![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিতান্ত সাধারণ করে বললে, মানুষ বাঁচতে শুরু করে বিভিন্ন জিনিসকে কেন্দ্র করে।
মানুষ তারপর, একটা সন্তোষজনক সময় পার হয়ে গেলে, পিছু ফিরে তাকায় এবং পূর্বতন জীবন যেমনই কাটিয়ে থাকুক না কেন - তখন সে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। তারপর মৃত্যুর অপেক্ষা করতে থাকে। কিংবা, কিছু আছে, তারা মৃত্যুকে শিশুর মতো অবোধ অস্বীকার করে আরেকটু-সময়-লোভী জীবনে ডুবতে চেষ্টা করে। শুরু যার যেভাবেই হোক, পূর্ণবয়স্ক মানবের সকল সিদ্ধান্তের পেছনে মৃত্যু সতর্কপায়ে লুকিয়ে আছে ছায়াপদী জন্তুর মতো।
তাহলে বলা যায়, আমাদের জীবনটা আসলে আবর্তিত হয় মৃত্যুকে কেন্দ্র করে।
শৈশব-কৈশোরে আমরা মৃত্যুর একটা আবছা ধারণা নিয়ে বড় হই, তেমন ছাপ ফেলে না। যুবক হবার পর মৃত্যুকে চিনি, কিন্তু সেটাকে তখন বহু দূরের ঘোলাটে কোন অপার্থিব ঘটনা বলে মনে হয়- যা কেবলমাত্র অন্যদের ক্ষেত্রেই ঘটে। আমরা তখন বাঁচতে ব্যস্ত, যৌবনের সঞ্জীবনীশক্তি আমাদেরকে অমর হবার অনুভূতিতে ডুবিয়ে রাখে, আমরা মৃত্যুর কথা জানি, চারিপাশে দেখি, কিন্তু মনে মনে ভাবি- না, এখনো অনেক দেরি আছে। আমরা ভুল করি, ভুল শিখি- শেখাই, আনন্দ খুঁজি ভালোয় আর মন্দতে, শরীর আর মনের চাহিদা মেটাতে খাটি, বাঁচতে শুরু করি।
তারপর চোখের পলক ফেলার আগেই মধ্যবয়স এসে যায়। আমরা হঠাৎ নিজেদেরকে আবিষ্কার করি সংসার জীবনে, যেখানে আমরা দায়িত্ব-কর্তব্য আর ছোট ছোট আনন্দের মাঝে সাবধানে পা ফেলে ফেলে চলছি। আমাদের জীবনে একঘেয়েমি আসে, দুনিয়ার কলকব্জা আমাদের চোখের সামনে উন্মুক্ত হয়। আমরা বুঝতে পারি আসলে জীবনের প্রকৃত আনন্দ পরের জন্যে কিছু করতে পারায় নিহিত; কিন্তু এই সত্য এত দেরিতে বুঝতে পারায় আদতে পরের জন্যে কখনো কিছু করা হয়ে ওঠে না। আমরা তারপর চোখ কান বুজে স্বার্থপরের মতো বংশবৃদ্ধি করে নিজের বীজকে উপযুক্ত বানিয়ে ছড়িয়ে দেওয়ার মাঝে জীবনের সার্থকতা খুঁজি।
অনেকে সেটা খুঁজেও পাই।
ক্রমশঃ দেখি- আমরা বুড়িয়ে যাচ্ছি, আমাদের জীবনীশক্তি কমে আসছে ধীরে ধীরে। তিক্ততা বাড়ছে, সহনশীলতা কমে আসছে, তবু আমাদের মানিয়ে চলা শিখতে হয়। দুনিয়ার নিয়ম-কানুন বড় বেশি বিরক্তিকর, বড় বেশি নড়বড়ে লাগে তখন। কঠিনমুখো সত্যে ভয় লাগে, আমরা স্বস্তি খুঁজি বিশ্বাসে। এই দুনিয়া বাদেও অস্তিত্ব বের করতে চাই অন্য কোন দুনিয়ার, অন্য কোন জীবনের। আর বাদবাকি সবকিছু থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তাই ডুবে যাই মৃত্যুর পরের দুনিয়ার সাধনায়। কিংবা কেউ কেউ খেপে যাই মৃত্যুর ওপরে, থোড়াই কেয়ার করি ওসবের- এই মনোভাব নিয়ে বাঁচতে শুরু করি।
তারপর, স্বভাবতইঃ, মৃত্যু আসে।
যদি পরকাল সত্য হয়, তবে মৃত্যু নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। অনন্তকাল শাস্তি হোক বা পুরষ্কার মিলুক, অন্ততঃ আমাদের সত্ত্বার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে না মহাশূন্যে- এটা তো স্বস্তির ব্যাপার!
কিন্তু যদি না হয় তেমন? যদি মৃত্যুর পর ওপার বলতে কিছু না থাকে? শুধু শূন্যতা, কালো অন্ধকার। একটা গহ্বরের মাঝে স্রেফ লীন হয়ে যাওয়া। তাঁর চে ভয়ের কি কিছু আছে?
নেই বোধহয়। শূন্যতা ভয়ানক জিনিস। আমার তাই মনে হয়। এই বিশ বছরের হাস্যকর রকম ক্ষুদ্রদৈর্ঘ্যের জীবন পার করে এসে এখন মনে হয়- যদি একটা কিছুও অনুভূত হোতো বুকের ভেতরে- হোক বিষাদ, ঈর্ষা, ক্ষোভ, কাম- কিছু একটা- বেঁচে যেতাম। এই শূন্যতা, এই ফাঁকা পরিত্যক্ত গহ্বরে ডুবে থাকতে আর ইচ্ছে করে না। মাঝে মাঝে মনে হয় বুকের মাঝে একটা কবর খুঁড়ে রেখেছে কেউ- কার কবর জানি না, কে খুঁড়েছে জানি না। কিন্তু যতবার তাকাচ্ছি বুকের মাঝখানে অনুভূতির খোঁজে- সেই কবরটা চোখে পড়ছে। আর অসীম শূন্যতার অন্ধকার গ্রাস করে নিচ্ছে আমাকে। আমার মাঝেমধ্যে ভেঙ্গেচুরে ফেলতে ইচ্ছে করে সবকিছু- মাঝেমধ্যে দম আটকে আসে। আমি তখন দাঁড়াতে পারি না, বসতে পারি না। আমি মানুষের মাঝে যাই। তাঁদের একঘেয়ে জীবনের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ শুনি, তাঁদের আবেগের নহরে পা ভেজাই। দিনশেষে বুঝতে পারি- জীবনচিত্রের কাছ থেকে কয়েক পা পিছু হটে সমস্ত ছবিটাকে কেউ ইচ্ছে করেই দেখছে না। কারণ সেখানে দেখলে বেঁচে থাকার কোন মানে নেই। তাই আমরা, মানুষেরা, মনোযোগ দিয়েছি এরকম খুঁটিনাটি বিরক্তিকর জীবনের অংশাবশেষের ওপরে। সেখানে যার যার মতো মানে খুঁজে নিচ্ছি।
আর বেঁচে আছি যার যার মতো। এটাই সত্য হয়তো। এটাই সেই বিব্রতকর সত্য যা আমরা এড়িয়ে চলতে পছন্দ করি।
দুনিয়ায় মানুষের জীবন তাই বিশাল একটা কমেডি। দেখে হাসছে কে- মূল প্রশ্ন হলো এটা।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:১৪
বন্যলোচন বলেছেন: আসলে আবর্তন মানেই অকারণ প্রতিবিম্ব সৃষ্টি করে যাওয়া। অবিরাম।
২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:২১
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: পৃথিবী অবিরাম সুর্যকে আবর্তন করছে , এটা কি কারণ না অকারণ আলোছায়ার প্রতিবিম্ব সৃষ্টি করছে ?
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৩৬
বন্যলোচন বলেছেন: আলোছায়ার অস্তিত্ব আছে কেন? কেন ঘূর্ণন? একই বিন্দুতে বারবার ফিরে এসেও বদলে যাওয়া? কেন?
কোন কারণ নেই মানবিক। এরা প্রাকপ্রাচীন নিয়মে বা বিশৃঙ্খলার বাড়ন্ত আকর্ষণে নড়ছে ফিরছে ঘুরছে যাতে মানুষের সম্পর্ক অনুপস্থিত।
৩| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৪৪
অনর্থদর্শী বলেছেন: সত্যিই হয়তো কোনো কারন নেই, নিয়ম নেই। সবটাই চূড়ান্ত অনিয়মের ফসল। কারন নেই, তাই কারন অনুসন্ধানের চেষ্টাও হয়তো বৃথা। এত বড়ো মহাবিশ্বে একটা পুঁচকে গোলকে থাকি আমরা। যদি কারন সত্যিই থাকতো, সেই কারনের নিয়ম-নীতিও থাকতো। কই আমরা তো সেই নিয়মের ফলাফলস্বরূপ কোনো সজীব গ্রহ পেলাম না। পুরোটাই ম্যাথসের permutation-combination মনে হয়।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০৯
বন্যলোচন বলেছেন: হয়তো। কে জানে!
৪| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: বিশ বছর বয়সে নব্বই বছরের বুড়ার মস্তিষ্ক ধারণ করে আছেন! এসব কিছু বুঝলে হয় না, উপলব্ধি করতে হয়। আমিও এই মাঝ বয়সে এসে অনেক কিছুই উপলব্ধি করতে পারছি। আপনার চিন্তা ভালৈ মিলছে।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১১
বন্যলোচন বলেছেন: থেঙ্কু। উপলব্ধিই তো মেইন জিনিস, কোন একটা পেপারে পড়ছিলাম মানব মস্তিস্ক ১২-১৪ বছর বয়েস থেকে সব বুঝতে পারে পরিপূর্ণভাবে; খালি বয়সের সাথে অভিজ্ঞতা বাড়ে, আর কিছু না। সেই সাথে আসে উপলব্ধি। জ্ঞান মানে এইটাই।
৫| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৮
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: এগুলা নিয়ে ৯০ বছর বয়সে চিন্তা করতে চাই। অবশ্য ততোদিন থাকলে দুনিয়ায়
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১২
বন্যলোচন বলেছেন: আয়ুষ্মান ভবঃ
৬| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:০৪
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: যত বছর বয়সেই চিন্তা করা হোক এরকম, এরকম ভাবে ভেবে গেলে জীবনের পদে পদে করা ভুল গুলো এড়ানো সম্ভব।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১৪
বন্যলোচন বলেছেন: ভুলগুলো একপ্রকার শিক্ষা হয়তো।
৭| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১৫
সজুসজীব বলেছেন:
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১৫
বন্যলোচন বলেছেন:
৮| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০২
বিষাদ সময় বলেছেন: ভাল লাগলো বললে ভুল বলা হবে। আসলে এ পোস্টটি ঠিক ভাল লাগার মত অগভীর, চটুল পোস্ট না, গভীর বোধ জাগ্রত করার মত একট পোস্ট। অবশ্যম্ভাবী বিষয় নিয়ে লিখিত একটি হতাশা এবং আশঙ্কা জাগানো পোস্ট।
আশঙ্কিত এবং হতাগ্রস্থ হলাম।
ধন্যবাদ উৎকুষ্ট মানের একটি প্রবন্ধ(পোাস্ট বলতে চাই না) উপহার দেওয়ার জন্য।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১৬
বন্যলোচন বলেছেন: আপ্নাকেও ধন্যবাদ সময় দেবার জন্যে।
৯| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৪৮
নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: মনটা অন্যমনস্ক হয়ে গেলো।
ভালো লেখা।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১৭
বন্যলোচন বলেছেন: বিষণ্ণ করার জন্যে দুঃখিত।
১০| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৫৬
গুলিস্তানের হকার বলেছেন: নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: মনটা অন্যমনস্ক হয়ে গেলো। ভালো লেখা।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৪৫
বন্যলোচন বলেছেন: ধন্যবাদ।
১১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৬
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এইখানে পৌছার পরই মূলত জীবন যাত্রার ইষ্টিশনে পৌছা হল।
এবার গন্তব্য নির্ধারন আর উপযুক্ত বাহনে চড়া..
তারপর? আছে- আগেতো এইটুকু পার হও। নিজেই পেয়ে যাবে পরবর্তী গন্তব্য
আসলে এক এন্ডলেস লুপে এই চলমানতা! নিত্যতায়
মুত্যু চক্র পেরিয়ে গেলেই যে জীবন শেষ- তাও নয়! বরং আরেকটা অধ্যায়ের শুরু মাত্র।
এগুলোকি কেবলই ভাবনা? না। সত্যি?
মিষ্টি কেমন? মিষ্টি? কেমন মিষ্টি? মধুর মতো। মধু কেমন? এই চক্র ছেড়ে একটু মিষ্টি চেখে দেখলেই না লেঠা চুকে যায়
অনুভবের গভীরে গিয়ে নিজেই দেখ নিলে সব প্রশ্ন আপনাতেই লীন হয়ে নতুন প্রশ্নের জন্ম হবে। ততকাল ভাল থাকুন
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৫৫
বন্যলোচন বলেছেন: ভাল বলেছেন।
আসলে নিশ্চিত হয়ে কিছু বলতে পারি না। জীবনের প্রশ্নগুলো কমন, উত্তর সহজলভ্য, একাধিক; কিন্তু বেছে নেওয়া নিয়ে সংশয়। এটাই আমাদের সমস্যা। মধু মিষ্টি কি না সে প্রশ্নে আসার আগে তো জানা দরকার মধু নামক কিছু আদৌ আছে কি না। তাইই তো বলতে পারি না!
আসলে মস্তক-মৈথুন কাজের কিছু না, একটা রাস্তা বেছে নিয়ে হাঁটা দেওয়া উত্তম; কিন্তু ওই যে, একটা কথা আছে না- কিছু প্রশ্ন কাফনের কাপড়ের মতন। অন্য কোন কাজে লাগে না, এবং নিজের সাথে কবর পর্যন্ত নিয়ে যেতে হয়।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:০৯
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: জীবন আবর্তিত হয় জীবনকে ঘিরে । জীবন শেষ আবর্তন শেষ।
ভাল লাগল লিখাটি ।