঁজ হতে বেরিয়ে এসো প্রিয় শূকর আমার। মহাকালের পাঁকে চলো আরো একবার আকণ্ঠ ডুবে যাই।
তুমি মোটেও আমার অন্যসব প্রেমিকদের মতো নও। তোমার শরীর থেকে সোঁদা মাটির গন্ধ ভেসে আসে কেন বলোতো! গর্ভবতী নারীদের মতো তখন আমার মাটি খাওয়ার ইচ্ছে জাগে।
জেনে রেখো, আমি সেই শবরীবালা, হাড়ের মন্ত্রে বশ করি বন্য শূকর...
০২
এমন মাগুরগুঁড়িয়ানা দিনে তোমার শ্বাসকষ্ট হয়
তোমার শ্বাসকষ্ট হয় বলে আমাদের তাবৎ যুদ্ধবিমানের মন খারাপ হয়। তারা ঠিকমতো চক্কর দিতে পারে না। নগর নারায়ণগঞ্জের আম্মাজানের দেহরক্ষীরা ছটফট করে। তারা আম্মাজানকে একমুহূর্ত চোখের আড়াল করতে চায় না। তুমি এসব কিছুই দেখতে পাও না। তুমি মগ্ন তোমার নিউজরুমে। একটা ব্রেকিং তোমার দরকার। অথচ আমি ব্রেকিং নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি তো আছিই। খুলনার সরকারী সদনের নৈশ প্রহরী তিন তিনটি শিশুকে ধর্ষণ করেছে। মামলা হয়নি বলে তোমার কাছে তা গুরুত্ব পায় না। সিঙ্গেল কলাম ছেপে দাও। শিশুগুলোর মা বাবা নেই বলে কি তাদের ধর্ষক বেঁচে যাবে, তীর্থঙ্কর!
কতো আজেবাজে বিষয়কে ইস্যু করো তোমরা। তোমাদের ইশারায় সব টালমাটাল হয়ে যায়
ওই অনাথ শিশুগুলোর কী দোষ তীর্থঙ্কর! কেন কেঁপে ওঠে না আল্লাহর আরশ!
তুমি ডাকো, মোনা বাইরে এসো।
জানি, মফস্বল সংবাদদাতা বলে আমি কোনোদিনই তোমার নিউজরুমে ঢুকতে পারবো না।
০৩
জ্যোৎস্নার ভেতর কর্তিত প্রজ্ঞার পতন। কোথাও কোনো দর্শন-চিহ্ন নেই। তার ভ্রমণবিলাসী কণ্ঠস্বর আমায় বিহ্বল করে। ঘুমাতে যাওয়ার আগেও তার অনির্বাণ কথামালা ডেকেছিল। ডেকেছিল বৃক্ষের পাণ্ডুলিপি হাওয়ায় হাওয়ায়। অথচ হৃদকৌটায় রোগমুক্তির শল্যবিদ্যা গোপন রাখে সে। কোথাও কিছু অবশিষ্ট নেই। তবু, একবার বিন্যস্ত হতে চাই। বিপরীত অন্তর ধুয়ে ফিরে এসো। তুমিই তো সেই প্রজ্ঞাবান পাখি। উঁচু হতে নেমে এসো মর্ত্যে পুনর্বার। অতঃপর জেনে রাখো, কুয়াশা পাঠচক্রে সব বৃক্ষের ডাকে সাড়া জাগে না।
০৪
কতোকাল প্রতীক্ষায় আছি। প্রাণটুকু ধরে আছি হাতের মুঠোয়। মনোবিকলন কেন্দ্রের পথটুকু চিনে নাও। গলার রশিটা ক্রমশ গেঁথে যাচ্ছে তীর্থঙ্কর! তুমি ছুঁয়ে দিলেই তো নিশ্চিন্তে মরে যাই...
০৫
কাশিমপুর কারাগারে দমবন্ধ হয়ে আসছে। শুনলাম আগামীমাসে চালু হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড়ো কারাগার। ভাবছি কেরানিগঞ্জেই শিফট হয়ে যাবো। সেখানে উন্নতজাতের গোলাপ ফোটাবো। অথচ তুমি বলো, কোথাও যেতে হবে না, আমাদের প্রতিটি বাড়ি একেকটি কারাগার হয়ে উঠছে।
০৬
পৃথিবীর সবচেয়ে আনন্দময় স্মৃতি :
আব্বা টিউবওয়েলের পানি ঘটিতে ভরে গায়ে ঢালছেন। আর সাত বছরের আমি আব্বাকে জড়িয়ে আছি। আমার গায়ে শান্তির ধারা গড়িয়ে পড়ছে।
তুমি কি জানো, আমার বাবার ছিল উজ্জ্বল নীরবতা!
তিনি জানতেন, কী করে ভালোবেসে নীরব থাকতে হয়।
০৭
একেকটা পথ পরিক্রমণ শেষে, পথের শেষে এসে দাঁড়াই। অতঃপর পাঠ করি তোমার বাণী। হে আমার প্রিয়তম, আমি তোমার একান্ত দর্শন প্রত্যাশী। হায় , ক্যাসিনো ঘড়ি ও আমাদের রেড লিফ সময় ...
লাবণ্য প্রভা
২০১৯/ মার্চ
২৭ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৫০
লাবণ্য প্রভা গল্পকার বলেছেন: আপনাকে দেখেও ভালো লাগছে। আজ কেন যেন নস্টালজিক হয়ে পড়েছিলাম। মনে পড়ছিলো খুব ব্লগের সেই দিনগুলোকে। তাই, লেখাটি পোস্ট করলাম। বলতে পারেন সেই দিনগুলোকে মনে করে। ভালো থাকবেন। শুভ কামনা নিরন্তর
২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:৪৯
লাবণ্য প্রভা গল্পকার বলেছেন: আপনাকে দেখেও ভালো লাগছে। আজ কেন যেন নস্টালজিক হয়ে পড়েছিলাম। মনে পড়ছিলো খুব ব্লগের সেই দিনগুলোকে। তাই, লেখাটি পোস্ট করলাম। বলতে পারেন সেই দিনগুলোকে মনে করে। ভালো থাকবেন। শুভ কামনা নিরন্তর
৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:৫৯
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: পাঠে মুগ্ধ।
২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:০৪
লাবণ্য প্রভা গল্পকার বলেছেন: শুভ কামনা
৪| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:৪৪
মা.হাসান বলেছেন: হাড়ের মন্ত্রে বশ করি বন্য শূকর
প্রতিটি বাড়ি একেকটি কারাগার হয়ে উঠছে
আমাদের তাবৎ যুদ্ধবিমানের মন খারাপ হয়
ক্যাসিনো ঘড়ি ও আমাদের রেড লিফ সময় ...
কি ঝকমকে সব অনন্য লাইন, মাথার ভিতর ঘুরপাক খায়।
অনেক খানিই আমার অনেক উপর দিয়ে গেছে। যেটুকু ধরতে পেরেছি তাতে মুগ্ধ হয়েছি।
অনেক ভালো লাগা।
২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:০৫
লাবণ্য প্রভা গল্পকার বলেছেন: ভালো থাকুন। পাঠ করবার জন্য ধন্যবাদ
৫| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:০৩
শেহজাদী১৯ বলেছেন: আমরা এখন নিজেদের কারাগারে বন্দী
২৭ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১:০২
লাবণ্য প্রভা গল্পকার বলেছেন: ভালো থাকুন
পাঠ করবার জন্য ধন্যবাদ
৬| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:৩৪
শায়মা বলেছেন: আপুনি কেমন আছো??
কতদিন পরে এই সুন্দর নিকটা দেখলাম!
২৭ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৫০
লাবণ্য প্রভা গল্পকার বলেছেন: ভালো আছি বোন আমার! ব্লগে বসা হয়নি বহুদিন। কয়েকদিন ধরে খুব মন খারাপ লাগছিল! একটু নস্টালজিকও। তাই এলাম। তোমাদের মুখ দেখে ভালো লাগছে। নিরাপদ থেকো। ভালো থেকো।
৭| ০৫ ই মে, ২০২১ রাত ২:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।
১৩ ই মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৩
লাবণ্য প্রভা গল্পকার বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:৪২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেকদিন পর ব্লগে দেখছি। আশা করি ভালো আছেন।
অসাধারণ রচনাশৈলী। অভিভূত।