নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখা ছাড়া নিজের শুশ্রূষা জানি না

লাবণ্য প্রভা গল্পকার

আমার জন্ম হয়েছিল বিবর্ণ হতে হতে মরে যাওয়ার জন্য। যেমন ইটের নিচে দুর্বাঘাস; ক্রমশ ফ্যাকাশে, হলুদ হতে হতে ম্রিয়মাণ হয়ে যায়। তেমন করে আমারও ফ্যাকাশে হতে হতে মরে যাওয়ার কথা ছিলো। অথচ প্রতিটি নতুন বছরে আমি জ্বলে উঠতে চেয়েছি। ইস্পাতের ফলার মতো আরও ঝকঝকে, আরও ধারালো হয়ে উঠতে চেয়েছি। একেকটি শীত কাটিয়েছি বসন্তের কথা মনে করে। সেই বসন্তে দূরদূরান্ত হতে নাবিকেরা আসবে। জাহাজ ভিড়বে। আর আমাদের উচ্ছ্বল তরুণীরা সেই সব নাবিকদের অর্বাচীন স্বভাবের জন্য বহুভঙ্গে ভেঙে পড়বে হাসিতে। আমি তাদের সেই হাসি দেখতে দেখতে পূর্ণপ্রাণ হয়ে উঠতে চেয়েছি। ছোটোবেলায় মা আমায় রূপকথার গল্প শোনাতেন। ঘুমপাড়ানি গান গেয়ে গেয়ে রাত ভোর করে দিতেন। মাঝে মাঝে আমার গালে মায়ের কান্নার তপ্ত জলের ফোঁটা ঝরে পড়ত। আমার ঘুম ভেঙে যেতো। তবু মাকে বুঝতে দেইনি। প্রতিদিন আমার রগচটা বাবা তাকে মারতেন। কিন্তু মা কখনও গল্প বলা থামাননি। পরে বুঝেছি, মা আমার বানিয়ে বানিয়ে জীবনকথা বলে যেতেন। যেন আমি শুনে শুনে তা মনে রাখতে পারি। যেন প্রজন্ম প্রজন্ম ধরে আমাদের বংশের সব নারীরা সে গল্প মুখস্ত রাখে এবং পরম্পরায় বলে যায়। মায়ের গল্প গুলো মনে রাখিনি আমি। আমি নতুন করে নতুন গল্প বলেছি আমার কন্যাদের কাছে। চেয়েছি, তারা যখন তাদের কন্যাদের গল্প শোনাবে তখন যেন একফোঁটা অশ্রুও গড়িয়ে না পড়ে । কেননা আমার কন্যারা ইস্পাতের মতো ঝকঝকে ও কঠিন।

লাবণ্য প্রভা গল্পকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সঙ্গ, নি-সঙ্গ কিংবা সঙ্গনিরোধ কাব্য

১৬ ই মে, ২০২২ রাত ৯:৩৪

০১
মরে যাওয়ার আনন্দই আলাদা।
যদিও সকলের মরে যাওয়ার স্মৃতি এক নয়।
এক নয় বেঁচে থাকার স্মৃতিও।

মনে পড়ে, বহুবার বহুবার আমি মরে গিয়েছিলাম। আমাদের নির্জন হিমঘরে কতোবার মরে পড়ে ছিলাম। আমার ফ্রিজ ভর্তি ফলের হাড়গোড় জমাট বরফ হয়ে থাকে। হৃদপিণ্ডও। ডালা খুলে তাদের রৌদ্রে দিয়ে আসি।
দ্যাখো, মধ্যরাতে কারওয়ান বাজারে নিস্তব্ধতা ভাঙছে। সবজিভর্তি শিশু ও তরুণ ট্রাক।
অ্যাম্বুলেন্সে বরযাত্রী। বুকের ভেতর ৫ টন, সমগ্র বাংলাদেশ।

রাজাবাজার লক ডাউন হলো আজ।
লক ডাউন!
আড়াআড়ি বাঁশ!
আমার ঘাড়ও লক হয়। ঘাড়ের ওপর দশমণি বাঁশের জোয়াল। বলছে, শুনো আজ থেকে তুমিও লক ডাউন!

টিভি স্ক্রিনে মধ্যরাতের ঢেকুর!
পাতাগুলো ভেসে যাচ্ছে
ভেসে যাচ্ছে খড়কুটোও...


০২

সমুদ্র ডাকছে...
চন্দ্রাহত
বিচূর্ণ ফসফরাস।
আলোর ঈগল চক্ষুদ্বয় খুলে নিয়ে যায়
পড়ে থাকে বিমর্ষ হাত
এ হাত, কখনো স্পর্শ করেনি তার মুখ; উত্তাপ
অপরিচিত ইশারা তীব্র তীব্র
আকাশ ভেঙে জল ও জোৎস্নার কারুকাজ নেমে আসে
লবণ গলে যায়
গলে যাচ্ছে নদী ও কুসুম
এসো
আলিঙ্গন করি মৃত্যু; ভাঙা ভাঙা ময়ূর।


০৩
যাই...
গাড়ি ডাকছে
পড়ে রইল
অসমাপ্ত প্রণয়
ফিরে এসে পাঠ করবো
ধারাপাত...

০৪
আদিগন্ত রঙ কেটে গেলে
শব্দ তৈরি হয়।
তারা ঝরে পড়ে বিবিধ বিন্যাসে।
আর আমরা, 'জল পড়ে পাতা নড়ে'ভেবে
এক বিকেল পার করে দেই।
মাঝে মাঝে একেকটা কোলাহল পেরিয়ে যাই
দূরে, আরো দূরে বিস্তৃত হয় আমাদের মন; মনোজ কুসুম।
মাঝে মাঝে নীল নীল পাখির পালক দুয়েকটা বইয়ের ভাঁজে লুকিয়েও রাখি। সময়ে অসময়ে খুলে দেখি। কোনো কোনো ভোরে চোখের পাতায়, গালে, ঠোঁটে নীল রঙ মেখে ফড়িং হয়ে যাই।
সেইসব ফড়িং!
অতিপ্রাকৃত সন্ধ্যায়
যারা তোমার
স্নানঘরে ফিরে ফিরে আসে!

০৫
আমায় ধরে রাখো
বিবর্ণ ঝুরি পথে
ধরে রাখো আমায়
এইসব সম্প্রীতি মানুষমাত্রই জানে কিছু নয়
কিছু নয় সঙ্গ কিংবা সঙ্গনিরোধ
নৃ-মাছি চিরকাল উজানে যায়
ফেলে রেখে চেনা হাট, বারুণির মেলা
কেউ কেউ শুধু চক্রাকারে ঘোরে



০৬

হেঁটে যাই
অনন্ত অরণ্যে
হেঁটে যাচ্ছি ধীরে
ডুমুরভাঙা পথে রাত গভীর হলো বুঝি!
আকাশের বাঁশী সুরম্য
হাঁসের পালকে ঘুম দীর্ঘ হয়
তবে তুমি নিদ্রা যাও
হাড়ের ভেতর বীজ-ঘ্রাণ নিয়ে নিদ্রা যাও তুমি
আমাদের উত্তরের খ্যাপা হিম এবার সহজে যাবে না
উত্তাপসমূহ কবেই হরণ করেছে কাল
মার্বেল মেঝেতে শুয়ে থাকি
নিরুত্তাপ
জন্মনগ্নিকা এক
পথে পথে আমাদের পরানপুড়ে যেতে থাকে...

*** লাবণ্য প্রভা
সঙ্গ, নি-সঙ্গ কিংবা সঙ্গনিরোধ কাব্য

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই মে, ২০২২ রাত ১:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।
এবং যথেষ্ট বিরক্ত হলাম।

১৭ ই মে, ২০২২ দুপুর ১:৫৩

লাবণ্য প্রভা গল্পকার বলেছেন: হা হাহা। ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।

২| ৩১ শে মে, ২০২২ দুপুর ১২:১৭

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: খুব সুন্দর লিখা

০৯ ই জুন, ২০২২ রাত ১২:৪০

লাবণ্য প্রভা গল্পকার বলেছেন: ধন্যবাদ।
শুভ কামনা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.