নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলায় একটা কথা আছে। শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। মানুষের জীবনের অন্তীম মুহূর্তটা আসলেই তাই। পৃথিবী ছেড়ে তার চলে যাওয়াটা যদি ভালো হয় অর্থাৎ ঈমানের সাথে যদি সে যেতে পারে, তবে তার সব কিছুই ভালো। সব কিছু ভালো বলতে তার পরলৌকিক জীবনটা হবে আনন্দময়। কষ্ট ক্লেষ, সাওয়াল জবাব কোনকিছুতেই তার আটকাবে না। তবে এই মধুরেণুসমপায়েৎ - কার বরাতে জুটবে এই কথা কেউই হলফ করে বলতে পারে না। একজন ব্যক্তি সারা জীবন নামাজ রোজা যাকাত হজ্জ সম্পন্ন করলো, সারাজীবনই সে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের পথে চল্লো- তার মানে এই না যে সে ঈমানের সাথে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে পারবে। হাদিস শরীফে এসেছে যার ভাগ্যে জান্নাত আছে, সে যতই খারাপ কাজ করুক না কেন, মৃত্যুর আগে সে এমন কিছু ভালো কাজ করবে, যা তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে, ঠিক তেমনি, যার বরাতে জাহান্নাম লিখিত আছে, সে যতই ভালো কাজ করুক না কেন, মৃত্যুর আগে সে এমন কিছু কাজ করবে, যা তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাবে।
সুতরাং মানুষের জীবনের শেষ ফিনিশিংটা কি হবে, এটা কেউই বলতে পারে না। আর এই কারণেই বলা যায় না যে, যে লোক সারা জীবন নামাজ রোজা করলো, সে সোজা জান্নাতে চলে যাবে, আর যে লোক সমাজে বদকার হিসাবে পরিচিত, সে জাহান্নামে চলে যাবে। এই ফয়সালা একমাত্র মহান রাব্বুল ইজ্জতের হাতেই নিহীত।
কথিত আছে, হযরত মুসা (আঃ) এঁর আমলে একজন বদকার লোক ছিলো। সে মারা যাবার পর লোকে তার সৎকার না করে ভাগাড়ে ফেলে দেয়। আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত হযরত মুসা (আঃ) কে নির্দেশ দিলেন দ্রুত ঐ ব্যক্তির সৎকার করার জন্য। না হলে তার নব্যুয়তিই বাতিল হয়ে যাবে। নির্দেশ পেয়ে হযরত মুসা (আঃ) দ্রুত তার লাশ ভাগাড় থেকে তুলে সৎকার করেন। অতঃপর মহান রাব্বুল ইজ্জতের কাছে জানতে চান, হে মহান আল্লাহ! সমাজে সকলের নিকট বদকার বলে পরিচিত এই লোকটার জন্য আপনি আমার নব্যুয়তি বাতিল করে দিচ্ছিলেন? আপনার দরবারে এই লোকের এত সম্মানের কারণ কি? মহান রাব্বুল ইজ্জত জানান এই লোক প্রতি রাতে তাওরাত কিতাব পাঠ করতো, আর যেখানেই সে মোহাম্মাদ (সাঃ) এঁর নাম পেতো সেখানেই মুহব্বতের সাথে চুমা দিতো। তাঁর এই আমল আল্লাহর নিকট এতই প্রিয় হিসাবে গন্য হয়েছিলো যে, সমাজের সকল লোক তাকে বদকার ভাবলেও আল্লাহ তাঁকে তাঁর ঐ আমলের দ্বারা নাজাতের উছিলা করে দিয়েছেন।
কথিত আছে, একদা অনেক বড় একজন আল্লাহর ওলি ছিলেন। সর্বদা নামাজ রোজা তাসবিহ তাহলিলের মধ্যে দিয়ে তার জীবন কাটত। তার বাড়ির পাশে এক বুড়ি ছিলো। বুড়ির ছিলো একটি ধাড়ি ছাগল। প্রায় প্রতিদিনই ঐ বুড়ি সেই আল্লাহর ওলির কাছে প্রশ্ন করতো," হুজুর বলেন তো আপনার দাড়ি শ্রেষ্ঠ, নাকি আমার ছাগলের দাড়ি শ্রেষ্ঠ?" এমন প্রশ্নে হুজুর প্রত্যেকবারই বলতেন পরে জবাব দিবো। এমন করতে করতে উক্ত আল্লাহর ওলি ইন্তেকাল করেন। তাঁর লাশ যখন খাটিয়ায় বহন করে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন ঐ বুড়ি পথ আগলে দাড়ায়। সে লাশের প্রতি ইংগিত করে বলে," আমার প্রশ্নের উত্তর না পেলে আমি ওনাকে যেতে দিবো না। কার দাড়ি শ্রেষ্ঠ সেটা আমাকে বলে যেতে হবে।" গায়েব থেকে তখন আওয়াজ এলো," ও বুড়ি! জেনে রেখো আমার দাড়িই শ্রেষ্ঠ, কারণ আমি ঈমান নিয়ে আল্লাহর দরবারে আসতে পেরেছি। যদি ঈমান নিয়ে না আসতে পারতাম, তবে আমার মতো অধম আর কেউই হতো না, আর আমার দাড়িও তোমার ঐ ছাগলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হতো না..."
কোন এক যুদ্ধে একজন সাহাবী খুব জিহাদ করছিলেন। অনেক সাহাবি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এঁর কাছে এসে ঐ সাহাবির প্রশংসা করছিলেন। কিন্তু সাহাবিগন যতবারই ঐ সাহাবীর প্রশংসা করছিলেন, রাসুলে খোদা (সাঃ) ততবারই বল্লেন, জাহান্নামি! হুজুরে পাক (সাঃ) এঁর কথায় সব সাহাবীগন আশ্চর্য্য হলেন। পরক্ষণেই সংবাদ এলো ঐ সাহাবি যুদ্ধে মারাত্মক জখম হয়েছেন এবং সেই আঘাত সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যা করেছেন। তখন সবাই বুঝতে পারলেন, কেনো রাসুলে খোদা (সাঃ) উক্ত সাহাবি সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছিলেন।
০২ রা জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:০৭
আহলান বলেছেন: ডাক্তার সাহেব, হয়তোবা। তবে অনেকের শুরু আর মাঝটা ভালো থাকে না, পরবর্তীতে ভালো হয়ে যায়, এমন উদাহরণও কিন্তু আছে ভুরি ভুরি। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য .....
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৫
ডা. মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেছেন: শেষ ভাল হওয়ার আগে শুরুটা এমনকি মাঝেও ভাল হতে হবে ।