নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেবার মাধ্যমে বন্ধুত্ব

ব্লগিং করে আনন্দ , সত্য সুন্দর শেয়ার করতে চাই

আহলান

ব্লগার

আহলান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু !

২৭ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:০০

সব কিছুতেই ক্লান্তি আছে। কিসে নেই ক্লান্তি? চাকরী বাকরী, ব্যববসা বানিজ্য, এবাদত বন্দেগী, সংসার জীবনের কর্মব্যস্ততা, সব জায়গাতেই রয়েছে ক্লান্তি। ক্লান্তির কারণেই কৃত কাজের উপর বিরক্ত উদ্রেগ হয়। পড়া শোনা করতে করতে যখন সেটা আর পিছু ছাড়েনা, তখন মনে হয় ধ্যুর! আর এই পড়া শোনা ভাল্লাগে না। কবে যে ছাই এইসব শেষ হবে!! হাপিয়ে উঠেই মানুষ ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে ওঠে।



ঠিক তেমনি এবাদত বন্দেগীতেও ক্লান্তি আসে। আর ক্লান্তি থেকেই বিরক্ত বা অবজ্ঞার সূচনা হয়। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগায় ইবলিশ শয়তান। আল্লাহর পথে চলতে থাকা মানুষগুলোকে সে এভাবেই বিপথগামী করে।

যখন কোন মানুষ আল্লাহর পথে চলা শুরু করে, শুরুতেই ইবলিশ বিভিন্ন প্রকারের বাহানা দিয়ে সেটা থেকে বান্দাকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করে। যেমন কেউ হয়তো ভাবছে এখন থেকে সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করবে। কিন্তু দেখা গেলো জামাতের সময়ই টিভিতে এমন একটি সিরিয়াল হচ্ছে, যেটা তার খুব প্রিয়। অনেকেই তখন ভাববে ,আচ্ছা থাক আগামী কাল থেকেই জামাতে যাব, আজকে ঘরেই পড়ে নিই। পরে হয়তো আবারও কোন কাজে জড়িয়ে ঘরে পড়াটাও নষ্ট হয়ে যায়, শয়তানের ধোকায় পড়ে। এভাবে শয়তানের বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে কোন বান্দা যখন নিয়মিত আল্লাহর কোন বন্দেগী করতে শুরু করে, তখন শয়তান আসে অন্য রুপে। সে তখন সেই বান্দাকে এবাদত বন্দেগীতে আরো উৎসাহ যোগায়, লক্ষ্য হচ্ছে বেশী বেশী করে বন্দেগী করিয়ে ক্লান্ত শ্রান্ত করে এবদত থেকে চিরস্থায়ীভাবে দূরে সরিয়ে দেয়া। যেমন কেউ ওজু করার পর ভাবলো তার ওজুটা ঠিক হয় নাই। সে আবার ওজু করলো। কিছু সময় পর মনে হলো, তার নামাজটা সহিহ হয় নাই। সুতরাং সে আবারো নামাজআদায় করলো,এভাবে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে সে অধিকবার একই এবাদতে নিজেকে নিয়োজিত করতে করতে একপর্যায়ে ক্লান্ত শ্রান্ত আর বিরক্ত হয়ে হয়তো বলেই ফেল্লো ধ্যুর! কি করি না করি ঠিক হয় না ভুল হয় ,বার বার এসব আর ভাল্লাগছে না ..... । ব্যাস! শয়তানের উদ্দ্যেশ্য সফল। অবশ্য সবাইকেই যে সে এভাবে কাত করতে পারবে , তা না। সে আরো বিভিন্ন ভাবে আল্লাহর বান্দাকে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে স্বচেষ্ট থাকে। যেমন একবার একজন আল্লাহর খাস বান্দা ঘুমিয়ে রয়েছেন। কোন এক নামাজের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাচ্ছে। শয়তান সেই বান্দার কাছে গিয়ে বল্লো, হুজুর! ও হুজুর!! জলদি উঠুন, নামাজের ওয়াক্ত যে চলে যায়!! শয়তানের ধাক্কাধাক্কিতে হুজুরের তন্দ্রা ছুটে যায়।তিনি দেখেন, আসলেই নামাজের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাচ্ছে, তিনি দ্রুত সালাত আদায় করে নিলেন। তারপর সেই শয়তানকে জিজ্ঞেস করলেন, কিরে!তুই তো মানুষকে নামাজ থেকে বিরত রাখার সব চেষ্টাই করিস, তবে তুই আমাকে নামাজের জন্য ডেকে দিলি কেন? শয়তান তখন মুচকি হেসে বল্লো, হুজুর! সাধেই কি ডাকছি? অন্য কেউ হলে তাকে আরো সুন্দর করে ঘুমিয়ে থাকার ব্যবস্থা করতাম। কিন্তু আপনি বলেই ডেকে দিয়েছি। হুজুর জিজ্ঞেস করলেন, কেন? শয়তান বল্লো, হুজুর এক ওয়াক্ত নামাজ ছুটে গেলে, আপনি আল্লাহর দরবারে যে পরিমানে রোনাজারী করতেন, মাফ চাইতেন আর চোখের পানি ফেলে বার বার তওবা করতেন, তাতে আল্লাহ তায়ালা আপনার উপর অধিক খুশি হতেন, যতটা খুশি তিনি আপনার দেরীতে নামাজ পড়ার জন্য হয়েছেন। সুতরাং আল্লাহ যেনো আপনার উপরে অধিক খুশি না হতে পারে, সেই কারণেই আমি আপনাকে ডেকে দিয়েছি।



এই ঘটনা থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, শয়তান প্রতিটি পদে পদে নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে মানুষকে আল্লাহ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে স্বচেষ্ট। মৃত্যুর সময় পর্যন্ত সে মানুষকে ধোঁকা দিতে থাকবে। একবার মৃত্যুপথযাত্রী এক ব্যাক্তি শয়তানের ধোকায় পড়লো। শয়তান তাকে বার বার বলতে লাগলো আল্লাহ এক নয়, অনেক। সে-ও যুক্তি তর্ক দিয়ে মনকে বোঝাতে লাগলো আল্লাহ এক অদ্বিতীয়। কিন্তু সে শয়তানের সাথে পেরে উঠছিলো না। হঠাৎ সে শুনতে পেলো, কেউ তাকে বলছে, হে অমুক! তুমি বলে দাও বিনা প্রমাণে, বিনা যুক্তিতে আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয়। তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। উক্ত ব্যাক্তি যখনই এই ধারণা মনে দৃঢ়ভাবে পোষন করতে লাগলো, ধীরে ধীরে শয়তানের কুপ্রভাব তার অন্তর থেকে দূর হয়ে গেলো। ঈমানের সাথে তার মৃত্যু হয়।



সুতরাং যারা যক্তি তর্ক, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়ে আল্লাহর অস্তিত্ব, একাত্ববাদ প্রমাণে স্বচেষ্ট, তারাও শয়তানের ধোকার বাইরে নয়। কারণ প্রমাণ না করতে পারলেই সে হেরে যাবে, এবং তার আস্থা ও বিশ্বাস ধ্বংস হয়ে যাবে। অথবা আজকে সে যা দিয়ে প্রমাণ করছে, আগামীকাল হয়তো সেটাই ভুল বলে মানুষ জানবে।



সুতরাং এসব দিক বিবেচনা করেই আল্লাহর পথে নিজেদেরকে অগ্রগামী করতে হবে। নিজের সাধ্য আগে জানতে হবে, সাধ্যকে বর্ধিত করার আপ্রাণ চেষ্টা থাকতে হবে, তারপরে এগোতে হবে। অনেকেই বলে আমি এটা করি ওটা করি, সুতরাং নামাজ পড়ে কি হবে, আগে ওগুলো বন্ধ করি, তারপরে আমি নামাজ ধরবো। এটাও শয়তানের ধোকা। আরে ভাই স্কুলে ভর্তি হলে তারপরে না ফাষ্ট সেকেন্ড হওয়ার চিন্তা। আমি ফাষ্ট হতে পারব না, এই চিন্তা করে যদি আমি স্কুলেই ভর্তি না হলাম,তাহলে তো আমার কোনদিনই ফাষ্ট হওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। যেনো আল্লাহর রাস্তায় চলতে গিয়ে ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে দমে না যাই। আর ক্লন্তি অনুভব করলে যেনো আল্লাহর সাহায্য প্রার্থণা করি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৩৩

আদম_ বলেছেন: বিনা প্রমাণে, বিনা যুক্তিতে আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয়। তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। পড়ে ভালো লাগল। সুন্দর লিখেছেন।

২৭ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৫৫

আহলান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই! পোষ্টের জোয়ারে কোন লেখাই বেশী সময় প্রথম পাতায় ঠাঁই পাচ্ছে না ..

২| ২৭ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:০২

আদম_ বলেছেন: সামু আজ প্রচন্ড ঝামেলা করছে লোড হতে।

২৭ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০১

আহলান বলেছেন: হুম, সেটাই দেখছি রে ভাই ....।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.