নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি অলস, আমাকে ঘুম থেকে ডাকবেন না

বন্যলোচন

অনর্থক জীবন ধারণ, বিতৃষ্ণার মূল কারণ।

বন্যলোচন › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্যাটায়ার - খোদায়ী খেয়াল

২৫ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪৫



ঈশ্বর বসে বসে মগ্ন হয়ে একটা চারপেয়ে প্রাণী বানাচ্ছিলেন। মীকাঈল পায়ে ঠক ঠক শব্দ তুলে এসে ঘরে ঢুকলেন, তারপর ঠকাস করে স্যালুট মারলেন, 'প্রভু! আমাকে স্মরণ করেছেন?'

ঈশ্বর অন্যমনস্কভাবে জবাব দিলেন, হু। কেমন আছো বৎস?
- 'চমৎকার প্রভু'।
সব ঠিকঠাক আছে তো?
- 'অবশ্যই প্রভু'।
আমি একটা চিন্তা করলাম, বুঝেছো? ভাবলাম তোমাকে বলি।
- 'জি প্রভু।'
[হাতের প্রাণীটা দেখিয়ে] এই প্রাণীগুলা আমার পসন্দ হয়েছে। দ্যাখো কি কিউট! আমি চিন্তা করছি এগুলাকে দুনিয়া প্রজেক্টে পাঠাবো। কি নাম দেওয়া যায় বল তো?

মীকাঈল ইতস্ততঃ করলেন, ভাবলেন কথাটা বলবেন কি না, তারপর বলেই ফেললেন, 'এটার নাম তো ডাইনোসর, প্রভু। আগেও সৃষ্টি করেছেন। আপনি দুনিয়ায় পাঠিয়েছিলেন এদেরকে।'

ঈশ্বর অবাক হন, অ। তা কি অবস্থা ডাইনোসরদের এখন?
- 'সব...আহেম, মরে গেছে প্রভু। আপনি মার্বেল খেলছিলেন, একটা গিয়ে পৃথিবীতে লেগেছিল, তারপর [মীকাঈল হাত এবং ডানা চারপাশে ছড়িয়ে দিয়ে দেখালেন] বুমম! গুষ্টিসুদ্ধ খতম।'

ঈশ্বরকে বিষণ্ণ দেখায়, আহহা! তাহলে আবার সৃষ্টি করে দুনিয়ায় পাঠিয়ে দেই। আমি ধ্বংস করেছিলাম, আমিই পুনঃসৃষ্টি করব। কি বলো?

মীকাঈল এক পায়ের ভর আরেক পায়ে চালান করেন, 'ইয়ে, দুনিয়া তো খালি নাই প্রভু।'
ঈশ্বর বিরক্ত হন, খালি নাই মানে? কি আছে দুনিয়ায়?
- মানুষ, প্রভু। আশরাফুল মাখলুকাত।
মানে কি??
- 'আপনার মনে আছে, আদম হাওয়াকে বানিয়েছিলেন? ওরা নিষিদ্ধ ফল খেল, আপনি ওদের দুনিয়ায় বনবাসে পাঠিয়ে দিলেন- মনে নেই?'
ওও, হ্যাঁ মনে পড়েছে মনে পড়েছে! আসলে অন্য প্রজেক্টে ব্যস্ত ছিলাম তো, এদেরকে দেখার ইচ্ছা জাগে নি। ঘাড়তেড়া প্রজাতি ছিল খুব। তা আয্রাইল কি করে? খালি বসে বসে খায় আর ঘুমায়, অ্যাঁ? ওদের জান কবচ করে নাই কেন এখনো?

মীকাঈল দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলেন, 'আহারে, করেছে তো। আদম হাওয়া বেঁচে নাই, কিন্তু ওরা আবার বাচ্চা পয়দা করেছিল। ওগুলো বেঁচে আছে।'
তাহলে সমস্যা কি? কয়জনই বা আছে, পঞ্চাশ-ষাটজন, ওদেরকে তুলে-
- 'সাতশ কোটি।'
কি?
- 'সাতশ কোটি মানুষ বেঁচে আছে এখনো।'
হাওয়া সাতশ কোটি বাচ্চা পয়দা করেছিল?? হোয়াট দা ফাক! আমি লিমিট সেট করে দেই নাই?
মীকাঈল মাথা নাড়েন, 'না না, বুঝেন না ক্যান, হাওয়ার বাচ্চা হয়েছে, ওরা বড় হয়ে আবার বাচ্চা পয়দা করেছে, ওই বাচ্চারা আবার করেছে- এভাবে চলতে চলতে এতগুলো হয়ে গেছে।'
ঈশ্বর তবুও বিশ্বাস করতে পারেন না যেন, কিভাবে সম্ভব!! আমি চিন্তাই করতে পারছি না...এরা মরে যাওয়ার কথা তো! এদের অস্তিত্বের তো কোন অর্থ নেই, নিজেদের মধ্যে মারামারি করে, বিষণ্ণতায় ভুগে মরে নি কেন?

মীকাঈল শুকনো মুখে বলেন, 'এরা খুবই...অদ্ভুত মানসিকতার, প্রভু। নিজেরাই একটা জীবনের উদ্দেশ্য বানিয়ে নিয়েছে।'
বলো কি!
- 'সত্যি বলছি, আপনার কসম। সাতশ কোটির অধিকাংশই আপনার ভক্ত। নিয়মিত প্রার্থনা করে।'
সত্যি?
- 'হ্যাঁ। অনেক দল আছে অবশ্য, একেক জন একেক ভাবে করে। আপনার সম্পর্কে আইডিয়াও পরিষ্কার না ওদের, অনেক কিছু নিজেদের মতো করে বানিয়ে নিয়েছে। কিন্তু মূলতঃ উদ্দেশ্য একই। ওরা সামাজিক মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে ভাল মন্দ ঠিক করে নিয়েছে। ভাল কাজ করলে স্বর্গে যাবে, আনন্দে কাটাতে পারবে চিরকাল। আর খারাপ কাজ করলে নরকে ভুগতে হবে।'

ঈশ্বর অনেকক্ষণ চুপ করে রইলেন। ভাবছেন। দুই শতাব্দী পর তিনি মুখ খুললেন, ওদের প্রার্থনার কি জবাব দেওয়া হয়?
মীকাঈল জবাব দিলেন, 'না প্রভু।'
আর স্বর্গ-নরকের ব্যাপারটা?
-'আপনি তো সবই জানেন প্রভু। কেন জিজ্ঞেস করছেন?'
কারণ আমি যা জানি তুমি তা জানো না। উত্তর দাও।
মীকাঈল মাথা নিচু করে বললেন, 'স্বর্গ-নরক কিছুই আপনি তৈরি করেন নি প্রভু।'
তার মানে এতদিন যত মানুষ মারা গেছে, তারা স্রেফ ভুল বিশ্বাসে জীবন কাটিয়ে তারপর হারিয়ে গেছে কালের গহ্বরে?
- 'জি প্রভু।'

ঈশ্বর আবার নিশ্চুপ। মীকাঈল এবারে বললেন, 'তাহলে আমি কি করব প্রভু? মানব জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্যে যিব্রিলকে যেতে বলব? তখন আপনি আবার পাঠাতে পারবেন ডাইনোসরদের।'

না, ঈশ্বর গমগমে কণ্ঠে জবাব দিলেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি। বাকি প্রজেক্টগুলো আপাততঃ স্থগিত থাকবে। স্বর্গ-নরকের চিন্তাটা ওরা ভাল ভেবেছে, আমার ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে। আমি এর আগে চিরকাল টেকে এমন কিছু বানাইনি। এখন বানিয়ে দেখতে চাই। তারপর যত মানুষ এপর্যন্ত মারা গেছে, তাদের সবার বিচার করে স্বর্গ-নরকে ভাগ করে দেব। তুনি যাও, বাকি ফেরেশতাদের জানিয়ে দাও এই কথা।

মীকাঈল বেরিয়ে গেলেন। ঈশ্বর ব্যস্ত হয়ে পড়লেন, প্রথমে স্বর্গ বানাবেন ঠিক করে ফেলেছেন তিনি।

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:০৬

আব্দুল্লাহ্ আল আসিফ বলেছেন: শেষের ডায়ালগ গুলো তুলনামূলক দুর্বল ঠেকেছে আমার কাছে, ভালো কন্সেপ্ট এনিওয়ে।

২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ২:২১

বন্যলোচন বলেছেন: তাড়াহুড়া করেছি, কিন্তু ছ'শ-সাড়ে ছ'শ শব্দ লিমিট ছিল তাই যোগ করা যায় নি। থ্যাঙ্কস ম্যান।

২| ২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ১:০২

চাঁদগাজী বলেছেন:




সুক্ষ্ম, অপুর্ব

২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ২:২২

বন্যলোচন বলেছেন: :-B

৩| ২৬ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৪৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: মজা পাইলাম পৈড়া।

২৬ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৪

বন্যলোচন বলেছেন: থ্যাঙ্কু ম্যান।

৪| ২৬ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:২০

রানা আমান বলেছেন: অসাধারণ অসাধারণ অসাধারণ ।

২৬ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৩

বন্যলোচন বলেছেন: এত মানুষ পড়বে আমি আইডিয়া করি নাই আসলে!

৫| ২৬ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৬

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: এইটাতো আমার লেখার কথা ছিল!!! :-<

২৬ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩০

বন্যলোচন বলেছেন: ব্রেন রিডিং করে ফেলসি :)

৬| ২৬ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৪

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: বন্যলোচন'দা কনস্পেটটা ধার করতে পারি?

২৬ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩১

বন্যলোচন বলেছেন: নিঃসংশয়ে। গল্প লিখলে আমারে লিঙ্ক দিয়া যায়েন।

৭| ২৬ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৬

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: অব্শ্যই। এটা দেখেছিলেন?
http://www.somewhereinblog.net/blog/haturelekhok/30103725

২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪৪

বন্যলোচন বলেছেন: না। পড়ে আসলাম।

৮| ২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ৮:১৯

খোলা মনের কথা বলেছেন: চুলকানী অতপর একটি মিনি গদ্য প্রশাব..........

২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪৬

বন্যলোচন বলেছেন: *প্রসব

ভাই চুলকানি থাকলে এভাবে লিখতাম না। আমি গল্প লিখেছি, কাউরে অপমান করি নাই, অ্যালার্জি-মেশিন বানাই নাই। না বুঝলে কি করার!

৯| ২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ৯:২৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: হাওয়া সাতশ কোটি বাচ্চা পয়দা করেছিল?? হোয়াট দা ফাক! আমি লিমিট সেট করে দেই নাই?
হা হা হা। ক্যামনে পারেন!!!
শেষটা দুবলা হইছে একটু তবে জোশ লাগছে গোটাটা হিসেব করে বললে

২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪৮

বন্যলোচন বলেছেন: শেষটা কি ঢোকান যায় চিন্তা করেন তো।

১০| ২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ৯:৪৫

রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: সুন্দর হয়েছে। খুব ভালো লেগেছে। কনসেপ্ট ভালো ছিল।

২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪৯

বন্যলোচন বলেছেন: :)

১১| ২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ৯:৪৯

তাদ্রিহান বলেছেন: ভাল্লাগছে ☺

২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৫১

বন্যলোচন বলেছেন: ধইন্যা নেন।

১২| ২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:২৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ইশ্বরের কি অসীম কৃপা...

ভাবনার লিমিটও সেট করে দেন নাই ;) যেমন খুশি ভাবা লেখা এবং বলার স্বাধীনতা দিয়েছেন।

যাক চমৎকার স্যাটায়ারও কিন্তু শেষমেষ স্বর্গেই থিতু হলেন! ভয়ে? নাকি অবচেতনে =p~ =p~

+++

২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:১১

বন্যলোচন বলেছেন: সেট করে দিলে কি ভয়ানক হত বলেন দেখি! ঈশ্বর আর ফ্যাসিস্টের মধ্যে পার্থক্য থাকতো না :)

না ভাই, কোনটার কারণেই না। থিতু না হলে পুরো গল্পটা এভাবে শেষ হয়ে যেত-

ঈশ্বর?
অ্যাঁ?
সেই পাথরের কথা মনে আছে?
কোন পাথর?
অই যে, যেইটার ওপরে সবুজ জিনিস টিনিস দিয়া প্রতিনিধি পাঠাইছিলেন। পিচ্চি পিচ্চি প্রাণী।
ও। হ। মনে পড়ছে। দেখতে মনে নাই। শ্লারা কতদিন টিকছিল কে জানে!
ঐ পাথরে সাতশ কোটি প্রতিনিধি আছে এখন।
কি?!
হ। সত্যি।
ওদের খাওয়ায় কে?!
কেউ না। নিজেরাই খাদ্য প্রসেস করা শিখা গেছে।
সাতশ কোটির খাবার নিজেরাই তৈরি করে?!
কমবেশি, হ।
মারামারি কৈরা মরে না?!
মরে। কিন্তু মারামারি শুরু হইলে বাকিরা আইসা থামায় দেয়।
তুই কি মজা লইতাছস আমার সাথে?
ইয়াল্লা বিশ্বাস করে না। এই যে দেখেন।
অবিশ্বাস্য
আপনার ভক্তও আছে ওদের মধ্যে।
ওরা মনে রাখছে আমাকে?
সম্পূর্ণ না। বালছাল বানায়ে নিছে।
অদ্ভুত!
তাই না? কি করবার কন এখন? ভাইঙ্গা দিমু পাথরটা?
থাকগা। কিউট আছে, ভাঙ্গিস না। কয়দিন পর একাই নিশ্চিহ্ন হয়া যাইব।
অকা ম্যান।

প্লাস আর পড়ার জন্য থ্যাঙ্কু :)

১৩| ২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪৮

মহসিন ৩১ বলেছেন: নরকে পানি ঢালার প্রক্রিয়ায় ঈশ্বরের গোলাম সিঁধ কাটা চোর তারপর , তার খন্তি ও মটকার গল্পটা লাগবে ।

২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:১৩

বন্যলোচন বলেছেন: ;)

১৪| ২৬ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:৪৯

শায়মা বলেছেন: স্বর্গ নরক কি এখন বানানো শেষ হয়েছে? :)

২৭ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৫৮

বন্যলোচন বলেছেন: ঈশ্বর জানেন!

১৫| ২৭ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫১

ইমরান নিলয় বলেছেন: জাস্ট পারফেক্ট। শেষটাও যথেষ্ঠ ক্রিয়েটিভ। কিন্তু পুরনো পথেই আগালো। আরো অসাধারন হতে পারতো। ব্যাপার না। চলুক...

২৭ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৫৯

বন্যলোচন বলেছেন: চালানোর ইচ্ছা আছে। পড়ার জন্য ধইন্যা :)

১৬| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: স্বর্গ বানানো শেষে নিশ্চয়ই নরক বানাবেন! নরকে একটা সিট বুকিং দিতে হবে আমার জন্য!

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১০

বন্যলোচন বলেছেন: হাহ হা!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.