নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেবার মাধ্যমে বন্ধুত্ব

ব্লগিং করে আনন্দ , সত্য সুন্দর শেয়ার করতে চাই

আহলান

ব্লগার

আহলান › বিস্তারিত পোস্টঃ

জমি জমা কেনার আগে কিছু বিষয় ভালো ভাবে জেনে নিন ..... কিছু প্রতারণা আছে, যা আগে বোঝার কোন উপায় নেই!!

০২ রা আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:৪৪



আমাদের সমাজে তথা সমগ্র দেশেই জমি জমা কেনা বেঁচা করা আমাদের জীবনের একটি অংশ। এক টুকরো নিষ্কন্টক জমি কিনে তার মালিক হওয়া ও ভোগ দখল করা চরম সৌভাগ্যের বিষয়। আমাদের দেশে তথা ভারত উপমহাদেশে সর্বপ্রথম যে সার্ভে অপারেশন হয় তার আলোকে যে রেকর্ড তৈরী হয় তার নাম সি,এস অর্থাৎ ক্যাডেষ্ট্রাল সার্ভে। জামি জমার মালিকানা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে এটি এখনো যে কারোর কাছে বাইবেল। এটাকে কোন ভাবেই অবহেলা করার সুযোগ নেই। এর পর যেই সার্ভে অপারেশন হয় তার আলোকে যে রেকর্ড তৈরী হয় তার নাম এস,এ অর্থাৎ স্টেট একুইজিশন। ভারত উপমহাদেশ ভাগ হওয়ার সময় ও আগে পরে দিয়ে এই রেকর্ডের কাজ সম্পন্ন হয়। সি,এস এর সাথে এর মোটামোটি মিল পাওয়া যায়। পরবর্তিতে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরবর্তি যেই সার্ভে অপারেশন হয় তার আলোকে যে রেকর্ড তৈরী হয় তার নাম আর, এসঅর্থাৎ রিভিশনাল সার্ভে। এই সার্ভের সাথে পূর্ববর্তী সি,এস ও এস,এ-র বিস্তর ফারাক পরীলক্ষিত হয়। শত শত খতিয়ান ও শত শত দাগে জমি ভাগ হয়ে রেকর্ডটি সম্পন্ন হয়। এর পরে বর্তমানে যে সার্ভে অপারেশন চলছে তার নাম বি,এস বা বাংলাদেশ সার্ভে। ঢাকায় এটা সিটি জরিপ বলে অধিক পরিচিত।

যে কোন ফ্রী হোল্ড জমি জমা কিনতে গেলে অবশ্যই টাইটেল ডিড (বর্তমান মালিকের দলিল) এর সাথে ভায়া ডিড (পূর্ববর্তী মালিকের দলিল) এবং সাল বা পিরিয়ড অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট রেকর্ডে (সিএস,এসএ, আর,এস, বিএস) মালিকের নামে কতটুকু জমি রেকর্ড হয়েছে অর্থাৎ মালিকের হিস্যা পূঙ্খানুপূঙ্খরুপে হিসাব করে মালিকানা নিশ্চিত হয়ে সার্ভেয়ার দিয়ে জমি মেপে (যেটুকু যে দাগ থেকে কিনেছেন, সেটুকু) দখল বুঝে নিয়ে তবেই জমি রেজিষ্ট্রি করে নিতে হয়।

জমি কেনা শেষ। এবার কি করবেন? এক টুকরো জমি কিনেছেন, তার জন্য সরকারের ঘরে খাজনা দিতে হবে না! কিভাবে দেবেন? তার জন্যই নামজারী করতে হয়। সরকারী তহশীল অফিস ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এই দুই অফিসের যৌথ কার্যক্রম সমন্বয়ে আপনার খরিদকৃত জমি হতে আপনার নামে সরকার খাজনা গ্রহণ করবে, অর্থাৎ আপনি খাজনা দেয়ার অধিকার লাভ করবেন, অর্থাৎ আপনার মালিকানা সরকারের ঘরে এন্ট্রি হলো বা রেকর্ড হলো। সরকার যদি আপনার নামে খাজনা রশিদ না দেয়, ধরে নিতে হবে আপনি ঐ জমির মালিক নন। (ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত জমির কথা এখানে আলোচ্য নয়।) সুতরাং সেই ক্ষেত্রে মালিকানাসত্ব প্রমাণের জন্য নামজারী খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

জমির মালিকানা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে দুটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ইন্সট্রুমেন্ট আমরা পেলাম। এক টাইটেল ডিড, দুই নামজারী। এখন আসেন একটি বাস্তব সমস্যার সাথে আপনাদেরকে পরিচয় করিয়ে দিই। সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে আপনি যখন কোন দলিল রেজিষ্ট্রি করতে যাবেন, তখন সেই দলিলের সার্টিফাইড কপি পেতে আপনার কমপক্ষে ৭ থেকে ১৫ কার্যদিবস সময় লেগে যাবে। এই সময়টি অতিক্রম হবার পর আপনি যখন সার্টিফাইড দলিল হাতে পাবেন, তখনই সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর আপনার নামে নামজারী ও জমাভাগ করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তার আগে পারবেন না। আচ্ছা তাও আপনি দলিল হাতে পাবার সাথে সাথে নামজারীর জন্য আবেদন করলেন। নামজারী পেতে আপনার কমপক্ষে সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ৪৫ টি কার্যদিবস অতিবাহিত হতে হবে। তার আগে আপনি নামজারী পাবেন না। এখন ৪৫ দিন পর জানতে পারলেন আপনার নামে নামজারী হবে না। মাথা তো চক্কর দিয়ে উঠবে! কেন হবে না জানার জন্য আপনি তখন ব্যকুল হয়ে উঠবেন। আর তখনই জানতে পারবেন ঐ জমি ইতিমধ্যে অন্য ব্যক্তির নামে নামজারী হয়ে গেছে। এখন জেনে নিন কিভাবে সেটি হয়। ঐ যে সার্টিফাইড কপি পেতে লেগে গেছে ৭ দিন আর নামজারীর কার্যক্রম সম্পন্ন হতে ৪৫ দিন এই ৫২ দিনেই আপনার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। আপনি যার থেকে জমি কিনেছেন, সে আপনাকে দলিল করে দেয়ার আরো ৭ দিন আগেই আরো একজনের কাছে ঐ একই জমি বিক্রি করেছে। যার কাছে বিক্রি করেছে, সে আপনার থেকে ৭ দিন আগে সার্টিফাইড দলিল পেয়ে নিজ নামে নামজারীর আবেদন করে দিয়েছে এবং নামজারী পেয়েছে। সুতরাং আপনি প্রতারিত হয়ে এখন জমি বিক্রেতার পিছু পিছু ঘুরতে থাকুন। মামলা করুন, আদালতে হাজিরা দিন, এই সব তঞ্চকতা প্রতারণা প্রমাণ করতে করতে আপনার মোটামুটি পরকালের ডাক চলে আসবে।

এমন ঘটনা বাস্তবে অহরহ ঘটছে। তাই সরকারের কাছে আমার অনুরোধ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে ভুমি অফিসের একটি সেল খোলা হোক। যেদিন যে দলিলটি রেজিষ্ট্রি হবে, ঠিক সেদিনই ভূমি অফিসের রেকর্ড বইতে সংশ্লিষ্ট দাগ জোত ও খতিয়ানে ঐ ক্রেতার নাম রেকর্ড হতে হবে। ফলে মালিকানা যাচাই বাছাই করতে গেলে ঠিক বর্তমান মালিকের নামটাই সরকারের ঘরে পাওয়া যাবে, ফলে কেউ প্রতারিত হবে না। নামজারী ডিসিআর খাজনা ৪৫ দিন পরে হোক, আপত্তি কি? কিন্তু এই যে দলিলের সার্টিফাইড কপি পেয়ে নামজারী করার যে সময়ের গ্যাপ, এটি যেনো কোন প্রতারক কাজে লাগাতে না পারে , এক জমি একাধারে একাধিকবার বিক্রয় করতে না পারে, সেই ব্যপারে সরকারের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:১৮

শাহ আজিজ বলেছেন: ডিজিটাল বাংলাদেশে সবচে আগে যে ব্যাবস্থা গ্রহন করা দরকার ছিল তা হচ্ছে জমি কেনা এবং বেচা দুটিই কম্পিউটারে তুলে রাখা যাতে সাব রেজিস্টার মুহূর্তেই চেক করে বলতে পারবেন জমিতি আগে বিক্রি হয়েছে কিনা। শাস্তি স্বরূপ বাটপাড় বিক্রেতার জেল ও দণ্ড হবে। একজন বিক্রেতা ক্রেতার কাছ থেকে ডি ডি , পে অর্ডার ওই সময় নিরীক্ষণ করেই স্লিপে সাইন করবে। এসব কড়া হয়না । কম্পিউটার যেন ফেসবুকিং আর ব্লগিং , গেমস খেলার জন্য।
এই বিষয় সম্পাদনের পর সাব রেজিস্টারের সহি দেওয়া একখানি কাগজ নামজারির জন্য ওই অফিসে জমা করলে তারা তাদের কম্পিউটারে শেয়ার করা তথ্য যাচাই করেই একদিনের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন। জমি কেনা, নামজারি, দলিল কপি , খাজনা সবই একটি নেটওয়ার্কে আনা সম্ভব। একটি অফিসের তথ্য অন্য অফিস দেখতে পারবে কিন্তু পরিবর্তনের সুযোগ থাকবেনা। বহু কিছু করার আছে , করা হয়না । কেন? জানিনা।

০২ রা আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:৫৩

আহলান বলেছেন: কি যে অরাজকতা চলে এই ভূমি নিয়ে না দেখলে বিশ্বাস করবে না কেউ ... তহশীলদার, নায়েব এদের কথা বার্তা শুনলে মনে হয় ওরা জমিদার আর সেবা নিতে আসা সবাই প্রজা .. ধন্যবাদ ভাই!

২| ০২ রা আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:২২

হানিফঢাকা বলেছেন: গুরত্বপুর্ন পোস্ট। অনেকের উপকারে লাগবে। ধন্যবাদ।

০২ রা আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:৫৪

আহলান বলেছেন: জ্বী ধন্যবাদ ভাই ..

৩| ০২ রা আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৫৩

বিবেক ও সত্য বলেছেন: আপনাদের মত লেখকদের সামুতে বেশি বেশি লেখা উচিত। জনসচেতনতা মুলক লেখা। লেখককে অনেক ধন্যবাদ। লেখাটি স্টিকি করা উচিত। মিডিয়াতে এ বিষয়ে টক শো হওয়া উচিত। কিছু প্রতিবেদনমূলক সংবাদ হওয়া উচিত।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৪০

আহলান বলেছেন: হ্যা আপনি ঠিকই বলেছেন। শাহ আজিজ ভাই যেটা বলেছেন, সেটা এই যুগে সম্ভব তাও যেখানে নেটওয়ার্ক কম্পিউটার সহজলভ্য হয়েছে। অনেক রিমোট এরিয়াতে এখনো এটা সম্ভব না। সেই ক্ষেত্রে ম্যানুয়ালী চিন্তা করতে হবে ...

৪| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৬:৪৮

রিফাত_হাসান বলেছেন: লেখককে ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ পোস্টের জন্য। এধরণের প্রতারনার হাত থেকে বাঁচার কোন উপায় আছে কি?

০৩ রা আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৩০

আহলান বলেছেন: অনেকেই জমি কিনেই মনে করে তার দায়িত্ব শেষ। ইচ্ছা করেই নামজারী না করে ফেলে রাখে। ফলে পরবর্তিতে যে কিনতে যায়, সে দেখে যে জোতে পূর্বমালিকের নামেই জমি রায়েছে, তখন সে আর কিছু চিন্তা না করেই জমিটি কিনে নেয়। অনেক সময় জমি পানির নিচে থাকে, তাই মেপে ডিমার্কেশন করে দখল বুঝে নেয়া সম্ভব হয় না। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগায় প্রতারক চক্র। রেজিষ্ট্রি অফিস থেকে দ্বায় মুক্ত সনদপত্র (Non - Encumbrance Certificate) নামে একটি সনদ যোগাড় করা যায়, যেখানে সর্ব্বোচ্চ পূর্ববর্তী ১২ বছরের হস্তান্তরের ইতিহাস জানা যায়, কিন্তু এই সনদটিও সত্যিকার ভাবে ভলিয়্যুম ঘেটে অর্থাৎ জমিটি কবে কোথায় কার কাছে ট্রান্মফার হয়েছে তা জেনে করা হয় না।
জমি কেনার আগে লোকাল কোন বিশ্বস্ত সূত্রে খবর নিলে অনেক সময় এধরণের প্রতারণার হাত থেকে বাঁচা যায়। কিন্তু কাগজে কলমে বোঝার উপায় আপাততঃ নেই। ধন্যবাদ ভাই ...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.