![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বহুপথ হেঁটে আমি বড় ক্লান্ত; দোর খুলে নেমেছি সেই কবে তোমার দুয়ারে দাঁড়াব বলে.
ছেলেবেলায় বছর শুরুর সময়টা থাকত নতুন বইএর গন্ধ ভরা, কারণ ফুল কিংবা ফুলের গন্ধের হৃদয়তাত্ত্বিক মাহাত্ব্যটা বোঝার বয়স তখন হয়নি। সেজন্য স্মৃতির আয়নাটা কেবল রোদে পিঠ দিয়ে দুলে দুলে 'ছোটন ছোটন' পড়া ছাড়া তেমন কিছু দেখাতে পারেনা।
একলয়ে রিং গাড়ি চালিয়ে; মুড়ি মুড়কি খেয়ে-শেষ বিকেলের সাথে পাল্লা দিয়ে সূর্য বাড়ি ফেরার আগেই বাড়ি ফিরতাম। ক্লান্তি নয়, ফিরতাম সূর্যের তাড়া খেয়ে। সন্ধ্যা শুরু হত গুনগুনিয়ে। প্রাক-অধুনা এবং অধুনা'র এক বিব্রত সময়ে কেটেছে ছেলেবেলাটা। তাই, ইলেকট্রিক বাতির পাশাপাশি হারিকেন কিংবা হ্যাজাকের পরিচয় ছিলো আমার। আর একটা আবশ্যিক জিনিস ছিলো- গ্লোব মশার কয়েল। কখনো কখনো ধূপ জ্বলত ঘরে; আহ! কি মিষ্টি ঘ্রাণ! ওর'ই মাঝে ডুবে ডুবে চলতো আমাদের দু ভাইবোনের পড়ালেখা। আব্বা টিভির ভ্যলিউম কমিয়ে দিয়ে ৮ টার খবর শুনতেন, আর আমরা তখন ব্যস্ত ওয়ার্ডবুকে। আসলে ওয়ার্ডবুক তো নয়; সময় পার করে দেবার ফন্দি আরকি!
কারণ, আমাদের মফস্বলে রাত নামত সন্ধ্যাতেই। সুতরাং, রাতে খাবার পরেই ঘুমের ভিসা পেয়ে যেতাম। মাঝে মাঝে যখন ইলেকট্রিসিটি থাকতনা তখন বাসার সামনের রাস্তায় চলতো আড্ডা আর খেলাধুলা। আমরা শিশুর দল যেন স্বাধীনতা পেয়ে যেতাম। তখন মা’র শাসনের মাত্রাটা অনেকটা শিথিল থাকত। পুরো পাড়া ভেঙ্গে পড়তো তখন ওই রাস্তাটিতে। আর আমরা তখন শব্দের উৎস ধরে খুঁজে বের করতাম ঝিঁঝিঁ পোকার বাসা; পেলেই পানি ঢেলে দিতাম। জোছনারাতে লুকোচুরি খেলতাম, মাঝে মাঝে বরফ-পানিও খেলতাম। ও হ্যাঁ; আরেকটা খেলা ছিল- 'কুমির তোর জলে নেমেছি'। এটা খুব উত্তেজনাকর খেলা ছিলো আমাদের; অনেক খেলেছি। সে যাই হোক, এরকম হৈ-হল্লার মধ্যেই কখন যে বেরসিকের মতো ইলেকট্রিসিটি চলে আসত! আমরা মুখ ব্যাদান করে ঢুকে পড়তাম মশারির ভেতরে ওত পেতে থাকা ওই ঢালাও বিছানায়।
গ্রাম হল চারণভূমি। শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠতাম শুধু সর্ষেক্ষেতের এপার-ওপার দৌড়ে যাবার জন্য। গোসল করার জন্য দলবেঁধে চলে যেতাম দূরদূরান্তে ফিরতে ফিরতে সেই দুপুর গড়তো। পুকুরে নেমে কখনও চোখ লাল করা ছাড়া উঠিনি। একটু দূরেই নদী ছিল। শীতের সময় যখন সত্যি সত্যি'ই জল হাঁটুর নিচে নেমে যেতো, তখন চলত কাদার মধ্যে আমাদের মাছ ধরা, নিজের উপার্জিত মাছ খেতে গিয়ে গর্বে বুক ফুলিয়ে থাকতাম।
আমি তখন'ও সুমন’কে চিনিনা; কিন্তু এখন বুঝতে পারি, সব শিশুর মধ্যেই একজন করে সুমন বাস করে। নইলে কেন এই বাংলাদেশের অখ্যাত একটা গ্রামের ক্ষুদ্র একটা শিশুর ভাবনার সাথে মিলে যাবে সুমনের দইওয়ালা হবার স্বপ্নটা! আর তখন আমি হতে চেয়েছিলাম ফেরিওয়ালা।
এইসব ছোট ছোট দৃশ্যগুলো কোনটা এখন আর স্পষ্ট নয়; কিন্তু মনের কোথায় যেন দাগটা কেটে আছে। আমার আয়নাটা এখন আর খুব বেশী কিছু দেখাতে পারেনা আমার শৈশব কে নিয়ে। আমার ছোট্ট মনের কোল জুড়ে কেবল উঁকি দিত সহজিয়া দিনগুলোর টুকরো টুকরো ছবি। আমার আয়নাটা এখন’ও ঝাপসা হয়ে যায়নি। আমার গোপন বিলাসের ভাবনাগুলোকে এখনও নিরলস সংঙ্গ দেয় আমার আয়না।
২| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:২৬
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ছোটবেলার দিন গুলি আসলেই কখনও ভোলার নয়।আপনার লেখাটি পড়ে ছোটবেলার অনেক কথায় মনে পড়ে গেল।কুমির কুমির খেলা আমিও ছোট বেলায় অনেক খেলেছি।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
২৪ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:৫৩
তুমি আমি সে বলেছেন: আমিও কুমির কুমির খেলেছি। অনেক খেলাই খেলেছি শৈশবকালে।
৩| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৫৮
রাফিন জয় বলেছেন: খুব চমৎকার। খুব ভাল লাগলো। কিন্তু গোলক মশার কয়েল বা ধুপ থেকে আমার এলার্জি আছে!
২৪ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:৫২
তুমি আমি সে বলেছেন: সে সময় এগুলোকে অমৃত স্বাদ মনে হতো।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:২২
মোহাম্মদ আমান উল্লাহ বলেছেন: wow