নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেবার মাধ্যমে বন্ধুত্ব

ব্লগিং করে আনন্দ , সত্য সুন্দর শেয়ার করতে চাই

আহলান

ব্লগার

আহলান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আ জ ব কা হি নী ......

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৭

একটি বইতে ইন্টারেষ্টিং একটি কাহিনী (সত্য/মিথ্যা জানি না) পড়লাম কিছুদিন পূর্বে। কাহিনীটা ভালো লাগলো, তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করি -

কোন এক সময়ে এক জঙ্গলে বসবাস করতেন এক দরবেশ ও তাঁর একজন শিষ্য। দরবেশ সারা দিন সারা রাত আল্লাহর এবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকতেন আর শিষ্য তাঁর খেদমত করতেন। প্রতিদিন শিষ্য রাজ্যের শহরে যেতেন, লোকজনের থেকে সাহায্য সংগ্রহ করে সেগুলো নিয়েই দরবেশকে খাওয়াতেন। দরবেশ প্রতিদিন আল্লাহর দরবারে দোআ করতেন হে আমার রব! আপনি আমাকে গরীব অবস্থায় রেখেছেন। আমি আপনার কোন বান্দা বান্দির খেদমত বা উপকার করতে অপারগ। যদি আপনি আমাকে এই দেশের বাদশাহী দান করতেন, তবে আমি গরীবের জন্য কাজ করতাম, অসহায়কে সহায়তা দিতাম, অন্যায়ে অত্যাচারে জর্জরিত মানুষকে ন্যায়বিচার প্রদান করতাম। এভাবে প্রতিদিনই দরবেশ আল্লাহর দরবারে দোআ করেন। আর তার শিষ্য দরবেশের সাথে আমিন আমিন বলেন।

এভাবে মাসের পর মাস যায়, বছরের পর বছর যায়। দরবেশ দোআ করতেই থাকেন, শিষ্য আমিন আমিন করতে থাকেন। এভাবে দোআ করতে করতে দরবেশের দাড়িতে পাক ধরে। তাঁর দাঁত পড়ে যেতে থাকে, তিনি বয়োবৃদ্ধে ন্যুব্জ হয়ে কুঁজো হয়ে যান। এমতাবস্থায় আস্তে আস্তে শিষ্যের বিশ্বাসে চীড় ধরতে থাকে। এখন আর তিনি তার দরবেশের সাথে আমিন আমিন বলে না। মনে মনে সে রাগান্বিত হয়। সে ভাবে তার মুুর্শিদ কেবলার দোআ আর কবে কবুল হবে? তিনি আর কবে এই দেশের বাদশাহ হবেন? আর হলেও বা তিনি এই শরীরে কার কি উপকার করতে পারবেন? এমন সাত পাচ ভেবে শেষ পর্যন্ত সে নিজেই দোআ করতে শুরু করলো। তবে তার দোআটা ছিলো ভিন্ন প্রকৃতির। দরবেশ যখন বাদশাহ হয়ে গরীব দুঃখীর কল্যাণ করবেন বলে দোআ করতেন, শিষ্য তখন গরীব দুঃখি তথা সবার অমঙ্গল চেয়ে দোআ করতেন। দরবেশ যখন ন্যায়বিচার করবেন বলে বাদশাহ হতে চাইতেন, শিষ্য তখন অন্যায় অত্যাচারে দেশ ভরিয়ে তুলবেন বলে বাদশাহ হতে চেয়ে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করতেন। তার যুক্তি ছিলো এই যে, আল্লাহ যখন আমার দরবেশের করা দোআ কবুল করলেনই না, তখন তার বিপরীত দোআই আমি করি, যদি তা কবুল হয়!! শিষ্যের এহেন অবস্থা দেখে দরবেশ খুব রাগান্বিত হলেন। বকা ঝকাও করলেন, কখনো বা লাঠি হাতে তাকে তাড়িয়েও দিতেন।

এভাবে কিছুদিন চলার পর সেই দেশের বাদশাহ অসুস্থ্য হয়ে পড়লো এবং তিনি মারাও গেলেন। তখন কে বাদশাহ হবে তা নিয়ে উজির নাজির মন্ত্রীদের মধ্যে ব্যপক গোলোযোগ শুরু হলো। এমতাবস্থায় উজির প্রস্তাব করলেন পরের দিন ভোর বেলা রাজ্যে পূব পার্শ্বস্থ ফটক দিয়ে যে ব্যাক্তি প্রথমে প্রবেশ করবেন, তাকেই তারা বাদশাহ মনোনিত করবেন।

ভাগ্য ক্রমে সেই শিষ্য সেদিন ভোরে দরবেশের জন্য খাদ্য খানা যোগাড় করতে শহরে উপস্থিত হন এবং উজির নাজিরের লোকজন তাকে ধরে বাদশাহীতে বসিয়ে দেন। ভাগ্যক্রমে বাদশাহ হয়ে শিষ্য তার ওয়াদাহ অনুযায়ী দেশে অন্যায় অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দিলেন। লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে উঠলো। একপর্যায়ে নতুন বাদশায় আদেশ করলেন রাজ্যের যত পীর ফকির দরবেশ আছে সবাইকে বন্দি করে হত্যা করার। উক্ত দরবেশ অবশ্য আগে থেকেই উক্ত রাজ্য ছেড়ে অন্য রাজ্যে চলে গিয়েছিলেন, কারণ তিনি তার শিষ্যের মনোভাব খুব ভালো করেই জানতেন।

এমতাস্থায় উক্ত উজির বহুকষ্টে উক্ত দরবেশের নতুন রাজ্যে হাজির হন। তিনি দরবেশকে অনুরোধ করেন তার সাথে পূর্ব রাজ্যে ফিরে যেতে এবং তার শিষ্যকে অত্যাচার না করার জন্য অনুরোধ করতে বলেন। দরবেশ প্রথমে যেতে রাজী না হলেও পরে উজিরের অনেক পীড়াপিড়িতে যেতে রাজী হন। শিষ্য তার মুর্শিদ কেবলাকে দেখে প্রথমে খুব খুশি হলেন এবং বল্লেন হুজুর! আপনি আমার কাছে যা খুশি চাইতে পারেন। তখন দরবেশ বল্লেন ,দেখো বাবা! আল্লাহ তোমাকে বাদশাহী দান করেছেন, আমি আমার জন্য তোমার কাছে কিছু চাই না, আমি আবেদন করছি, তুমি গরীব দুঃখির সহায় হও, ন্যায় বিচার করো। তখন শিষ্য রেগে আগুন হয়ে গেলো। তিনি দরবেশকে উত্তর দিলেন, হে আমার মুর্শিদ! বছরের পর বছর আপনি এসব চেয়েই আল্লাহর দরবারে চোখের পানি ঝরিয়েছেন, কিন্তু আল্লাহ আপনার দোআ কবুল করেন নাই, পক্ষান্তরে আমি যখনই আপনার দোআর বিপরীত দোআ করেছি, আল্লাহ তখনই তা কবুল করেছেন এবং আমাকে বাদশাহী দান করেছেন। সুতরাং আল্লাহ যদি এই রাজ্যের মানুষকে সুখে রাখতে চাইতেন, তাহলে আপনাকেই বাদশাহী দান করতেন, আমাকে না। এই দেশের মানুষের আমল যদি ঠিক হতো, সত্যই যদি এরা ন্যায়বিচার প্রার্থী হতো, সত্যই যদি এরা কল্যাণ লাভের উপযোগী হতো, তাহলে আল্লাহ অবশ্যই কোন না কোন ভাবে আপনাকেই বাদশাহ বানাতো। কিন্তু এরা বড়ই দূর্ভাগা, ভালো মন্দ, ন্যায় অন্যায়, সৎ অসৎ বিচার বিবেচনা করার মতো বোধ শক্তি, বিবেক বুদ্ধি এদের নাই। সেই জন্যই আল্লাহ তাআলা এদের বদকর্মের শাস্তি দেয়ার জন্যই আমাকে বাদশাহী দান করেছেন। আপনি জানেন এদের উপর অন্যায় অত্যাচার করতে আমি আল্লাহর দরবারে ওয়াদাবদ্ধ। সুতরাং আপনি আপনার অনুরোধ ফিরিয়ে নিন।

এতক্ষন দরবেশ মুখ বুজে সব শুনলেন। সব শুনে তিনি বল্লেন, হে বৎস্য! সত্যই তুমি সত্যের অনুসারী। এই লোকেরা যদি আল্লাহর পক্ষ হতে উন্নত আচরণ লাভের যোগ্য হতো, তাহলে আমার সারা জীবনের দোআ বিফলে যেতো না। এই লোকেরাই আমার পরিবর্তে তোমাকে বাদশাহ মনোনীত করেছেন। সুতরাং তুমি তোমরা ওয়াদাকৃত কাজ সম্পন্ন করতেই পারো .....

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৭

এম এ কাশেম বলেছেন: সত্যি আজ তাই হচ্ছে..............

রূপক হলে ও শিক্ষনীয়।

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০৬

কাহাফ বলেছেন:

শেখার অাছে অনেক কিছু!!
ধন্যবাদ অাপনাকে!

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৯

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
আমি বলি- বিবেক বুদ্ধি সবই আছে কেবল ইচ্ছেটা নাই কারণ
খাই খাই খাই ...

শেয়ার করে ভালো করেছেন, আহলান।

৪| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৫৭

আহলান বলেছেন: সবাইকে পড়ার জন্য ধন্যবাদ...

৫| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৮

কলমের কালি শেষ বলেছেন: কথায় যুক্তি আছে ।

৬| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৬

খেলাঘর বলেছেন:

মোটামুটি।

রাজতন্ত্রে, কেহ আল্লাহের কারণে রাজা হয়নি, হয়েছে বুদ্ধি ও শক্তি যোগাড় ও ব্যবহার করে; ফলে, এই সময় এ ধরণের গল্প তেমন শক্তিশালী উদাহরণ নয়।

৭| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২২

ঢাকাবাসী বলেছেন: রূপকার্থে ভাল লাগল্

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.