নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্লগ হচ্ছে লেখা লেখির মাধ্যমে নিজের মতামত স্বাধীন ভাবে প্রকাশের একটি ভার্চুয়াল মাধ্যম। পেশাজীবি, ছাত্র, গৃহিনী সবাই যার যার মতো করে নিজের মতটা প্রকাশ করতে পারেন এই ব্লগের মাধ্যমে। তার প্রমাণ তো রয়েছেই অহরহ।
আজকে বর্তমানে দেশের যে পরিস্থিতি, সেই ব্যপারে সবাই যার যার দৃষ্টিকোন থেকে বিষয়টি বিবেচনা করছেন। যারা রাজনীতিতে সক্রিয়, তারা ভাবছেন একরকম,যারা রাজনীতির সাথে সক্রিয় নন, তারা ভাবছেন এক রকম। সবার ভাবনার মধ্যেই রয়েছে কিছু কিছু মত পার্থক্য। এই মত পার্থক্যকে মূল্যায়ন করতে যারা অপারগ, অসহিষ্ণু, মূলত তারা কখনোই গনতন্ত্রকামী হতে পারে না। মূলত তারা ডেমোক্রেট নয়, বরং হিপোক্রেট।
আজকের এই অস্থির পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছি না। আগেই বলেছি এক এক জন এক এক রকম করে বিষয়টি দেখছেন। সাধারণ মানুষ চায় একটু সুখে থাকতে। খেয়ে পরে নিজের মতো করে বাঁচতে। সেই নিশ্চয়তা সরকার দেবে, এটাই তাদের প্রত্যাশা। কিন্তু সেই প্রত্যাশা আমাদের কতটুকু পুরণ হয়েছে বিগত ৪২ বছরের স্বাধীন দেশে? ৭২ থেকে যে খুনোখুনির রাজনীতি শুরু হয়েছে এই দেশে,তার ধারাবাহিকত আজো বজায়ে রয়েছে।
৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার নেতা কর্মি খুন হয়েছে। কোথায় সিরাজ শিকদার বলে হুঙ্কারও শোনা গেছে, লাল ঘোড়া দাবড়িয়ে দেয়া, রক্ষী বাহিনী লেলিয়ে দেয়া, বিশেষ ক্ষমতা আইন তৈরী করে হেনস্থা করা, বাকশাল গঠন করা, চারটি পত্রিকা বাদে বাকি সব বন্ধ করে এক নায়কতন্ত্র কায়েম করা, দুর্ভিক্ষে শত শত মানুষের প্রাণ হাণি ঘটা, ৭ কোটি মানুষের আট কোটি কম্বলের হদিস না পাওয়া, ব্ঙ্গবন্ধুর সোনার খনি না পেয়ে চোরের খনি পাওয়ার আফসোস - এসবই প্রমাণ করে স্বাধীনতা পরবর্তি মানুষ মোটেও সুখে ছিলো না। খোদ বঙ্গবন্ধুকে জীবন দিয়ে এর মূল্য পরিশোধ করতে হয়েছে।
পরবর্তিতে সামরিক শাষন শুরু হলো। সেখানে একটি নতুন দলের পথচলা শুরু হলো। সেখানেও সামরিক ক্যু এর মাধ্যমে হাজার হাজার সামরিক কর্মকর্তাকে জীবন দিতে হয়েছে। সেই অস্থিরতার মূল্যও মেজর জিয়াকে জীবন দিয়েই পরিশোধ করতে হয়েছে।
এর পরে আবারো সেই সামরিক শাষন। স্বৈরাচার এরশাদের এক নায়কতন্ত্র। এই সময়েও গনতন্ত্রের মুক্তির দাবীতে শহীদ হয়েছেন, গুম হেয়েছেন শত শত মানুষ। শেষ পর্যন্ত নূর হোসেন, ডাঃ মিলনের জীবন সহ আরো শহীদের জীবনের বিনিময়ে আমরা ফিরে পেয়েছি গনতন্ত্র। ১৯৯১
মানুষ ভেবেছিলো, অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়েছি, এইবার বুঝি আমরা সমতল ভুমির দেখা পেলাম। কিন্তু না, পাইনি। সেই সময়ই প্রধান বিরোধী দল হুমকি দিয়েছিলেন এই সরকারকে একদিনের জন্যেও শান্তিতে থাকতে দেয়া হবে না। শুরু হলো আবারো সেই জালাও পোড়াও রাজনীতি। ঘাদানি কর্তৃক রাজাকারদের বিচারের দাবীতে সেই সরকারকে কুপোকাত করা হলো। নতুন সরকার গঠিত হলো। ১৯৯৬। কিন্তু সেই সময়ে গন আদালেতের রায় আর বাস্তবায়িত হয়নি। আবারো সরাকারে পরিবর্তন এলো। ক্ষেত রক্ষার জন্য দেয়া বেড়াতেই ক্ষেত খেয়ে ফেল্লো বলে মন্তব্য শোনা গেলো। অর্থাৎ তত্বাবধায়ক সরকার প্রধান জনাব লতিফুরকে বেড়া হিসাবে কাজে লাগিয়েছিলেন তৎকালীন সরকার। কিন্তু ফলাফল আশানুরুপ হয়নি। সরকারে আবারো এলো পরিবর্তন।২০০১। কিন্তু জনগন এবার দেখলো নতুন খেলা। ৯১ তে যাদের ফাসি চেয়ে দেশ অচল করে দেয়া হলো, তাদেরই হাত ধরাধরি করে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলোনে নামলেন প্রধান বিরোধী দল। আহা! আমে দুধে যেনো এক হয়ে গলো, আর বাদাড়ের আটি গেলো বাদাড়ে। ২০০৬। সরকারে এলো আবার পরিবর্তন। হলো ১/১১। নতুন করে সরকার গঠন। বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হলো। রাজাকারদের বিচারের জন্য ট্রাইবুনাল গঠন করা হলো। বাচ্চু রাজাকারের ফাসি হলো। কাদেরর মোল্লার হলো যাবজ্জীবন। শুরু হলো আবারো আন্দোলোন। যেই ট্রাইবুনাল বাচ্চুকে ফাসি দিতে পারে, সেই ট্রাইবুনাল ৫টি মামলা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণের পরেও কাদের মোল্লাকে ফাসি দিতে পারে না। কাদেরের ফাসির দাবীতে শুরু হলো শাহবাগে ব্লগারদের আন্দোলোন। এই আন্দোলনে একাত্বতা ঘোষনা করেছে বর্তমান সরকারী দল। শুরু হয়েছে আস্তিক নাস্তিকের খেলা। শাহবাগের প্রথম ইস্যু ছিলো কাদের মোল্লার ফাসি। পরবর্তিতে আরো কিছু ইস্যু সংযুক্ত হয়। যেমন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষনা, ইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনা সহ সমমনা প্রতিষ্ঠান বর্জন, মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতারের জন্য স্বারক লিপি প্রদান সহ নানাবিধ সরকারী চাহিদা পুরণে বিভিন্ন ধরণের ইস্যু। সেই সাথে হরতাল প্রতিহত করার মতো সহিংস আন্দোলোনেও শাহবাগের ব্লগারদের ব্যবহার করা হবে বলে ঘোষনা দেয়া হয়েছে। কারণ ব্লগাররা কোন দলের নয়। তারা দেশের স্বার্থে কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার বদ্ধমুল ধারণা তারাও আজ বায়াস্ড। নৈলে আওয়ামিলীগে থাকা ডজন খানেক রাজাকারদের বিচারের দাবী তারা করতে পারছেন না। এখানেও ঢুকে পড়েছে রাজনীতি। নিজ দলে ডজন খানেক রাজাকার রেখে ভিন্ন দলে থাকা রাজাকারদের বিচার করার কতটুকু নৈতিক অধিকার এই সরকারের আছে সেটা কেউ জিজ্ঞেস করতে পারছে না।
বর্তমানের এই পরিস্থিতি তো আর ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন দেখি না।এই অস্থির পরিবেশে আজ পর্যন্ত প্রায় শত মানুষ খুন হয়েছেন বিভিন্ন ভাবে।
দেশটাকে স্থিতিশীল রাখতে সরকারের কোন ভুমিকাই লক্ষ্যনীয় নয়। বরং আরো বেশী উষ্কানী মুলক তৎপরতা লক্ষনীয়।বিএনপির মিছিলেও ককটেল চার্জ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশ আরো অস্থিতিশীল হলে আমরা সাধারণ মানুষ কোথায় আশ্রয় নেবো? এদিকে পুলিশের একশান, আওয়ামিলীগের একশান, ওদিকে জামাতের একশান, বিএনপির একশান। আমরা সাধারণ জনগন আজ কোথায় আশ্রয় নেবো? আমরা আওয়ামিলীগ বিএনপি জামাত জাতীয় পার্টি বুঝি না। আমরা চাই স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা। ছেলে মেয়ে বাবা মা স্ত্রী সহ সবাইকে নিয়ে সাধ্য মতো সুখে থাকার নিশ্চয়তা। সরকার কি আমাদের সেই নিশ্চয়তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিতে উদ্যতো?
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:২১
নিরব বাংলাদেশী বলেছেন: Click This Link