নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
..... আমার মায়ের কান্না আমি সইতে পারি না, দোহাই মা আমার লাইগা আর কান্দিস না ..... গানটি বাংলা কোন এক সিনেমার গান। কিন্তু আমি গানটা আমি এই ভাবে গাই না । আমি গাই আমার বউয়ের কান্না আমি সইতে পারি না, দোহাই বউ আল্লাহর কসম, আর কান্দিস না .....
...... এভাবে গাব না তো কি? সেই ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি আমার মায়ে যখনই আমার বাপের কাছে আব্দার করে বলছে যে অমুক জিনিষটা খেতে মন চেয়েছে, আবার বাপ তখনই বাজার থেকে যেভাবেই হোক সেইটা এনে দিয়েছে, আবার যখন আমার বুইড়া দাদি আমার বাপেরে বলছে যে বাজান! আমার পান ফুরায়া গেছে বা কলার মোচা কিন্যা আনিস, আমার বাপে বলছে, ধ্যুর মা! পান পুন খাওয়া ছাড়ান দেও আর এই শহরে কলার মোচা পাওয়া যায় না.....।
আবার আমার মায়ে যদি বলছে আমার একটু বাপের বাড়ি বা ভায়ের বাড়ি বেড়াতে যাইতে মন চায়, আমার বাপে লগে লগে বেবী টেক্সি (সেই আমলে সিএনজি নামটাই ছিলো না) ভাড়া কইরা আমাদেরকে পাঠায়া দিছে। আবার আমার বুইড়া দাদি যখন আমার বাপরে কইছে, বাজান ! মনুর বাপেরে একটু দেখতে মন চায়। বেচারা খুব অসুস্থ্য । আামর বাপে বলছে ..তুমি এইডা কি কও মা! মনুর বাসা সেই কুন দূরে ... বেবিতে যাইতে আসতে ৫০০ টাকা খরচ! তার উপরে তোমার মনে নাই, ছোট কালে মনু আমারে ধাক্কা মাইরা পুকুরে ফালায় দিছিলো? হ্যার বাসায় যামু আমি ...তুমি যে কি কও না মা?
আমার মায়ে যদি কইতো আজকে আমার মাথা ব্যথাইতাছে। আমার বাপে লগে লগে বাড়িতে খান ডাক্তারকে ডেকে নিয়ে আসতো। ঘর ভরে যেতো ফল মূলে। মায়ে কি খাইব, কি না খাইবো শুনতে শুনতে বাপে আমার পেরেসান হয়া যাইত। আর আমার বুইড়া দাদি কাশতে কাশতে ধনুকের মতো বাকা হইয়া গেলেও আমার বাপ কোন দিন ডাক্তার আনে নাই। কইছে মা তুমি মধু আর তুলসী পাতার রস ঠিক মতো খাইতে পারো না?
কোন কারণে আমার মায়ের কোন আব্দার অপূর্ণ থাকলে সেদিন বাসায় কুরুক্ষেত্র বেধে যেতো। বাপের সাথে মায়ের তিন দিন কথা বন্ধ থাকতো। বাপে খুনের আসামীর মতো মায়ের পিছ পিছ ঘুরতো মান ভাঙানোর জন্য। অথচ আমার দাদি এতো অবহেলার পরেও যত দিন বেচে ছিলো ততদিন রাত জেগে বসে থাকতো কখন তার বাজান অর্থাৎ আমার বাপ ঘরে ফিরবে।
এই সব দেখে দেখে আমি বড় হইছি। আমিও এখন ঠিক এভাবেই আমার বউয়ের খেদমত করি আর মায়েরে কই তুমি মধু আর তুলসি পাতা ঠিক মতো খাইয়ো।
এখন আপনারাই বলেন, আমি যে গানটা গাই সেটা কি ভুল কিছু গাই .... ??
(আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষ্যে)
২| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৫
মানবী বলেছেন: এই পোস্টটি কয়েকদিন আগে পড়ে মন্তব্য করতে লগইন করেছিলাম, ভীষণ ব্যস্ততার কারনে সম্ভব হয়ে উঠেনি!
"এই সব দেখে দেখে আমি বড় হইছি। আমিও এখন ঠিক এভাবেই আমার বউয়ের খেদমত করি আর মায়েরে কই তুমি মধু আর তুলসি পাতা ঠিক মতো খাইয়ো।
এখন আপনারাই বলেন, আমি যে গানটা গাই সেটা কি ভুল কিছু গাই .... ?? "
-- আপনার দাদীর সাথে যা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে অন্যায় ও দুঃখজনক। তবে আপনি আপনার বাবার মতো একই ভুল যদি করেন তাহলে ভেবে দেখুন আপনার সন্তানও আপনার প্রতি কি পরিমান অশ্রদ্ধা আর নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে বড় হবে! তা নিশ্চয় আ[নার কাম্য নয়! মা বাবা যেমনই হোক, তাঁরা আমাদের জন্মদাত্রী, জন্মদাতা। তাঁদের সাথে অন্যায় আচরন করার অধিকার আমাদের কোনভাবেই নেই। তাঁরা ভুল করে থাকলে সেই শাস্তি দেবার ভার কখনও সন্তানের নয়।
আপনার দাদীর প্রতি আপনার ভালোবাসা আর অনুভূতি খুব ভালো লেগেছে তাই মনে হলো, আপনার সন্তান যেনো তার বাবা মার প্রতি কোন বিরূপ মনোভাব নিয়ে বড় না হয়।
ওহ্, আর ঠান্ডা, সর্দি, কাশি ইত্যাদিতে ঔষধপত্রের চেয়ে মধু, তুলসী, লবঙ্গ টাইপের ভেষজ অনেক অনেক বেশি উপকারী :-)
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। অনেক অনেক ভালো থাকুন।
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০৯
আহলান বলেছেন: এভাবেই তো বংশ পরম্পরায় পারিবারিক ভাবে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছেন, মূলত সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ধন্যবাদ মানবী ..
৩| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:১৭
মানবী বলেছেন: "এভাবেই তো বংশ পরম্পরায় পারিবারিক ভাবে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছেন, মূলত সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি"
- আসলে মনে হয় হচ্ছেনা। মা বাবা অন্যায় করলেই সন্তান সকল ক্ষেত্রে সেই অন্যায় করেনা।
একজন ভদ্রলোককে জানি তিনি দেশ থেকে তাঁর মা এসেছেন দেখে নিজ হাতে মায়ের পছন্দ করা খাবার রেঁধে খাওয়ান, শত ব্যস্ততার মাঝে কিছুক্ষণ পর পর ফল কেটে দেয়া, দুধ গরম করে দেয়া, বাইরে যাবার সময়মাকে গরম পোশাক পড়িয়ে চেইন লাগিয়ে দেয়া খুঁটিনাটি সব কিছু নিজে করতে চেষ্টা করেন। নিজের স্ত্রী সন্তানদের সকল প্রয়োজন ভুলে মাকে অগ্রাধিকার দেন সব বিষয়ে। তাঁর স্ত্রীও মেনে নেন আর দোয়া করেন নিজ সন্তান যেনো বাবার মতো এমন হয়... অথচ এই ভদ্রলোকের মা নিজের সাংসারিক জীবনে শশুর বাড়ির মানুষদের নিজের বাসায় প্রবেশ করতে দিতেননা। ভদ্রলোকের বাবার অনুমতি ছিলোনা একই শহরে বাস করা আপনা ভাইদের সাথে দেখা করার!
ভেবে দেখুন, সেই মায়ের সন্তান অথচ কতোটা অন্যরকম!
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৬
আহলান বলেছেন: হুম .. ঠিকই তো । সবাই তো আর অমানুষ হয় না ...... নচিকেতার গানের মতো সব মস্ত অফিসাররা কিন্তু ওরকম নয় , যেরকম নচিকেতা গেয়েছেন .......
৪| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:২৯
নিরীহ জন বলেছেন: যেহেতু এটাও এক ধরণের নারী নির্যাতন, তাই এ নির্যাতন প্রতিরোধে আইন চাই। স্পষ্ট আইন।
এটাকে কারো ব্যক্তিগত ব্যাপার বলে এড়িয়ে যাওয়া ঠিক হবে না।
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৩
আহলান বলেছেন: ঠিক .. এটাও সামাজিক ব্যাধি ...... সমাজ থেকে নির্মুল করতে হবে ..... ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৮
আহলান বলেছেন: ছেলে আমার মস্ত মানুষ মস্ত অফিসার ...নচিকেতার এই গান শুনলে কিন্তু আমাদের অনুভিুত চরমে পৌাছে যায় ...