নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাললাগে মনের কল্পনায় অজস্র স্বপ্নের জাল বুনতে।

লাবণ্য ২

বাস্তবতা যত সুন্দরই হোক; কখনোই স্বপ্নের মত নয়।আমি স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি।জানি আমার স্বপ্ন পূরণ নাও হতে পারে; তবুও আমি স্বপ্ন দেখতেই ভালোবাসি......

লাবণ্য ২ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঁশির সুর..... (ছোটগল্প)

০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৮



প্রভাতের রক্তিম সূর্যটা রাত্রিশেষের শিশিরার্দ্র অন্ধকারকে তখনো বিদায় জানায়নি।আবছা আলো আঁধারি জড়ানো অন্ধকারে ঘাটের একটি কাঠের বেদিতে এসে বসল অবন্তীকা ভৈরবের মৃদ্ ঢেউয়ের সাথে উঠে আসা এক ঝটকা শীতল বাতাস যেন মুহুর্তে তার ক্লান্ত শরীরকে শীতল পরশে জুড়িয়ে দিলো।পাখির পালক ঝরার মতন আঁধারকে বিলীন করে পূর্ব দিগন্তের উদিত সূর্যটা কোন এক অজানা জাদুমন্ত্রে আস্তে আস্তে সমগ্র পৃথিবীটাকে আলোয় ভরিয়ে তুলছে।নদীর পাড়ে ফুটে থাকা হালকা বেগুনী মিশ্রিত সাদা থোকা থোকা আকন্দ ফুলগুলো শিশিরে সিক্ত হয়ে আছে।

সান বাঁধানো নদীর ঘাট।নদী পার হয়ে মিনিট দশেক হাঁটলেই অবন্তীদের সেকেলে একতলা বাড়ি।নদীর ওই পারে বিস্তীর্ণ বালুচর আর শরৎ শুভ্র কাশবন।ভোরের মৃদু বাতাসে শরতের কাশফুলগুলো হেলেদুলে নদীর ঢেউয়ের সাথে যেন সমানে তাল মিলিয়ে চলেছে।ওই বিস্তীর্ণ নদী চর থেকে নিশুতি রাতে বেজে ওঠা বাঁশির সুর ভেসে যায় দূর থেকে দূরান্তে।

একবছর! ঠিক একবছর পর অবন্তী এই ঘাটে এসে বসল।কিন্তু ওর মনে হচ্ছে যেন পুরো এক যুগ পার হয়ে গেছে।অবন্তী যে বেদিটাতে বসে আছে,সেও বসে থাকে কখনও কখনও চোখে কেমন যেন ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে।শেষ যেবার অবন্তী বাড়ি এসেছিলো তখনও দেখেছিলো-মনে হয় যেন কত পথ পাড়ি দেওয়া ক্লান্ত পথিক।

অবন্তী যে বাড়ি আসছে সেটা বাড়িতে কেউ জানেনা,জানলে এতকিছু ভাববার অবকাশই পেত না।আচমকাই অবন্তীর ভাবনায় ছেদ পড়ল। ঘাড় ফিরিয়ে দেখে অনেক মানুষ ঘাটের দিকে আসছে।

আশ্চর্য! এতো সকালে কার লাশ নিয়ে আসছে ওরা।অবন্তী বিষ্ময়ে তাকিয়ে আছে....

সোহেল এগিয়ে এসে বলল," আপু আপনি!কেমন আছেন?"

ভালো।তোমরা কোথা থেকে আসলে ? ওটা কার লাশ?

হাসান ভাইয়ের।গত পরশু রাতে বন্ধুদের সাথে নদীর চরে যখন নেশায় মগ্ন ছিল তখন পুলিশের গুলিতে....

সোহেলের হাতে একটি বাঁশের বাঁশি।এই বাশিঁ যার তার সুর চিরদিনের জন্য থেমে গেল।আর কখনো সে তার সুরের জাদুতে কাউকে মন্ত্রমুগ্ধ করবেনা।আর কখনো বেজে উঠবে না নিশুতি রাতে তার মোহন বাঁশির সুর।যে বাঁশির সুরে উত্তাল হতো অবন্তীর এলোমেলো মন।কিন্তু মানুষটা! মানুষটা কি কখনও তার মনের কোথাও কোন.....

একাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় সোমা একদিন বলেছিলো,হাসান ভাই তোকে খুব পছন্দ করে।

অবন্তী চুপ করে ছিলো।তুই কিছু বলছিস না যে?

কি বলব?

হাসান ভাই নিজে তোকে কথাটা বলতে পারছে না তাই তার হয়ে আমি তোকে বলছি।কিছু তো বল!

বলার কি আছে।শুধুমাত্র সুন্দর চেহারা আর বংশমর্যাদা ছাড়া তার আর কি আছে?

কাউকে ভালোবাসতে হলে বুঝি আরও কিছু দরকার আছে?

জীবন আবেগ দিয়ে চলে না সোমা।তোমার হাসান ভাই তো স্বপ্নের রাজ্যে বাস করে।নিশুতি রাতে নদীর বালুচরে বাঁশি বাজিয়ে জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে।

তারপর থেকেই অবন্তী জানত নিশুতি রাতে নদীর বালুচর থেকে নিত্য যে সুর ভেসে আসতো সে একান্তই তার জন্য।

সোহেল বলল,"আপু নৌকা ছেড়ে দিবে,আপনী যাবেন না?"


তোমরা যাও ।আমি পরে আসছি।

শরৎ প্রভাতের সূর্যকিরন নদীর জলে পড়ে চিকচিক করছে।অবন্তী এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:১২

প্রথমকথা বলেছেন: ভাল লাগল।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৪

লাবণ্য ২ বলেছেন: ধন্যবাদ আপু।শুভেচ্ছা রইলো।

২| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:২০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বিয়োগান্তক।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৫

লাবণ্য ২ বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:২২

সনেট কবি বলেছেন: বেশ

০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৬

লাবণ্য ২ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।

৪| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: জীবন মানেই দ্বন্দ্বের সমন্বয়।
এটা শিখতে আমাকে বই পড়তে হয়নি।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪০

লাবণ্য ২ বলেছেন: জীবন মানেই দ্বন্দ্বের সমন্বয়।
সেটা শিখতে আমাদের কারোরই বই পড়ার প্রয়োজন পড়ে না ভাইয়া।

৫| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩০

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বেশ হৃদয় ছুঁয়ে গেল আপু। নিশুতি রাতে আর কোনদিন বাজবেনা তাহলে মোহনবাঁশি।


শুভেচ্ছা নিয়েন আপু।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪১

লাবণ্য ২ বলেছেন: ধন্যবাদ।আপনার জন্য ও শুভেচ্ছা নিরন্তর।

৬| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৫

তারেক ফাহিম বলেছেন: প্রথম দিকটাতে প্রকৃতির সুন্দর বর্ননায় অনেক ভালোলাগা।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৯

লাবণ্য ২ বলেছেন: ধন্যবাদ।শুভেচ্ছা জানবেন।

৭| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৮

রাকু হাসান বলেছেন:

বাহ বাহ উপস্থাপনায় মুগ্ধ । একজন প্রফেশনাল লেখিকার মত লাগছে । দারুল লাগছে আমার । হাসানের থেমে যাওয়াতে খারাপ লাগছে । বেশ ক’দিন পর অাপনার লেখা পড়লাম । +

০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৩

লাবণ্য ২ বলেছেন: মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম।ধন্যবাদ।

৮| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২১

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: দারুণ গল্প তৈরি করেছেন, হৃদয়ে বেদনার ঝড় তুলতে সক্ষম।
ভালো লাগা জানবেন, শুভকামনা রইলো

০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:১২

লাবণ্য ২ বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ ভাইয়া।

৯| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২২

ওমেরা বলেছেন: আপু এটা কি রিপেষ্ট করলেন আগেও তো মনে হয় পড়েছি।

মন ছুয়ে যাওয়া লিখা।ধন্যবাদ আপু।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:১৪

লাবণ্য ২ বলেছেন: হ্যাঁ আপু রিপোস্ট।ভালবাসা রইলো।

১০| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪০

সূর্যালোক । বলেছেন: গল্পটি পড়ে মনে ভালোলাগা কাজ করছিল কিন্তু হঠাৎ হাসানের জন্য খারাপ লাগছে । ভালো গল্প আপু ।

১১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:১৬

লাবণ্য ২ বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ।শুভেচ্ছা জানবেন।

১২| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: জীবন মানেই দ্বন্দ্বের সমন্বয়।
সেটা শিখতে আমাদের কারোরই বই পড়ার প্রয়োজন পড়ে না ভাইয়া।

ধন্যবাদ।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৪

লাবণ্য ২ বলেছেন: শুভ কামনা।

১৩| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১:১২

ভুয়া মফিজ বলেছেন: চমৎকার কাব্যিক বর্ণনা।
জীবন আবেগ দিয়ে চলেনা, সঠিক বলেছেন। তবে, পুরাপুরি যান্ত্রিকতাও কাম্য না। মধ্যপন্থা সবচেয়ে ভালো। :)

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৭

লাবণ্য ২ বলেছেন: মধ্যপন্থা সবচেয়ে ভালো, সঠিক বলেছেন।পাঠ ও মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

১৪| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৩১

আরজু পনি বলেছেন: ভালো লাগলো।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৬

লাবণ্য ২ বলেছেন: ছোট্ট মন্তব্যে অনেক অনুপ্রাণিত হলাম আপু।শুভকামনা।

১৫| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৬

হাবিব বলেছেন: কখন শুরু হলো আবার কখন যেন শেষও হলো, তবুও ভালো লাগার রেশ রয়েই গেল

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:১৮

লাবণ্য ২ বলেছেন: মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম।শুভকামনা রইলো।

১৬| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:০১

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: গল্পের সেটিং অনেক মজবুত। মন ছূয়ে গেছে।

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:২১

লাবণ্য ২ বলেছেন: পাঠকের মন ছুঁয়ে গেলেই লেখার প্রকৃত স্বার্থকতা।

১৭| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৪৯

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: পরশু রাতে বন্ধুদের সাথে নদীর চরে যখন নেশায় মগ্ন ছিল তখন পুলিশের গুলিতে....
যে অবন্তী ভালবাসার প্রস্তাব ফিরায়ে দিল
তার মনে হাসানের জন্য উদাসীন ভালবাসা কেন ?
.......................................................................................................................

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:২৯

লাবণ্য ২ বলেছেন: জীবন কোন ধরা বাঁধা নিয়মে চলে না।ভালো থাকবেন।

১৮| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: লাবণ্য ২ ,





বাঁশির সুর থেমে গেলে, তার রেখে যাওয়া রেশের মতোই বিষাদের রেশ মাখানো ।

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:১১

লাবণ্য ২ বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

১৯| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৫

আখেনাটেন বলেছেন: চমৎকার কাব্যিকভাবে গল্প শুরু করেছেন। ভালো না লেগে পারে না।
অাচ্ছা, অাকন্দ ফুল কি?

হাসানের ব্যাপারটা অবন্তির জন্য চমক হিসেবে এলে গল্পটা আরো জমত মনে হয়।

তবুও বলতে হয় গোধুলীর রাঙা অাকাশের মতো কিছু বাক্য রাঙা করে দিল এই মনকে ।

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৪

লাবণ্য ২ বলেছেন: পাঠ ও প্রতিক্রিয়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

আকন্দ একটি বুনো ফুলের নাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.