নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"তোমার সাথে মিলব আমি ঠিক বেঠিকের বাহিরে\"

লাবিব ফয়সাল

ভালোমানুষ হওয়ার কোন ঝঞ্ঝাট নেই, তাই আমি নিতান্ত ভালোমানুষ...

লাবিব ফয়সাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

নমরুদের দেশে

২৫ শে জুন, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৮

বাস থেকে নেমেই হাতের বামে পড়ল গুহাটি। উঁচু পাহারে এই গুহার ঠিক উপরে রয়েছে লম্বা দুইটি মিনার। আর এখানেই অত্যাচারী শাসক নমরুদের হাত থেকে বাঁচতে হযরত ইব্রাহীম আঃ তার জন্মের পরের ৭ বছর লুকিয়ে ছিলেন। একটি কনফারেন্সে গিয়ে এই জায়গাটি ঘুরে দেখার সুযোগ হয়েছিল। এটি তুরস্কের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রের একটি।



কনফারেন্সের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে পরদিন সকালেই আমরা রওয়ানা হলাম তিন ধর্মেই গুরুত্বপ্রাপ্ত এই স্থানটি দেখার জন্য। বাস, বেলা এগারোটা নাগাত সেখানে নামিয়ে দিল। রাস্তার কোল ঘেঁষেই এর সীমানা প্রাচীর। আর তাকে কেন্দ্র করেই হরেক রকম জিনিসপত্র নিয়ে বসে আছে হকাররা। এখানকার আবহাওয়া ও পরিবেশ কিছুটা আরব দেশগুলোর মত মনে হল। পর্যটকদের ভীর ঠেলে বাংলাদেশি নোমা খান, গ্রিসের চা’তাই আর কিরগিজিস্থানের ফেরিদে সহ আমরা চার জন ভিতরে ঢুকলাম।

মেভলিদ হালিল গুহা
মেভলিদ হালিল অর্থ পবিত্র জন্ম। প্রচলিত আছে, অত্যচারি শাসক নমরুদ জানতে পারেন যে তার পতনের কারণ হয়ে একটি শিশু জন্মগ্রহণ করবে। আর তাঁকে প্রতিহত করতেই সে সময় নবজাত সকল শিশুকে হত্যা করা হয়। হযরত ইব্রাহীম আঃ এর মা সন্তানকে বাঁচাতে এই গুহাতে আশ্রয় নেন। আর এখানেই জন্ম হয় হজরত ইব্রাহীম আঃ এর। জন্মের পরে ৭ বছর বয়স পর্যন্ত থাকেন এই মেভলিড হালিল গুহাতে। এ থেকেই এর নামকরণ।


দুর থেকে পাহারের উপরে উঁচু মিনার দেখা যাচ্ছিল। এর নিচেই মুল গুহা। তবে সংস্কার কাজ চলায় আমরা গুহাটি ঘুরে দেখতে পারিনি।

মেভলিদ হালিল মসজিদ
অনেক বড় মাঠ আরে তার বুক চিড়ে অসংখ্য সরু রাস্তা। একটির সাথে আরেকটি গিয়ে মিশছে একটু পরপরেই। আমরা সেগুলো মাড়িয়ে পথ চলতে চলতে ‘মেভলিদ হালিল’মসজিদটি সামনে পড়ল।



যিশু খ্রিস্টের জন্মের প্রায় ৩০০ বছর আগে সেলুসাইড সম্রাজ্যের আওয়তায় সর্বপ্রথম এখানে উপাসনালয় তৈরি করা হয়। তারা ছিল ইহুদী ধর্মাবলম্বী। এর পরে ১৫০ সালে এটিকে খ্রিষ্টান উপশনালয়ে রূপান্তরিত করা হয়। সর্বশেষ ১৫২৩ সালে মুসলমানরা তুরস্কের মসনদে আসলে এই স্থানে একটি মসজিদ স্থাপন করেন। আমরা মসজিদটির ভিতরে ঢুকতেই ঝাঁকে ঝাঁকে কবুতরের ওড়া উড়ি চোখে পড়ল। পর্যটকরা মসজিদের ভিতরের কবরগুলতে দোয়া করছেন আর কেউ কেউ কবুতরগুলোকে খাবার দিচ্ছেন।

মাছের লেক
আমরা মসজিদ থেকে বের হয়ে হাতের ডান দিকে ছোট লেকটি দেখতে পেলাম। নাম বালিকলি গোল বা মাছের লেক। এটি লম্বায় ১৩০ মিটার, প্রস্থে প্রায় ৩০ মিটারের মত। আর গভীরতা তিন থেকে চার মিটার হবে। এই লেকের পানি আসে মেভলিদ হালিল গুহা থেকে। স্থানীয়রা পবিত্র যমযম পানির পরে এর অবস্থান বলে বিশ্বাস করেন। আর এর আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল পানিতে ভাসমান অসংখ্য কার্প জাতীয় মাছ। এই মাছগুলোকে জায়গাটির সম্মানার্থে কেউ ধরে না।



আমাদের বেধে দেয়া ঘুরাঘুরি কেনাকাটার সময় যে শেষ হয়ে এসেছে তা নোমা খানের কথায় বোঝা গেল। নির্ধারিত বাসে করে আমরা সকলে হোটেলে ফিরলাম।

ইস্তানবুল থেকে যেভাবে যাবেন

ইস্তানবুল থেকে শানলি উরফার দূরত্ব প্রায় ১২৯০ কিলোমিটার। ইস্তানবুল থেকে সরাসরি প্লেনে আসা যায়। শানলি উরফার বিমানবন্দর মূল শহর থেকে ৩৫ কিলেমিটার দুরে। সেখান থেকে তাদের নিজস্ব গাড়িতে শহরে আসার ব্যাবস্থা আছে।
এছাড়াও বাসে করেও আসা যায়। ইস্তানবুল থেকে সরাসরি বাস পাওয়া যায়।



লাবিব ফয়সাল
কনিয়া, তুরস্ক।
ছবি- লাবিব ফয়সাল।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট।

ভ্রমনের চেয়ে আনন্দময় আর কিছু নাই।

২৬ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ১২:০৯

লাবিব ফয়সাল বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

২| ২৫ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:১৪

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ভ্রমন কথনে সাথে রাখায় ধন্যবাদ। ছবিও সুন্দর।

২৬ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ১২:১০

লাবিব ফয়সাল বলেছেন: আপনাকেও সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

৩| ২৬ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৮

করুণাধারা বলেছেন: এই জায়গাটির কথা জানা ছিল না। ছবি ও বর্ণনার মাধ্যমে চমৎকারভাবে জায়গাটি সম্পর্কে বলেছেন। খুব ভালো লাগলো।

০৭ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১১:১২

লাবিব ফয়সাল বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

৪| ২৬ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:৩৬

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: একটা অজানা বিষয় সম্পর্কে জানা হলো।
ধন্যবাদ আপনাকে।

০৭ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১১:১২

লাবিব ফয়সাল বলেছেন: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.