নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেবার মাধ্যমে বন্ধুত্ব

ব্লগিং করে আনন্দ , সত্য সুন্দর শেয়ার করতে চাই

আহলান

ব্লগার

আহলান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মসজিদ কমিটির সাইকেল গিফট ও নামাজি বানানোর ফিকির। কতটা যুক্তি সংগত??

২৪ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:৪০

আমাদের সমাজে একটি নতুন ট্রেন্ড চালু হতে যাচ্ছে, সেটা হলো বাচ্চাদেরকে মসজিদ মুখি করার প্রচেষ্টা হিসাবে তাদেরকে সাইকেল গিফট দেয়া। যে যে টানা চল্লিশ দিন ফজরের নামাজ জামাতে উপস্থিত হয়ে আদায় করবে, সেই পাবে সাইকেল উপহার। আপাতঃ দৃষ্টিতে ব্যপারটি দারুন আইডিয়া মনে হলেও, বস্তুতঃ এই ধরণের আয়োজন হাদিস কোরআন সমর্থন করে কি না, সেটা আমাদের জানা নাই।

নামাজ শুধুই আল্লাহর সম্তুষ্টির জন্যে, সাইকেল পাওয়া বা দুনিয়াদারি হাসেল করার জন্যে নয়। নামাজের অভ্যাস গড়ে তোলার জন্যে তাই এমন কোন পদ্ধতি অবলম্বন করা কি ঠিক, যেটা কাওকে দুনিয়াবি ফায়দা হাসিলে সহায়তা করে? পাশাপাশি মেয়েরা কি পাবে? মেয়ে শিশুদের অভ্যাস গড়তে তাহলে মসজিদ কমিটির কি ব্যবস্থা নেয়া দরকার ছিলো?

আমরা যদি গ্রামে গঞ্জে মফস্বল শহর ‍গুলোর মাদ্রাসা গুলোতে খোঁজ নিই, তবে দেখা যাবে ছোট ছোট শিশু বাচ্চারা শুধু মাত্র আল্লাহর দ্বীনের বিধান পালনের উদ্দেশ্যে খেয়ে না খেয়ে, কি শীত কি গরম হাজারো ক্লেশ কষ্ট সহ্য করে কোরানের তালিম নিচ্ছে, কোরান হিফজ করছে, তাদের জন্যে কেউ সাইকেল চকলেট নিয়ে দাড়িয়ে নেই। নেই কোন বিনোদনের ব্যবস্থা। কোন রকম তিন বেলা খাবার খেয়েই তারা দ্বীনের খেদমতে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছে। আর আমরা শহুরে বাবুরা বাচ্চাদেরকে নামাজমুখী করার জন্যে কত রকম ফন্দি ফিকির করছি। আদৌ কি সাইকেল পাওয়ার লোভে ক দিন নামাজে গেলে কি এদের সেই নামাজ আদায় হবে?? এর দ্বারা আজীবন এরা নামাজ পড়বে, তার কি নিশ্চয়তা মেলে?

হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, কিয়ামতের দিন এক ব্যক্তিকে আল্লাহতায়ালার দরবারে হাজিরপূর্বক বলবেন, তুমি কি প্রকার ইবাদত করেছ? সে ব্যক্তি বলবে আমি নিজের প্রাণকে আল্লাহর রাস্তায় কোরবান করেছি। আমি জেহাদে যোগদান করলে কাফেররা আমাকে শহিদ করেছে। আল্লাহতায়ালা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ, তুমি শুধু এই উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করেছিলে যে, লোকে তোমাকে বীরযোদ্ধা বলে আখ্যায়িত করবে। হে ফেরেশতাগণ! এ ব্যক্তিকে দোজখে নিয়ে যাও।

অপর এক ব্যক্তিকে উপস্থিত করে জিজ্ঞাসা করা হবে তুমি কি প্রকারের ইবাদত করেছ? সে ব্যক্তি উত্তরে বলবে, আমার ধন-সম্পদ যা কিছু ছিল আমি তা আল্লাহর রাস্তায় দান-খয়রাত করেছি। আল্লাহপাক বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ, তুমি শুধু এ উদ্দেশ্য দান-খয়রাত করেছিলে যে, মানুষ তোমাকে দাতা বলে প্রশংসা করবে। অতএব এ ব্যক্তিকেও দোজখে নিক্ষেপ কর।

অতঃপর আরেক ব্যক্তিকে হাজির করে জিজ্ঞাসা করা হবে, তুমি কি প্রকারের ইবাদত করেছ? সে ব্যক্তি উত্তরে বলবে, আমি বহু পরিশ্রম করে বিদ্যা অর্জন করেছি এবং কোরআন শরিফ পাঠ করেছি। আল্লাহতায়ালা বলবেন, তুমি মিথ্যাবাদী, মানুষ তোমাকে আলেম বলবে এ উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জন করেছ। ফেরেশতাগণ! এ ব্যক্তিকেও দোজখে ফেলে দাও।

এখন আল্লাহ যদি এভাবেও বলেন যে, তুমি সাইকেল পাওয়ার জন্যে আমার মসজিদে এসেছিলে, সাইকেল পেয়েওছিলে, অতএব .... আর যারা এমন লোক দেখানো আয়োজন করেছিলো তাদের ব্যপারেও যদি আল্লাহ উপরোক্ত নির্দশ দেন, তখন এই সব আলেম গন কি করবেন?

হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, আমি আমার উম্মতের জন্য ছোট শিরকের ভয় যত করছি, এত ভয় অন্য কোনো বিষয়ে করি না। উপস্থিত সাহাবারা জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! ছোট শিরক কি? হুজুর (সা.) উত্তর দিলেন, তা হচ্ছে- রিয়া।

হাদিসে আরও বলা হয়েছে, ইবাদতের মধ্যে একটি ধূলিকণা পরিমাণ লোক দেখানো মনোভাব থাকলে আল্লাহতায়ালা ওই ইবাদত কবুল করেন না।

যে কোন কিছু করার আগে, তাই আমাদের ভেবে দেখা উচিৎ, কাজটা কতটুকু যুক্তি সংগত। আমাদের দেশে কোটি কোটি মসুল্লি কি নামাজ পড়া শেখেনি? দুনিয়োর কোন জিনিসটা পাওয়ার লোভে তারা নামাজ পড়া শিখেছে ও পড়ছে? কোন কিছুই না, এক মাত্র আল্লাহকে রাজী খুশির জন্যেই সবাই নামাজ পড়া শিখেছে ও যারা পড়ার তারা পড়ছে। আমরা পারলে আমাদের ছেলে মেয়েরা কেনো পারবে না?

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:০৪

ফুয়াদের বাপ বলেছেন: দেশের ক্রিকেট দলের দিকে দেখেন- বয়স ভিত্তিক দল ১৫,১৭,১৮,১৯, এ দল থাকে যা জাতীয় দলের পাইপলাইন। আজ যে ১০/১৫ বছরে ক্রিকেট খেলছে সেই একসময় জাতীয় দলে খেলবে।

মসজিদে মুসল্লির পাইপলাইন হচ্ছে আমাদেরই ছোট ছোট সন্তানেরা। তাদের মসজিদ মুখি রাখতে পরিবার-সমাজ দুই দিক থেকেই চেষ্টা থাকা উচিৎ। মসজিদ মুখি রাখতে বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া যেতে পারে-যেমন-সাপ্তাহিক বিষয়ভিত্তিক দীনি আলোচনা ও তার উপর প্রশ্ন-উত্তর পর্বে পুরষ্কার, মাসিক/ত্রৈমাসিক খেলাধূলার প্রতিযোগীতা ইত্যাদি।

মসজিদ মুখি করতে সাইকেল/অন্য কিছু উপহার দেওয়া দোষনীয় কিছু মনে হচ্ছে না। তবে তা যেনো এমন না হয় যে, সাইকেলই দিতে হবে। ৪০ দিন নামাজ পড়ে সাইকেল প্রতিদান/মজুরী হিসেবে পাইলাম পরে আর মসজিদে না গেলেও চলবে।

আর লোক দেখানো ইবাদত হলে তো পরকালে তা মূল্যহীন হয়ে যাবে।

২| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:১৫

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: কমিটি মানেই ভোগাস (কিছু ভালো আছে)| একদিকে নামজ পড়ে অন্যদিকে গালি হিংসা গীবত নিন্দা পরচর্চা ধর্ম নিয়ে দলবাজি।

৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৪২

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: আমি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন মসজিদ কমিটির নামাজের জন্য সাইকেল বিতরণের কথা শুনিনি, পোস্ট পড়ে বুঝতেই পারলাম না কোন মসজিদ কমিটি সাইকেল বিতরণ করতেছে?
আর হাদিসে কি আছে না আছে জানিনা তবে যতদুর জানি ছেলেমেয়েদের নামাজের জন্য উৎসাহী করার জন্য অনেক অভিবাক অনেক কিছুই করে থাকে, তাই এখানে দোষের কিছুই দেখি না। যেখানে নামাজ না পড়লে স্ত্রী এবং সন্তানদের বেত্রাঘাতের অনুমুতি আছে, সেখানে নামাজে উৎসাহী করার জন্য সাইকেল পুরুষ্কার দিতেই পারে।

৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:০৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
খবরটি আমাদের দেশ, সমাজের জন্য নতুন। এখন পর্যন্ত সাইকেল দিতে দেখিনি। তবে যদি ইসলাম সমর্থন করে ব্যাপারটা দোষের কিছুনা বরং ভালো উদ্যোগ।

৫| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:৪৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
লোভের বীজ বপন করা হচ্ছে!!

৬| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:০৩

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:

তুর্কি থেকে আমদানী করা আইডিয়া?

৭| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:৩৩

কামাল৮০ বলেছেন: লোকজন বোধ হয় ফজর নামাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।ঈমাম সাহেব দেখে পিছনে কেউ নাই।

৮| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:৩৯

কামাল৮০ বলেছেন: আল্লাহ বলেছে জিহাদে যে শহীদ হবে সে সরাসরি বেহেস্তে যাবে।তবে কি আল্লাহ ভুল বলেছে।

৯| ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:৫৯

জ্যাকেল বলেছেন: এইসব কুমিটির লোকদের উচিত ছিল সাইকেল গিফট না দিয়ে তাদের জাগতিক বিদ্যা চর্চার জন্য লাইব্রেরি করে দেওয়া।

১০| ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৪০

বিটপি বলেছেন: ওরে কামাইল্যা, আল্লাহ তোরে কোন জায়গায় কইছে জিহাদ কইরা শহীদ হইলেই তোরে খেদাইয়া বেহেস্তে লয়া যাইব - আমারে দেখা। তা দেখাইলে তুই এক বাপের পোলা না।

১১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:০৯

সোনালি কাবিন বলেছেন: ঠিক বলেছেন ।

১২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০

আলামিন১০৪ বলেছেন: নও মুসলিমদের যাকাত দেওয়ার কারন জানেন তো? একইভাবে, বেনামাজীদের শুরুতে উৎসাহ দেওয়াতে কোন ক্ষতি দেখিনা আমি। আসল বাচ্চাদের জন্য এটা আরো জরুরী। নেদারল্যান্ডসৃ এর এক তুর্কি মসজিদে আমি বাচ্চাদের চকলেট দিতে দেখেছিলাম। বাংলাদেশেও এটা চালু করদে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.