নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি অলস, আমাকে ঘুম থেকে ডাকবেন না

বন্যলোচন

অনর্থক জীবন ধারণ, বিতৃষ্ণার মূল কারণ।

বন্যলোচন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডায়েরিঃ মাথার ভেতর মরুদ্যান

০৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:১০


#১২.১২.১৫

যাযাবর পড়ছি। একটা জিনিস। পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা আর রাজনৈতিক সচেতনতার অদ্ভুত মিশেল, সেই সাথে ব্যঙ্গবিদ্রূপের স্পর্শ পুরো ব্যাপারটাকে আরও উপভোগ্য করে তুলেছে। এ লেখা সুগভীর, বারংবার পড়া যায়।

আমার একটা ভুল হয়েছে, ক্লাস টেন থেকে বই পড়া কমিয়ে দিয়েছিলাম। নিজের পাশাপাশি নেট কানেকশন নেওয়াকে দুষব আমি এজন্যে। ফলে বাংলায় আমি যে রকম লেখার অভিজ্ঞতা চাইছিলাম তা আর গড়ে ওঠেনি ঠিকমতো। এখন বুঝতে পারি যে হ্যাঁ, বঙ্কিম-শরৎ-মানিক-সমরেশ-সুনীল-বিভূতি-নারায়ণ থেকে শুরু করে হালের শওকত-আখতারুজ্জামান-শাহাদুজ্জামান পর্যন্ত সবাই উপভোগ্য, ভালো লিখতেন, কিন্তু এদের লেখা পড়লেই বাংলা ভাষায় দখল আসে না। পড়তে হয় সঞ্জীব-শিবরাম-বনফুল-মুজতবা আলি, এবং নিঃসন্দেহে, যাযাবর।

ও, বলা হয় নি , ল্যাপটপ-মোবাইল দুটোই চুরি হয়ে গেছে। জানালা খুলে রেখে ঘুমিয়েছিলাম, প্রাণ-কোকিলা এসে নিয়ে ভেগেছে সড়াৎ করে, আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। সকালবেলায় মন খারাপ হল কিছু পারিবারিক ছবি আর ভিডিওর জন্যে, এগুলো এখন বিলুপ্ত, কিন্তু তারপর মনে হল খুব খারাপ কিছু হয় নি। স্মৃতি আঁকড়ে ধরে বেঁচে কি লাভ হায়! ভালো হয়েছে একদিকে, ছবি আঁকার কিংবা বই পড়ার সময় পাচ্ছি, মনটাকে একদিকে ঠেলে নেওয়া যাবে এখন।

মোবাইল শূন্যতায় সমস্যা একটাই, আবার সিম ওঠাতে হবে। বিরক্তিকর। এইসব কাজের নাম শুনলেই ঘরে কাঁথামুড়ি দিয়ে জোরসে ফ্যান ছেড়ে কোলবালিশ আঁকড়ে শুয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। আসলে অলস ব্যক্তির কাছে সব কাজ ই একটা বাজি ধরার মতো। কাল সকালে কাস্টমার কেয়ার সার্ভিসে যাবার কথা। আসলেই যাব? না যাব না? কে জানে! আমি নিজেও তুমুল উৎসাহ নিয়ে সকালে কি করি দ্যাখার জন্যে তাকিয়ে আছি।


#২০.১২.১৫

একটা গান লেখা দরকার। শুরুটা থাকবে ছোট ছোট বিষয়, প্রকৃতির খুঁটিনাটি নিয়ে।

"পদ্মপাতায় ব্যাঙ নড়বড়ে জলে
বটগাছের ঝুরি হাত-পা ছড়িয়ে
একটা ছোট মেয়ে মৃত বড় চোখে
--পড়ে আছে।

ব্যাঙ লাফিয়ে পড়ে কালো খুব জলে
বটগাছের পাতা ওড়ে সন্ধ্যের আলোতে
ভেজা ফ্রকে শ্যাওলার আবরণ পড়ে
--চুপিসারে।"

তারপর ক্লাইমেক্স হবে।

"আমরা আগুন জ্বালি জলাশয় তীরে
বটের ঝুরি কেটে জ্বালানি বানিয়ে
ব্যাঙ-পোড়া হাতে ধরি পদ্মে জড়িয়ে
তখন বাতাস বহে।

বাতাসে বটের সব পাতাগুলি নড়ে
বাতাসে শ্যাওলার আবরণ সরে
বাতাসে মেয়েটার খুব শীত করে
বাতাসে সে ভেসে চলে আগুনের দিকে।

আমরা তখন বসে জলাশয় তীরে।
আমরা সবাই বসি জলাশয় তীরে।"

ধুর, প্রকৃতিপ্রেম নিয়ে লিখতে গেলাম হরর এসে গেল। আমার সিন্যাপ্সের গোড়ায় কোথাও ঝামেলা আছে।

তবে, দৃশ্যকল্পটা কিন্তু খারাপ হয় নি।


#২৮.১২.১৫

কলেজে চার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম আজ, ফর্ম ফিলাপের টাকা জমা দেবার জন্যে। দাঁড়ায়ে বুঝতে পারলাম, সত্যই, আদমজি আমাকে দিয়েছে আবেগ, কেড়ে নিয়েছে বেগ। কাউন্টার থেকে ২০ ফিট দূরে ছিলাম, ন'টা বাজে তখন, আর যখন টেকাটুকা শোধ করে বেরোলাম তখন বাজছে দেড়টা।

বেগ? ঘন্টায় চার দশমিক চার ফিট।

ফলবশতঃ এই পুরো সময়টা আমরা তুমুল শ্লীল অশ্লীল আবেগ প্রকাশ করলাম। সামনের পোলাপানগুলোকে ভদ্র অভদ্র বিশেষণে ভূষিত করা হল, প্রচণ্ড চাপাচাপিতে অবিবাহিত ছেলেগুলির বিয়ের আগেই কেন মাজা ও বিচি ব্যথা করে দেওয়া হচ্ছে সে ব্যাপারে সদলদলে ক্ষোভ প্রকাশ করা হল। নারী সমাজকে এই সমঅধিকারের যুগে কেন দু'দুটো কাউন্টার দেওয়া হয়েছে, যেখানে আমরা শ'খানেক নিরীহ বালক এক টেকোপ্রায় ভদ্রলোকের একটি মাত্র কাউন্টারে গুঁতিয়ে যাচ্ছি? অবিচার। নিঘঘাৎ অবিচার। আমরা কি এই দেশ চেয়েছিলাম? সোনার বাংলা শ্মশান কেন এই প্রশ্ন তো এসব অবিচার দেখেই উঠেছিল। নাহ। মানা যায় না। বসে পড়, সব বসে পড়। অনশন হবে।

বিদ্রোহের এহেন পর্যায়ে লাইন কেটে সামনে কয়েকজন পামর ঢুকে পড়ার চেষ্টা করলে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। আমরা মাটিতে পা গেঁথে যার যার অবস্থানে দাঁড়িয়ে পড়ি আবার। এইভাবে দাঁড়াতে দাঁড়াতে, পা ঝাঁকি দিয়ে, মুখ কুঁচকে, সামনের জনের ঘাড়ের ওপরে ভর ছেড়ে দিতে দিতেই কাটল চারটে ঘণ্টা।

ওফফফ!


#১.১.১৬

নতুন বছর! ইয়েএএএএএ!

আসলে আনন্দের কিছু নাই।

আরেকটা বছর। জীবনের আরেকটা বছর শূন্যগর্ভা হয়ে হারিয়ে গেল। প্রতিভা, সময়, কামনার গর্ভপাত। মরণ আরেকটু নিকটে হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে হাসছে বিকট দাঁতে। শালা ব্রাশ করে না নাকি, মুখে বিটকেলে গন্ধ। আস্তে আস্তে বয়স বাড়বে, দায়িত্ব ঘাড়ে চাপবে, কিন্তু বললেও কেউ বিশ্বাস করতে চাইবে না যে আমি আসলে পূর্ণবয়স্ক-বড় হইনি, এই মাংসের স্যুটটা বিকশিত হয়ে তারপর কুঁকড়ে যাবে কিন্তু ভেতরের আমি এখনো মুমূর্ষু বিভ্রান্ত ক্লান্ত পরিশ্রান্ত। স্রেফ আত্মহত্যায় বিশ্বাস করি না বলে বেঁচে আছি, জীবনের অর্থ খুঁজে পাইনি এখনো। এমন কিছু আমার জীবনে নেই যা টানছে আনন্দের দিকে। খাদের কিনারায় একটা আঙ্গুরের গোছা ধরে ঝুলে আছি, হাত অবশ হয়ে আসছে। ওপরে ক্ষুধার্ত বাঘের পায়চারি নিচে বিষাক্ত সাপের ফোঁসফোঁস, এখন আঙ্গুরের গোছায় একটা আঙ্গুর খুঁজছি যে অন্ততঃ আঙ্গুরের স্বাদ জিভে নিয়ে মরি, কিন্তু তা-ও কপালে নেই। শোকার্ত উপকূলে ঢেউ তুলে কি লাভ! আমার নৌকো ডুবে গ্যাছে সেই কবে।

যাই হোক, কি যেন বলছিলাম?

ওঃ, নতুন বছর! ইয়েএএএএএএএএ!

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৫৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: বৈচিত্রপূর্ণ দিনলিপি। মজা পাইছি।

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:৪৯

বন্যলোচন বলেছেন: থ্যাঙ্কু :)

২| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:০৬

সুঁই বলেছেন: মোবাইলের স্মৃতিগুলি ত মাথায় গেঁথে গেছে নাকি যেইখানে ছবি আর ভিডিও ছিল? জাবর কাটেন তাহাই।
মজা লাগছে ডাইরি পড়তে।

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:৫০

বন্যলোচন বলেছেন: উপায় নাই তাছাড়া!

থ্যাঙ্কু থ্যাঙ্কু।

৩| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:১১

বিজন রয় বলেছেন: ব্যতিক্রমী পোস্ট।
++++

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:৫২

বন্যলোচন বলেছেন: হাহাহা...আপ্নে তো একচুয়ালি প্লাস দেন্নাই! যাউক, ব্যাপার না। থ্যাঙ্কু!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.