নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন

লক্ষণ ভান্ডারী

কবিতা

লক্ষণ ভান্ডারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অজয় নদীর কাব্য অষ্টম পর্ব।

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৫৪

অজয় নদীর কাব্য
অষ্টম পর্ব।

প্রথম প্রকাশ- 25শে জানুয়ারী, 2018
দ্বিতীয় প্রকাশ- 25শে ফেব্রুয়ারী, 2018
তৃতীয় প্রকাশ- 25শে মার্চ, 2018
চতুর্থ প্রকাশ-17ই মে, 2018
পঞ্চম প্রকাশ- 2রা জুন, 2018
ষষ্ঠ প্রকাশ- 26শে জুন,2018
সপ্তম প্রকাশ- 2রা সেপ্টেম্বর, 2018
অষ্টম প্রকাশ- 30শে অক্টোবর, 2018

------ঃ ****¬ঃ-----------
ভূমিকা

অজয়ের অবিরাম জলধারা বহুকাল পূর্ব হতে কালের স্রোতে তৈরি করে রেখেছে বহু পুরানো কালের ইতিকথা। প্রতি বছর বর্ষার বহু জল এসে মিশেছে অজয় নদীর বুকে। ভাসিয়ে দিয়ে গেছে এপার ওপার দুইপারের গাঁ গুলিকে। একূল ভেঙে ওকূল গড়ে তোলাই নদীর কাজ। নীরব সাক্ষী হয়ে বিচরণ করে বিস্তীর্ণ ঝোঁপ ঝাড়, আর পাড়ের বটগাছ আর ঝরে পড়া মন্দিরের প্রতিটি বালি মেশানো সিমেন্ট আর ক্ষয়ে যাওয়া ইঁটের অশ্রুসজল ইতিহাস।

অজয় নদীর চরে এসে খেলে বেড়ায় বনশালিকের ঝাঁক, আসে সাদা বলাকার সারি, গরুর গাড়ি পার হয় আর মোষ নিয়ে পার হওয়া গাঁয়ের রাখাল তার বাঁশি বাজিয়ে নদীর কলধ্বনিতে মিশিয়ে দেয় সুরের ঝংকার। সোনা ঝরা রোদ্দুরে গাঁয়ের বাউল নদীতটে একতারা বাজিয়ে গান গায়। গাঁয়ের বধূরা জল নিয়ে বাড়িতে চলে। তারপর ধীরে ধীরে বেলা পড়ে এলে সাঁঝের তারা ফুটে আকাশে, জোছনায় নদীজল ঝিলিমিলি করে। অজয়ের নিবিড় ভালবাসায় সিক্ত হয়ে লেখা হল অজয়নদীর কাব্য।

প্রতিবারের মতো এবারের সংখ্যায় কিছু অন্যান্য কবিদেরও কবিতা সংযোজিত হয়েছে। কবিগণের উদ্ধৃতির সাথে কবিতাগুলিকে পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করা হয়েছে। আশা করি কবিগণ এতে মনঃক্ষুন্ন হবেন না। আমার কবিতার সাথে অপরাপর কবিগণের কবিতা প্রকাশ করা হোল এই সংস্করণে।
বাংলা কবিতা আসরের কবিগণের একনিষ্ঠ সহযোগিতা আর শুভ আশীর্বাদ মাথায় রেখে প্রকাশ করলাম অজয় নদীর কাব্য অষ্টম পর্ব। আমার ধারণা ও দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে একথা জোর দিয়ে বলতে পারি না যে, এই সংস্করণে প্রকাশিত কবিতাগুলি পাঠক ও কবিগণের চিত্ত জয় করতে পারবেই। তবে আমার কবিতাগুলিকে কবিগণ ও সহৃদয় পাঠকের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সুধীজনের অকুণ্ঠ সহযোগিতায় আমার এই প্রয়াস সফল হয়ে উঠুক এই প্রত্যাশা রাখি।
বিনীত
কবি
27শে অক্টোবর, 2018
নতুন দিল্লি

------ঃ ****¬ঃ-----------


সূচীপত্র

1. আমার গাঁয়ে নদীর ধারে
2. নতুন সকালের অপেক্ষায়
3. অজয়ের কলতান
4. গাঁয়ের পাশে অজয়নদী
5. ভোরের আলো



------ঃ ****¬ঃ-----------


1. নদীর ধারে আমার গাঁয়ে
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

নদীর ধারে আমার গাঁয়ে
রাঙা মাটির পথে,
ক্যাঁচর ক্যাঁচর গোরুর গাড়ি
চলে সকাল হতে।

সবুজ গাছে পাখির গানে
ভরে নয়ন মন,
গাছের ছায়া মাটির ঘরে
শান্তির নিকেতন।

অজয় নদীর ঘাটের কাছে
স্বচ্ছ নদীর জল,
সকাল হতে দূর গাঁ থেকে
আসে পথিকদল।

এক হাঁটুজলে পার হয়ে যায়
গোরু বাছুর গাড়ি,
নদীর ধারে কাশের বনে
সাদা বকের সারি।

নদীর চরে শেওলা জমে
কালো নদীর জল,
শামুক গুগলি ধরে ধরে খায়
বুনো হাঁসের দল।

নদীর বাঁকে আমের শাখে
কোকিল ডাকে শুধু,
মাটির কলসী কাঁখে নিয়ে
আসে গাঁয়ের বধূ।

সন্ধ্যা বেলায় আলো লুকায়
স্নিগ্ধ নদীর চরে,
জোছনা রাতে চাঁদের আলো
নদীর জলে ঝরে।

2. অজয়ের কলতান
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

একটি সুন্দরতম সকালের অপেক্ষায়,
অমানিশাভরা রাত মোর কেটে যায়।
আশায় আশায় আমি বাঁধিনু খেলাঘর,
আপনজন সব আজ হয়ে গেছে পর।

সুখের আশায় কাটে দূর্যোগভরা রাত,
দুঃখনিশার অবসানে আসে সুপ্রভাত।
ব্যথাভরা হৃদয়ে শুনি দূরের আহ্বান,
প্রভাত পাখিরা কেন গাহে না গান।

থেমে গেছে ক্লান্ত ঘড়ির দুটি কাঁটা,
মনে হয় অভিশপ্ত নিষ্ঠুর পৃথিবীটা।
জন্মঋণ শোধ করি সবে মৃত্যু দিয়ে,
নতুন প্রভাত শুরু আজ কান্না নিয়ে।

বিবর্ণ মৃত্যু কবলিত হেথা এই ধরা,
অজয়ের কলতান তাই বিরহ ভরা।


3. গাঁয়ের পাশে অজয় নদী
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

গাঁয়ের পাশে অজয় নদী
কুলু কুলু বয়ে চলে।
গাঁয়ের ছেলে দুখু মিঞার
দুঃখেতে দিন চলে।

চুরুলিয়ার গাঁয়ের ছেলে
কবি কাজী নজরুল,
বিদ্রোহী তিনি, বিদ্রোহী কবি
গান গাওয়া বুলবুল।

দুঃখে গড়া জীবন দুখুর,
সুখ ছিল না মনে,
এবার দুখু নাম লেখাল
বাঙালী পলটনে।


অত্যাচারীরা বিদেশী এসে,
কেড়ে নিল স্বাধীনতা,
বুঝলেন কবি ভারত মায়ের
পরাধীনতার ব্যথা।


‘অগ্নিবীণা’য় ঝরেছে অগ্নি
‘বিষের বাঁশি’ বাজে,
অগ্নিমন্ত্রে লভিয়া দীক্ষা
নামল দেশের কাজে।


বাংলার বীর জোয়ান ছেলে,
গাহে ভারত মাতার জয়,
বিদেশীদের বুঝিয়ে দিল
বীর বাঙালী তুচ্ছ নয়।


পাষাণের ঐ কারাগারকে
ভেঙে ফেলো হুংকারে,
মৃত্যুবরণ করে সবাই
পাষাণের কারাগারে।


শেকল ভাঙার গাইল গান
বিদ্রোহী কবি নিজে,
সবাই জীবন তুচ্ছ করে
নামল দেশের কাজে।


স্বাধীন ভারতে উদয় হল
হলো অরুণ বরণ রবি,
বাংলা মায়ের দামাল ছেলে
হলেন জাতীয় কবি।


5. ভোরের আলো
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

ভোরের আলো ছড়িয়ে দিলো
আলোক ভুবনময়,
পূব আকাশে অরুণ হাসে
প্রভাত হাওয়া বয়।

টগর বেলি জুঁই, শিউলি
ফুটে আছে ফুল বাগে,
তরুর শাখে পাখিরা ডাকে
শীতের আমেজ লাগে।

ঘাসের পরে শিশির ঝরে
সোনালী সকাল বেলা,
ধানের খেতে উঠলো মেতে
সোনা রোদ করে খেলা।

অজয় তীরে স্নিগ্ধ সমীরে
বটগাছ তলে বসি,
মধুর সুরে কেমন করে
বাজায় বাঁশি শশী।

মন মাতানো বাঁশির সুরে
পরাণ পাগল করে,
কলসী কাঁখে গাঁয়ের বধূ
জল নিয়ে যায় ঘরে।

দিঘির বাঁকে মরাল থাকে
পানকৌড়ি রোজ আসে,
নীল আকাশে মেঘেরা ভাসে
ফড়িং লাফায় ঘাসে।

ডুবলে বেলা সাঁঝের তারা
ওঠে সাঁঝের আকাশে,
জোছনা রাতে তারার সাথে,
চাঁদ তাই বুঝি হাসে।



যাদের লেখা ও মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পেয়েছি তাদের মন্তব্যগুলি সরাসরি এখানে প্রকাশ করা হল। মতামতের জন্য কবি কোনমতেই দায়ী নয় এবং সেক্ষেত্রে মহামান্য এডমিনের সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
সহৃদয় পাঠক ও প্রিয়কবির কোন মন্তব্য বাংলা কবিতা আসরের মর্যাদা হানিকর হিসাবে বিবেচিত হয় সেই পরিস্থিতিতে সেই মন্তব্য প্রকাশ করা হলেও কর্তৃপক্ষের আদেশানুসারে তা অবশ্যই মুছে দেওয়া হবে।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------

শ ম শহীদ লিখেছেন:
আহা কতো সুন্দর কাব্য...কতো সুন্দর বর্ণনা!
--------------
শঙ্কর সেহানবীশ লিখেছেন:
খুব সুন্দর ছন্দ ।ভালো লাগলো ।
-----------------------
গোপাল চন্দ্র সরকার লিখেছেন:
অপূর্ব ছন্দময়, প্রকৃতির রূপ অপরূপে কাব্যে প্রকাশ !
মধুর কাব্যে মুগ্ধ ! অশেষ শুভেচ্ছা জানাই প্রিয়কবি ।
-------------------------
রিঙ্কু রায় (আবৃত্তিকার) লিখেছেন:
অসাধারণ ছন্দ...
---------------------------
ডাঃ প্রদীপ কুমার রায় লিখেছেন:

ছন্দে ছন্দে মনের আনন্দে
গাহেন প্রকৃতির গান,
প্রকৃতির কবি ভাণ্ডারী কবি
জানাই স্যালুট-সম্মান।

লিখে যান প্রতিদিন এমন সুন্দর কবিতা,মন ভরে উঠুক আনন্দে।ভালো থাকুন প্রিয় কবি,জানাই ভালোবাসা শ্রদ্ধাবনত চিত্তে।
--------------------------------------
মোজাহারুল ইসলাম চপল (প্রসূন কবি) লিখেছেন:
মনোহর ছন্দমাদকতায় পল্লিবাংলা র রূপ দেখলাম শুভেচ্ছা কবিবর
---------------------------
মোঃ জাহিদ হাসান লিখেছেন:
অজয়ের গায়ে প্রকৃতির ছায়ে কাব্য পাঠে মুগ্ধ হলাম।
ধন্যবাদ প্রিয় কবিবন্ধু।
শুভেচ্ছা রইল আলোকিত আগামী প্রভাতের।
---------------------
আবু কওছর লিখেছেন:
অজয় নদীর রূপ সৌন্দর্যে কবি মশগুল!
তাইতো এত চমৎকার ছন্দের কাব্য। নদী প্রেমের সার্থক পরিবেশনা।
শুভকামনা প্রিয় কবিবর।
---------------
শাহিন আলম সরকার লিখেছেন:
দারুণ লেখা।
শুভেচ্ছা ও ভালবাসা রইল।
ভাল থাকুন প্রিয় কবি বন্ধু।
--------------------
পারমিতা (অনুরাধা) লিখে্ছেন:
চমৎকার!
শুভেচ্ছা অশেষ!
------------------
সঞ্জয় কর্মকার লিখেছেন:
অপূর্ব সুন্দর লিখেছেন প্রিয় কবি।
মহাধাম সুখ নীড় অজয়ের জলোধারা,
কলো কলো উছলেতে টুপ টুপ
বারিধারা।
ঝুপ ঝুপ পরে জলে উদ্বেলে ছিঁটে জল,
হারু নিধি রাম গুপি জলোকেলি
কোলাহল।
অশান্ত সমীরণে উঁচু নিচু ঢেউগুলি,
জল স্ফিত ফুলে ওঠে-মাঝি গেয়ে
ওঠে কলি।
ত্রস্তেতে বঁধুগুলি তাড়াতাড়ি ঘরে ছুটে,
হাত ধরা মাথা উঁচু-দুই হাত
আঁচলেতে।
নিরু কাকা নৃত্যেতে বারিধারা ভিজে চলে,
রাম শ্যাম যদু মধু-তারি পিছে পিছে
চলে।
কাশ বনে ঢেউ ওঠে তরঙ্গে রাশি মেলা,
অজয়ের জলে মেতে-শিশুগুলি
করে খেলা।
ঝর ঝর ঝর ঝর অঝোরেতে বারি ঝরে,
কর কর কর কর হুঙ্কারে
বাজ পরে।
মাতা সবে ছাতা হাতে নদীপারে রব দেয়,
ফিরে চল ঘরে সবে-আকাশটা
ভাল নয়।
যদু কথা শুনে নাই তাই মাতা লাঠি হাতে,
মারে তারে ঠুস ঠাস-পথ দিয়ে
যেতে যেতে।
শুনশান হয়ে গেল অজয়ের পার ঘাট,
চলো যাই ঘরে ফিরি-কলমটা
তোলা থাক।
সকাল থেকে নেটে লাইন নাই তাই কিছুক্ষণ আগে ভিড়ে ঠাসা এক কাফেতে বসে লিখছি। আন্তরিক শুভকামনা রইল।
------------------------
রনজিত মাইতি লিখেছেন:
কোনও কথা হবেনা না। সুন্দর ও সুখপাঠ্য কবিতা । শুভেচ্ছা জানবেন।
------------------
শরীফ জাকের লিখেছেন:
অসাধারণ চিত্রায়ন। ঈদের শুভেচ্ছা রইলো...
-------------------
মনোজ ভৌমিক (দুর্নিবার কবি) লিখেছেন:
প্রকৃতির এই নিরাভরণ রূপ আর দেখি নাই এ আসরে।সুন্দর প্রকাশ কবিবর।জয়গুরু!!!
খুবই সুন্দর রঙ তুলিতে অজয় তীরের গ্রামের চিত্রায়ন।শুভকামনা নিরন্তর কবিবর।জয়গুরু!!!
--------------------------
তাপস গুহঠাকুরতা লিখেছেন:
দারুণ ছন্দময়।
-----------------------
সবশেষে আমার মন্তব্য :

বাংলা কবিতা আসরের সকল প্রিয়কবি ও সকল মন্তব্যকারীদের আমার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই। শুভকামনা রইল নিরন্তর, অবিরাম ও সতত।
আগামী পর্বে আরও অনেক মন্তব্য প্রকাশ করার আশা রাখি।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। সবাইকে শুভ দীপাবলীর আগাম শুভেচ্ছা জানাই।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:০৩

নজসু বলেছেন: জয়গুরু।
সকলের মঙ্গল হোক।

২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: আমি আগামী বছর লোককাতা যাবো অজয় নদী দেখতে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.