![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইয়েমেনী বাদশাহ তুব্বে আউয়ালের এক হাজার বছরের পুরানো চিঠির ইতিহাস.....
কিতাবুল মুসততরফ, হুজ্জুতুল্লাহেল আলামিনে এবং তারিখে আবনে আসাকেরে বর্ণিত আছে যে, হুজুরে পাক (সাঃ) এঁর পৃথিবীতে আগমনের হাজার বছর পূর্বে একজন ইয়েমেনের বাদশাহ ছিলেন যার নাম ছিলো- তুব্বে আউয়াল হোমাইরি। একবার তিনি দেশ পরিভ্রমণে বের হন। বাদশাহর সাথে ছিলো বহু সংখ্যক অশ্বারোহী, আলেম ওলামাগন ছিলেন। যেহেতু তিনি বিশাল বাহিনী নিয়ে পরিভ্রমণে বের হয়েছিলেন, তাই সকল জনপদ থেকেই তাকে দেখার জন্য, সম্মান করার জন্য দলে দলে লোকজন এসে জড়ো হয়েছিলো। এভাবে দেশ পরিভ্রমণ করতে করতে তিনি মক্কা শরীফের নিকটে পৌছান। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো মক্কা শরীফের কোন লোক তার বাহিনীকে দেখতে বা স্মান দেখাতে এলো না। এই ঘটনায় তিনি খুব আশ্চর্যবোধ করলেন। তিনি এর কারণ অনুসন্ধান করতে বল্লেন। কারণ হিসাবে তিনি জানতে পারেন যে, এই মক্কাতেই বায়তুল্লাহ নামে একটি ঘর (ক্বাবা শরীফ) আছে, লোকজন সেই ক্বাবাকেই সম্মান প্রদর্শনের জন্য দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসে এবং এই মক্কাবাসীদেরকেই সম্মান করে বিদায় নিয়ে চলে যায়। সেই কারণেই মক্কার অধিবাসিরা তার শান শৌকত দেখতে বা তাকে সম্মান করতে এগিয়ে আসার প্রয়োজন মনে করে না।
এই কথা জানতে পেরে তিনি খুব মর্মাহত এবং রাগান্বিত হন। তিনি মক্কাশরীফ আ্ক্রমনের জন্য দৃঢ় সংকল্প করেন। কিন্তু এর পরই তিনি খুব অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। অনেক চিকিৎসার পরেও তার রোগ ভালো হলো না। তখন তার বাহিনীর একজন জ্ঞ্যানী ব্যক্তি, আলেমে রাব্বানী,তাকে পরামর্শ দেন যে, যদি বাদশাহ কোন খারাপ সংকল্প করে থাকলে তা যেনো বাদ দেন। সেই মোতাবেক তিনি মক্কা শরীফ আক্রমনের সংকল্প ত্যাগ করেন এবং তওবা করেন। ফলে তিনি আরোগ্য লাভ করেন। এই খুশিতে তিনি ক্বাবা শরীফে রেশমী গিলাফ চড়ান।
এর পর তিনি মদিনা শরীফে গমন করেন। তার বাহিনীতে যে সকল জ্ঞ্যানী ব্যক্তি ছিলেন, তাদের অনেকেই পূর্ববর্তি আসমানি কিতাব সম্পর্কে জ্ঞ্যত ছিলেন। উক্ত আসমানী কিতাবে রাসুলে পাক (সাঃ) এঁর হিজরত সম্পর্কে যে সকব আলামতের কথা বলা ছিলো, তাঁরা মদিনা শরীফে সেই আলামত খুজে পান এবং রাসুলে পাক(সাঃ) এঁর খেদমত করার উদ্দেশ্যে মদিনা শরীফেই স্থায়ী ভাবে বসবাস করার জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হন। এই কথা শুনে উক্ত বাদশাহ ঐ সকল আলেম গনের জন্য সেখানে ৪০০ ঘর তৈরী করে দেন এবং উক্ত আলেমে রাব্বানীর গৃহের পাশে একটি দোতলা ঘর তৈরী করেন এবং অছিয়ত করেন যে যখন রাসুলে পাক(সাঃ) মদিনা শরীফে তাশরীফ আনবেন, তখন যেনো এই ঘরটি তাঁর আরামগাহ হয়। উক্ত বাদশাহ ঐ সকল আলেমগনকে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করে এখানেই চিরস্থায়ী ভাবে বসবাস করতে বল্লেন এবং আলেমে রাব্বানীর নিকট একটি চিঠি লিখে তা রাসুলের খেদমতে পেশ করতে বল্লেন। তিনি এও বলে দিলেন যদি আপনার জীবদ্দশায় রাসুলে পাক (সাঃ) এঁর আগমন নাও হয়, তবু যেনো বংশ পরম্পরায় এই চিঠির হেফাজত করা হয় এবং রাসুলের খেদমতে যেনো তা অবশ্যই পেশ করা হয়।
এভাবে ঐ চিঠিটি বংশ পরম্পরায় হেফাজত হতে হতে তা শেষ পর্যন্ত হযরত আয়ুব আনসারী (রঃ) এঁর নিকট এসে পৌছে। তিনি উক্ত চিঠিটি তার বিশ্বস্ত গোলাম আবু লাইলার নিকট হেফাজত করার জন্য রেখেছিলেন। যখন রাসুলে পাক (সাঃ) মক্কা শরীফ হতে মদিনা শরীফে হিজরত করেন, যখন তাঁর কাফেলা মক্কা শরীফের প্রান্ত সীমা অতিক্রম করে সানিয়তুল ঘাঁটি থেকে তাঁর উষ্ট্রি দৃষ্টি গোচর হলো, তখন সকল মদিনা বাসি মাহবুবে খোদা রাসুলে করিম (সাঃ) কে অভিবাদন জানালেন এবং সবাই রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে তাদের নিজ ঘরে তাশরীফ রাখার জন্য অনুরোধ করছিলেন।
এমতাবস্থায় রাসুলে খোদা বলেন, আমার উষ্ট্রির লাগাম ছেড়ে দাও। যেই ঘরের সামনে গিয়ে সে দাড়াবে ও বসে যাবে, সেই ঘরই হবে আমার অবস্থানের জায়গা। উল্লেথ্য যে, ইয়েমেনের বাদশাহ তুব্বে আউয়াল হোমাইরী যে ঘরটি রাসুলের জন্য তৈরী করেছিলেন, তা তখন হযরত আইয়ুব আনছারী(রাঃ) এর অধীনে ছিলো। উষ্ট্রিটি ঠিক সেই ঘরের সামনে গিয়েই দাড়িয়ে পড়ে। সবাই তখন আবু লাইলাকে বল্লো- ইয়েমেনের বাদশাহর সেই চিঠিটি হযরত রাসুলে খোদার নিকট পেশ করো। সে যখন চিঠিটি নিয়ে রাসুলে খোদার সামনে এলো, তখন রাসুলে খোদা (সাঃ) আবু লাইলাকে দেখে ফরমালেন তুমিই কি আবু লাইলা? এই কথায় আবু লাইলা আশ্চর্যান্বিত হয়ে গেলেন। রাসুলে খোদা পুনরায় ফরমালেন,আমি মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ, ইয়েমেনের বাদশাহর সেই চিঠিটা, যেটা তোমার হেফাজতে আছে, সেটি আমাকে দাও। অতঃপর উক্ত চিঠিটি পাঠ করে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, নেক বান্দা তুব্বে আউয়ালকে মোবারকবাদ!!
©somewhere in net ltd.