নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন

লক্ষণ ভান্ডারী

কবিতা

লক্ষণ ভান্ডারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহাকালী স্তবগাথা

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০০

মহাকালী স্তবগাথা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

আজ দেবী মহাকালীর পূজা। অমাবস্যার ঘনান্ধকারে, গভীর নিশাকালে, মায়ের পূজা অনুষ্ঠিত হয়। দেবীকে তুষ্টা হয়ে উগ্রা মূর্তি ত্যাগ করে শান্ত সৌম্যা শ্যামা মূর্তিতে আবির্ভূতা হন। বিশ্বচরাচরে পূজিতা হন। কোথাও বা ছিন্নমস্তা কালীর পূজা করা হয়ে থাকে। উগ্রচণ্ডা কালীর দক্ষিণ হস্তে থাকে খড়্গ ও ত্রিশুল। তিনি ভীমা ভয়ংকরী মূর্তিতে রণচণ্ডিকা রূপে কালরাত্রিতে বিরাজমানা। শ্যামা কালীর বাম হস্তে থাকে খড়্গ ও নরমুণ্ড। বরাভয় দান করে তিনি অশুভ শক্তির বিনাশ করেন।
ভয়ার্ত বিশ্ববাসী আর্তকণ্ঠে বলে ওঠে—

দেবী কালী চণ্ডিকা, করালিনী মা ছিন্নমস্তা-
তুমি শক্তি, তুমি ভক্তি!
তুমি কলাকাষ্ঠা, কালরূপে অবস্থিতা,
তোমার পূণ্য স্তবগাথায় দিকে দিকে
ধ্বনিত হোক মঙ্গলশঙ্খ, জ্বলে উঠুক
মঙ্গল দীপ, প্রজ্বলিত হুতাশনের
দেদীপ্যমান কিরণে ধরণীর কোণে কোণে
ঘনঘোর তমসা বিদুরিত হোক।



ধরণী হোক প্রাণময়ী। হে মা কল্যাণময়ী!
তোমার আগমনে সারা বিশ্বচরাচরে
বিশ্ববাসীর স্বীয় কল্যাণে বিশ্ববাসী
গেয়ে উঠুক--

তারা তুমি, তুমি মা কালী,
তুমি দুর্গা মহামায়া।
তুমি শক্তি, তুমি মা ভক্তি
তুমি কালরূপী ছায়া।

প্রণাম মন্ত্র:

কালী কালী মহাকালী কালিকে কালরাত্রিকে।
ধর্ম কাম প্রদে দেবী নারায়ণী নমোহস্তুতে।।

পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র:

ওঁ কালি কালি মহাকালি কালিকে
পাপহারিনি দেবী নারায়ণী নমস্তুতে,

এষ সচন্দন-পুষ্পবিল্বপত্রাঞ্জলিঃ নমঃ দক্ষযঞ্জ বিনাশিন্যে মহাঘোরায়ৈ যোগিনী কোটিপরিবৃতায়ৈ ভদ্রকাল্যৈ ভগবত্যৈ দুর্গায়ৈ নমঃ ||

মহিষাঘ্নি মহামায়ে চামুণ্ডে মুণ্ডমালিনী
আয়ুরোগয় বিজয়ং দেহি দেবী নমস্তুতে ।

এষ পুস্পাঞ্জলিঃ শ্রীমদ্দদক্ষিণকালিকায়ৈ নমঃ। এষ সচন্দন-পুষ্পবিল্বপত্রাঞ্জলিঃ মহাকালিকায়ৈ নমঃ


ঊড্ডিশ তন্ত্রকথা, কালীকা দেবীর জন্ম রহস্য।

একবার হিমালয়ের সুকমল রমনীয় স্থানে মহাকাল ভৈরব এবং নন্দী সহ আরো অনেক শক্তি গণদেবতা বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলছিলেন। সহসা সেখানে চারিযুগে অমর ঋষি মার্কেণ্ডেয়। তাকে দেখে নন্দী এবং অন্যান্য দেবগণ অতীব আনন্দিত হলেন।
অতঃপর কথোপকথোনের এক সময় উন্মত্ত ভৈরব ঋষিকে দেবী কালীর জন্ম তত্ত্ব জানাতে অনুরোধ করলে, তিনি বলেন ব্রহ্মা প্রকৃতির সহায়তায় ১০ জন মানুষ সৃষ্টি করলেন যথা ""মরীচি, অত্রি, অজ্ঞিরা, পুলস্ত্য, পুলহ, ক্রেতু, বশিষ্ঠ, দক্ষ, ভৃগু ও নারদ। এরা প্রত্যেকেই সত্তঃগুণসম্পন্ন হওয়ায় কেউই বংশ বিস্তারে রাজী হলেন না।

তখন ব্রহ্মা দক্ষকে বেছে নেন এবং তার উপর রজোগুন প্রয়োগ করে প্রজা সৃষ্টির প্রেরণা জাগালেন। অতঃপর তিনি কন্যা লাভের জন্য তাকে মহাকালীর তপস্যা করতে বলেন। দক্ষ পিতার আদেশ মেনে ১০০০০ বছর তপস্যা করে মহাকালীর দেখা পান। কিন্তু তাকে দেখেই দক্ষ ভয়ে প্রকম্পিত হলেন। মহাকালীর উগ্র রূপ, করাল বদন, সুবিশাল অস্ত্র সমেত বাহু দেখে দক্ষের প্রাণ ভয়ে কাঁপতে লাগলো। দেবী তার ভীত অবস্থা দেখে পরম মাতৃরূপে তাকে দেখা দেন।
দক্ষ দেবীর এই রূপ দেখে স্বস্তি ফিরে পেলো এবং দেবী কন্যা রূপে পাবার আকাংক্ষা ব্যক্ত করলেন। দেবীও তাকে তার প্রথম কন্যা হয়ে জন্ম নেবার প্রতিশ্রুতি দেন। তখন দক্ষ দেবীকে তার সম্পর্কে জানতে চাইলেন।

দেবী বললেন: আমি পরম শক্তি, সৃষ্টির বাহক, পরিচালক, ধারক, তড়িত এবং লয়। এই সকল আমারি শক্তি। সৃষ্টির অন্তরালে আমি যোগমায়া রূপে কর্ম, জ্ঞান, শ্রদ্ধা, বুদ্ধি, বিবেক ও চেতনা দ্বারা মুক্তির এবং মোক্ষ প্রদানের শক্তি দাত্রী। অপরদিকে পঞ্চ মহা তত্ত্ব, ও ছয় রিপু নিয়ন্ত্রণ করে জীবগনের জীবন রচনাকারক মহামায়া আমি। আমাতেই সমস্ত শক্তি একীভুত এবং আমার থেকেই বিভিন্ন ধারায় তা প্রবাহিত। হে দক্ষ একমাত্র শক্তিদায়ীনি আমি। সমস্ত সৃষ্টগণ যে শক্তি লাভ করে তা আমিই দিয়ে থাকি। হে দক্ষ, ঈশ্বর ছাড়া যেমন সৃষ্টি হবে না ঠিক আমি শক্তি না দিলে সেই সৃষ্টি মুল্যহীন। এই কথা শুনে প্রজাপতি দক্ষ অতীব প্রীত হলেন। এবং বারংবার দেবীকে অশ্রুসিক্ত নয়নে স্তব দ্বারা তুষ্ট করলেন।

অতপর দেবীর নিকট বিদায় নিয়ে সে সংসারে মনোযোগী হলো। দক্ষের মোট ২৮ টি কন্যা হয় এবং প্রথম কন্যাটি ছিলেন দেবী। তিনি সতী নামে জন্ম নেন এবং শিবের স্ত্রী হন। অপর কন্যাদের বিয়ে হয় চন্দ্রের সাথে এবং তারা যতদিন পৃথিবী থাকবে, ততদিন নক্ষত্র হয়ে চাঁদের পাশে অবস্থান করবে। ঋষির মুখ থেকে দেবীর জন্ম তত্ত্ব শুনে সকলেই খুব আনন্দ পেলেন এবং এই তত্ত্ব তাদেরকে জানানোর জন্য ঋষিকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানালেন।

ঊড্ডিশ তন্ত্রকথা, কালীকা দেবীর জন্ম রহস্য সমাপ্ত।

বাংলা সামহোয়্যার ব্লগের সকল কবি ও লেখকগণকে শুভ কালীপূজার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই। কালীপূজার আনন্দমুখর দিন ও শুভ দীপাবলীর দিনগুলি সকলের আনন্দে কাটুক,
এই শুভকামনা রইল। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন।
জয়গুরু জয়গুরু।


মহাকালী স্তবগাথা
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

জ্বলিছে আলোকমালা চারিদিকে আজি,
মহাশব্দে চৌদিকে পুড়িছে আতসবাজি।
বাজিছে কাঁসর ঘণ্টা জয়-ঢাক বাজে,
শ্মশানমাঝে মন্দিরে কালী মা বিরাজে।

দেবীর সম্মুখে হেরি ফলমূল মালা,
পঞ্চগব্য কোষাকুষি প্রসাদের থালা।
শুভক্ষণে দেবীপূজা করে ভক্তিভরে,
পুরোহিত শুদ্ধ চিত্তে মন্ত্র পাঠ করে।

মহা রাত্রি কাল-রূপা নৃমুণ্ড-মালিনী,
ছিন্নমস্তা তুমি কালী করাল বদনী।
উগ্রচণ্ডা মহাকালী তুমি মা শঙ্করী,
অমাবস্যা শুভক্ষণে ঘোর বিভাবরী।

নিশিকালে কালীপূজা বিধিমতে হয়,
যূপ-কাষ্ঠে পশু বধ শাস্ত্র মতে কয়।
হোম যজ্ঞ পাঁঠাবলি, শাস্ত্রের লিখন,
কালীর বন্দনা গাহে ভাণ্ডারী লক্ষ্মণ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: জয় গুরু।

২| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫২

লক্ষণ ভান্ডারী বলেছেন: শুভ মহা কালীপূজার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
শুভ দীপাবলীর আগাম শুভেচ্ছা।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!

৩| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৫

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: লক্ষণদা, আপনাকে আর পৃথিবীর সকল হিন্দু ভাই-বোনদের কালীপূজার অনেক অনেক শুভেচ্ছা। শুভ দীপাবলী। :)

৪| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫১

নজসু বলেছেন: জয় কালী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.